Red Volunteers of South 24 Parganas brought back memories of Red Army

Saturday,28 March 2020

১৯৩০ দশকে কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে লাল ফৌজ বিশ্বের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সেনাবাহিনীতে পরিণত হয়েছিল, এক কথায় লাল ফৌজ ছিল সমাজতান্ত্রিক সমাজগড়ার প্রক্রিয়াতে সহায়ক সামরিক সংগঠন।


বর্তমান বিশ্বে থাবা বসিয়েছে কোভিড -১৯, এই মারণ রোগে জেরবার সারা বিশ্ব, লক ডাউন চলছে আমাদের দেশ ভারত সহ প্রায় সারা বিশ্বে। এই সময়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া ও বিপদে পড়া মানুষের পাশে থাকার জন্য ভীষণ প্রয়োজন ছিল লাল ফৌজের।


আমাদের দেশে কমিউনিস্টদের শক্তি কম ।সংসদীয় ব্যবস্থায় মাত্র কয়েক শতাংশ। কিন্তু সদিচ্ছা থাকলে এই ক্ষুদ্র ক্ষমতা ও সিংহ হৃদয় নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় তা দেখিয়ে দিল সিপিআই(এম) স্বেচ্ছাসেবকরা। আমাদের রাজ্যে লক ডাউনের এই কঠিন পরিস্থিতিতে ‘লাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী‘ হিসাবে তারা অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন প্রায় প্রতিটি জেলায়।

এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা কমিটির সম্পাদক শমীক লাহিড়ী বলেন, এখনো পর্যন্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে, প্রায় ২ হাজারের উপর রেড ভলান্টিয়ার স্বেচ্ছাসেবকরা গোটা জেলা জুড়ে মানুষের পাশে থেকে কাজ করছেন। দক্ষিণ ২৪পরগণা জেলার অভ্যন্তরে, যেকোনো মানুষের যেকোনো প্রয়োজনে এই রেড ভলান্টিয়ার স্বেচ্ছাসেবকরা বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। জেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড, অঞ্চল ভিত্তিক সেচ্ছাসেবকদের সাথে যোগাযোগের নম্বর সোশ্যাল মিডিয়াতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জেলার বাইরের মানুষের সুবিধার্থে দক্ষিণ ২৪পরগণা জেলার CPIM এর অফিসিয়াল face book পেজেও এই স্বেচ্ছাসেবক দের সাথে যোগাযোগের সব তথ্য এবং কর্মকান্ড দিয়ে দেয়া হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগণা রেড ভলান্টিয়ারদের মুখে জনসাধারণের প্রতি একটাই বাণী,বাড়িতে থাকুন,সাবধানে থাকুন,সুস্থ থাকুন…


‘আপনাদের ছুটি আমাদের নয়’। একদিকে সোনারপুর, যাদবপুর,কাকদ্বীপ,বারুইপুর, জয়নগর, বজবজ, বিষ্ণুপুর, রায়দীঘি সহ জেলার প্রায় প্রতিটি প্রান্তের রেড ভিলান্টিয়াররা মানুষের প্রয়োজনে ওষুধ, খাদ্যসামগ্রী বিপদে পরা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন, অন্যদিকে মহেশতলার একাধিক ওয়ার্ডের রেড ভলান্টিয়ারা রাত জেগে পাইকারি বাজার থেকে চাল, ডাল, সবজি নিয়ে এসে স্বল্প মূল্যে ,‘জনতা রেশনের‘ মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিলি বণ্টন করছেন। এর সাথে সাথে মানুষের প্রয়োজনে তারা রক্ত সংগ্রহ করে দেওয়া ,অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া, লোকবলহীন পরিবারের মানুষের সৎকারে সাহায্য করছেন। ডিস্ট্রিবিউটরের ঘর থেকে নিজে ভ্যান চালিয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে এসে মানুষকে বিলি করা সহ একেরপর এক নজিরবিহীন উদাহরণ রেখে চলেছেন রেড ভলান্টিয়াররা। অন্য জেলা গুলির মত দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার দুজন বিধায়ক,হাতে গোনা কয়েকটি পঞ্চায়েতের সদস্যগণ ও অল্প সংখ্যক পৌর প্রতিনিধিরা তাদের সীমিত ক্ষমতা নিয়ে সাধ্যমত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।


গোটা দেশ লড়ছে, লড়ছে গোটা রাজ্য, লড়াই করছেন হাজার হাজার ডাক্তার,নার্স ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে যুক্ত কর্মীরা,আর লড়ছেন ‘রেড ভলান্টিয়ার’ স্বেচ্ছাসেবকরা নিঃশব্দে,নীরবে।তাদেরও সংক্রমণ হতেপারে জেনেও তারা মাটি কামড়ে পরে আছে মানুষের পাশে। তাদের দিকে তাক করে নেই কোনও ছোট বড় নিউজ চ্যানেলের ৫লাখি DSLR। তাদের জন্য একমিনিটও বরাদ্দ নেই টিভি মিডিয়ার ঘন্টা খানেকের কোনও অনুষ্ঠানে। কিন্তু রেড ভলান্টিয়ারদের জন্য আছে এই বিপদে পড়া হাজার হাজার মানুষের বুকভরা ভালোবাসা ও প্রাণভরা আশীর্বাদ। এটাই রেড ভলান্টিয়ারদের এই বিপদ মেটা না পর্যন্ত মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। লাখো সেলাম এই রেড ভলান্টিয়ারদের। বাংলার মানুষ চিরদিন মনে রাখবেন এই বীর সেনানীদের।

Spread the word

Leave a Reply