গণতন্ত্র, সার্বজনীন ভোটাধিকার, সমাজতন্ত্র – আভাস রায় চৌধুরী

নভেম্বর ১৭ , ২০২০ মঙ্গলবার


‘গণতন্ত্র’ – আধুনিক মানুষের বড় প্রিয় শব্দ। বাঁচার জন্য যেমন এক বুক সতেজ বাতাস লাগে, তেমনই আধুনিক জীবনবোধের প্রতিটি নিঃশ্বাসে গণতন্ত্র প্রত্যয়টি জড়িয়ে আছে। গণতন্ত্র প্রত্যয়ের সৃষ্টি কিন্তু প্রাচীন যুগের গ্রিক নগর-রাষ্ট্রে। গ্রিক ভাষার DEMOKRATIA শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ DEMOCRACY এবং আমাদের বাংলা ভাষায় গণতন্ত্র। গ্রিক শব্দ DEMOKRATIA কে ভাঙলে দুটি শব্দ পাওয়া যায় – DEMOS, KRATIA. এই দুটি শব্দ যুক্ত করলে ইংরেজিতে তার অর্থ দাঁড়ায় POWER OF THE PEOPLE.

সৃষ্টির প্রথম থেকে গণতন্ত্র শব্দের অর্থ সম্পর্কে কোনো বিরোধ নেই, কিংবা তাকে মান্যতা দেওয়ার বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যাটা হলো প্রকৃতপক্ষে সমাজ ও রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা কি জনগণের? এখানে যাবতীয় সংশয়, যাবতীয় দ্বন্দ্ব। প্রাচীন গ্রিক নগর-রাষ্ট্রে যে গণতন্ত্রের কথা বলা হয়েছিল তাকে কার্যকর করতে গিয়ে দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। এই সংগ্রামের ধারায় পৃথিবী পেয়েছে প্লেটো, আরিস্ততল, সক্রেটিসের মত জ্ঞানীদের। মনে রাখতে হবে ওই সময়টা ছিল দাস ব্যবস্থা ও সামন্ত ব্যবস্থার পর্ব। গ্রিক নগর-রাষ্ট্রে ক্রীতদাসদের মানুষের পর্যায়ে ধরা হতো না। ফলে গণতন্ত্র প্রত্যয়ে জনগণের ক্ষমতার প্রয়োগে প্রথম থেকেই সমাজের সব মানুষের অংশগ্রহণ ঘটেনি। яндекс

সক্রেটিস প্লেটো আরিস্টটল



মধ্যযুগের দীর্ঘ অমানিশাকে অতিক্রম করে আধুনিক যুগে গণতন্ত্রের বার্তা বহন করে নিয়ে এসেছে প্রথম ফরাসি বিপ্লব সহ বুর্জোয়া বিপ্লবগুলি। সে এক দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। আধুনিক যুগে বুর্জোয়া প্রগতি ভাবনার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফসল আধুনিক গণতন্ত্র। বুর্জোয়া বিকাশের প্রয়োজনে এবং পথে ইউরোপে যে জাতি রাষ্ট্রগুলি গড়ে উঠেছিল সেখানে ক্রমশ আধুনিক বুর্জোয়া গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটে। গণতন্ত্রের বিকাশ সর্বত্র সমান ভাবে হয়নি, তবে সর্বত্র সামন্তদের তীব্র বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল। প্রথম ফরাসি বিপ্লব থেকে পরবর্তী পাঁচ ছয়টি দশক মূলত ফ্রান্স কেন্দ্রিক বিপ্লব গুলি সমগ্র ইউরোপেই বুর্জোয়া ব্যবস্থার ভিত দৃঢ় করেছিল। মধ্যযুগের রাজতন্ত্রে সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত ছিল স্বৈরাচারী রাজার হাতে। বুর্জোয়া প্রগতি ভাবনায় আধুনিক গণতন্ত্রের প্রথম ও সবথেকে শক্তিশালী পদক্ষেপটি ছিল ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি। অর্থাৎ রাজার হাতের সার্বভৌম ক্ষমতাকে ভেঙে দিয়ে আইন, শাসন ও বিচার পৃথক পৃথক এই তিনটি বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বন্টন করা হয় যাতে পরস্পর পরস্পরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সব মিলিয়ে স্বৈরক্ষমতার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক ভারসাম্য ধরে রাখা যায়।


এই সূত্রেই অবাধ ও সাধারণ নির্বাচনের বিষয়টি বুর্জোয়া গণতন্ত্রের অন্যতম নির্ণায়ক বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর গণতন্ত্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। দেশের জনগণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নিজেদের সরকার, আরও নির্দিষ্টভাবে বললে শাসক নির্বাচন করেন। এখন বুর্জোয়া সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রায় সর্বত্র অবাধ ও সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত। ইউরোপ থেকে মার্কিন দেশ, এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার কোথাও বুর্জোয়া গণতন্ত্রের শুরুর দিন থেকে সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত ছিল না। কোথাও নারী, কোথাও কালো চামড়ার মানুষ, কোথাও বিত্তহীনেরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়েই এঁরা দেশে দেশে ভোটের অধিকার অর্জন করেছেন। তাই বলা যেতে পারে বুর্জোয়া গণতন্ত্রের সার্বজনীন ভোটাধিকার মানুষের দীর্ঘসংগ্রামের ফসল। তার জন্য মানুষকে বহু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জনগণের সার্বজনীন ভোটাধিকার বুর্জোয়া গণতন্ত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার সরকার গড়তে ও সরকার পরিবর্তন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। সরকার গণতন্ত্রের পথ থেকে সরে গেছে কিংবা জনবিরোধী পথে এগিয়েছে তখন নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষ শাসক পরিবর্তন করেছে। আমাদের দেশ সহ পৃথিবীর বহু বুর্জোয়া সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এমন নজির রয়েছে। স্বাধীন বিচার বিবেচনা সাপেক্ষে ভোটাধিকারের মত মৌলিক অধিকার ব্যবহার করার এই দিকটি স্বাভাবিক অবস্থায় বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, লিঙ্গ, শ্রেণি নিরপেক্ষভাবে অবাধ সার্বজনীন ভোটাধিকার বুর্জোয়া সংসদীয় গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। এটা অবশ্যই সংরক্ষণযোগ্য।

নারীদের ভোটাধিকারের দাবিতে লড়াই



মানব মুক্তির যে লক্ষ্য নিয়ে আধুনিক মানুষের আধুনিকতার যাত্রা শুরু এই ভোটের অধিকার কি সেই লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হয়েছে? মধ্যযুগের সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সব ধরনের স্বৈর আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মানব মুক্তির যে বার্তা বহন করেছিল তা কি বুর্জোয়া সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সার্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব? এই প্রশ্নগুলির সহজ সরল ও সোজা উত্তর কখনোই বুর্জোয়া গণতন্ত্রের দেওয়া হয় না। নভেম্বর বিপ্লব, সমাজতন্ত্র প্রথম পৃথিবীতে এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দিতে চেষ্টা করেছিল।
প্রথম ফরাসি বিপ্লবে সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতার আহ্বান সামন্ত সমাজে যুগ যুগ ধরে পদদলিত মানুষদের শোষণ মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু শোষণমুক্ত সমাজ তার কাছে অধরাই থেকে গেল। নতুন বুর্জোয়া যুগে নতুন ধরনের শোষণে আরও আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পরে আগের সমাজের ভূমিদাস যারা নতুন বুর্জোয়া সমাজে প্রলেতারিয়েতে পরিণত হয়। সমাজের নিচের তলার মানুষেরা ভূমিদাসত্ব থেকে মজুরি দাসত্বের শিকারে পরিণত হয়। শোষণশাহী আরও জটিল, সূক্ষ্ম ও সর্বগ্রাসী হয়ে ওঠে।
তাই বুর্জোয়া যুগের প্রথম থেকেই শ্রমিক শ্রেণীর ক্ষোভ বিক্ষোভের স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ ঘটতে থাকে। এ প্রসঙ্গে আমরা ইংল্যান্ডের মেশিন ভাঙার আন্দোলনের কথা উল্লেখ করতে পারি। স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেশিন ভাঙ্গার পথ থেকে শ্রমিক শ্রেণী সংগঠিত ধর্মঘট ও স্ট্রীট ফাইটের পথে ফিরে আসে। শ্রমিকদের অভিজ্ঞতা ও চেতনার উন্মেষ ঘটতে থাকে। সংগ্রামরত শ্রমজীবীদের সামনে সংগ্রাম ও লক্ষ্যের বার্তা বহন করে নিয়ে আসে ১৮৪৮ এর কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো। পৃথিবীর ইতিহাস শ্রেণী সংগ্রামের ইতিহাস – এই বিশ্লেষণ হাজির করে বুর্জোয়া শাসন ব্যবস্থার উচ্ছেদের জন্য দুনিয়ার মজদুরদের এক হওয়ার আহ্বান জানালো ইশতেহার। এ ছিল ক্রমশ বিশ্বায়িত হতে চলা পুঁজিবাদী পৃথিবীতে সংগ্রামের বিশ্বময়তার আহ্বান। কিসের সংগ্রাম? মানব মুক্তির সংগ্রাম। আলোকপ্রাপ্তির যুগ যে মানব মুক্তির কথা বলেছিল, আধুনিক মানুষ নির্মাণ করতে চেয়েছিল, সমাজ থেকে শোষন ব্যবস্থার সমূলে উচ্ছেদ ছাড়া তা সম্ভব নয়। আজ সোভিয়েত উত্তর তিন দশকের নয়া উদারবাদী পৃথিবীতে শ্রমজীবী মানুষের ক্রমবর্ধমান জীবন যন্ত্রণা এই সত্যকেই পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করছে।


রাজতন্ত্র থেকে বুর্জোয়া গণতন্ত্র, অন্ধ আনুগত্য ও বিশ্বাস থেকে প্রশ্ন করার অধিকার কিংবা ভোটাধিকারের মাধ্যমে নিজেদের সরকার তৈরীর অধিকার – নিঃসন্দেহে প্রগতির পথে কয়েক আলোকবর্ষ অগ্রগতি। মার্কস দেখালেন এই পৃথিবীতে মানব সমাজের আদিতে শ্রেণির অস্তিত্ব, শ্রেণি আধিপত্য ও শ্রেণি শোষণ ছিল না এবং মানবসমাজের প্রগতির অভিমুখ শ্রেণি হীনতার দিকেই। এই সূত্রে শ্রমিক শ্রেণীর সংগ্রামটা শেষ পর্যন্ত তার নিজের শ্রেণি বিলোপের জন্য। অবশ্য শ্রেণীর বিলোপ মানে বুর্জোয়া আধিপত্যের অধীন হওয়া নয়, শ্রেণীহীন সমাজের দিকে এগিয়ে যাওয়া। যতক্ষণ না পর্যন্ত তা সম্ভব হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সমাজে বিভিন্ন মাত্রায় শ্রেণীর অস্তিত্ব থাকবে। তাই সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রও হল শ্রেণী রাষ্ট্র। এই মর্মবস্তু ভুলে গেলেই যত কিছু বিপত্তির সূচনা হয়। বুর্জোয়া শ্রেণী রাষ্ট্র এবং সমাজতান্ত্রিক শ্রেণি রাষ্ট্রকে একই মানদণ্ডে মাপলে হবে না। বুর্জোয়া রাষ্ট্রে সংখ্যালঘিষ্ঠ শাসকশ্রেণী সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমজীবী মানুষের মেহনত শোষণ করে, চুরি করে পুঁজির মিনার নির্মাণ করে। সমাজতন্ত্রে কোন পরগাছা পরস্রম ভোগী থাকেনা। সবাইকে খাটতে হয়, সবার খাটার পরিবেশ নির্মাণে দায়বদ্ধ থাকে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র।


পুঁজিবাদী রাষ্ট্র শোষণের মাত্রাকে অটুট রাখতে সস্তায় শ্রম কেনার স্বার্থে সমাজে মজুত বেকার বাহিনী রাখা হয়। পুঁজিবাদী সমাজে শোষণ বঞ্চনা নিপিরণ শক্ত ভিতে প্রতিষ্ঠিত। এই সমাজে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সাধারণ মানুষের অধিকার নয়, সুযোগ। আজকের করোনাকাল চোখে আঙ্গুল দিয়ে আবারও এই সত্য দেখিয়ে দিচ্ছে। এইরকম সমাজে শেষ বিচারে গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকারকে শ্রমজীবি মানুষ সব সময় স্বাধীনভাবে বিচার করে প্রয়োগ কিংবা উপলব্ধি করতে পারে না। যত চেষ্টাই হোক একটা সীমায় তা আটকে যায়। গণতন্ত্র, অধিকার এই প্রত্যয়গুলিও আসলে শ্রেণি প্রত্যয়। পৃথিবীতে বুর্জোয়া বিকাশের আঁতুড়ঘরে এই প্রত্যয়গুলোর জন্ম ও বিকাশ ঘটেছে। মানব মুক্তির লক্ষ্যে মানবসমাজে এই প্রত্যয়গুলি বুর্জোয়া আধারে শেষ পর্যন্ত আটকে থাকবে না। সমাজের প্রগতি অভিমুখে যাত্রা এই প্রত্যাশাকেই তুলে ধরে। তবে এই প্রত্যয়গুলি যতক্ষণ বুর্জোয়া ব্যবস্থায় অবস্থান করে বা করবে ততক্ষণ তা বুর্জোয়া সমাজেরই অনুসারী হয় বা হবে। লেনিন বলেছিলেন, যে ফর্মেই উপস্থিত হোক না কেন বুর্জোয়া গণতন্ত্র শেষ বিচারে ডিক্টেটরশিপ অফ দ্যা বুর্জোয়াজি। তাই সমাজতন্ত্রের বুনিয়াদি চরিত্র ডিক্টেটরশিপ অফ দ্যা প্রলেতারিয়েত। অবশ্য এর প্রায়গিক রূপ কেমন হবে তা নির্ভর করে সেই সমাজের চরিত্র ও বিপ্লবী সংগ্রামের ইতিহাসের ধারার উপর।


বুর্জোয়া ব্যবস্থায় সার্বজনীন ভোটাধিকার একটি অগ্রগতি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল। কিন্তু ‘মানবমুক্তি’র বিচারে প্রবলভাবেই সীমাবদ্ধ। বুর্জোয়া সমাজে বিপুল অংশের মানুষ শোষিত, বঞ্চিত, অবদমিত। তাই বুর্জোয়া গণতন্ত্রের নির্বাচনী ব্যবস্থায় বিপুল অংশের মানুষের অপ্রাপ্তির বিষয়টি নানাভাবে ঘোরাফেরা করে। যদি অপ্রাপ্তির বিষয়গুলি সরাসরি অর্থনৈতিক চেহারায় উপস্থিত হয় তবে নির্বাচনের মাত্রা ও চরিত্র যা হওয়া উচিত বাস্তবে তা কি হচ্ছে? আমাদের দেশ ও সর্বত্র অপ্রাপ্তির বিষয়গুলিকে মানুষের ক্ষুদ্র পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত করে শ্রমজীবী মানুষকে বিভক্ত করে রাখার কাজে ব্যবহার করা হয়। এমন অবস্থায় সত্যি কি একজন মানুষ স্বাধীন বিচার বিবেচনা করে ভোটের অধিকার প্রয়োগ করার অবস্থায় থাকতে পারেন? অন্য দিক থেকে দেখলে, বুর্জোয়া গণতন্ত্রের নাগরিকদের ভোটের অধিকার আসলে বৈষম্যের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভের একটা সেফটি ভাল্ব হিসেবে কাজ করে। বঞ্চিত মানুষ ভয়ঙ্কর রাগ ও ক্ষোভ নিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার পরিবর্তন করেন। তিনি প্রতিবাদের একটা স্তরে পৌঁছান বটে কিন্তু শাসকশ্রেণী চায় পরিবর্তন ঘটলে সরকারের ঘটুক কিন্তু মানুষ যাতে কোনভাবেই শোষণমূলক ব্যবস্থা পরিবর্তনের দিকে অগ্রসর না হয়। তাই বুর্জোয়া সংসদীয় গণতন্ত্রে সার্বজনীন ভোটাধিকারকে মানুষের প্রতিবাদের শেষ ঠিকানা হিসেবে তুলে ধরা হয়। সে দিক থেকে দেখলে বুর্জোয়া গণতন্ত্রের ভোটাধিকার শেষ পর্যন্ত বুর্জোয়া হেজিমনির একটা বাহক।
তাহলে ইতিহাসের ধারায় বুর্জোয়া গণতন্ত্রের সার্বজনীন ভোটাধিকারের কোন মূল্য নেই? অবশ্যই আছে। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এই সার্বজনীন ভোটাধিকারের এক দীর্ঘস্থায়ী অস্তিত্ব থাকবে। শ্রেণীবিভক্ত সমাজে শ্রমিক শ্রেণী তার সংগ্রামে বুর্জোয়া সংসদকে ব্যবহার করে এবং সংসদের ভিতরের সংগ্রামের সঙ্গে বাইরের গণসংগ্রাম ও শ্রেণিসংগ্রামকে যুক্ত করে। সিপিআই(এম) তার কর্মসূচিতে স্পষ্ট করেই এই সংসদে ও সংসদ বহির্ভূত সংগ্রামে পার্টি ও শ্রমিক শ্রেণীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছে। আজকের পৃথিবীতে পুঁজিবাদী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দক্ষিণপন্থী শক্তির পরিবর্তে অতি দক্ষিণপন্থীরা যখন ক্ষমতা দখল করছে, দেশে দেশে গণতন্ত্রের জায়গা নিতে যখন তৎপর ফাসিস্ট শক্তিগুলি, যখন আন্তর্জাতিক লগ্নিপুঁজিতে শিল্পপুঁজিকে পিছনে ফেলে ‘বিত্তিয়পুঁজি’ প্রাধান্য বিস্তার করছে যা অনিবার্যভাবেই স্বৈরাচারকে সংরক্ষণ করছে ও করবে, তখন বুর্জোয়া গণতন্ত্রের সার্বজনীন ভোটাধিকার সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে। এই হাতিয়ার প্রয়োগ করেই আজকের বলিভিয়া আবার বাম পথে, আলেন্দের চিলি জানিয়ে দিয়েছে ফ্যাসিস্ত পিনোচেতের ফ্যাসিস্ত সংবিধান আমরা মানি না। এমনই হাতিয়ারে ট্রাম্পের বিদায় ঘন্টা বেজেছে। তবে মনে রাখতে হবে, শ্রেণি সমাজে শ্রেণীর স্বার্থের কারণে বুর্জোয়া সংসদীয় গণতন্ত্রের সার্বজনীন ভোটাধিকার শেষ বিচারের সীমাবদ্ধ। সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র মানুষের জীবনযাত্রা ও জীবনবোধের নতুন প্রত্যয় জন্ম দিয়েছে। নভেম্বর বিপ্লব সোভিয়েত সমাজতন্ত্র পৃথিবীতে এই উন্নত গণতন্ত্র প্রত্যয়ের স্রষ্টা।
বুর্জোয়া উদারনৈতিক গণতন্ত্র নাগরিকদের ভোটের অধিকার দেওয়ার মধ্যেই তার দায়িত্ব শেষ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র সেখান থেকে শুরু করে মানুষের জীবনধারণ ও জীবনবোধের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছিল। বুর্জোয়া গণতন্ত্রে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মানুষের পাঁচটা বুনিয়াদি প্রয়োজন অধিকার নয়, সুযোগ বা আরও সঠিকভাবে বললে পণ্য, যার ক্ষমতা আছে সে কিনে নেবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র এই প্রতিটি মৌলিক অধিকার প্রতিটি নাগরিকের জন্য নিশ্চিত করেছিল। পুঁজিবাদী ব্যবস্থা যেখানে সস্তায় শ্রম কেনার স্বার্থে মজুত বেকার বাহিনী রাখা হয়, সমাজতন্ত্র প্রতিটি মানুষের কাজ নিশ্চিত করতে দায়বদ্ধ থাকে। বিপ্লবের কুড়ি বছরের মাথায় সোভিয়েত ইউনিয়নের এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কারণ তার আর কোন প্রয়োজন ছিল না। কাজ মানুষকে খুঁজে বেড়াত, মানুষকে কাজ খুঁজে বেড়াতে হতো না। উদার গণতন্ত্রে ভোটাধিকার প্রতিষ্টিত কিন্তু কোটি কোটি মানুষ থাকে অভুক্ত ও দরিদ্র অবস্থায়। সমাজতন্ত্রের লক্ষ্য যাতে একটিও মানুষ ।অভুক্ত না থাকে। সেদিনের সোভিয়েত ইউনিয়নের মতই আজকের চীন, ভিয়েতনাম, কিউবা, কোরিয়া সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে শুধু বেঁচে থাকার পাঁচটি বুনিয়াদি প্রয়োজন মেটানো নয়, সোভিয়েত ইউনিয়নে তার জনগণের মনুষ্যত্বের সর্বাঙ্গীণ বিকাশ ঘটেছিল। এখানে আমরা আমাদের রবি ঠাকুরের রাশিয়ার চিঠি পুনর্পাঠ করতে পারি।

স্প্যানিশ ফ্লু

শুধু তাই নয় বিপ্লবের পরে পরেই স্প্যানিশ ফ্লু সারা পৃথিবীকে যখন তোলপাড় করেছিল তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন তা মোকাবিলায় ইতিহাসে উজ্জ্বল নজির স্থাপন করেছিল। আবার আজ করোনা মোকাবিলায় পুঁজিবাদী বিশ্ব যখন ব্যর্থ ,নয়া উদারবাদের যখন অস্তিত্ব সংকটে তখন চীন, ভিয়েতনাম, কিউবা, কোরিয়া সাফল্যের সঙ্গে করোনা সংক্রমণকে মোকাবিলা করছে। মানুষের জীবনের প্রতিটি পড়তে পড়তে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার লুণ্ঠন, ব্যর্থতা, অমানবিকতা ফুটে ওঠে। সমাজতন্ত্রের সাফল্য মানবিকতা ও আন্তর্জাতিকতায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। আজ করোনা কালেও তা সমানভাবে সত্য।

লেনিন

আসলে উদার গণতন্ত্র অর্থাৎ বুর্জোয়া গণতন্ত্র শোষণশাহীকে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা। সমাজতন্ত্র শোষণকে উচ্ছেদের দিকে এগিয়ে চলার ব্যবস্থা। তাই পার্থক্য তো থাকবেই। পার্থক্য মূলগত, পার্থক্য বহিরঙ্গেও, পার্থক্য নির্বাচন ব্যবস্থা ও লক্ষ্যেও। দীর্ঘদিন ধরে একটা ধারনা মানুষের মনে গেঁথে দেওয়ার চেষ্টা চলে যে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মানুষের ভোটের অধিকার নেই। এই উদ্দেশ্য মূলক ও বিকৃত তথ্যটি পুরোদস্তুর অসত্য। নিচের স্তর থেকে সুপ্রিম সোভিয়েত পর্যন্ত নির্বাচনে সমস্ত সোভিয়েত জনগণের ভোটাধিকার ছিল, অংশগ্রহণ ছিল। আজও চীনসহ সমাজতান্ত্রিক দেশ গুলিতে সরকার গঠনে সাধারণ মানুষের সার্বজনীন ভোটাধিকার আছে। এটা ঠিকই যে উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো মূলগতভাবে আলাদা। সমগ্র নির্বাচন ব্যবস্থা পরিচালিত হয় সমাজতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে, কোনো পুঁজিবাদী পুনর্জাগরণের লক্ষ্য নিয়ে নয়। বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একটা আপাত নিরপেক্ষতা ও বিরুদ্ধতাকে জায়গা দেওয়ার আবরণ থাকে। তবে বুর্জোয়া গণতন্ত্র ততক্ষণই উদার যতক্ষণ পর্যন্ত রাজনীতি, আন্দোলন কিংবা নির্বাচন বুর্জোয়া ব্যবস্থা পরিবর্তনের ক্ষমতা অর্জন না করতে পারে। রাজনীতিতে শ্রমজীবীদের অংশ ও শক্তি বাড়লে বুর্জোয়া ব্যবস্থার মধ্যেও বুর্জোয়া গণতন্ত্র তার গণতন্ত্রের পতাকা ত্যাগ করে। ইতিহাসের অজস্র নজির আছে। ঠিক এই মুহূর্তে সারা পৃথিবীর অনেক পুঁজিবাদী দেশের মতোই আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও এই বিপদের মুখোমুখি।
যাই হোক মূল প্রশ্ন সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নাগরিকেরা কি সার্বজনীন ভোটাধিকার ভোগ করেন? উত্তর হ্যাঁ সাধারণভাবে এই অধিকার ভোগ করেন। পুঁজিবাদী গণতন্ত্র একটা সময় পর্যন্ত ভোটের অধিকার দেয় কিন্তু কখনোই জীবনের মৌলিক অধিকার অর্জনের গণতান্ত্রিক অধিকার দেয় না। বুর্জোয়া সমাজে নির্বাচন মানুষের অপ্রাপ্তির নিরিখে পরিচালিত হয়, সমাজতান্ত্রিক সমাজ চলে সমাজের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এই সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলেছিল। আজকের চীন একশো শতাংশ দারিদ্র দূরীকরণ করে সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলার সংগ্রামে শামিল রয়েছে। সমাজতন্ত্র মানুষের জীবনের মৌলিক অধিকারগুলি অর্জনের পরিবেশ সৃষ্টি করে উন্নত মানুষ গড়ে তুলে শ্রেণীহীন সমাজের দিকে এগিয়ে যেতে চায়। এখানে বলাটা প্রাসঙ্গিক হবে যে মার্কসের কাছে স্বাধীনতা প্রত্যয়টি হল একটি ইতিবাচক বৈশিষ্ট। তাঁর মতে স্বাধীনতা মানে সেই পরিবেশ যেখানে সমাজের প্রতিটি মানুষ প্রয়োজনীয়তাকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে। মানবিক সংস্কৃতির কোন উচ্চ স্তরে পৌঁছলে তবে একের প্রয়োজন অন্যকে অবদমিত করে না। সমাজতন্ত্র এমনতর মানবিক সংস্কৃতি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলে। হ্যাঁ সোভিয়েত উত্তর পৃথিবীতে আজও এই কথা সমানভাবে সত্য এবং দৃঢ়ভাবে উচ্চারণযোগ্য।
এখন প্রশ্ন, তাহলে ইউরোপের সমাজতন্ত্র ভেঙে গেল কেন? কোনো কি ভ্রান্তি ছিল না? হ্যাঁ ইতিহাসে অমলিন সাফল্যের পাশাপাশি শেষ কয়েক দশক বিস্তর ভুল হয়ে গেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপর্যয়ের পর সিপিআই(এম) চতুর্দশ পার্টি কংগ্রেস বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছিল। সেই দলিলটি এবং বিংশতি পার্টি কংগ্রেসে গৃহিত মতাদর্শগত দলিলটি আমাদের সকলের বারে বারে পাঠ করা, মর্ম উপলব্ধি করা ও প্রয়োগ করতে সচেষ্ট হওয়া জরুরী। মতাদর্শের ক্ষেত্রে গুরুতর বিচ্যুতি এবং পার্টি ও রাষ্ট্র শ্রমজীবী মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। ২ কোটি মানুষ জীবন দিয়ে দুর্দান্ত ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করে মাতৃভূমি, সমাজতন্ত্র ও মানব সভ্যতাকে ধ্বংস থেকে বাঁচিয়ে ছিল সেই সোভিয়েতে বিনা প্রতিরোধে, বিনা রক্তপাতে সমাজতন্ত্র বিলীন হয়ে যায়। অর্থাৎ মতাদর্শের বিচ্যুতি আর শ্রেণী বিচ্ছিন্নতার ফলে দীর্ঘকালীন আমলাতান্ত্রিকতা সমাজতান্ত্রিক শ্রেণী রাষ্ট্রকে নিঃশব্দে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। ব্যর্থতার কারণ নতুন অভিজ্ঞতা দেয়, নতুন ভাবে এগিয়ে চলার দিশা দেখায়। সোভিয়েত ও পূর্ব ইউরোপের সমাজতন্ত্রের বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধান এবং তার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আজকের চীন, কিউবা, ভিয়েতনাম নিজ নিজ দেশে সমাজতন্ত্রকে সুরক্ষিত করতে সচেষ্ট; প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক-সামাজিক সংস্কারের পথে অগ্রসর হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে। এই সংস্কারের মূল লক্ষ্য জনগণের আরও অংশগ্রহণ, আরও সমৃদ্ধি। এখানে বলে রাখা ভালো, চীনের অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু হয়েছিল সোভিয়েত বিপর্যয়ের দেড় দশক আগেই।

ইভো মোরালেস



বিশ শতকের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের বিজয়, সমাজতন্ত্রের অগ্রগতি, বিশ্বব্যাপী তার প্রভাব এবং পাশাপাশি ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা থেকেই একুশ শতকের সমাজতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের পথ নির্মিত হচ্ছে। সেখানে অতীতের তাত্ত্বিক সীমাবদ্ধতা ও প্রয়োগের ভুলগুলিকে সংশোধন করে পরিবর্তিত বিশ্বের নতুন অর্থনৈতিক জীবন গড়ে তোলা, সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্রের পরিসরকে আরও উন্নত ও প্রসারিত করার বার্তা বহন করা হয়েছে। এখানে নির্বাচন, সার্বজনীন ভোটাধিকার আরও উন্নত বোধ নিয়ে উপস্থিত হতে পারে। বুর্জোয়াদের জন্মের কত শতাব্দী আগেই ‘গণতন্ত্র’ সম্পর্কে ধারনা মানুষ আবিষ্কার করেছিল। প্রাচীন যুগের সীমাবদ্ধ ও অভিজাত গণতন্ত্র প্রত্যয় আধুনিক যুগে আরও উন্নত ও প্রসারিত হয়েছে। কিন্তু শ্রেণী সমাজের ঘেরাটোপ থেকে বেরোতে পারেনি। সমাজতন্ত্র বুর্জোয়া শ্রেণী সমাজের ঘেরাটোপ থেকে গণতন্ত্রকে বার করে শ্রেণি হীনতার দিগন্তবিস্তারী পথের দিকে এগিয়ে দিতে চায়। তেমনই নির্বাচন, সার্বজনীন ভোটাধিকার বুর্জোয়া সমাজের শ্রেণি স্বার্থের সংকীর্ণ ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে এসে সমাজ অগ্রগতির সঙ্গে তাল রেখে এগিয়ে যাবে। মার্কস প্রস্তাবিত আধুনিক শ্রেণীহীন সমাজে মানুষের ভোটাধিকার কি প্রয়োজন পরবেনা? অবশ্যই পড়বে। তবে তা উন্নত মানুষের উন্নত সমাজে উন্নত নির্বাচনী ব্যবস্থায় পরিণত হবে। আজকের শ্রেণীবিভক্ত বৈষম্যের সমাজে দাঁড়িয়ে এই সমাজের মতাদর্শগত প্রভাবে আচ্ছন্ন থেকে আমরা ভাবীকালের ওই সমাজ, মানুষের রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে উপলব্ধি করতে পারবোনা। তার একটা অনুমান করতে পারি মাত্র। ঠিক যেমনটি সমাজতন্ত্র বলতে চূড়ান্ত কোন কিছু আদর্শ সমাজের কথা বলেননি মার্কস, যেখানে ইতিহাসের সমাপ্তি ঘটে। শ্রেনী সংগ্রামের অগ্রগতির পথ ধরেই সমাজতান্ত্রিক সমাজ গড়ে উঠেছে এবং গড়ে উঠবে।


বুর্জোয়া সমাজে নির্বাচন, সার্বজনীন ভোটাধিকার সবই এই সমাজকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে। সমাজতন্ত্রের বিকল্প পথ হল শ্রেণীবিভক্ত সমাজটাকে বদলে দিয়ে ভবিষ্যৎ শ্রেণীহীনতার ভিত্তি প্রস্তুত করা। ফলে এই মানদণ্ডে সমগ্র সমস্যাকে বুঝতে হবে ও বিচার করতে হবে।





ছবি : গুগল ইমেজ

সমাজতন্ত্রই ভবিষ্যৎ
Spread the word

Leave a Reply