Corona Image NIV Pune

NIV-Pune Captured Image of Corona Virus

ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি ইমেজিং ট্রান্সমিশন প্রযুক্তি ব্যাবহার করে পুনেতে ভারতের বিজ্ঞানীরা কোভিড-১৯ রোগসৃষ্টিকারী করোনা ভাইরাসের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন। এই ছবি প্রকাশিত হয়েছে ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল রিসার্চে।

NIV Pune
NIV-Pune: Pic: Google Images

৩০ জানুয়ারি, ২০২০ তে ভারতে প্রথম ল্যাবেরেটরি পরীক্ষায় চিহ্নিত হওয়া কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির গলার নমুনা থেকে এই সার্স-কোভিড-২ ভাইরাসের ছবি তোলা হয়েছে। আক্রান্ত মহিলা তিন ছাত্রছাত্রীদের একজন যারা উহানে মেডিসিন পড়াশোনা করতেন, দেশে ফেরার পরে তার পরীক্ষা করা হয়েছিল – তাতেই এই রোগ ধরা পড়ে।

China Posted Corona Virus Image
Corona Virus Image Posted by China: Source – South China Morning Post / Google Images

২০১৯’র ডিসেম্বরে চীনের উহান প্রদেশে কোভিড-১৯ রোগের প্রথম প্রকোপ ধরা পড়ে, এখনও অবধি সারা পৃথিবীতে প্রায় ৫,৪০,০০০ মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন – মারা গেছেন প্রায় ২৫,০০০ জন। কেরালায় সংগৃহীত নমুনা থেকে পাওয়া ভাইরাসের ছবি দেখে বোঝা যাচ্ছে, সার্স-কোভিড-২ ভাইরাসটির ২০১২ সালের মার্স-কোভিড (মিডল ইস্ট রেস্পিরেটরি সিন্ড্রোম ) এবং ২০০২ সালের সার্স-কোভিড (যার ফলে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেস্পিরেটরি সিন্ড্রোম বা সার্স রোগ দেখা দিয়েছিল) ভাইরাসের অনেকটাই সাযুজ্য রয়েছে।

Corona Image NIV Pune
Image Of Corona Virus : NIV Pune

ইতালিয় ভাষায় করোনা শব্দের অর্থ ক্রাউন বা মুকুট, যার থেকে নিজের গায়ে কাঁটার মতো অংশযুক্ত এই ভাইরাসের নাম দেওয়া হয়েছে করোনা ভাইরাস।

আইসিএমআর (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসারচ)’র প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল ডঃ নির্মল কুমার গাঙ্গুলি জানিয়েছেন এই ভাইরাসটি প্রোটিন এবং সুগার রিসেপ্টরের মতো অনেকধরণের পোষক (রিসেপ্টর)’কে কাজে লাগাতে নিজেকে বিবর্তিত করেছে। ভাইরাসটি প্রথম পর্যায়ে হোস্ট সেল (কোষ) সার্ফেস রিসেপ্টরকে চিহ্নিত করে নিজেকে যুক্ত করে পরের ধাপে কোষের মধ্যে প্রবেশ করতে হোস্ট মেমব্রেন (ঝিল্লি)’র সাথে নিজেকে মিশিয়ে দেয়। ডঃ গাঙ্গুলি আরও জানিয়েছেন সংগৃহীত ক্লিনিক্যাল নমুনা থেকে তোলা ছবিগুলি ভাইরাসটির পরিব্যাক্তি (mutation) সম্পর্কে গবেষণায় প্রভুত সাহায্য করবে, এটির জেনেটিক উৎস এবং বিবর্তন সম্পর্কেও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। এর ফলে কিভাবে পশুদের শরীর থেকে মানবশরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলো এবং এক ব্যাক্তির থেকে আরেকব্যাক্তির শরীরে কোন প্রক্রিয়ায় এই ভাইরাসের সংক্রমন শুরু হয় সেই নিয়ে বৈজ্ঞানিক উপলব্ধি আরও সঠিক হবে যা এই ক্ষেত্রে ওষুধ এবং ভ্যাক্সিন প্রস্তুত করতে কাজে দেবে।

transmission Electrom Microscope
Transmission Electron Microsope: Google Images

কেরালা থেকে প্রাপ্ত নমুনায় এই জিন সিকোয়েন্সিং’র কাজ করা হয়েছে এনআইভি (ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ভাইরোলজি) –পুনেতে। জানা গেছে সংগৃহীত নমুনায় পাওয়া ভাইরাসের সাথে চীনের উহানে পাওয়া ভাইরাসটির ৯৯.৯৮% মিল রয়েছে। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে যা খুবই স্বাভাবিক সেরকম একটি নির্দিষ্ট ভাইরাস পার্টিকল যথেষ্ট মজবুতভাবে বজায় রয়েছে এই নমুনায়। এই পার্টিকলটির আকার ৭৫ এনএম (ন্যানোমিটার) এর উপরিভাগে সামঞ্জস্যহীন দাগ এবং নির্দিষ্ট আচ্ছাদন বিশিষ্ট গোলাকার পেপ্লোমেরিক (ভাইরাল সার্ফেসে গ্লাইকোপ্রোটিন নির্মিত কাঁটার মতো অংশ) রয়েছে। পুনে’র এনআইভি (ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ভাইরোলজি)’র ডেপুটি ডিরেক্টর এবং সেখানকার ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি এবং প্যাথোলজি বিভাগের প্রধান ডঃ অতনু বসু এই তথ্য জানিয়েছেন।

DNA Sequencing
DNA Sequencing Process: Google Images

কেরালায় কোভিড-১৯ আক্রান্তের গলার ভিতরের অংশ থেকে সংগ্রহ করা ৫০০ মাইক্রোলিটার নমুনার উপর সেন্ট্রিফিউগেশনের সাহায্যে অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য অংশ বাদ দিয়ে অতি সুবেদী, রিয়াল টাইম, পলিমারেস চেইন রিয়াকশন পদ্ধতি ব্যাবহার করে এই ছবি তোলা হয়েছে। এই গবেষণামূলক কাজে সোডিয়াম ফস্ফোটাংস্টিক অ্যাসিডের সাথে নেগেটিভ স্টেইনিং করা হয়। সুপারন্যাটেন্টকে সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে ১% গ্ল্যুটার‍্যালডিহাইডের সাথে মিশিয়ে কার্বন-কোটেড ২০০ মেশ কপার গ্রিডের সাহায্যে অ্যাবসর্ব করানো হয়। এই গ্রিডটিকে ট্রান্সমিশন ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে ১০০ কিলোভোল্ট ত্বরান্বিত আধানে নিয়ন্ত্রিত করে পরীক্ষা করা হয় এবং একটি সাইড মাউন্টেড ক্যামেরাকে লো-ডোজ মোডে ব্যবহার করে ছবিটি তোলা হয়।স্ক্যান করা অংশে সাতটি নেগেটিভ স্টেইন্ড ভাইরাস পার্টিকল এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে যেগুলি করোনা ভাইরাস পার্টিকল’র মতোই। ভাইরাসটিতে ৭০-৮০ এনএম(ন্যানোমিটার) সাইজের গোলাকার অংশ দেখা যাচ্ছে যেখানে এনভেলপ প্রোজেকশনগুলির গড় সাইজ রয়েছে ১৫-১৭ এনএম(ন্যানোমিটার), ডঃ অতনু বসু এই বিষয়ে বলতে গিয়ে জানান।

তথ্য সুত্রঃ ডেইলি হান্ট

Spread the word

Leave a Reply