Lenin As Chairman April 2025 Cover

Lenin: To Deal With People’s Issues

সৌভিক ঘোষ

ক্রেমলিনের দপ্তর

১৯১৯ সাল, বছরের প্রথম দিক।

ক্রেমলিনের অফিস সবে বসেছে, তার মধ্যেই নির্দিষ্ট বাক্সে চিঠির পাহাড় জমতে শুরু করেছে। চিঠি মানে অভিযোগ, বিষয়ের কোনও আদি অন্ত নেই। যারা লিখে উঠতে পারছেন না কিংবা চিঠি’তে সমস্যার সমাধান হবে বলে ঠিক ভাবতে পারছেন না তারা সরাসরি দপ্তরে চলে আসছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি একের পর এক দলের সঙ্গে কথা বলতে বলতে কমরেড ব্রুয়েভিচ’র (ভি ডি বঞ্চ-ব্রুয়েভিচ) প্রায় মাথা খারাপ হওয়ার অবস্থা হয়েছে।

এমনই এক সকালবেলা কৃষকদের এক প্রতিনিধি দল এসে উপস্থিত। তাদের বিবিধ অভিযোগ, সবাই লিখতে-পড়তে পারেন না, তাই একসাথে চলে এসেছেন। প্রাথমিক কথাবার্তা বলার পরেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কমরেড’টি বুঝলেন এদের সমস্যার প্রকৃতি অন্যদের চাইতে কিছুটা আলাদা। তিনি হলঘরের বাইরে এসে টেলিফোন করলেন, নির্দেশ এল চেয়ারম্যান নিজেই ঐ দলের সাথে কথা বলবেন।

কমরেড ব্রুয়েভিচ কিছুটা স্বস্তি পেলেন, হলঘরে ফিরে গিয়ে জানালেন- ‘আপনারা নিজেদের ব্যাগপত্র, পুঁটলি ইত্যাদি এখানেই রেখে যান, চিঠি লেখার কাগজ এসব সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন।’ তারা সেভাবেই বেরিয়ে এলেন, রাস্তা ধরে এসে উপস্থিত হলেন চেয়ারম্যানের দপ্তরের সামনে। সদর দরজার সামনে বন্দুকধারী প্রহরী জানতেন এদের যেতে দিতে হবে- প্রায় বিনা জিজ্ঞাসাবাদেই ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দিলেন।

বিপ্লবের পরে একদিকে দেশী-বিদেশী প্রতিবিপ্লবী চক্রান্তের সাথে লড়াই আরেকদিকে জনসাধারণের বহুবিধ সমস্যার মোকাবিলা করতে হয় বলশেভিকদের। জনসাধারণ বলতে মূলত কৃষক, তাদের কেন্দ্রে রেখে শ্রমিক রাষ্ট্র গঠনের কাজ। এমন সমস্যার সমাধানে বলশেভিকদের সামনে ৭২ দিনের ‘প্যারি কমিউন’ (১৮ মার্চ–২৮ মে, ১৮৭১) ব্যতীত কোনও ঐতিহাসিক উদাহরণ ছিল না, তারা যা করেছিলেন সেসবই ইতিহাস হয়ে উঠছিল। বিশাল দেশ, বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী জনসাধারণের বাস্তব অবস্থার যথেষ্ট বৈচিত্র ছিল।

‘সোভিয়েত’ মানে পঞ্চায়েত, এলাকার মানুষের দ্বারা নির্বাচিত স্বাশাসন। ছয় মাস অন্তর নির্বাচন হবে, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে জনসাধারণ ছ’মাসেই ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবেন। বুর্জোয়া সংসদীয় ব্যবস্থার বদলে এটিই ছিল বলশেভিক বিকল্প, এই হল ‘সোভিয়েত’ ব্যবস্থার মূল কথা। স্থানীয় বৈশিষ্ট অনুযায়ী এলাকার মানুষের নিজস্ব দাবী, সেসবের যথাযথ সমাধানে এককেন্দ্রীয় ক্ষমতার বিকল্প হিসাবে জনসাধারণই ক্ষমতার কেন্দ্রে।

লেনিন সহ বলশেভিক নেতৃত্বরা উপলব্ধি করেছিলেন- ব্যাপারটা মার্কস যেভাবে দেখেছিলেন তেমন পরিস্থিতিতে ঘটেনি। দুনিয়ার আধুনিকতম দেশ নয়, রাশিয়া ছিল ইউরোপের পিছনের উঠোন। জনসাধারণের বিরাট অংশ রাজনৈতিক এমনকি ধনতান্ত্রিক সমাজের ন্যুনতম রীতিনীতি সম্পর্কেও যথেষ্ট অবহিত নন। তাই শ্রমিক-কৃষকদের নেতৃত্বে রেখে সর্বহারা বিপ্লবের কাজ যেমন কঠিন ছিল, বিপ্লবের পরে দেশ তথা সমাজ গঠনের কাজটিও একেবারেই সহজ হবে না।

এর সমাধান কিভাবে হবে? গড়ে তোলা হল পিপল’স কমিশার, সহজ কথায় পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বিভিন্ন বিভাগে মুখ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি। সারা দেশজুড়ে সমস্ত কমিশারের চেয়ারম্যান হলে লেনিন, চেয়ারম্যান অফ পিপল’স কমিশার। কিছুক্ষণের জন্য ভাবলেই বোঝা যায় এ কেমন বিষম দায়িত্ব, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় সমস্যা সমাধানের আগাগোড়া দায় নাথায় নেওয়া।

ক্রেমলিনের মাঝখানে বসল চেয়ারম্যানের অফ দ্য পিপল’স কমিশারের সেই দপ্তর।

আর সে দপ্তরের ঘরে বসতে শুরু করলেন লেনিন।  

Lenin on Desk 2025

সোভিয়েতের কাহিনী

সদর দরজা পেরিয়ে একটা লম্বা বারান্দা, সে পথে খানিকটা এগোলে একটা বড় দরজা।

সেটাই লেনিনের বসার ঘর। একপাশে স্টাডি টেবিল, খান চারেক চেয়ার আর লোকজন এলে বসার জন্য গোটা দুই সোফা। ওরা ঘরে ঢুকে দেখলেন লেনিন কাগজ পড়ছেন। টেবিলের ওপাশ থেকে তাদের দিকে মুখ তুলে তাকালেন লেনিন। কৃষকরা ততক্ষণে নিজেদের নেতা’কে সামনে দেখে চেয়ার, চেয়ারম্যান সব ভুলে গেছেন।

‘সুপ্রভাত!

সুপ্রভাত ভ্লাদিমির ইলিচ!’

গলার আওয়াজে বড় আকারের ঘরটি গমগম করে উঠছে তখন।

ইলিচ’ও তাদের সুপ্রভাত জানালেন, সোফার দিকে ইঙ্গিত করে বসতে বললেন। নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে একটি বসার টুল টেনে আনলেন টেবিলে পাশে, যাতে কৃষকদের মুখোমুখি বসে কথা বলা যায়।

‘এবার বলুন তো, কি এমন ব্যাপার যে আপনারা চলে এলেন?’

কৃষকরা রীতিমত উত্তেজিত-

‘আমাদের অনেক কথা রয়েছে!’

‘সত্যিই তাই, অনেক কথা, অনেক কাজ!’

‘আসল কথা হল, আমরা জমির সমস্যা নিয়ে কথা বলতে এসেছি।’

‘আমাদের হেনস্তা করা হচ্ছে!’

‘আমরা চলে এলাম, ইলিচ, এবার আপনাকে বিচার করতে হবে..’

সাজিয়ে-গুছিয়ে যেভাবে কথা বললে আসল কথাটি বলা যায়, তারা সেসব শেখেননি। এমনটাই যে স্বাভাবিক অনেকেই বোঝেন না, ইলিচ জানতেন, বুঝতেন। তিনি ধৈর্য ধরে তাদের সমস্ত কথা শুনতেন, সমস্যার গোড়াটিকে বুঝতে চেষ্টা করতেন- তাঁর ঐ অভ্যাস অনেকদিনের। যার আমলের রাশিয়া থেকে নির্বাসিত থাকাকালীন ক্রুপসকায়া’কে সঙ্গে নিয়ে ইংলন্ড এবং ফ্রান্সে ঘোরার সময়ও তিনি সকাল সকাল তৈরি হয়ে বাসে চড়ে গ্রামের ভিতরে চলে যেতেন। ইউরোপীয় কায়দায় যাকে পাব, ট্যাভার্ন ইত্যাদি বলে সেসব জায়গায় বসে থেকে তিনি গরীব মানুষের জীবন, কথাবার্তা, গান গাওয়া লক্ষ্য করেছেন। মেহনতি মানুষ কি চাইছে আর কি চাইছে না এসবের জন্য তাকে সেকেন্ড হ্যান্ড রেফারেন্সের সাহায্য নিতে হয়নি কখনো। সেদিনও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। ঘরে উপস্থিত মানুষজনের উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হলে লেনিন তাদের প্রত্যেকের নাম, গ্রামের নাম খুঁটিয়ে জানতে চাইলেন। কথাবার্তা চলার সময় তিনি প্রত্যেককে তার নির্দিষ্ট গ্রামের পরিচিতি সহ চিহ্নিত করেই কথা বলতেন, এতে তাঁর কখনো ভুল হয়নি।

পেনঝা গ্রামের একজন, একমাথা ঘন কালো চুল; তার দিকে তাকিয়ে ইলিচ বললেন-

‘এবার বলুন তো, কি হয়েছে?’

‘আসলে কথা হল, সমস্যাটা সরকারী কাজ নিয়েই।’

‘আরেকটু নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন?’

‘হ্যাঁ, অবশ্যই! আমাদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে!’

‘আচ্ছা! কারা অত্যাচার করছে?’

‘আমাদেরই সোভিয়েতের লোকজন!’

‘কিভাবে এমনটা ঘটছে?’

‘দেখুন, আমরা সোভিয়েতে গ্রামের লোক’কে নির্বাচিত করেছিলাম। এখন তারা সব সোভিয়েতে ঢুকেছে, ঢোকার পর অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আমাদেরই উপর চড়াও হয়েছে! আমরা একদম ভালো থাকতে পারছি না! সারাদিন তারা আমাদেরকে খালি শাসাচ্ছে আর ভয় দেখাচ্ছে। কোথাও পালিয়ে যেতে পারি না, ভিটেমাটি ওখানেই যে! আমাদের ফসল, জিনিসপত্র সব কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে! আজ যে এখানে চলে এসেছি, একেবারে লুকিয়ে আসতে হয়েছে। এখানে এসেছি জানতে পারলে একেবারে জেলে পুরে দেবে! জেল বুঝছেন তো ইলিচ, ছারপোকা সব কিলবিল করছে!’

‘এরা সব কি করে? মানে সোভিয়েতের কাজ ছাড়া এদের কাজ কি?’

‘সবকটা তো জেলখাটা আসামী! কাজ আর কি করবে! রাতদিন খালি আমাদের ভুল ধরে আর নানারকম ফাইন বসায়। ময়দা আর রুটির হিসাব লেখার খাতা করেছে- আমরা আর রুটি পাই না! সব নিজেদের পেটে পুরছে!’

ইলিচ তখনও বুঝতে পারছেন না কি করে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাই আরেকবার জানতে চাইলেন-

‘কিন্তু এরা তো সবাই আপনাদেরই লোকজন? আপনারাই তো নিজেদের লোক বলে এদের ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন?’

‘হ্যাঁ, আমাদেরই গ্রামের সব! কিন্তু সে হলে কি হবে! সবকটা জেলের আসামী যে!’

‘তাহলে এমন লোকজন যারা সব জেলের আসামী তাদের আপনারা ভোট দিলেন কেন?’

এইবার কৃষকটি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন, তারপরে মাথার চুলে কয়েকবার আঙ্গুল চালিয়ে নিয়ে প্রায় বিড়বিড় করে বললেন- ‘ওরা সব জেলখাটা দাগী আসামী ছিল বলেই তো আমরা ওদের ভোট দিয়েছিলাম! আমি আপনাকে আসল কথাটা বলছি, শুনুন! আমরা আসলে ভেবেছিলাম কি, এসব সোভিয়েত-টোভিয়েত, মানে আমাদেরই লোকের হাতে সব ক্ষমতা মানে যা সব বলা হয়েছিল আর কি, আমরা ভেবেছিলাম এসব তো আদৌ কোনোদিন হবে না! আর যদি হয়েও যায় তাহলেও কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশ, মিলিটারি সব গ্রামের ভিতরে ঢুকে পড়বে আর সোভিয়েতের লোকজনকে জেলে ঢুকিয়ে দেবে! তাই আমরা ভেবেছিলাম এমন লোকজনকেই ভোট দিই না কেন যারা বছরের বেশিরভাগ সময়টা জেলের ভিতরেই কাটায়! আর তাই আমরা ওদের ভোট দিয়েছিলাম!’

সদর দরজায় থাকা প্রহরী, তিনি অবধি শুনতে পেলেন- ইলিচ খুব জোরে জোরে হাসছেন।

ইলিচ উলিয়ানভ’কে চেনার সময় থেকে নাঝেদজা ক্রুপস্কায়া ঐ উচ্চস্বরে প্রাণখোলা হাসির সাক্ষী ছিলেন। নিজের প্রতি, ভুল ধারণা ভেঙ্গে গেলে কিংবা পার্টির কাজে কোনও উল্লেখযোগ্য ত্রুটি চিহ্নিত করার সময়েও ইলিচ ওভাবেই হাসতেন। ক্রুপস্কায়া বুঝেছিলেন, আমাদেরও বুঝতে হয় এসব নিছক হাসির কথা নয়, বুকভরা সাহস না থাকলে ওভাবে হাসা যায় না।

Lenin with People

ভ্লাদিমির ইলিচ কে?

উজ্জ্বল একজোড়া চোখে তাকিয়ে থাকা, স্মিত হাসি ঠোঁটে নিয়ে বিরলকেশ লেনিনের ছবিটাই আমরা মনে রাখি। ঐ ছবি সেই নেতার যিনি পাহাড় চূড়ায় বসে থাকা ঈগলপাখির ন্যায় শ্যেন। যুক্তিজাল বিস্তার করে তিনি সবাইকে নিজের পক্ষে টেনে আনেন। একেই অক্টোপাসের পেঁচিয়ে ধরার সাথে তুলনা করেছিলেন স্তালিন। মার্কসবাদী দার্শনিক, প্রখর রাজনীতিবোধ সম্পন্ন লেনিন, সারা দুনিয়ায় বিপ্লবী সর্বহারা শ্রেণীর মহান নেতা লেনিন’কে নিয়ে লেখা কিছু কম নেই। সেইসব ইতিহাসের ভারে কিছুটা হারিয়ে যেতে বসা যে মানুষটির প্রকৃত নাম ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ, তিনি কেমন ছিলেন?

তখন রাশিয়ায় জারের শাসন, দেশের দরিদ্র জনতার মুক্তির লক্ষ্যে বিপ্লবী ছাত্র-যুব’রা গোপনে মার্কসবাদী পাঠচক্রের আয়োজন করতেন। কাজান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র মার্কসবাদী পাঠচক্রে একেবারে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো আলোচনা করছে। নাঝেদজা ক্রুপস্কায়া তখন বিপ্লবী দলের অন্যতম নেতৃত্ব, তার কানে সেই ছাত্রের খবর পৌঁছে গেল। 

সেই ছাত্র, সেই মানুষ লেনিনের খোঁজ পেতে আমাদের নির্ভর করতে হয় এমন কিছুজনের স্মৃতিচারণায় যারা তাকে উলিয়ানভ থেকে লেনিন হয়ে উঠতে দেখেছেন, তাকে পরিশ্রমে শ্রান্ত হতে দেখেছেন, উত্তেজিত হতে দেখেছেন, আনন্দে হাসতে দেখেছেন– তার দুঃখে সাক্ষী থেকেছেন। নাঝেদজা ক্রুপস্কায়া তেমনই একজন, কমরেড ইন আর্মস বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই।

লেনিনের স্ত্রী হিসাবে তার যে পরিচিতি সেসব অনেক পরের কথা।

আজকের প্রজন্মের জেনে রাখা উচিত লেনিনকে পার্টিতে এনেছিলেন ক্রুপস্কায়াই।

লেনিনকে ভাল করে চিনতেন না নাঝেদজা, ঘনিষ্ঠ এক কমরেডের থেকে শুনেছিলেন ‘বিজ্ঞান-যুক্তিবাদে লোকটি ভীষণরকম দক্ষ, কিন্তু সাহিত্য বলতে প্রায় কিছুই জানে না, ওসব কবিতা-উপন্যাস পড়ে না’। যাকে দ্রুত পার্টিতে নিয়ে আসার কথা ভাবছেন, সেই তরুণ বিপ্লবীর মানসিক গড়ন সম্পর্কে এমন কথা শুনে ক্রুপস্কায়া কিছুটা হতাশই হলেন। হতাশা চেপে রেখে দেখা করলেন ছেলেটির সাথে।

কিছুক্ষন কথা বলেই বুঝলেন রাশিয়ার সর্বহারা জনসাধারণের জীবনযাপনের প্রায় প্রতিটি খুঁটিনাটি সম্পর্কে ইনি যথেষ্ট ওয়াকিফহাল। পার্টির যে কোনও কারও চাইতে তিনি দেশের জনসাধারণকে অনেক ভালো চেনেন। সেবারের পাঠচক্রে যখন প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্বরা লিফলেটের বয়ানে শিক্ষার দাবীকে প্রাধান্য দিচ্ছেন, উপস্থিত সকলের সোচ্চার অথবা নীরব সম্মতি সে প্রস্তাব প্রায় পাশ হয়ে যায় এমন সময় ঘরের পিছন দিক থেকে জোরে হাসির আওয়াজ এল। কে এমনভাবে হাসছেন? আলোচকরা রীতিমত বিরক্ত! দেখা গেল সেই কাজান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্রটি তখনও হাসি থামাননি। এমন আচরণের কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে বললেন- দেশের মানুষ খিদেয় জ্বালায় জ্বলছে, এমন অবস্থায় শিক্ষার অধিকারের দাবীতে আমরা লিফলেট প্রকাশ করছি! বিপ্লবী কর্তব্য সমাধা করছি বৈ কি!

সে লিফলেট আর প্রকাশ হয়নি।

সেদিনের ঐ হাসি, ঐ সমালোচনাই বুঝিয়ে দিয়েছিল এভাবে হবে না। সে লিফলেট নতুন করে লেখার দায়িত্ব দেওয়া হল ঐ ছাত্রকেই। লেনিনের লেখা সেই লিফলেট রীতিমত ঝড় তুলে দেয়, সকলেই বুজতে পারেন বিপ্লবী পার্টির কাজে বদল আনার সময় হয়েছে।

সাইবেরিয়াতে নির্বাসনে থাকাকালীন তারা দুজনে প্রথমবার একে অন্যকে কাছ থেকে দেখার, জানার, বোঝার সুযোগ পেয়েছিলেন। ক্রুপস্কায়া লিখেছেন, ‘ইলিচের মাথার কাছেই রাখা থাকতো তুর্গেনেভ, পুশকিন, লের্মেন্তভ, নেক্রাসভের লেখা বই। সাহিত্যে তার দখল পরীক্ষা করতে গিয়ে বুঝলাম যাবতীয় ধ্রুপদী সাহিত্য সে একেবারে গুলে খেয়েছে’। কিছুদিন পরেই লেনিনের বাক্সর ভিতর থেকে একটি অ্যালবাম খুঁজে পেলেন, তাতে এমিল জোলা, চের্নিসেভস্কি, হার্জেন ও পিসারেভের ছবি সেঁটে রাখা। সেই সময় লেনিন আরেকবার গ্যেটে’র ‘ফাউস্ট’ পড়তে শুরু করেছেন, তারই সাথে পড়ছেন জার্মান ভাষায় ছাপা হাইনে’র কবিতা।

প্যারিসে থাকাকালীন লেনিন ও ক্রুপস্কায়া সারাদিনের বেশিরভাগ সময়টাই ব্যয় করতেন বিভিন্ন শ্রমিক মহল্লায়। এভাবেই একদিন পরিচিত হলেন প্যারি কমিউনের একজন বিপ্লবী কমিউনার্ডের সন্তান মন্তেগু’র সাথে। দুজন একে অন্যের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলতেন, ভাষার ব্যবধান পেরিয়ে দুজনেই বিভোর হতেন আগতপ্রায় বিপ্লবের স্বপ্নে। সে আড্ডার বর্ণনা দিতে গিয়ে ক্রুপস্কায়া লিখেছেন ‘একে অন্যের কথা সবটা বুঝতে না পারলেও তারা দুজনেই বিপ্লবের স্বপ্নে ডুবে যেতে ভালবাসতেন, আর কে না জানে অন্য ভাষায় স্বপ্ন দেখা আরোই সহজ’।

মন্তেগু’কে বিশেষভাবে পছন্দ করতেন। পরবর্তীকালে মন্তেগু নিজের রাজনৈতিক অবস্থান বদলে ফেলেন, শোভিনিস্টদের দলে ভিড়ে যান। অনেকদিন পরেও একা চুপচাপ থাকার সময় ‘….বাট নেভার উইল ইউ হ্যাভ আওয়ার হার্টস’ গুনগুন করে গাইতেন লেনিন। বিশেষ করে ১৯০৯ সাল নাগাদ দেশের বাইরে থাকার সময়, ১৯০৫’এ রাশিয়াতে বিপ্লব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরে।

কাজান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দাদা আলেকজান্দারের ড্রয়ার থেকে খুঁজে পান কার্ল মার্কসের ‘দ্য ক্যাপিটাল’। সমাজতন্ত্রের অধ্যয়ন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরতদের গোপন সংগঠনে সক্রিয়তা শুরু হয়। বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন এভাবেই। রাশিয়ায় বিপ্লবী আন্দোলনের দুটি ধারা ছিল, প্রথমটি ব্যক্তিহত্যার রাজনীতি আরেকদিকে ‘মুখে বাম কাজে ডান’ ধরনের সংশোধনবাদী সমাজতন্ত্রী, এদের উভয়ের বিরুদ্ধেই কলম ধরেন লেনিন, কাজেও নামেন। সময়োপযোগী বিপ্লবী সংগঠনের চেহারা কেমন হতে হবে সেই সম্পর্কে ধারণা বুনতে থাকে রাশিয়ার কমরেডদের চেতনায়। এমনই একটি সময় প্রকাশিত হয় লেনিনের লেখা লিফলেট ‘কোথা থেকে শুরু করতে হবে’– সেই লিফলেটই পরে প্রকাশিত ‘কি করতে হবে?’ (What is to be done?) গ্রন্থের ভ্রুন। কিভাবে লিখতে হয়, কিভাবে তথ্য সংগ্রহ এবং বাস্তবোচিত, সঠিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিপ্লবী তত্বের রচনায় তাকে ব্যবহার করতে হয় সেই কাজ শিখতে গেলে তার প্রথম দিককার লেখা ‘রাশিয়ায় পুঁজিবাদের বিকাশ’ (Development of capitalism in Russia) পড়তেই হবে। অর্থনীতিবাদ (Economism) এবং সন্ত্রাসবাদী নারদনিকেরা প্রচার করত রাশিয়াতে পুঁজিবাদ খুবই দুর্বল, সুতরাং শ্রমিকশ্রেনির সংগ্রাম গুরুত্বহীন, লেনিন ঐ দূটি দলকেই রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া প্রমান করলেন। পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে্র অধিবেশনে ‘গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা’র নীতিকে পার্টি পরিচালনার মূলনীতি হিসাবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে, পার্টিতে কারা সদস্য হবেন সেই সংজ্ঞা নির্ধারিত করার সময় সে কাজই পূর্ণতা পেল। বুলি কপচানো, আত্মমগ্ন বাবুদের চার দেওয়ালে সীমাবদ্ধ রাজনৈতিক অকর্মণ্যতার বাইরে টেনে আনেন বিপ্লবী সংগঠনের পরিসর। সেই সংগঠনই ছড়িয়ে পড়ে মস্কো শহরের কল কারখানার গেট থেকে সাইবেরিয়ায় খনি অবধি। যুগ যুগ ধরে যারা পথের ধুলোয় মলিন হয়ে থাকাকেই নিজেদের কপালের ফের বলে মেনে নিতে অভ্যস্ত ছিল তারাই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে নিজেদের দেশে পৃথিবীর প্রথম শ্রমিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার।

পার্টিতে কাজের নতুন এক ধারা প্রতিষ্ঠা করেন লেনিন। পেশাদার বিপ্লবী (Professional Revolutionary) – আজ যাদের আমরা হোলটাইমার বলে চিনি। বিপ্লবী সর্বহারা শ্রেনিচেতনার সবথেকে এগিয়ে থাকা অংশই হবেন হোলটাইমার, যারা বিপ্লবের লক্ষ্যে বিপ্লবী পার্টির স্বার্থে নিবেদিত প্রাণ- তারাই হবেন পেশাদার বিপ্লবী– এই ছিল তার ব্যাখ্যা। সেই সময় পার্টিতে মার্কসবাদী পণ্ডিত, এলিট হিসাবে পরিচিত মার্তফ, আক্সেলরদ, ট্রটস্কি সকলেই লেনিনের এই কথার বিরোধিতা করেছিলেন– এমনকি রাশিয়ায় মার্কসবাদের শিক্ষক গেওর্গি প্লেখানভ অবধি লেনিনের যুক্তি উপলব্ধি করতে ব্যার্থ হয়েছিলেন। এদের সকলের লেনিনকে লড়াই করতে হয়। ঐ পার্টি কংগ্রেসে অনেক কাছের কমরেডই তাকে রীতিমত অনৈতিক আক্রমন, অপমান করেছিলেন। যাবতীয় কুৎসা, মিথ্যাচার ও আক্রমনের মোকাবিলা করেছিলেন মার্কসীয় দ্বন্দ্বতত্ত্ব, ইতিহাসের বস্তুবাদী ধারণা এবং নিজের দেশে প্রলেতারিয়েতদের জীবন সংগ্রাম সম্পর্কে যথাযথ উপলব্ধি সম্বল করে। সেই সমস্ত আক্রমণ এবং তার জবাব প্রকাশিত হয় ‘এক পা আগে, দুই পা পিছে’ গ্রন্থে। এ বইয়ের নাম সম্পর্কে সম্পূর্ণ এক ভ্রান্ত ধারণা থেকেই আরেক ভ্রান্ত ব্যখ্যাকে হাজির করা হয়, জেনে রাখা দরকার লেনিন ঐ বইতে পার্টি কংগ্রেসের মিনিটস এবং সংশ্লিষ্ট তথ্যাবলী প্রকাশ করেছিলেন। মধ্যপন্থী, সুবিধাবাদী, নিজেদের পণ্ডিত, এলিট ইত্যাদি ভাবা মানুষজন আসলে কেমন রাজনৈতিক চরিত্রের হন সেটা সবার সামনে স্পষ্ট করে দেওয়াই ছিল সেই সময় কর্তব্য। সুবিধাবাদী নিষ্কর্মাদের সম্পর্কেই লেনিন ‘এক পা আগে, দুই পা পিছে’ কথাটা ব্যবহার করেছিলেন। কেতাবি বুলি আউড়ে যাওয়া কিংবা নিরর্থক, অক্লান্ত বিতর্কে সময় ব্যয় করা বুদ্ধিজীবীদের প্রসঙ্গে ঐ বইতে লেনিন ‘মার্শ’ এবং ‘ফের্জুম্ফ’ জাতীয় জার্মান শব্দের উল্লেখ করেছেন, দুটি শব্দের অর্থ প্রায় একই– বদ্ধ জলাশয়।

চেয়ারাম্যানের চেয়ারে বসে

ক্রেমলিনের দপ্তরে এসে উপস্থিত পেনঝা গ্রামের সেই কৃষকের কথায় হেসে উঠলেও ইলিচ বিষয়টিকে আদৌ হালকা বিবেচনা করেননি। উপলব্ধি করেছিলেন যুগ যুগ ধরে শোষণ, বঞ্চনার শিকার, শিক্ষার সুযোগ না পাওয়া নিপীড়িত মানুষগুলি নিজেদের স্বাভাবিক সারল্যেই ভবিষ্যৎ বদলের সম্ভাবনায় উৎসাহিত হতে পারেননি। মানুষ হয়েও মানুষের মতো বেঁচে থাকার অধিকার যারা পাননি, শোষণের ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলে নতুন সমাজ গড়ে নেওয়ার মতো বিপ্লবী প্রত্যয় সহজসাধ্য নয়। ইতিহাস বলছে সর্বহারা বিপ্লব, সমাজতন্ত্র সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে সর্বহারা শ্রেণীই সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তায় ভোগে। শোষণ, বঞ্চনায় জর্জরিত তাদের জীবনযন্ত্রণাই অমন দুশ্চিন্তার কারণ। কিন্তু একবার তারা যদি বিপ্লবী সম্ভাবনাকে আত্মস্থ করে নেন তখন আর কোনও বাধাই তাদের আটকে রাখতে পারে না। কার্ল হাইনরিখ মার্কস লিখেছিলেন- ‘যে কোনও মতবাদ যখনই জনগণের দ্বারা স্বীকৃত হয়, আত্মস্থ হয় তখনই তা হয়ে ওঠে শক্তি।’ লেনিন ঐ শিক্ষাকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করেছিলেন বলেই পার্টি সংগঠন ও সংগঠকদের কাজকে সবচেয়ে বেশি গুরত্ব দিয়েছিলেন। তিনিই শিখিয়েছিলেন- সর্বহারা জনসাধারণের মধ্যে রাজনীতিকে বাইরে থেকেই প্রবিষ্ট করতে হয়, সেটাই কমিউনিস্ট সংগঠকদের কাজ। অর্থনৈতিক দাবী দাওয়ার ভিত্তিতে জনসাধারণ যত সহজে ঐক্যবদ্ধ হন তত সহজে রাজনৈতিক সংগ্রামের ময়দানে জড়ো হন না। সেই অনুভব অর্জন করতে হয়। জনগণের মধ্যে কাজ করার অর্থ জনগণকে রাজনৈতিক শিক্ষায় সচেতন করে তোলা।

সেদিন গ্রাম থেকে আসা কৃষকদের সাথে ঐ আলোচনা শেষ হতে হতে প্রায় সন্ধ্যা নেমে আসে।

ঘরের মধ্যে উপস্থিত সকলেই উপলব্ধি করেছেন তারা কোথায় ভুল করেছিলেন- ‘আমরা বুঝতে পেরেছি, আমরা ভুল বুঝেছিলাম। তাই এমন একটা ভুল হয়ে গেছে।’

‘আপনাদের সোভিয়েত গঠন হওয়ার পর তিন মাস পেরিয়ে গেছে বলছেন। নিয়ম অনুযায়ী তিনমাস পরে আপনারা পুনরায় নির্বাচনের সুযোগ পাবেন। তখন দায়িত্ব সামলানোর জন্য সঠিক লোকজনকে চিহ্নিত করুন, নির্বাচনে জয়ী করুন’- এই ছিল ইলিচের কথা।

লেনিন বুঝেছিলেন এরা তাঁর সামনে বসে কথা বলার সুযোগ পেলেও সারা দেশে বিভিন্ন কারণে অনেকেই নানা সমস্যার মুখোমুখি হবেন। তাদের সকলে নির্দিষ্ট দপ্তরে চিঠি লিখে অভিযোগ নথিভুক্ত করতে পারবেন না, তাই সিদ্ধান্ত নিলেন একটি ‘রিশেপসন সেন্টার’ চালু করতে হবে। দপ্তরের পাশপাশি সেখানে একটি বড় ঘরের বন্দোবস্ত থাকবে যাতে দূর থেকে এসে উপস্থিত হওয়া মানুষজন বিশ্রাম নিতে পারেন। ঐ দপ্তরে কর্মরতদের একাংশের অন্যতম কাজই হবে লোকজনের অভাব-অভিযোগ শুনে সেসব গুছিয়ে লেখা বা লিখতে সহায়তা করা। মখোভা স্ট্রীটের নতুন অফিসে সে কাজেই কমরেড ব্রুয়েভিচ (ভি ডি বঞ্চ-ব্রুয়েভিচ) বদলী হয়ে আসেন।

সেই দপ্তরের কাজের প্রতি লেনিন রীতিমত নজরদারি চালাতেন। মজা করে বলতেন- ‘অ্যাডমিনিসট্রেটিভ অফিসে কাজকর্মের অবস্থাটি একটা দেখার মতো ব্যাপার! দিনরাত এক করে কমিশারেরা দেশের মানুষের যাবতীয় সমস্যার সমাধান খুঁজে চলেছেন!’

নিজের স্মৃতিতে কমরেড ব্রুয়েভিচ লিখেছেন- ‘আমাদের কাজের চাপ প্রসঙ্গে ইলিচ প্রায়শই রীতিমত মস্করা করতেন। বিভিন্ন পরামর্শের মধ্যে তিনি বিশেষভাবে জোর দিতেন যিনি বা যারা দপ্তরে অভিযোগ জানাতে আসছেন তারা যেন মন খুলে নিজেদের সমস্যার কথা বলতে পারেন। আরও বলতেন- এই তো সেদিন আমরা বিপ্লবে বিজয় অর্জন করলাম। এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের লোকজন বেশ আমলা গোছের মনোভাব নিয়ে কাজ করছে দেখা যাচ্ছে! নিজেদের অভাব-অভিযোগ জানাতে এসে এদের আমলা সুলভ মনোভাব দেখে অনেকেই বিরক্ত হচ্ছেন। কোন আইনে দেশের নাগরিক নিজেদের জন্য জরুরী, ন্যায্য দাবী পেশ করতে পারে না? আমাদের গড়ে তোলা যাবতীয় সরকারী বন্দোবস্ত তো সে জন্যই। রাশিয়ায় বুর্জোয়ারা পরাস্থ হয়েছে, এতদিন যারা শোষিত হয়েছে, নিপীড়িত হয়েছে তাদের জীবনমানের উন্নতিসাধনই তো আমাদের লক্ষ্য। আমরা সে কাজে সফল হচ্ছি কি না এবারই তো সেই পরীক্ষা দেওয়ার সময়! কিন্তু আমি বলছি, বিভিন্ন দপ্তরে ব্যাপারটা যেভাবে চলছে তা একেবারেই সঠিক নয়। এসবের বিরুদ্ধেও আমাদের সর্বশক্তি দিয়েই সংগ্রাম চালাতে হবে।’

চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসেও ইলিচ লেনিনই ছিলেন, কখনো শুধু চেয়ারম্যান বনে যাননি।

পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় গৃহীত সংস্কারের সাথে সর্বহারা বিপ্লব ও বিপ্লবীর সেটাই ফারাক।

একটি ব্যবস্থায় ধরে নেওয়া হয় সব সমস্যা মিটে গেছে, আরেকটিতে কোনোকিছুই ধরে নেওয়া চলে না।

প্রতিদিন সামনে এগোনোর কাজ, আরও এগোনোর কাজ চালিয়ে যেতে হয়।

তথ্যসুত্রঃ

১) রেমিনিসেন্সেস অফ লেনিন; নাঝেদজা ক্রুপস্কায়া; প্রোগ্রেস পাবলিশার্স

২) দ্য আদার লেনিন, নট বাই পলিটিক্স অ্যালোন; সম্পাদনা- তামারা ডয়েটসার; লরেন্স হিল অ্যান্ড কো

৩) লাইফ অ্যান্ড ডেথ অফ লেনিন; রবার্ট পেইন; গ্রাফটন বুকস

৪) দ্য লাইফ অফ লেনিন; ল্যুইস ফিশার; ফিনিক্স প্রেস

ব্যবহৃত ছবিঃ

১) সাদা কালো ছবি- ক্রেমলিনে চেয়ারম্যান অফ পিপল’স কমিশারের সেই ঘরে বসে লেনিন, সংগৃহীত

২) রঙিন ছবি- কৃষক প্রতিনিধিদের সাথে লেনিন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে নির্মিত

Spread the word

Leave a Reply