দেশে ক্রমেই বাড়ছে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক, ইতিমধ্যেই আক্রান্ত ২৩৫৮ জন, মৃত্যু ৭৩ ছাড়িয়েছে। শেষ চারদিনের আক্রান্তের সংখ্যা হাজার টপকে গেছে। আতঙ্ক গ্রস্থ গোটা দেশ। এই পরিস্থিতিতে সামনে আসছে সেফটি গিয়ারের অভাব, যার ফলে দেশের হাজার হাজার স্বাস্থ্য কর্মীর জীবন বিপন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা, প্রতিদিনই গোটা দেশে বিক্ষোভে সামিল হচ্ছেন চিকিৎসক, চিকিৎসা কর্মীরা। বিশেষ সূত্রে জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার PPE অর্ডার দিতে বেশ কয়েক সপ্তাহ বিলম্ব করে।
লকডাউনের পরে কেন্দ্রীয় সরকারের করা প্রথম অর্ডার কে কেন্দ্র করে সংশয় তৈরি হয়। যে যে সংস্থাগুলি এই Protective Giyar তৈরি ও সরবরাহ করে , সূত্রে জানা যাচ্ছে তারা জানিয়েছেন, মাস খানেকের আগে তারা অর্ডার সাপ্লাই করতে পারবে না। এরফলে সমস্যা বেড়েছে, এমতাবস্থায় প্রায় পুরো অর্ডারটাই ঘরোয়া নির্মাতাদের উপর দিয়ে দেওয়া হয়েছে, এবং তাদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
২৩ মার্চ সরকার একটি টেন্ডার এ upload করে, তাতে সেফটি গিয়ার সংক্রান্ত বিষয়টি পরিষ্কার হয়।
কেন্দ্র-রাজ্য সরকারকে সেফটি গিয়ার সরবরাহের অন্যতম মুখ্যসংস্থা HLL লাইফ কেয়ার ( স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ সরকারী সংস্থা) তাদের Website এ upload করে সেই টেন্ডারের বিবরণ। চূড়ান্ত টেন্ডার তালিকায় দেখা যাচ্ছে , সরকারের প্রয়োজন
১) ১০লক্ষ কভার অলস
২) ১০ লক্ষ প্রটেক্টিভ গগলস ৩) ৪০ লক্ষ N-95 মাস্ক
৪) ২ কোটি ত্রিস্তরীয় সার্জিক্যাল মাস্ক
৫) ২০ লক্ষ গ্লাভস
৬) ১০ লক্ষ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
২৩ মার্চ দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানায় February থেকে তারা সেফটি গিয়ার নির্মাতাদের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছে, পরেরদিন সমান পরিমান সেফটি গিয়ার চেয়ে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক এর পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী টেন্ডার আপলোড করা হয়। ৩০ মার্চ এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয় ১১ টি ভারতীয় সংস্থার সাথে , ২১ লক্ষ কভার অলের জন্য চুক্তি করা হয়েছে, পরে আরো একটি সংস্থার সাথে ৫ লক্ষ কভার অলের জন্য চুক্তি হয়েছে বলে জানানো হয়। ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর থেকেও ৩০ লক্ষ কভার অল আমদানি করতে হবে।
অদ্ভুত হলো বিবৃতিতে কোনো সংস্থার নাম বলা হয়নি,বা অর্ডার করা মাল কবে ডেলিভারী হবে , সেকথাও উল্লেখ করা হয়নি।পরিশেষে জানা যাচ্ছে সম্পূর্ণ চাহিদা মেটাতে ১৭৩ দিন লাগবে।
একদিকে দেশে যখন সেফটি গিয়ারের বিপুল চাহিদা, অন্যদিকে রাষ্ট্রসংঘ থেকে ফাঁস হয়ে যাওয়া তথ্য জানাচ্ছে দেশের সরকার দু- দু বার এরইমধ্যে সার্বিয়াকে সেফটি গিয়ার রপ্তানি করেছে।
গোটা দেশের সাথে সাথে আমাদের রাজ্যেও করোনা মোকাবিলায় বিপুল পরিমাণে সেফটি গিয়ারের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
জেলায় জেলায় বিক্ষোভে সামিল হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সবথেকে উদ্বেগের ঘটনা এই বিক্ষোভ মেটাতে সরকার সহানুভূতি সহকারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার বদলে , স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষা অনিশ্চিত, সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করার জন্য বিশিষ্ট অঙ্কোলজিস্ট ইন্দ্রনীল খান কে পুলিশি হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়েছে। ডাক্তার বাবুর পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশিষ্ট ডাক্তার ও সমাজসেবী ও সচেতন মানুষেরা। তীব্র প্রতিবাদ করা হয়েছে আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে।
দেশের সরকারের অপদার্থতা ,গাফিলতির জন্য ভুগতে হচ্ছে হাজার হাজার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের। ইতিমধ্যেই ৫০ জনের বেশি স্বাস্থ্য কর্মী এই ভাইরাসে আক্রান্ত।
অন্যতম আমাদের রাজ্যের করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র … দক্ষিণ কলকাতার এম আর বাঙুর হাসপাতালে আজ
স্বাস্থ্যকর্মীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন Safety Gear এর জন্য, তারা জানিয়েছেন সরকারের থেকে সুনির্দিষ্ট সুরক্ষা না পেলে, তারা কাজ করবেন না।
সরকারের উচিত হবে, থালা বাজানো, মোমবাতি জ্বালানো এইসব বুজরুকী বন্ধ করে করোনা মোকাবিলায় সেফটি গিয়ার সহ,বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।