তারিখঃ ১০ জুলাই, ২০২০ – কলকাতা
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির বৈঠক শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনের সভাকক্ষে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিমান বসু। সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এই সভা হয়।
সভায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি, করোনা মহামারীজনিত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন-সংগ্রামের পর্যালোচনা হয়। লকডাউনের সময়কালে এবং আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে পার্টির, বামপন্থী দল ও গণসংগঠনসমূহ দাঁড়িয়েছে। রাজ্য কমিটির সদস্যরা জানান, জেলায় জেলায় বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের অসংখ্য কর্মী একটানা এই কাজ করেছেন। সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন বেসরকারী সংগঠনও তাদের সাহায্য করেছেন।
রাজ্য কমিটির সদস্যরা তাঁদের আলোচনায় জানান, রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতা, লকডাউন নিয়ে ছেলেখেলা, লকডাউন জনিত পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে না দাঁড়ানো, ত্রাণের টাকা ও সামগ্রী নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ ফেটে পড়ছে। এলাকায় এলাকায় মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন শাসক দলের নেতা-কর্মীরা। জনগণের জরুরী দাবি নিয়ে বামপন্থীরা এলাকার সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় এই সময়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছে। একের পর এক কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কোথাও কোথাও শাসক দলকে পিছু হঠতে হয়েছে, দাবি মেনে নিতে বাধ্য করা গেছে। পরিচিত মুখের বাইরেও বহু মানুষ এই আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন। বিক্ষোভ জঙ্গী চেহারাও নিয়েছে। এরই মধ্যে সর্বভারতীয় দাবি দিবস পালিত হয়েছে। বামফ্রন্ট, অন্যান্য বাম দল, বাম সহযোগী ও কংগ্রেসের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কয়লা শিল্পে নজিরবিহীন ব্যাপকতায় ধর্মঘট সফল হয়েছে।
রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র বলেন, রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরো তীব্র করতে হবে। বিজেপি যে সুবিধা নেবার চেষ্টা করছে তাকে প্রতিহত করতেই হবে। বামপন্থীদের সম্পর্কে মানুষের আস্থা বাড়ছে, তাকে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক চেহারা দিতে হবে। আন্দোলনের কর্মসূচিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করে তৃণমূলের বিকল্প যে বিজেপি নয়, তা বাস্তবের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত করাই হবে এই সময়ের মুখ্য কাজ। আন্দোলন করতে হবে বৈজ্ঞানিক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই। আন্দোলনের নতুন উন্নততর রূপের উদ্ভাবনের দিকেও নজর দিতে হবে। গ্রামের মধ্যে, শহরের ওয়ার্ডে, স্থানীয় স্তরে এই আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তরুণ প্রজন্ম, পরিযায়ী শ্রমিক, গরিব মানুষের যে অংশের সঙ্গে এই সময়পর্বে যোগাযোগ ঘটেছে, তাদের সাংগঠনিক ভাবে সংহত করার কাজকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এদিন রাজ্য কমিটির বৈঠক উপলক্ষে উপস্থিত সমস্ত রাজ্য কমিটির সদস্যদের অ্যান্টিবডি পরীক্ষার জন্য রক্ত নেওয়া হয়।