Covid-19 Vaccine by 15 August- Reality or another Jumla ?

একটি ওয়েব ডেস্ক প্রতিবেদন

রাজনাথ সিং-এর বদলে তিনি লাদাখে হাজির। মিডিয়া তোলপাড় – আহা কী তৎপর প্রধানমন্ত্রী ! এরই মাঝে আরেক ঘোষণা – ১৫ অগাস্ট লাল কেল্লা থেকে তার ভাষণের সাথে সাথে ভারতে তৈরি করোনা ভ্যাকসিন বাজারে চলে আসবে ! অন্তত মিডিয়ার রিপোর্ট , খবরের চ্যানেলগুলোর নাটুকে ‘সাংবাদিক’ দের উচ্চস্বরের ঘোষণায় আমরা সবাই তেমনটাই বিশ্বাস করে ফেলেছি। তাবড় দেশের বিজ্ঞানীরা যে ভ্যাকসিনের সন্ধানে লেগে থেকে বলছে অন্তত আরো ৬ মাস লাগবে ভ্যাকসিন আসতে সেখানে ভারত নাকি ১৫ অগাস্টের মধ্যে ভ্যাকসিন বানিয়ে ফেলবে ! একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে এই ধরণের দাবির সাথে বিজ্ঞানের যোগ ততটাই যতটা ২০০০ টাকার নোটে থাকা ‘চিপ’ এর ছিল।

হায়দরাবাদের সংস্থা ভারত বায়োটেক ইন্ডিয়া লিমিটেড (BBIL)-র সঙ্গে যৌথভাবে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ‘কোভ্যাকসিন’ (Covaxin) নামক টিকার পরীক্ষানিরীক্ষা ‘ত্বরান্বিত’ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR)। কাউন্সিলের প্রধান ডাঃ বলরাম ভার্গব ২ জুলাই, সমস্ত পরীক্ষাকেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানান, আগামী ১৫ অগাস্টের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে এই ভ্যাকসিনের সমস্ত চিকিৎসা-সম্বন্ধীয় পরীক্ষা, যাতে সেদিনই এটির “পাবলিক লঞ্চ” অর্থাৎ প্রকাশ্য উদ্বোধন করা যায়।

তবে ‘বায়োএথিকস’ অথবা ‘জীবনীতিশাস্ত্র’ বিশারদরা এই সময়সীমা সম্পর্কে সন্দিহান।ইতিমধ্যেই ভাইরোলজিস্ট থেকে ভ্যাকসিন তৈরির সাথে যুক্ত বিজ্ঞানীরা এই দাবিকে অবাস্তব বলে সমালোচনা করেছেন। তাঁদের মূল প্রশ্ন, যেখানে এখনও মানবদেহে শুরুই হতে পারল না এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ যাকে বলা হয় Human Trial, সেখানে একমাসের মধ্যে কীভাবে সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা বিচার করতে তিন তিনটি ধাপ পেরোনো সম্ভব হবে ? বিশেষ করে যেখানে আন্তর্জাতিক স্তরে যেখানে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে ভ্যাকসিন পরীক্ষার কাজ সেই অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বছর শেষের আগে তাদের ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়তে পারবে না বলে জানিয়েছে।

যেকোন ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে তাকে মোটামুটি ৬টি ধাপ পেরোতে হয়।

  • Exploratory Stage বা অনুসন্ধানী পর্যায় যেখানে ভ্যাকসিন তৈরির উপযুক্ত জৈবিক উপাদানের সন্ধান করা হয় (এক্ষেত্রে SARSCoV2 বা নভেল করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে অনাক্রম্যতা অর্জনের উপযোগী কোন উপাদান যেমন নভেল করোনা ভাইরাসের মৃত/নিষ্ক্রিয় দেহাবশেষ )
  • Pre-clinical stage এই পর্যায়ে গিনিপিগ, ইঁদুর, বাঁদর এর দেহে ভ্যাকসিনটির প্রভাব লক্ষ্য করা হয়
  • Clinical/Human Trial Phase যার মধ্যে ৩টি ধাপে কম থেকে বেশি সংখ্যক মানুষের ওপরে ভ্যাকসিনটির প্রভাব, কতটা মাত্রা (dose) , অনাক্রম্যতার (কতদিন অবধি ভ্যাকসিনটি দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে) মাত্রা ইত্যাদি নির্ধারণ করা হয়।
  • Regulatory review and approval এই পর্যায়ে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া , বয়স, লিঙ্গ ইত্যাদির ভিত্তিতে আগের পর্যায়ে ( Clinical/Human Trial Phase) নির্ধারিত মাত্রার পর্যালোচনা করে দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়
  • Manufacturing বা উৎপাদন যেখানে ভ্যাকসিনটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় লাইসেন্সের ভিত্তিতে
  • Quality control যেখানে দেশের জনসমষ্টির মধ্যে ভ্যাকসিনটির প্রতিক্রিয়া দেখে তাতে ছোটখাটো রদবদল ঘটানো হয়
    এই শেষ ধাপটির আগেই ভ্যাকসিন বাজারজাত হয় বা জনসমষ্টিতে প্রয়োগ শুরু করা হয়। যেকোন ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ৩টি পর্যায়ে বিভক্ত Clinical/Human Trial Phase টিই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘমেয়াদী- অন্তত ৬ মাস থেকে ১ বছর লাগে এই পর্যায় শেষ হতে। বেশিরভাগ সম্ভাব্য ভ্যাকসিনই এই পর্যায়ে খারিজ হয়ে যায়।

এবারে আসা যাক এই ‘কোভ্যাকসিন’ (Covaxin) এর সম্পর্কে জানা খুঁটিনাটিতে

কোভ্যাকসিন কী?

অল্প কথায় বলতে গেলে, কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার ভ্যাকসিন, যা প্রস্তুত করছে ভারত বায়োটেক।

আইসিএমআর-এর অধীনস্থ ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ভাইরোলজি (NIV)-র সঙ্গে যৌথভাবে প্রস্তুত হচ্ছে এই ভ্যাকসিন। কোনও এক উপসর্গ বিহীন করোনা রোগীর দেহ থেকে সংগৃহীত নভেল করোনাভাইরাসের একটি স্ট্রেইন পৃথক করে নিয়ে মে মাসের গোড়ার দিকে বিবিআইএল-এর কাছে পাঠিয়ে দেয় এনআইভি। এই স্ট্রেইন ব্যবহার করে হায়দরাবাদে তাদের অতি সুরক্ষিত গবেষণাগারে একটি “নিষ্ক্রিয়” ভ্যাকসিন – অর্থাৎ যা মৃত ভাইরাস থেকে তৈরি – প্রস্তুত করে বিবিআইএল।

সংস্থার তরফে জানানো হয়, “মানবদেহে প্রবেশ করানোর পর সংক্রমণ বা বৃদ্ধির ক্ষমতা থাকে না এই ভ্যাকসিনের, যেহেতু এটি মৃত ভাইরাস। দেহের ইমিউন সিস্টেমের কাছে এটি মৃত ভাইরাস হিসেবেই গণ্য হয়, তবে ভাইরাস-প্রতিরোধে সক্রিয় হয়ে ওঠে অ্যান্টিবডি।” সঙ্গে আরও জানানো হয় যে নিষ্ক্রিয় ভাইরাসের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার রেকর্ড সাধারণভাবে প্রমাণিত।

কবে কোভ্যাকসিন বাজারে ছাড়তে চায় আইসিএমআর?

আগামী ১৫ অগাস্টের মধ্যেই জনগণের ব্যবহারের জন্য এই ভ্যাকসিন সর্বসমক্ষে আনতে চায় আইসিএমআর, যে কারণে সমস্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও পরীক্ষাকেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছেন ডাঃ বলরাম ভার্গব। চিঠিতে তিনি যা লিখেছেন তার মর্মার্থ, “সমস্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করে ১৫ অগাস্ট, ২০২০-র মধ্যে জনস্বাস্থ্যের খাতিরে এই ভ্যাকসিন লঞ্চ করার কথা ভাবা হয়েছে। সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করতে পুরোদমে এগোচ্ছে বিবিআইএল, যদিও সম্পূর্ণ ফলাফল নির্ভর করবে সমস্ত পরীক্ষাকেন্দ্রের সহযোগিতার ওপর।”

তিনি আরও লিখেছেন, “এটি ভারতে প্রস্তুত প্রথম দেশজ ভ্যাকসিন, এবং সরকারের উচ্চতম স্তরে এই  প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এর ওপর নজর রাখা হয়েছে।” সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, কোনোরকম অসহযোগিতা হলে তাকে “গুরুত্ব” সহকারে নেওয়া হবে।

বর্তমানে পরীক্ষার কোন স্তরে রয়েছে কোভ্যাকসিন?

ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল, যার আওতায় পড়ে কেন্দ্রীয় ঔষধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO), এখন পর্যন্ত বিবিআইএল-কে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্তরের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল-এর অনুমোদন দিয়েছে।

১ জুলাই এই দুই স্তরের ট্রায়ালের জন্য তাদের ভ্যাকসিন নথিভুক্ত করে বিবিআইএল। ভারতের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রি-র খাতায় ট্রায়ালের বিশদ পড়লে জানা যায়, এই দুই ধাপে মোট ১,১২৫ জনের ওপর প্রয়োগ করা হবে এই ভ্যাকসিন, এবং ১৩ জুলাই শুরু হবে ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের তালিকা গঠন।এইমস সহ ১২টি হাসপাতালকে এক্ষেত্রে নথিভূক্ত করা হয়েছে।

রেজিস্ট্রির নথি অনুযায়ী, বিবিআইএল মনে করছে, ট্রায়ালের এই দুই ধাপ সারতে সময় লাগবে এক বছর তিন মাস। স্রেফ প্রথম ধাপের ট্রায়ালেই সময় লাগবে অন্তত এক মাস। মনে করা হচ্ছে, পরীক্ষানিরীক্ষার ২৮ দিনের মাথায় CDSCO-র কাছে ট্রায়ালের প্রথম ধাপের অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দেবে বিবিআইএল।

“শেষমেশ লক্ষ্য হলো একটি নিরাপদ, সর্বজনগ্রাহ্য, ইমিউনোজেনিক ইন্ট্রামাসকুলার ভ্যাকসিন নির্বাচন করা, যার পরবর্তী মূল্যায়ন করা হবে দ্বিতীয় ধাপের গবেষণায়,” বলা হয়েছে রেজিস্ট্রিতে।

অথচ এর মধ্যেই আইসিএমআর এর প্রধান বলরাম ভার্গব রীতিমত ধমকের সুরে বিভিন্ন গবেষণাগার ও হাসপাতালকে বলেছেন ১৫ অগাস্টের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্য ধার্য করতে ! ৭ জুলাই থেকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হলে তার ১মাস ৮ দিনের মাথায় কাজ শেষ করার লক্ষ্য রাখতে হবে ! যা আদৌ বাস্তবসম্মত বা বিজ্ঞানভিত্তিক নয়।

অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই দেড় মাসের মধ্যে তিনটি ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন করার ব্যাপারে সন্দিহান। বায়োএথিকস অ্যান্ড হেলথ পলিসি-র গ্লোবাল হেলথ বিভাগের গবেষক ডাঃ অনন্ত ভান বলছেন, “এমনটা হলে খুবই অবাক হব। দুনিয়ার সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্থাগুলো, যাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষানিরীক্ষা আরও অনেকটা এগিয়েছে, তারাও আরও অনেক বেশি সময় হাতে রেখেছে। এখানে সবেমাত্র প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু হচ্ছে, সুতরাং সম্ভাবনা কম বলেই বোধ হয়।” ডাঃ ভান আরও বলছেন, নিষ্ক্রিয় ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও এই সময়সীমা বিপজ্জনক রকমের উচ্চাকাঙ্ক্ষী।

তাঁর কথায়, “এটা ধরে নেওয়া যে প্রথম দুই ধাপের পর এমন তথ্য পাওয়া যাবে, যার ভিত্তিতে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু করা যাবে, এবং ১৫ অগাস্টের মধ্যে সব ট্রায়াল শেষ করে ভ্যাকসিনটিকে প্রকাশ্যে আনা যাবে, আইসিএমআর-এর কাছ থেকে এটা অপ্রত্যাশিত।” তিনি আরও বলেন, “১৫ অগাস্টের মধ্যে নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা সংক্রান্ত তথ্য সমেত সব ট্রায়ালের ফলাফল হাতে আসাই দুষ্কর। এখানে অজস্র প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।”

বর্তমানে পৃথিবী জুড়ে একশোচল্লিশটিরও বেশি কোভিড ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চলছে বিভিন্ন স্তরে। ইতিমধ্যেই তৃতীয় ধাপে পৌঁছে গিয়েছে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা-অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন, তবে সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক চললেও বছর গড়িয়ে যাবে ভ্যাকসিন আসতে ।

জার্মানির বায়োএনটেক-এর সহযোগিতায় ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে কম এবং মাঝারি ডোজ়ে মানবদেহে ভ্যাকসিন প্রয়গের কাজ শুরু করেছে ফাইজার। ফাইজার-এর আন্তর্জাতিক গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রেসিডেন্ট মিকায়েল ডোলস্টেন সম্প্রতি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ধাপের আরও একটি পর্যায়, অথবা তৃতীয় ধাপের জন্য চলতি মাসে কাজ শুরু হবে, যার জন্য প্রয়োজনীয় রোগী সংগ্রহ করা হবে অগাস্টের শেষ বা সেপ্টেম্বরের শুরুর মধ্যে। অক্টোবরের শেষাশেষি ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে পারে ফাইজার। এক্ষেত্রেও বছর শেষের আগে কোনও ভ্যাকসিন আশা করা যাচ্ছে না।

গত ৩০ জুন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের উদ্দেশে একটি ২৪ পাতার নির্দেশিকা জারি করে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। এই নির্দেশিকায় কোনও সময়সীমার উল্লেখ নেই, তবে এক বিশ্লেষকের মতে, সংশোধিত নির্দেশিকা জারি করার অর্থ হলো আগামী বছরের আগে কোনও ভ্যাকসিন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

আরেক মার্কিন জৈব গবেষণা সংস্থা মডার্না জানিয়েছে ৩০,০০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় ধাপ শুরু করার কথা ছিল ৯ জুলাই থেকে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি জানানো হয়েছে ৯ জুলাই এই কাজ তারা শুরু করতে পারছে না বিভিন্ন প্রযুক্তিগত খুঁটিনাটি আরো নিখুঁত করার লক্ষ্যকে বজার রাখার জন্য। সংস্থার সিইও স্টিফেন ব্যানসেল CNBC কে জানিয়েছেন তারা এনআইএইচ এর সহযোগিতায় শীঘ্রই তৃতীয় পর্যায়ের মানব দেহের ট্রায়াল শুরু করবেন । তাদের লক্ষ্য ছিল থ্যাঙ্কসগিভিং (২৬ নভেম্বর ২০২০) এর মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে আসা এখন তারা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেই লক্ষ্যপূরণের জন্য চেষ্টা করছেন।

এসভিবি লেয়ারিঙ্ক সংস্থার বিশ্লেষক জেফরি পোর্জেস ১ জুলাই একটি লিখিত বিবৃতিতে বলেন, “এফডিএ যা বলছে, তা থেকে অনুমান করা যায় যে, কোনও ভ্যাকসিন অনুমোদিত হওয়ার আগে প্রয়োজন কয়েক হাজার নিরাপত্তা বিষয়ক খুঁটিনাটি, এবং অন্তত ছ’মাসের পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত কার্যকারিতার নিশ্চয়তা। যেসব প্রস্তুতকারক দাবি করছেন এই বছরের মধ্যেই বাজারে ভ্যাকসিন ছাড়তে পারবেন, তাঁদের দাবির সঙ্গে এই নির্দেশিকার সামঞ্জস্য নেই।”

ভারতে বিবিআইএল ছাড়াও শুক্রবার জাইডাস-ক্যাডিলা সংস্থা ঘোষণা করে যে তারা এবারে মানবদেহে ভ্যাকসিন পরীক্ষা করার অনুমতি পেয়েছে CDSCO-র থেকে। চলতি মাসেই তাদেরও ট্রায়াল শুরু হবে বলে জানিয়েছে তারা।

বিজ্ঞানের নিজস্ব পরীক্ষিত ও যুক্তিনির্ভর পদ্ধতিকে অস্বীকার করে আইসিএমআর প্রধান ডাঃ বলরাম ভার্গব যে দাবি করছেন ও বিভিন্ন গবেষণাগার ও হাসপাতালকে রীতিমত হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তা থেকে এটা স্পষ্ট যে এর পেছনে বিজ্ঞান চেতনার থেকেও অনেক বেশি কাজ করছে কেন্দ্রের সরকারের আমলাতান্ত্রিক মানসিকতা যার লক্ষ্য নরেন্দ্র মোদির ইগোকে তোয়াজ করা ও তার ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করার এক প্রয়াস। বিজ্ঞানের নিজস্ব নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ১৫ অগাস্টের মধ্যে ভ্যাকসিন প্রকাশ করা হলে তা হবে এক ভয়ানক হঠকারি ও দেশের মানুষের জন্য ক্ষতিকারক একটা সিদ্ধান্ত। ভারত অবশ্যই নিজস্ব ভ্যাকসিন তৈরি করুক – এ নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারব। এদেশের বিজ্ঞানপ্রজ্ঞা বিশ্ব দরবারে সমাদৃত হয়ে এসেছে। কিন্তু বিজ্ঞানের নিজস্ব নিয়ম মেনেই চলুক সেই কাজ , কোন জুমলা ভারতবাসী চায় না।

Spread the word

Leave a Reply