১১ অগাস্ট, ২০২৩- শুক্রবার
ভারতে আদালতের স্বাতন্ত্র দেশের সংবিধান নির্দেশিত অধিকার। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অমান্য করতে মোদী সরকার যেরকম তৎপরতা দেখাচ্ছে তা সেই অধিকারকে হরণ করার সমান। সরকারের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করছে পলিট ব্যুরো।
সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ সম্প্রতি একটি রায় ঘোষণা করেছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনার যে কমিটি দ্বারা নিযুক্ত হবেন, প্রধানমন্ত্রী, লোকসভায় বিরোধী পক্ষের নেতা ও দেশের প্রধান বিচারপতিকে নিয়েই সেই কমিটি গড়ে তোলা হবে। এই ছিল সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়। মোদী সরকার নতুন আইন প্রণয়ন করেছে যার জোরে ঐ কমিটিতে দেশের প্রধান বিচারপতির বদলে ‘প্রধানমন্ত্রী দ্বারা মনোনীত একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী’কে নিযুক্ত করা হবে। এমন ঘটলে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের সিদ্ধান্তে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সরকার পক্ষের মতামতই সর্বদা জয়ী হবে। নির্বাচন কমিশনকে সতত পক্ষপাতহীন অবস্থান বজায় রেখেই চলতে হয়, এমন আইনের জোরে সেই নিরপেক্ষতা ধ্বংস হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যেই দেশের সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ থাকার অধিকার দেওয়া হয়েছিল, সরকারী সিদ্ধান্তের প্রভাব ও চাপ থেকে মুক্ত রাখা হয়েছিল।
সম্প্রতি দিল্লীর রাজ্য সরকারের অধিকার প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ যে রায় দেয় তাকেও একই কায়দায় অকেজো করে দেওয়া হয়েছিল। মোদী সরকার সেই রায়কে অগ্রাহ্য করতে প্রথমে একটি অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) জারী করে, পরে সংসদে তাকেই আইন হিসাবে পাশ করিয়ে নেয়।
দেশের যাবতীয় স্বাধীন ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানকেই ঘৃণ্য কায়দায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে মোদী সরকার। সংশ্লিষ্ট বিলটি সংসদে পেশ করা হলে সিপিআই(এম) সর্বতোভাবে তার বিরোধিতা করবে। এই জঘন্য আইনের বিরোধিতায় দেশের সংবিধানকে সুরক্ষিত রাখা ও তাকে উর্ধে তুলে ধরার কর্তব্যে অবিচল সমস্ত রাজনৈতিক দলকেই আহ্বান জানাচ্ছে পলিট ব্যুরো।