The Central Govt. increased tax on oil

March 16, 2020

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও কোন ও সুরাহা হলনা দেশবাসীর, কারণ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীও সরকার পেট্রোল ও ডিজেলের উপর বিপুল পরিমানে কর চাপালো ।ডিজেলে ও পেট্রোলে লিটারে ৩টাকা হারে অন্তঃশুল্ক চাপানো হল। প্রথম মোদী সরকারের জামানায় ১৪ বার তেলের দাম বেড়েছিল। আর ১৪ বারই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও কেন্দ্র অতিরিক্ত শুল্ক বসিয়ে মানুষের দাম কমার সুরাহা থেকে বঞ্ছিত করেছিল।২০১৪ সালে ডিজেলে লিটারে শুল্ক ছিল ৩.৫৬ টাকা  এবং পেট্রোলে তা  ৯.৪৮ টাকা। ২০১৪-১৫ সাল থেকে  ২০১৮-১৯ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রের পেট্রোপণ্যে শুল্ক, সেস ভ্যাট বাবদ আয়ের অঙ্ক দেখলে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।  এই পাঁচ বছরে এতে কেন্দ্রের আয় হয়েছে যথাক্রমে ১লক্ষ ৭২হাজার কোটি টাকা, ২লক্ষ ৫৪ হাজার কোটি টাকা, ৩লক্ষ ৩৩হাজার কোটি টাকা, ৩লক্ষ ৪৮ হাজার কোটি টাকা , ৩লক্ষ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এই সময়ে ১৪ বার শুল্ক বাড়িয়েছে মোদী সরকার।শুল্কের হার বেড়ে এখন ডিজেলে তা হয়েছে ১৮.৩৩টাকা এবং পেট্রোলে ২২.৯৮ টাকা। ১৪/০৩/২০ শুল্ক চাপানোর পরে সরকারের বার্ষিক রাজস্ব আদায় বাড়বে ৩৯ হাজার কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বর্ষের বাকি তিন সপ্তাহে সরকারের আয় হবে ২ হাজার কোটি টাকা।

জানুয়ারি থেকে মার্চ লিটারে যেটুকু দাম কমেছে সবটাই আবার বেড়ে গেল শুল্ক চাপানোর ফলে ৩টাকা হারে শুল্ক চাপার পর পেট্রোলের ও ডিজেলে দাম লিটার পিছু…

Stateপেট্রলডিজেল
কলকাতা৭২.৫৭ টাকা৬৪.৯১ টাকা
দিল্লি৬৯.৮৭ টাকা৬২.৫৮ টাকা
মুম্বাই৭৫.৫৭ টাকা৬৫.৫১ টাকা
চেন্নাই৭২.৫৭ টাকা৬৬.০২ টাকা

এদিন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো বিবৃতিতে পেট্রোপণ্যে শুল্ক চাপানোর বিরোধিতা করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে বর্তমানে পেট্রোল ও ডিজেলে লিটারপিছু মোট শুল্ক চেপেছে যথাক্রমে ২২.৯৮ টাকা ও ১৮.৮৩ টাকা। একই সঙ্গে পেট্রোল-ডিজেলে রোড সেস লিটার পিছু ১টাকা করে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০ টাকা। কেন্দ্রের তরফে পেট্রোল ডিজেলে প্রশাসনিক দাম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম পড়লে তার সুবিধা পাবেন সাধারণ মানুষ। নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়ায় দেশের বাজারেও তেলের দাম কমার ফলে স্বস্তি পাবেন মানুষ। কিন্তু ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই দাম কমেনি। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত পেট্রোলে শুল্ক বৃদ্ধি হয়েছে ১৪২ শতাংশ এবং ডিজেলে বেড়েছে ৪২৯ শতাংশ হারে। বিবৃতিতে দেশের অর্থনীতির সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বর্তমানে  মন্দা চলছে দেশজুড়ে। তার মধ্যে করোনা ভাইরাসের সমস্যা এই সঙ্কটের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সময়ে প্রয়োজন ছিল বিশ্বের বাজারে পেট্রো পণ্যের দাম কমার সুবিধা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। দেশে মূল্যবৃদ্ধি চরমে উঠেছে। প্রতিদিন নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুর দাম বাড়ছে। যে কোনও সরকারের কাছে মানুষ আশা করে এই সময়ে দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা তারা ভাবছে না, তারা কর্পোরেট স্বার্থ ভাবছে। তাদের স্বার্থে চলছে কেন্দ্র। এই মূল্যবৃদ্ধি অপরাধ। পলিট ব্যুরো বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে পেট্রোপণ্যের দাম আন্তর্জাতিক দরের সঙ্গে মিল রেখেই ৩০শতাংশ হারে কমানোর দাবি জানিয়েছে।

নয়া উদারবাদের জমানায় পেট্রোপণ্যে ভরতুকি প্রতিদিন কমানো হয়েছে। ১৫ বছর আগে যে টাকা পেট্রোপণ্যে ভরতুকি দেওয়া হয়েছে তার থেকেও বেশি টাকা তোলা হচ্ছে কর চাপিয়ে। ২০০৪-০৫ থেকে ২০১৮-১৯ এই সময়ে পেট্রো পণ্যে ভরতুকি দেওয়া হয়েছে মোট ১০.৯৯লক্ষ কোটি টাকা। কর বাবদ শুধু কেন্দ্রের আয় হয়েছে আনুমানিক ১২লক্ষ কোটি টাকার উপর। তবু মোদী সরকারে আয়ে ঘাটতি আর কমছে না। ফলে পেট্রোপণ্যে ভরতুকিও কমাতে হচ্ছে বারে বারে।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দ্বিতীয় মোদী সরকারের বাজেট পেশের সময়ে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করলেও পরিস্থিতি আদৌ ঘুরে দাঁড়ায়নি। সঙ্কট তীব্র হয়েছে। বাজেটে আয় সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা হয়েছে সেই মতো অর্থ সংগ্রহ হয়নি। ঘাটতি রয়েছে প্রচুর। সেই ঘাটতি মেটাতে পেট্রোল ডিজেলের শুল্ক চাপিয়ে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেন অর্থমন্ত্রী।   

মোদী সারকারের জামানায় বার বার প্রত্যক্ষ হচ্ছে  পেট্রোপণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে দেশের বাজারে তা বাড়ানো হয় তবে বিপুল হারে কমলে আর তা কমে না। সেই সময়ে কর বসিয়ে টাকা তোলা হয়।    

  পেট্রোপণ্যে শুল্ক চাপানোর তীব্র বিরোধিতা করেছেন সিপিআই(এম) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি বলেন, যখন আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোপণ্যের দাম কমছে তখন পেট্রোপণ্যে বেশি করে শুল্ক চাপালো মোদী সরকার। জনগণের বিরুদ্ধে এভাবে চরম অপরাধ করেছে কেন্দ্র। মন্দায় অর্থনীতি যখন ধসে পড়েছে তার মধ্যে ফের পেট্রো পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। এদিন সিপিআই(এম) নেতা সূর্য মিশ্র এক বিবৃতিতে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান।         

Spread the word

Leave a Reply