সংযুক্ত কিষান মোর্চা আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিতে চায় যে কৃষকদের আন্দোলন শুধুমাত্র তিনটি কালো আইন বাতিলের জন্য নয়, বরং সমস্ত কৃষি পণ্যে উপযুক্ত সহায়ক মূল্যের একটি বিধিবদ্ধ আইনের দাবীতে সংগঠিত হয়েছে, এই লরাই দেশের প্রত্যেক কৃষকের। কৃষকদের এই গুরুত্বপূর্ণ দাবি এখনো আদায় হওয়া বাকি রয়েছে। বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল প্রত্যাহারও আমাদের অন্যতম দাবী। আগামী দিনে সেই লক্ষ্যে প্রতিটি পরিস্থিতির প্রতি নজর রাখবে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। সংযুক্ত কিষান মোর্চা দ্রুত নিজেদের সহযোগী সংগঠনগুলিকে সাথে নিয়ে সাধারন সভায় মিলিত হবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ঘোষণা জানাবে।
Campaigns & Struggle
Farmers’ Struggle: Salute Historic Victory
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র পলিট ব্যুরো জয়ের লক্ষ্যে কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ সংকল্পকে স্বাগত জানাচ্ছে। তিন কৃষি আইন বাতিল প্রসঙ্গে দেশের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্বাসে সন্তুষ্ট না হয়ে তারা জানিয়েছেন কালা আইন বাতিলের প্রকৃত কার্যক্রম সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই তারা নিজেদের গ্রামে ফিরে জাবেন – লড়াইয়ের ভবিষ্যৎ রাস্তা নির্ণয়ে সংযুক্ত কিষান মোর্চার এহেন রণকৌশলের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করছে পলিট ব্যুরো
Dec.1: Protest Attacks on Minorities
হামলার লক্ষ্য হিসাবে সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের সদস্যদের টার্গেট করা হয়েছে। ‘গোরক্ষা’ এবং ‘লাভ জিহাদ’-এর নামে গণপিটুনি, পুলিশ হত্যা, মিথ্যা গ্রেপ্তারের ঘটনা একের পর এক হয়ে চলছে। উদাহরন হিসাবে বলা যায় সম্প্রতি এমন ঘটনা ত্রিপুরায় ঘটেছে, ভিএইচপি (বিশ্ব হিন্দু পরিষদ)-র গুণ্ডারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালিয়েছে, কিছু মসজিদে ভাঙচুরও করা হয়েছে। সাংবাদিক, যারা এই হামলার রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন তাদেরই বিরুদ্ধে UAPA-ধারায় মামলা করা হয়েছে।
P.B Press Communique
কেন্দ্রীয় সরকার শুল্ক বাবদ সেই আয় থেকেই সামান্য কিছু হ্রাস করেছে যার আদায় রাজ্যগুলির সাথে যৌথ তালিকাভুক্ত। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার এখনও অতিরিক্ত বিশেষ শুল্ক (সারচার্জ) আদায় করে চলেছে যার পরিমাণ ৭৪,৩৫০ কোটি টাকা; এবং অতিরিক্ত শুল্ক (সেস) বাবদ আদায়ের পরিমাণ ১,৯৮,০০০ কোটি টাকা। এছাড়াও অন্যান্য সেস এবং সারচার্জের পরিমাণ ১৫,১৫০ কোটি টাকার। সব মিলিয়ে মোট ২.৮৭ লক্ষ কোটি টাকার শুল্ক আদায় করছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং এই আদায়ে রাজ্যগুলির কোনও প্রাপ্য নেই।
Some Misconceptions About Agriculture
ন্যুনতম সহায়ক মুল্য হল সেই ব্যবস্থা যার কারনে কেন্দ্রীয় খাদ্যভান্ডারে খুব বেশি প্রভাব না ফেলেই সারা দেশজূড়ে ফসল বিক্রির ক্ষেত্রে কৃষকদের লাভজনক দাম পাওয়ার নিশ্চয়তা বজায় থাকে। ফসলে সহায়ক মূল্য বাড়ানো হলে সরকারী গুদামে চাপ বেশি না বাড়িয়েও কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পায়। ঐ তিনটি রাজ্য (পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তর প্রদেশ) বাদে সারা দেশে নিজেদের গুদাম স্থাপনের কাজে এফসিআই’র অকর্মণ্যতা নিশ্চই রয়েছে। সেই কারনেই কয়েকটি রাজ্য সরকার খাদ্য মজুত করার কাজে নিজস্ব সংস্থাগুলিকে কাজে লাগাতে বাধ্য হয়েছে। যেখানেই রাজ্য সরকারের সংস্থাগুলি সেই কাজ পরিচালনা করেছে, মজুতের কাজে খুব সফল না হলেও এদের কারনেই সেই সব রাজ্যে কৃষকরা লাভজনক আয় করতে পেরেছেন। তাই উচিত হবে গুটিকয়েক রাজ্যে নিজেদের কাজে পরিধিকে সীমাবদ্ধ না রেখে সর্বভারতীয় স্তরে এফসিআইকে আরও সক্রিয় করে তোলা অর্থাৎ কেন্দ্রীয় খাদ্য মজুত প্রক্রিয়াকে আরও বিস্তৃত করা।
Finance Capital And The World Economy
মোদি সরকার নয়া-উদারবাদী পথে চলতে নরকে যেতেও রাজি আছে। অর্থনীতিতে শ্রমজীবীদের কল্যানের উদ্দেশ্যে যেটুকু সংস্থান রয়েছে নির্লজ্জের মত সেইসবকিছু জলাঞ্জলি দিয়ে আন্তর্জাতিক লগ্নী-পুঁজির নির্দেশ পালনেই তাদের একমাত্র আগ্রহ। সরকারি ব্যায়বরাদ্দ এবং রাজস্বঘাটতিকে ক্রমাগত কমিয়ে দেবার পাশাপাশি শ্রমজীবীদের যাবতীয় অধিকারের উপরে একের পর এক আক্রমন নামিয়ে আনছে তারা। এই সরকারের স্পষ্ট অর্থনীতি হল উদ্বৃত্তে ক্রমশ মজুরির অংশ কমিয়ে দিয়ে মুনাফার হার বাড়ানোর কাজে পুঁজিপতিদের সহায়তা যুগিয়ে যাওয়া। শ্রমজীবী জনতার পকেট কেটে আগামিদিনে আরও উচ্চহারে টোল আদায় করবে তারা।
No Relief in Petrol and Diesel Prices
পেট্রোপন্যে কেন্দ্রীয় শুল্ক পেট্রোলের প্রতি লিটারে ৩৩ টাকা এবং ডিজেলের প্রতি লিটারে ৩২ টাকা। সেই কারনে দামের এহেন হ্রাসে সার্বিক অর্থনীতি কিংবা জনগণের উপর অত্যধিক জ্বালানির মূল্যের বোঝা এতে কমে না। কয়েকটি রাজ্যের উপনির্বাচনে বিজেপি’র খারাপ ফলাফলের জন্য এভাবে দাম কমানো হয়েছে, কার্যত এ হল উঠে দাঁড়ানোর আগে হাঁটু ঝাঁকুনি দেবার মতোই তাচ্ছিল্যের বহিঃপ্রকাশ।
The Homogenisation of Education
ভারতীয় সমাজের নির্দিষ্ট সমস্যাসমূহ (যেমন জাতি এবং বর্ণভিত্তিক শোষণ ব্যবস্থা) দেশের জাতীয় পাঠ্যক্রমে গুরুত্ব হারাবে, কারণ বিশ্বায়িত পুঁজির বিকাশে এই ধরনের সমস্যাগুলি প্রাসঙ্গিক নয়। রাজনৈতিক হিন্দুত্বের ধ্বজাধারীরাও এতে হন খুশি কারন এতে তাদের তিলমাত্র শান্তি বিঘ্নিত না হয়েই তলে তলে ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীন "মহাত্ম্য"-এর প্রচার চালানো যায়। এটা কোনো দুর্ঘটনা নয় যে জাতীয় শিক্ষানীতির কোথাও একটিবারের জন্যেও ভারতীয় সমাজের এক ঘৃণ্য বৈশিষ্ট্য হিসাবে, অথবা শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষক নিয়োগ কিংবা পদোন্নতির প্রক্রিয়া সংক্রান্ত নিয়মকানুনে জাতিগত পরিচয়ের কোনো উল্লেখই নেই। এই নীরবতা আসলে ঐ একজাতীকরণেরই অনুসারী পদক্ষেপ।
Restore Inter-State Migrant Workers Act
পূর্বতন পরিযায়ী শ্রমিক আইনের আওতায় একজন পরিযায়ী শ্রমিকের কাজের প্রায় সবটুকু অংশকেই আনা হয়েছিল’, যেমন, তার কর্মনিযুক্তি, নথিভুক্তি, আসা যাওয়ার ভাড়া, কর্মক্ষেত্রে তার বাসস্থানের ব্যবস্থা, মজুরি নির্ধারণ এবং তার নিয়মিত সময়ে প্রদান, ঠিকাদারদের এবং মুখ্য নিয়োগকারী সংস্থার তার প্রতি দায়দায়িত্ব ইত্যাদি। কাজের ক্ষেত্রে মালিকপক্ষের সাথে কোনো রকম সংঘাতের প্রশ্নে শিল্প বিরোধ আইন প্রযোজ্য ছিল এবং সামাজিক নিরাপত্তাসমূহের জন্য শিল্প মজুরি আইন, ইএসআই, ভবিষ্যনিধি প্রকল্প সংক্রান্ত আইনসমূহ প্রযোজ্য ছিল। এই নতুন কোডের আওতায় নিয়ে আসার মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদের যাবতীয় পুর্বোক্ত অধিকার হরণ করা হচ্ছে। সে কারণে কর্পোরেটদের দাসানুদাস বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের এই অমানবিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ১৯৭৯ সালের পরিযায়ী শ্রমিক আইন পুনরায় বহাল করার এবং তাকে আরো শক্তিশালী করার দাবিতে লড়াই চালিয়ে যেতেই হবে।
Don’t Centralise Birth & Death Database
নাগরিকদের জন্ম ও মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধন আইন (১৯৬৯)-এর প্রস্তাবিত সংশোধনীর জোরে কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (NPR) আপডেট করার কাজে সুবিধাপ্রাপ্ত হবে। এই জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (NPR)-এর ভিত্তিতেই নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধন (NRC) প্রস্তুত করতে হবে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সহ এনপিআর (NPR)-এনআরসি (NRC) দেশের জনসাধারণের জন্য কার্যত জনগণের মধ্যে এক বিভাজনমূলক প্রক্রিয়া যাতে দেশের মানুষের অনেকেরই নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হবে।