ভগৎ সিং – আদর্শ সমাজতন্ত্রী, সমাজতন্ত্রীদের আদর্শ – সৃজন ভট্টাচার্য্য …

“মেরি দুলহান তো আজাদি হ্যায়!”

অজয় দেবগণ, ববি দেওল বা সিদ্ধার্থ। সিনেমার ডায়লগ যতই হাততালি কুড়োক, বাস্তব জীবন ছিল তার থেকে ঢের বেশি হিরোইক! আজ শহীদীবরণের নয় দশক পর ফিরে তাকালে মনে হয়, কি অসম্ভব তীক্ষ্ণ এক বিপ্লবী জীবন – জীবন তো নয়, আসলে তীব্র আদর্শের স্ফূরণ, বিদ্রোহের মূর্তিমান স্টেটমেন্ট! যত দিন এগোচ্ছে, দীর্ঘতর হচ্ছে তাঁর ছায়া। জাঁ পল সাঁর্ত্র যেমন একবার বলেছিলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি জিজ্ঞাসা করে, কেমন মানুষ হওয়া উচিৎ, আমি বলব চে গুয়েভারার মতো হও ; এদেশের তরুণ প্রজন্মেরও যদি কখনো অনুরূপ প্রশ্ন জাগে মনে, এই নামটির থেকে জোরালো আইকন বোধহয় এই ২০২০ সালে এসেও খুঁজে পাওয়া কঠিন। ভগৎ সিং। ছোট নাম, ততোধিক ছোট জীবন৷ অথচ, ব্যাপ্তি বিশাল।

সংক্ষিপ্ত জীবনের জীবনী কিন্তু ততটা সংক্ষিপ্ত নয়৷ ১৯০৭ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর অধুনা পাকিস্তানের লায়ালপুরে জন্ম কিষাণ সিং ও বিদ্যাবতীর সন্তান ভগৎ’এর। যেদিন তিনি জন্মাচ্ছেন, সেদিনই ব্রিটিশের জেল থেকে মুক্ত হলেন বাবা এবং দুই কাকা অজিত ও স্বর্ণ সিং। তাঁরা সকলেই ছিলেন গদর পার্টি’র অংশ, পরবর্তীতে অজিত সিং’কে প্রায় চার দশকের জন্য নির্বাসনেও যেতে বাধ্য হতে হয়েছিল। রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বড় হতে থাকা ভগৎ চার বছর বয়সে জানান দিয়েছিল যে সে মাটিতে রাইফেলের গাছ পুঁতবে, এবং সেই গাছ ফলন হওয়া রাইফেল দিয়ে সে ব্রিটিশদের তাড়াবে। মাত্র ১২ বছর বয়সে জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ড ভগতের মনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ততদিনে দেশজোড়া ব্রিটিশবিরোধী লড়াইতে ছাপ ফেলেছে দুটি অত্যন্ত জরুরি ঘটনা। এক, জননেতা মোহনদাস গান্ধীর উত্থান, এবং দুই, রুশ বিপ্লবের প্রভাব। গান্ধীজি আহ্বানে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিল, ১৯২২ সালে চৌরিচৌরার ঘটনার পর আচমকা আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত তাদের অনেককেই হতাশ করল গান্ধীজির পথ ও মত সম্বন্ধে। তাঁর ছত্রছায়ার বাইরে এসে স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্যেকার বিপ্লবী অংশটি বিকল্প রাস্তার খোঁজ করতে লাগল, জন্মভূমি আজাদ করার লক্ষ্য তাদের চোখে – হৃদয়ে প্রেরণা রাশিয়ার অভূতপূর্ব বিপ্লব। ১৯২৩ সালে কানপুরে এসে এই স্রোতে শামিল হলেন সদ্য টিনএজার ভগৎ সিং, যোগ দিলেন হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনে। মার্কসের কথায় ‘সচেতন দার্শনিক’ হয়ে ওঠা, জেনেবুঝে বামপন্থায় আস্থাজ্ঞাপন যদিও আরো দু’তিন বছর পর থেকে শুরু।

১৯২৬ সালে ভগৎ সিং প্রতিষ্ঠা করেন নওজোয়ান ভারতসভা। ইতিমধ্যেই রাশিয়া-ফেরত গদর পার্টি সদস্যদের সাথে তাঁর যোগাযোগ স্থাপন হয়, সাক্ষাৎ হয় শওকত ওসমানি বা কাকাবাবু মুজফফর আহমদের মতো কমিউনিস্ট নেতাদের সাথেও। তাঁর পরামর্শেই ১৯২৮ সালে হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের নাম সংশোধন করে দেওয়া হয় হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন। ইতিমধ্যেই এই সংগঠনের নাম জড়িয়েছিল কাকোরি ষড়যন্ত্র মামলায়, ভগৎ সিং উদ্যোগ নেন একে সমাজতন্ত্রী সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার। এই সময়ে ভারতবর্ষে সাইমন কমিশন-বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে। লাহোরে প্রতিবাদী মিছিলে পুলিশ অফিসার স্কটের নির্দেশে লাঠিচার্জে আহত হয়ে পরবর্তীতে মৃত্যু হয় লালা লাজপত রাইয়ের। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় চন্দ্রশেখর আজাদ, সুখদেব, রাজগুরু, ভগৎ সিং প্রমুখ বিপ্লবীরা স্কটকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন, কিন্তু ভুলবশতঃ সন্ডার্স নামক এক পুলিশ অফিসারকে হত্যা করে ফেলেন তাঁরা। রাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায় ডবল আন্ডারলাইন হয় ভগৎ সিং’দের নাম। কিছুদিন আত্মগোপনে থাকার পর তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, প্রয়োজনে নিজেদের জীবনের বিনিময়েই ভারতবর্ষের মানুষকে শোনাতে হবে তাঁদের কথা – বধির শাসকের কানে আওয়াজ পৌঁছে দিতে হবে জনতার ক্ষোভের। ১৯২৯ সালে ব্রিটিশ সরকার দুটি জনবিরোধী বিল আনে, ট্রেড ডিসপিউটস বিল ও পাবলিক সেফটি বিল। এই দুই বিলের প্রতিবাদে দিল্লিতে সেন্ট্রাল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি, অধুনা পার্লামেন্টে, বটুকেশ্বর দত্তকে সঙ্গে নিয়ে ঢুকে বোমাবর্ষণ করেন ভগৎ সিং। সে বোমা কাউকে আহত করেনি, ‘বধিরের কানে আওয়াজ পৌঁছে দিতে’ ফাঁকা চেয়ারে ছুঁড়েছিলেন তাঁরা। গ্রেপ্তারির সময়ে তাঁদের কন্ঠে ছিল ভারতবর্ষকে ঝাঁকিয়ে দেওয়া সেই স্লোগান – ইনকিলাব জিন্দাবাদ। জেলে বিপ্লবী যতীন দাসের প্রখ্যাত অনশন আন্দোলনের সাথেও যুক্ত হন ভগৎ, এবং তাঁদের আন্দোলন দেশজুড়ে ব্রিটিশবিরোধী ঢেউকে তীব্রতর করে। ওই সময়ে নেহরু থেকে জিন্না, অনেকেই জেলে এসে দেখা করে গিয়েছিলেন ভগৎ সিং’দের সাথে। অবশেষে স্পেশ্যাল ট্রাইবুনালের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সন্ডার্স হত্যার অভিযোগে ১৯৩১ সালের ২৩শে মার্চ লাহোর জেলে ফাঁসি হয় ভগৎ সিং, সুখদেব ও রাজগুরুর। অকুতোভয় ভগতরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদের যেন ফাঁসির পরিবর্তে গুলি করে মারা হয়। ব্রিটিশ সরকার নিয়মবিরুদ্ধভাবে ভোরবেলা ফাঁসি না দিয়ে সন্ধেবেলা দেয়, এবং জনরোষের ভয়ে মরদেহগুলিকে টুকরো টুকরো করে লুকিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। জনতা পরদিন খবর পেয়ে দেহাবশেষ উদ্ধার করে পূর্ণ মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন করে বিপ্লবীদের। ব্রিটিশ শাসনের বুকে চিরন্তন ক্ষত হয়ে থেকে যান ভগৎ সিং, সুখদেব, রাজগুরু, চন্দ্রশেখর আজাদরা।

শোনা যায়, ফাঁসিতে যাওয়ার আগের দিন নিজ কুঠুরিতে বসে লেনিন পড়ছিলেন ২৩ বছরের ভগৎ। জেলের অফিসার এসে যখন জিজ্ঞাসা করে, তোমার শেষ ইচ্ছা কী, তাঁর উত্তর ছিল, এখন একজন বিপ্লবীর সাথে আরেকজন বিপ্লবীর কথোপকথন চলছে। এখন নয়, তুমি পরে এসো। আগেই বলেছি, ফাঁসির বদলে গুলি করে মারা হোক, এই মর্মে শাসকের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়ার পর বটুকেশ্বর দত্ত বা নিজের বাবাকে লেখা তাঁর চিঠিগুলি – বারংবার বোঝা যায়, চেতনা যদি ইস্পাতদৃঢ় হয়, তবে পর্বতপ্রমাণ শত্রু, এমনকী স্বয়ং মৃত্যুও মূষিকসম হয়ে যায় সে চেতনার সামনে দাঁড়িয়ে। ভগৎ সিং আসলে ইতিহাসের পাতায় নির্দিষ্টভাবে প্রগতির চেতনায় শাণিত একটি অধ্যায়ের নাম। এক নির্দিষ্ট কালপর্ব, যে সময়ে ভারতবর্ষের বিপ্লবী আন্দোলন দিশা পাচ্ছে কমিউনিজম নামক এক অপেক্ষাকৃত নতুন তত্ত্বের হাত ধরে, স্বাধীন ভারতের অবয়ব কেমন হবে, তার অভিমুখ নিশ্চিত হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক বিকল্পগুলিকে সামনে রেখে, সেই সময়ের তরুণ মননের উজ্জ্বলতম প্রতিনিধি ছিলেন ভগৎ সিং। তিনি কিন্তু নেহাত হঠকারী ‘অ্যাডভেঞ্চারিস্ট’ ছিলেন না, দিল্লি আইনসভায় বোমাবর্ষণের ফলাফল কী হতে পারে, তা নিশ্চিতভাবে পরিষ্কার ছিল তাঁর কাছে। তথাপি তিনি সেকাজ করেছিলেন – কারণ প্রতিটি বিপ্লবী পদক্ষেপ, প্রতিটি কোর্টরুম ট্রায়াল, জেলজীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে তিনি সজ্ঞানে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন তাঁর মতাদর্শকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে, বধিরের কানে আওয়াজ পৌঁছে দেওয়ার কাজে। ১৯২৯ সালে ‘দি ট্রিবিউন’ পত্রিকায় ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত লিখছেন, “বিপ্লবের মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষ অনিবার্য নয়। বিপ্লব বোমা-পিস্তলের পূজা নয়। কখনো কখনো সেগুলি উদ্দেশ্যসাধনের উপায়মাত্র হতে পারে।..একটি অভ্যুত্থান কোনও বিপ্লব নয়।.. প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থায় লোকে সাধারণত অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং পরিবর্তনের নাম শুনলেই কাঁপতে থাকে। এই আলস্যময় মনোবৃত্তির বদলে দরকার বিপ্লবী মনোবৃত্তি।.. মনুষ্যত্বের সত্ত্বা জুড়ে বিরাজ করুক বিপ্লবী চিন্তা, যাতে তার অনন্ত অগ্রাভিযানে বাধা দেবার ক্ষমতা সংগ্রহ করতে না পারে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিসমূহ।..এই অর্থেই আমরা ধ্বনি তুলি, ” ইনকিলাব জিন্দাবাদ।”

ভগৎ সিং, হঠকারী বা সন্ত্রাসবাদী ছিলেন না। মার্কসবাদকে আত্মস্থ করে চলা এক সুচিন্তক বিপ্লবী ছিলেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, তাঁর জীবনের আয়ুষ্কাল ছিল মাত্র ২৩ বছর। আরো ২৩ বছর বাঁচলে ভারতবর্ষের বিপ্লবী কমিউনিস্ট আন্দোলন ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ হতো, বলা যায় নির্দ্বিধায়।

তাঁর চির-আকর্ষণী শক্তি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল আমাদের দেশের শাসকশ্রেণীও। কলকাতার ভগৎ সিং উদ্যানে তাঁর মূর্তির চারপাশে তাই মাঝেমাঝেই ২৩শে মার্চ বা ২৮শে সেপ্টেম্বর গেরুয়া পতাকা লাগাতে আসে দাঙ্গাবাজের দল। তাদের লক্ষ্য ভগৎ সিং আর দিলীপ ঘোষকে একাসনে বসানো, আর জনগণের সামনে প্রমাণ করা, ভগৎ সিং’ও তো হিন্দুরাষ্ট্রই চেয়েছিলেন! এই একই চেষ্টা তারা রবীন্দ্রনাথ, নেতাজী, আম্বেদকর সহ আরো অনেকের ক্ষেত্রে করেছে। ভগৎ সিং যে সময়ে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতার প্রতীক হয়ে উঠছিলেন, আরএসএস’এর পোস্টারবয়রা তখন ব্রিটিশকে “স্যার ছেড়ে দিন” বলে মুচলেকা দিচ্ছিল। হিন্দু মহাসভার মত সাম্প্রদায়িক সংগঠনের সাথে লাজপত রাই’রা সম্পর্ক রাখেন বলে তাঁর যথেষ্ট সমালোচনা করতেন ভগৎ সিংরা। ১৯২৯ সালে লাহোরে ছাত্র সম্মেলনের ভাষণে তিনি স্পষ্ট করেন, সাম্প্রদায়িক হানাহানি ও অসহিষ্ণুতা থেকে মুক্তির জন্যেও লড়ছেন তাঁরা। তবে শুধু বিজেপি’ই নয়, অনেকেই ভগৎ সিংকে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক স্বার্থে নিজেদের লোক বলে জাহির করার চেষ্টা করেছে। গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে তাঁর বিপ্লবী সত্ত্বাকে, ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে যে শেষমেশ তিনি ছিলেন এক আপোসহীন সমাজতন্ত্রী। ভগৎ সিংয়ের উত্তরাধিকার সবথেকে নিরাপদ তাদের হাতেই, যারা আজও সাম্যের কথা বলে, শোষণহীন সমাজের দিকে এগোতে চায়, বিপ্লবের পথ থেকে যারা সরে আসেনি আজও।

তাঁর “কেন আমি নাস্তিক” ভারতবর্ষের প্রতিটি কিশোরের অবশ্যপাঠ্য – বাম আন্দোলনের কর্মীদের জন্য জরুরি তো বটেই। আজকের ভারতবর্ষে বিশেষত সঙ্ঘ পরিবারের পশ্চাৎপদ রাজনীতির উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত তীক্ষ্ণ অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে এই ছোট্ট বইটি। তাঁর জেলখানার নোটবুক আভাস দেয় সমাজতন্ত্রী এক মননের গড়ে ওঠার বাঁক-মোড়গুলির। ২৩ বছরের জীবনের পরতে পরতে বেআব্রু করছেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল ধারার সংস্কারবাদী আপোসকামী নেতৃত্ব এবং তাদের শ্রেণীস্বার্থকে। কৃষক-শ্রমিকের কাঁধে ভর করে তরুণ রাজনৈতিক কর্মীদের প্রতি চিঠিতে স্পষ্ট লিখেছেন, “আমরা চাই একটি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব, যার অবিচ্ছেদ্য উপক্রমণিকা হলো রাজনৈতিক বিপ্লব।”

১৯৪৭ সালের ১৫ই অগাস্টের পরবর্তী ভারতবর্ষে নিশ্চয় বিপ্লবের স্তর ও স্লোগান পরিবর্তিত হয়েছে কারণ মূল দ্বন্দ্বের পরিবর্তন হয়েছে – কিন্তু সমাজতন্ত্র কায়েমের যে স্বপ্ন ভগৎ সিং দেখেছিলেন তা আজও অধরা। আমরা যারা ২০২০ সালে সমাজতন্ত্রের কথা বলি, তাদের প্রতিটি স্লোগানে বিচ্ছুরিত হন ভগৎ সিং। তাঁর আত্মত্যাগ, বিপ্লবের প্রতি দায়বদ্ধতা, সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী চেতনা ….. অনুপ্রাণিত করে চলুক প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে। কমরেড ভগৎ সিং লাল সেলাম।

লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা…
ভগৎ সিং, সুখদেব ,রাজগুরু
Spread the word

Leave a Reply