ব্রেশট : বিপ্লবের চারণকবি – রজত বন্দ্যোপাধ্যায়

১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২ , ( বৃহস্পতিবার)

বের্টল্ট ব্রেশট শুধুমাত্র নাট্যকারই ছিলেন না— তাঁর লেখা নাটকের প্রযোজনা ও পরিচালনাও তিনি করেছেন, কবিতা লিখেছেন, উপন্যাস লিখেছেন, গান লিখেছেন ও তাতে সুরও দিয়েছেন এবং একই সঙ্গে তত্ত্ব আর প্রয়োগের মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছেন নন্দনতত্ত্ববিদও।

১৮৯৮-এর ১০ ফেব্রুয়ারি জন্ম, মৃত্যু ১৯৫৬-র ১৪ আগস্ট। এই আটান্ন বছরের জীবনে তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে, যুদ্ধের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এবং শান্তির পক্ষে কলম ধরেছেন। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই তাঁর কবিতা লেখার শুরু। এমনকি ওই সময়েই তিনি একটি একাঙ্ক নাটক লেখেন ‘ডি বিবেল’ অর্থাৎ ‘দ্য বাইবেল’। বছর ষোলো বয়স তখন। মনে রাখতে হবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু সেই বছরই— ১৯১৪। যুদ্ধ চলাকালীন তাঁর লেখা কবিতায় আমরা তাঁর যুদ্ধবিরোধী মনোভাব প্রত্যক্ষ করি। এই সময় তিনি মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিও হন— প্রি-মেডিকেল পাঠক্রমে— ১৯১৭-তে– লেনিনের নেতৃত্বে রুশ বিপ্লবের বছরে। চিকিৎসার স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রেও গেছেন, খুব কাছ থেকে দেখেছেন যুদ্ধকে।
পরবর্তীতে তাঁর লেখায় এই অভিজ্ঞতার প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই।

ব্রেটশ বুঝতে হলে তাঁর সমসময়কে মনে রাখতে হবে। ১৯১৮-তে যুদ্ধ শেষ হবার পর যখন ফিরে আসছে পরাজিত জার্মান সেনাবাহিনী— তখন তাদের কণ্ঠে ভিন্ন সুর। তারা যখন যুদ্ধে গিয়েছিল তখন কাইজার ও রাষ্ট্র-র পক্ষে জয়ধ্বনি দিয়েছিল— আর ফেরার সময় তারা সোচ্চার কাজ ও খাদ্যের দাবিতে। কাইজারের বিরুদ্ধেই ছিল তাদের স্লোগান। জার্মানি তখন সবদিক দিয়েই— কী সামাজিক, কী অর্থনৈতিক— বিপর্যস্ত। শাসকরা তখন মধ্যপন্থা অবলম্বন করে কোয়ালিশন সরকার চালাচ্ছে। আর, সেই সুযোগে, ইহুদি আর কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে দক্ষিণপন্থীদের আক্রমণ তীব্র হয়ে উঠছে। সরকার ভাবছে একইসঙ্গে দক্ষিণপন্থা ও কমিউনিস্ট— উভয়কেই তারা শেষ করবে। কিন্তু তা তো হয় না। দক্ষিণপন্থী ফ্যাসিস্টরা এই সুযোগে বিস্তার লাভ করতে শুরু করল। তাদের মদত দিল বার্লিনে কাপ ও লুটভিৎস আর মিউনিখে হিটলার। জন্ম নিল নাৎসিবাদ। বিস্তৃত আলোচনায় যাচ্ছি না— তবে মনে রাখতে হবে এইরকম একটা সময়ে ব্রেশট সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় গড়ে তুলছেন তাঁর নাট্যভাবনা।       

’মাদার কারেজ অ্যান্ড হার চিলড্রেন’ নাটকের একটি দৃশ্য। (মাঝে) ব্রেশট ও (বাঁদিকে) তাঁর স্ত্রী হেলেনে ভাইগেল।

                                                         
ব্রেশট বয়স তখন একুশ। খুন হলেন কমিউনিস্ট নেত্রী রোজা লুকসেমবুর্গ ও কমিউনিস্ট নেতা কার্ল লিবনেখট। আমরা দেখলাম, তাঁদের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলেন ব্রেশ্ট । এই সময়কালে তিনি নাট্য সমালোচনা করছেন, মাঝে মাঝে অভিনয় করছেন এবং একাঙ্ক নাটকও লিখছেন। আমরা এটাও দেখলাম যে তার লেখা নাটক ‘BALL’প্রকাশক ছাপতে চাইছেন না— যদি তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। ভয় পাবার কারণ তো ছিলই। ভুলে গেলে চলবে না যে হিটলারের খতম তালিকায় পাঁচ নম্বর নাম ছিল বের্টল্ট ব্রেশট ।

১৯২২-এ মঞ্চস্থ হল ‘ড্রামস ইন দ্য নাইট’। জার্মান নবনাট্য আন্দোলনের নেতা পিসকাটর প্রমুখেরা তার পাশে এসে দাঁড়ালেন। আমাদের মনে রাখতে হবে যে ১৯২৪-২৬ সালে পিসকাটর ও ব্রেশট নাটক বারবার আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের দেশে এখন যেরকম দেশপ্রেম-দেশরক্ষার নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করার, সাধারণ মানুষকে আবেগতাড়িত করারচেষ্টা করে শাসকশ্রেণি– জার্মানিতেও তা হয়েছিল। তথাকথিত ‘দেশপ্রেমিক’ যুদ্ধের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন ব্রেশট।

গত শতাব্দীর বিশ-ত্রিশের দশক। ব্যাপক মন্দা। উৎপাদন হ্রাস, মানুষের সংকট, শ্রমিক ছাটাই, বেকারত্ব, খনি-শ্রমিকদের ধর্মঘট। ১৯৩০-এর ১৪ সেপ্টেম্বর ৪.৬ কোটি মানুষ কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে ভোট দিল। শাসকশ্রেণি মদত দিল হিটলারকে। এই সময় কমিউনিস্ট পার্টির সংস্কৃতি প্রসঙ্গে চিন্তা লক্ষণীয়। নেতারা সাংস্কৃতিক চেতনার গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলেন। যান্ত্রিকভাবে নয়, জনগণের সৃষ্টিশীল চিন্তা-চেতনাকে বিকশিত করার উদ্যোগ নেবার প্রয়োজনীয়তাও তাঁদের উপলব্ধির মধ্যে ছিল।

এই প্রসঙ্গে স্মরণে রাখতে হবে যে ১৯২৪-এর পর থেকে ব্রেশ্ট মার্কসের ‘দাস ক্যাপিটাল’ পড়তে শুরু করেছেন এবং তার অভিঘাত নাট্যরচনায় দৃশ্যমান হয়েছে। নাটকে, কবিতায় আমরা প্রত্যক্ষ করছি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর উচ্চারণ।

গত শতাব্দীর তিনের দশকে যখন ফ্যাসিস্ত স্বৈরাচারী শাসকশ্রেণি বিপ্লবী শ্রমিকশ্রেণির বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন ব্রেশট কে আমরা দেখতে পাই শ্রমিকশ্রেণি ও তার পার্টির সহযোদ্ধা হিসেবে। ১৯৩৩-র উত্তাল রাজনৈতিক অবস্থা— অসুস্থ হয়ে পড়লেন ব্রেশট। ঠিক এ সময়ে ভিয়েনাতে ‘ডী মাসনামে’ নাটকের উদ্বোধন। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিখ্যাত সংগীতকার হানস আয়েসলার তাঁকে জানালেন নাটকটির সাফল্যের সংবাদ। ঐ দিন রাত্রেই ঘটল রাইখস্ট্যাগ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। পরের দিন ছেলে স্টেফান আর স্ত্রী হেলেনে ভাইগেলকে নিয়ে জার্মানি
ছাড়লেন ব্রেশট। মেয়ে বার্বারাকে পরে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের কাছে।

আমরা জানি, এর আগেই প্রকাশিত হয়েছে ‘থ্রি পেনি অপেরা’ ‘মাহগোনি শহরের উত্থান ও পতন’, ‘ডী মাসনামে’ এবং ম্যার্সিম গোর্কির ‘মাদার’ এর নাট্য নির্মাণ ‘ডী মুটার’। নাটকের বিস্তৃত আলোচনায় না গিয়েও নির্ঘিধায় এ-কথা বলা যায় যে, কমিউনিস্ট পার্টির দর্শন তাঁর নাটককে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে এই সময়কালে । নাটকের মধ্যে উঠে
আসছে সংগঠনের কথা, সংগঠন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন— কেন পার্টি সংগঠন অপরিহার্য— এইসব বিষয়। এবং এই দর্শনের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে তাঁর নাট্য নির্মাণের প্রকরণ।

’মাদার কারেজ অ্যান্ড হার চিলড্রেন’ নাটকের কাজে ব্রেশট ও তাঁর স্ত্রী হেলেনে ভাইগেল।

যাই হোক, জার্মনি ছেড়ে ব্রেশট চলে গেলেন ডেনমার্ক। সেখানে থাকার সময় তিনি বেশ কয়েকটি নাটক লিখে ফেললেন। তার মধ্যে ছিল ‘মাদার কারেজ অ্যান্ড হার চিলড্রেন’ ও ‘গ্যালিলেও’-র মতো নাটক— যা আমাদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত। ডেনমার্কেও তিনি স্বস্তি পেলেন না, গেলেন সুইডেন। তারপর ফিনল্যান্ড। ১৯৪১-এ ব্রেশট আমেরিকার স্যান্টা মোনিকাতে বসবাস শুরু করলেন। এই সময়ের রচনা ‘শোয়াইক গেছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে’, ‘ককেশীয় খড়ির গণ্ডী’ ইত্যাদি নাটক। কিন্তু সেখানেও থাকতে পারলেন না তিনি। আমেরিকার বিরুদ্ধে কী কী ষড়যন্ত্র করেছেন— এইসব প্রশ্নের উত্তর তাঁকে দিতে হয়েছিল ‘কমিটি অফ আন-আমেরিকান আ্যাকটিভিটিজ’-র সামনে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়— লেনিন ও মার্কস-এর দর্শনকে ভিত্তি করে আপনি কত লেখা লিখেছেন? তাঁর উত্তর ছিল— ‘ঐতিহাসিক নাটক-লেখক হিসেবে ইতিহাস সম্বন্ধে মার্কসের ধ্যানধারণাকে আমার না পড়ে উপায় নেই।’ ‘সভাপতি পার্নেল টমাস অধিবেশন ভেঙেদিলেন। ব্রেশট যে লিখিত বিবৃতিতে মার্কিন ফ্যাসিবাদকে অভিযুক্ত করতে চেয়েছিলেন সেটা পড়ার অনুমতিও দিলেন না টমাস।’

ব্রেশট চলে গেলেন সুইৎজারল্যান্ড এবং তারপর সেখান থেকে পূর্ব জার্মানিতে। পূর্ব বার্লিনে অভিনীত হল ‘মাদার কারেজ’। মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করলেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী হেলেনে ভাইগেল— তাঁর স্ত্রী। এরপরই প্রতিষ্ঠিত হল ব্রেশট এর নিজস্ব নাট্যদল ‘বার্লিনার আনসম্বল’।

নাটকের দৃশ্য

সমস্ত প্রতিকূলতার মুখে দাড়িয়েও ব্রেশট মতাদর্শের প্রশ্নে কোনো আপস করেননি। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির উপর কখনো আস্থা হারাননি। আস্থা হারাননি জার্মান জনগণের উপর। পার্টির সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছে— আবার আলোচনার মধ্য দিয়ে তার অবসানও হয়েছে। তাঁর লেখা ‘ট্রায়াল অফ লুকুলুস’ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে পার্টিনেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসেন এবং দীর্ঘ আলোচনার পর ব্রেশট নতুন করে নাটকটি লেখেন। সাংবাদিকরা যখন তাঁকে এ-বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তাঁর উত্তর: ‘সমালোচনার সঙ্গে সহমত হলে আমি তা গ্রহণ করি।’ আসল কথা হল রাজনীতি আর নাট্যশালার মধ্যে কোনো বেড়াজালের অস্তিত্ব আছে বলে তিনি মনে করতেন না। নাটককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন তিনি।

তাঁর নাট্যরীতিতেও তাই পরিবর্তন বা রূপান্তর ঘটল। জন্ম নিল ‘এপিক থিয়েটার’। আবেগ-অনুভূতি তাঁর কাছে প্রধান বিষয় নয়— তাঁর কাছে প্রধান হয়ে উঠল যুক্তি। যুক্তি দিয়ে তিনি তাঁর বক্তব্য নাটকের মধ্য দিয়ে উপস্থাপিত করতেন। তিনি প্রশ্ন তুলতেন, উত্তর কী হবে সে ভার ছেড়ে দিতেন দর্শকদের কাছে। দর্শকদের চিন্তা করতে উদ্দীপ্ত করতেন। তাঁর ভাবনায় থাকত পরিবর্তনের কথা। দর্শককেও তাই তিনি শরিক করতে চাইতেন যাতে তারা সমাজবদলের চিন্তায় দীক্ষিত হতে পারে। তাহলে কি নাটকে আবেগ বলে কিছু থাকবে না? নিশ্চয়ই থাকবে, কিন্তু এমনভাবে থাকবে যাতে দর্শকরা চরিত্রের সাথে একাত্ম না হয়ে যান। কেননা, একাত্ম হয়ে গেলে যুক্তিবোধ আর কাজ করবে না, ভাবনাচিন্তার অবকাশ থাকবে না। এপিক থিয়েটারের এটাই বৈশিষ্ট্য। সে দর্শকদের কাঁদাবে না, ভাবাবে। এ-প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ব্রেশট নিজেই সহজভাবে ‘নাটকীয় থিয়েটার’ আর ‘মহাকাব্যিক থিয়েটার’ এর মধ্যে তুলনার সূত্রগুলি ধরিয়ে দিয়েছিলেন।

বের্টল্ট ব্রেশ্ট এর কবিতা বা গান নিয়ে বিশদ আলোচনার অবকাশ এখানে নেই। তবে সেখানেও তিনি তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসেননি। শুধু তাই নয়, কবিতা কেমনভাবে পড়া উচিত সে সম্পর্কেও তিনি লিখেছেন। ‘কবিতা সবসময়ই ক্যানারি পাখির কুজনের মতো নয়। এ পাখির গান সুন্দর, কিন্তু তার বেশি আর কিছু নয়। ভেতরের সৌন্দর্যকে বের করে আনার জন্য কবিতাকে কিন্তু থেমে থেমে পড়তে হয়’ (অনু: দিলীপ ঘোষ)। পাঠককে আবেগাপ্লুত হলে চলবে না, যুক্তি ও বোধের সমন্বয় ঘটাতে হবে। অনেক কবিতা তাঁর নাটকের অন্তর্গত। কিন্তু আলাদাভাবে পড়লেও কোনো অসুবিধা হয় না। নাটকের গানের ক্ষেত্রেও তাই। গোর্কির মা অবলম্বনে লেখা নাটকের (ডী মুটার) একটি গান দিয়ে ইতি টানতে চাই:‘পাভেলের মৃত্যুতে মা ভেঙে পড়েছেন, আর তাঁর উদ্দেশে শ্রমিকরা গাইছে:

সমবেত সংগীত


”উঠে দাঁড়াও, পার্টির বিপদের দিনে।জানি তুমি রোগগ্রস্ত, কিন্তু পার্টি মুমূর্ষু
জানি তুমি দুর্বল, তবু তোমারই সাহায্য চাই। উঠে দাঁড়াও, পার্টির বিপদের দিনে।
জানি তুমি নানা দ্বিধায় দোদুল্যমান
কিন্তু আজ নেই কোনো দ্বিধার অবসর,আমরা উপনীত চরম সীমায়।
জানি দিয়েছ পার্টিকে বহু অভিশাপ,
আজ আর নেই মান অভিমানের সময়,পার্টি আজ আক্রান্ত।
উঠে দাঁড়াও, পার্টির বিপদের দিনে।
উঠে দাঁড়াও এক্ষুনি!
জানি তুমি অসুস্থ, কিন্তু তোমায় দরকার।
মরার অনেক সময় পাবে পরে,এখন চাই তোমার সাহায্য।
থেকো না দূরে দূরে, লড়াইয়ে যাচ্ছি আমরা,উঠে দাঁড়াও পার্টির বিপদের দিনে,
উঠে দাঁড়াও।’’

[যাঁদের লেখার সাহায্য নিয়েছি : উৎপল দত্ত, রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, পবিত্র সরকার, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়]

টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য ব্রেশট এর বানানে হসন্ত ব্যবহার করতে পারছি না, তারজন্য আমরা দুঃখিত।

Spread the word

Leave a Reply