“…and by a stanza a city is blown to bits.” An Introspect

দেবাশিস চক্রবর্তী

আমাদের বৃষ্টিতে ভয়, আমাদের বয়স হয়েছে, আমাদের সঙ্গে ছাতা থাকে। আমাদের মন খারাপ থাকে, এক ধরনের অবসাদের মেঘ আমাদের ঘিরে রাখে, নিজেকে আমরা বলতে পারি না, ‘পারতেই হবে’। কখনো কখনো ক্লান্তি আমাদের নুইয়ে দেয়। তাহলে এবার যাই?

তবু, আমরা একেক বার শেষ চেষ্টা করি। কেন করি, জানি না, কিন্তু করি। কাঁধের ব্যাগে ইকোস্প্রিন নিয়ে আমরা ধর্মতলায় উঁকি মারি। একটু দূরত্ব মেনেই দাঁড়াই। চিনি ছাড়া দুধ-চা খাই আর মঞ্চে শুরু হওয়া গান শুনি। নতুন গিটারের গান, যা আমরা ঠিক জানি না। পুরনো ‘জিন্দা হ্যায়’ শুনে বিড়বিড় করি। ভিড় বাড়তে থাকলে আমরা আরো একটু ঠেসে যাই প্রান্তসীমায়।

তারপর একজন মাইকের সামনে দাঁড়ায়। বলে, ঘুরে দাঁড়াতে বলেছে তো, বলেছে তো ঘুরে দাঁড়াতে, তাহলে চলুন, ঘুরে যান, মিটিং এখানে হবে না, ওখানেই হবে! সে, আমাদের লুকোনো উপস্থিতিও টের পায়, তাই সতর্ক করে, অনেক বাপ-জ্যাঠা-কাকা এসেছে তো, রেসপন্সিবিলিটি দেখাতে হবে।

আমরা ভ্যাবাচ্যাকা খাই। লাফাতে থাকা ভিড়টার পিছনে পিছনে যাই। ভিড় থেকে ছিটকে আসা টুকরো স্লোগান নীরজ চোপড়ার বর্শার মতো মেঘ তাড়াতে থাকে। চারদিক ভরে যেতে থাকে নতুন গন্ধে। মুষলধারায় বৃষ্টির মতো ছেলেমেয়েগুলো ঝরে পড়তে থাকে চারপাশে। কালো পিচ ছুঁয়েই ফুলের মতো, নাকি বারুদের মতো, নাকি ছবিতে দেখা লাভাস্রোতের মতো, নাকি ওই একটু আগেই শোনা গিটারের জোরালো স্ট্রিংয়ের মতো ফুটে উঠতে থাকে।

টাল খাই, আমরা প্রথমে টাল খাই। আমরা ভাবি এইসব মায়াদৃশ্য। এই ঢেউয়ের মাথায় দুলতে থাকা পতাকাগুলো আলোর খেলা। অনেকটা পরে আমরা স্পর্শ পাই। নতুন ভাষার স্পর্শ, আগুনের স্পর্শ, তরবারির স্পর্শ। আলগা হয়ে যাওয়া স্নায়ু শিরশির করে, বুকের মধ্যে ঢাক বাজতে শুরু করে, কার ক্রোধের উত্তাপ আমাদের কপাল ছুঁয়ে যায়।

একেক বার মায়াকোভস্কি মনে পড়ে: ‘ডাই ডাই মাই ভার্স, লাইক এনি র‌্যাঙ্ক অ্যান্ড ফাইল’। একেক বার পরস্পরকে বলি, নিজেদেরই, থাক, এখনই যাব না তাহলে!

Spread the word

Leave a Reply