Adivasi Woman Killed In Keshpur

মেদিনীপুর, ৬ মার্চ— কেশপুরে পিটিয়ে খুন করা হলো এক আদিবাসী মহিলাকে। বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন আর একজন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ আক্রমণকারীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তারা পলাতক। 

কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানার ঘুচিশোল মৌজায় ২৭টি পরিবার নিয়ে আদিবাসী পাড়া। সেই পাড়ায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার নাগাদ সাত-আট জনের একটি দল আক্রমণ চালায়। লাঠি পেটা করে খুন করা হয় পরিবারের সদস্যদের সামনে। পরিবারের লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদেরও হুমকি দিয়ে বলা হয় বাঁচাতে এলে তাদেরও খুন করা হবে। প্রতিবেশী দেওর সনাতন হাঁসদা বাঁচাতে এলে তাকেও লাঠি পেটা করা হয়। ঘটনাস্থলেই দুইজনই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সেই অবস্থায়ও মাথা মুখ শরীরজুড়ে চলে নৃশংস আক্রমণ। খুন করার লক্ষ্য নিয়েই এমন নৃশংস হামলা। 

পুলিশ জানায় মৃত আদিবাসী বিধবা মহিলার নাম মালতি মুর্মু (৫২)। এই বিধবার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। সবার বিয়ে হয়ে গেছে। আড়াই বছর হলো স্বামী মারা গেছেন। বাড়িতে হাড়িয়া তৈরি করে বিক্রি করতেন মহিলা। হামলাকারীরা বিনা পয়সায় হাড়িয়া খেয়ে অনেকবার চলে গেছে। সেই নিয়ে ঝামেলাও এর আগে হয়েছে। ঘটনার দিন রাত দশটার দিকে বাড়ির উঠানে বসে হাড়িয়া খাচ্ছিলেন মহিলা। সেই সময় ওই দেওরকেও এক বাটি হাঁড়িয়া দিয়েছিলেন খেতে। ওই সাত-আট জন যুবক তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক অভিযোগ তুলে আক্রমণ চালায়। যদিও তারা কোনো আপত্তিকর অবস্থায় ছিলেন না। পরিবারের সবাই, পাশের বাড়ির লোকজন ঘরের মধ্যে জেগেছিল এবং রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। 

চিৎকার শুনে মহিলার পুত্রবধূ দেবিকা এবং ছেলে বাবলু ঘর থেকে উঠানে এসে আক্রমণকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাদেরও লাঠিপেটা করে সরিয়ে দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। বাধা দিলে তাদেরও খুন করা হবে হুমকি দেওয়া হয়। সেই সময় ৫৪ বছরের দেওর সনাতন হাঁসদা বাধা দিলে তাকেও লাঠিপেটা করা হয়। রাত বারোটা পর্যন্ত এমন হামলায় দুটো দেহ নিস্তেজ হয়ে পড়ে সেই উঠানে। আক্রমণকারীরা হুমকি দিয়ে বলে গেছে, পুলিশকে নাম বললে পরিবারের বাকিদেরও খুন করা হবে। 

পুলিশে খবর যায়। আনন্দপুর থানা থেকে ১৩ কিমি দূরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ততক্ষণে মহিলার মৃত্যু হয়। অপর ব্যক্তি জ্ঞান হারিয়ে রক্তাক্ত। পুলিশ মহিলার ময়না তদন্তের জন্য দেহ মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠায়। আহত ব্যক্তিকে শালবনী হাসপাতালে নিয়ে যায়। এখনো মরণাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসা চলছে। গ্রামে পুলিশ পিকেট বসেছে।

Spread the word

Leave a Reply