৯ মে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৭৫-তম বার্ষিকী।
রাইখস্ট্যাগে লাল পতাকা।
সাড়ে ৭ কোটি মানুষের মৃত্যুর বিনিময়ে। শুধু ২ কোটি ৭০ লক্ষ রুশ নাগরিকেরই জীবনদান।
নাৎসী কনসেনট্রেশন ক্যাম্প। শেষে ব্যাঙ্কারে হিটলারের আত্মহত্যা।
পঁচাওর বছর আগে সেদিন বার্লিনের রাস্তায় শুধুই লাল ফৌজ। আর উদ্বেল জনতা।
আজ,
ভাইরাস এই সমাজকে ধ্বংস করছে না।
বরং, একটা পঁচাগলা সমাজকে লড়তে হচ্ছে নিষ্ঠুর ভাইরাসের বিরুদ্ধে।
Virus: Product of Nature.
Crisis: Product of Neoliberalism,
Product of Capitalism.
নয়া উদার সব সরকার দৃশ্যতই দিশেহারা। অপ্রস্তুত।
যুদ্ধবিমান আছে। ভেন্টিলেটর নেই।
ক্ষেনণাস্ত্র আছে। মাস্ক নেই।
করোনা হলো ভাইরাস। মহামারি হলো পুঁজিবাদ।
এই পরিস্থিতিতে দু’টিই পথ।
এক. ‘নয়া উদারবাদী সরকার’ ব্যবহার করতে পারে ‘মহামারি পুঁজিবাদের’ যুক্তিকে। আর একেই নয়া উদার অর্থনীতিকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা ‘ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। জনগণের সম্পদ বেসরকারি ক্ষেত্রের দিকে চালান আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আর এভাবেই তারা রক্ষা করতে পারে বিত্তবানদের স্বার্থ। এই পরিস্থিতি জ্বালানি জোগাতে পারে নব্য ফ্যাস্তিত শক্তিকে। নয়া নাৎসীদের।
দুই. তবে সঙ্কট এমন সম্ভাবনাও তৈরি করতে পারে, যাতে সবচেয়ে দরিদ্র মানুষদের সুরক্ষার জন্য নীতি তৈরি হতে পারে। যা তৈরি করতে একটি ন্যূনতম মজুরি, সবার জন্য কাজ, সবার জন্য সরকারি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা— একটি টেকসই অর্থনীতি, যা সুরক্ষিত করতে পারে আমাদের বসুন্ধরাকে, আমাদেরকে।
সেকারণে
No Is Not Enough!
‘না’ বলাটা জরুরি।
তবে, নিছক ‘না’ বলাই যথেষ্ট নয়।
এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত আমাদের কাছে দাবি করছে আরও বেশি কিছু। সামথিং মোর।
জরুরি হলো, একটি বিশ্বাসযোগ্য এবং উদ্দীপ্ত করার মতো ‘হ্যাঁ’— যারা আমাদের ভাগ করতে চায়, তাদের বিদ্বেষের বিষকে ছাপিয়ে ঐক্যের জমি চাষের জন্য চাই একটি যোগ্য পথনিশানা।
প্রত্যাখ্যান থেকে প্রতিরোধে উত্তরণ।
রিফিউজ্যাল থেকে রেসিসটেন্স।
আবার কেবল প্রতিরোধই যথেষ্ট নয়।
প্রতিরোধের সঙ্গে থাকুক নির্দিষ্ট লক্ষ্য।
বিরোধিতার নিষ্ক্রিয়, নিরুদ্যম অবস্থান থেকে অ্যাকশানের নির্দিষ্ট কর্মসূচী।
ধুলো থিতু হওয়ার জন্য আমরা অপেক্ষা করতে পারি না। নির্মল, স্বচ্ছ পরিবেশের দিকে তাকিয়ে ধৈর্য ধরে বসে থাকতে পারি না। টালমাটাল পরিস্থিতি মানে, আমাদের তার মধ্যে থেকেই কাজ করার শিক্ষা নিতে হবে।
উথাল-পাথাল ঢেউয়ে জাহাজের ডেকে কীভাবে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, নিতে হবে তার পাঠ।
চাই একটি পজিটিভ শক।
প্রত্যয়ী ‘না’র সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে হবে একটি সাহসী এবং সমুখপানের ‘হ্যাঁ’— থাকতে হবে ভবিষ্যতের জন্য একটি পরিকল্পনা— যা হবে বিশ্বাসযোগ্য এবং যাতে থাকবে এক অমোঘ আকর্ষণ শক্তি, যার বাস্তব রূপ দেখার জন্য বিপুল সংখ্যায় মানুষ নামবেন রাস্তায়— তা সে যতই তাঁদের পক্ষ থেকে আঘাত ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হোক না কেন।
যে নেতারা ব্যর্থ নয়া উদার স্থিতাবস্থাকে প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাঁরা কখনও বক্তৃতাবাগীশ এবং নব্য-ফ্যাসিবাদীর মুখে দাঁড়াতে পারেন না।
কে অস্পৃশ্য, কে না— তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো বিকল্প কর্মসূচী, আর তাতে যে মিত্ররাই আসুক না কেন।
এই বিকল্পকে হতে হবে স্বচ্ছ।
ক্ষুদ্রতম, কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ। যেমন বলশেভিকদের স্লোগান ছিল ল্যান্ড, পিস, ব্রেড। জমি, শান্তি, রুটি।
এই বিকল্পের দাবি হোক আদায়যোগ্য দাবি।
কোনও আকাশকুসুম স্বপ্ন নয়।
স্বপ্ন হোক এমন যা বাস্তবে পূরণ সম্ভব।
We stay Strong,
We do not stay Silent!
এই মুহূর্তে লাল ঝান্ডাই পথ।
বামপন্থীরাই একমাত্র পারে। কারণ তাঁদের কাছেই জানা আছে এই কানাগলির সুলুকসন্ধান।
Left Must Seize
This Moment,
or Others Will!