দেবব্রত ঘোষ
এক অস্থির সময়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, আগামী ২২-২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ হুগলী জেলার ডানকুনি শহরে। কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক শ্রেণি তাদের লুটের সম্পদকে পাহাড়ে পরিণত করতে মানুষের ওপর শোষণ প্রক্রিয়াকে প্রতিনিয়ত তীব্র থেকে তীব্রতর করে চলেছে। দেশের শাসক শ্রেণি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আর্থিক ভাবে সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য যে ভূমিকা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল সে ভূমিকা নেয়নি। কেবলমাত্র ইচ্ছা বা অনিচ্ছার নয়, শ্রেণি স্বার্থেই তারা পুঁজিপতি সহ সমাজের ধনিক শ্রেণির স্বার্থে কাজ করেছে।

স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের পার্টি সহ বামপন্থীরা বরাবর দেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতায় প্রসারিত করার লড়াইকে জারি রেখেছে। দেশে আরএসএস-বিজেপি-র নেতৃত্বে সরকার আসার আগে পর্যন্ত এ লড়াই ছিল অত্যন্ত কঠিন কিন্তু অনেকটাই একমুখী। লড়াইয়ের পথটাও ঠিক করে এগিয়ে যেতে বিশেষ করে বিকল্প ভাষ্য নানাভাবে দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে বামপন্থীরা সাফল্য অর্জন করতে পেরেছিল, বিশেষ করে সমাজের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বার্থকে রক্ষা করার ক্ষেত্রটিতে। অনেক সাফল্যের কথা উল্লেখ না করলেও বলা যায় সর্বশেষ ইউপিএ সরকারের সময় বামপন্থীদের লড়াই-আন্দোলন এবং সংগ্রামের ফসলই হল এমএনআরজিএ বা ১০০ দিনের কাজের অধিকার।
আরএসএস-বিজেপি দেশে ক্ষমতায় আসার পর এই লড়াই কঠিনতর হয়েছে। প্রধানত ধর্মকে ব্যবহার করা ছাড়াও জাতপাত, ভাষা প্রভৃতির মাধ্যমে মানুষকে বিভাজিত করে এবং কর্পোরেট শক্তির সাথে জোট বন্ধন করে মানুষের ওপর তীব্র শোষণ প্রক্রিয়া চালানোর সাথে সাথে ছদ্মবেশী কিছু আঞ্চলিক দলগুলির সাথে বোঝাপড়া করে দেশ ও রাজ্য চালানোর কৌশল গ্রহণ করেছে। যেমন এরাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস। টিভিতে, কাগজে, তৃণমূলের নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে বা বিজেপির নেতারা তৃণমুলের বিরুদ্ধে লম্বা-চওড়া ভাষণ দিলেও নিজেদের সকারের কোন বিষয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা দিলে একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে পড়ছে। যেমন সর্বশেষ আরজিকর কাণ্ডে তৃণমূল সরকারকে রক্ষা করতে বিজেপির বিভিন্ন কার্যক্রম দেখা গেল। এটা যেমন একটা দিক, অন্যদিকে আরেকটি দিক হল সরকার পরিচালনার দৃষ্টিভঙ্গীতে পুঁজিবাদী শক্তি অনেক পরিবর্তন এনেছে। শোষণ প্রক্রিয়া আরও তীব্র হয়েছে কিন্তু প্রক্রিয়ার নানান পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। মানুষের একটা ভালো অংশকে সরকার দ্বারা বিভিন্ন রকম প্রকল্পের সাথে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত করা একটা প্রধান প্রক্রিয়া। পাঁচ টাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে তার থেকে দশ টাকা আয় করে নিলেও সে মনে করছে, সরকার সরাসরি তার জন্য কিছু করছে। যে মানুষ আগে ব্যক্তিগত ভাবে সরাসরি কিছু না পেলেও সরকার পরিচালনার দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে দিয়ে লাভবান হত। কিন্তু সে এই পণ্য আদান প্রদান বা তার নিজস্ব লাভ-ক্ষতির পরিমাণটা এখনকার সরাসরি হস্তান্তর প্রক্রিয়ার সাথে তুলনা করতে পারছে না। পারাটাও কঠিন, এজন্য, বর্তমান সরকারের শোষণ প্রক্রিয়াটাও বুঝে উঠতে পারছে না। তাই কেউ কেউ বলে ফেলছেন, আগে তো পেতাম না, এখন কিছু পাচ্ছি বা ওরা সব চোর হলেও কিছু তো দিচ্ছে।
বামপন্থীদের লড়াই এবং বামফ্রন্ট সরকারের কাজে জমির অধিকার, উদ্বাস্তু মানুষের বসতের অধিকার, মানুষের সার্বজনীন শিক্ষার অধিকার, কৃষিতে অভূতপূর্ব অগ্রগতি, পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রামের মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন, কলকারখানায় শ্রমিকদের অধিকারগুলো অর্জনের মত মৌলিক বিষয়ের সাথে তুলনা করতে পারছে না।
তাই আজ লড়াইটা একমুখী নয়, বহুমাত্রিক। এই বহুমাত্রিক লড়াইয়ে রাতারাতি সাফল্য অর্জন করা যায় না। সংগ্রাম করতে করতেই লড়াইয়ের পথ তৈরি হবে। নানান আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে আসল সত্য প্রতিষ্ঠিত করা যাবে।
বিগত তিন বছর অর্থাৎ ২৬তম রাজ্য সম্মেলন থেকে ২৭তম রাজ্য সম্মেলন পর্যন্ত প্রতিটা দিন পার্টি সংগ্রামের পথেই ছিল। বিনা লড়াই-সংগ্রামে কোথাও প্রতিক্রিয়াশীলদের ওয়াকওভার দেওয়া হয়নি। এটা ঠিক যে আমরা ওদের সব ষড়যন্ত্র, চক্রান্তকে রুখতে পারিনি, পারলে শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের একটা বড় অংশের বামপন্থীদের আরও অগ্রগতি ঘটতে পারত। একই রকম ভাবে লোকসভা নির্বাচনেরও শেষ পর্যায় ওদের ষড়যন্ত্রে আমাদের একটি নিশ্চিত আসনে পরাজিত হতে হল।
২৭তম সম্মেলনে বিগত তিন বছরে আমাদের আন্দোলন-সংগ্রামের অভিজ্ঞতা এবং আগামী দিনে শত্রুপক্ষকে পরাস্ত করে এগিয়ে যাওয়ার পথ কি হবে তাই প্রধানত আলোচিত হবে সম্মেলনে। এজন্য আমাদের পার্টি ও গণফ্রন্টগুলির নেতৃত্ব যেমন তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরবেন, পরামর্শ দেবেন, একই সাথে সম্মেলনে উপস্থিত রাজ্য এবং সর্বভারতীয় নেতৃত্বও তাদের বক্তব্য, পরামর্শ উপস্থিত করবেন। দুই অংশের মতামতের ভিত্তিতে তৈরি হবে আগামী দিনের আন্দোলন, সংগ্রামের রূপরেখা।
তাই এই সময়ের রাজ্য সম্মেলন শুধুমাত্র পার্টি বা বামপন্থীদের কাছে নয়, রাজ্যের ও দেশের শ্রমজীবী, শোষিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের কাছে বর্তমান নৈরাজ্যের অবস্থার অবসানের জন্য মোড় ঘোরানোর একটা সম্মেলনে পরিণত হতে চলেছে।
এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে হুগলী জেলায়। অজস্র ঐতিহাসিক উপাদানে সমৃদ্ধ অনেকে হুগলী জেলাকে ‘মনীষার তীর্থক্ষেত্র’হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। আধ্যাত্মিক ও সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে বিশ্বের দরবারে যারা চির স্মরণীয় তাদের অন্যতম শ্রী রামকৃষ্ণ, রাজা রামমোহন রায়, শ্রী অরবিন্দ, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর (তার জন্মলগ্নে বীরসিংহ ছিল হুগলী জেলার অন্তর্গত), শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এই জেলাতেই জন্মগ্রহন করেছিলেন। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র, টেকচাঁদ ঠাকুর, রঙ্গলাল, বিহারিলাল চক্রবর্তী, ভুদেবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আশুতোষ মুখার্জি, কালিপ্রসন্ন সিংহ – এদের সাহিত্য সৃষ্টির অমুল্য অবদানে হুগলী জেলার যোগসূত্র বিদ্যমান।
স্বাধীনতা সংগ্রামেও উল্লেখযোগ্য অবদানে সমৃদ্ধ হুগলী জেলা। এরাজ্য তথা দেশের বামপন্থী আন্দোলনে অনেক অবদান আছে হুগলী জেলার। অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় প্রাদেশিক সম্মেলন অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে ১৯৩৮ সালে চন্দননগরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কমরেড মুজাফফর আহ্মেদের সভাপতিত্বে এই সম্মেলন থেকে সম্পাদক নির্বাচিত হন কমরেড নৃপেন চক্রবর্তী (সরোজ মুখার্জী ‘ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ও আমরা)।
১৯৬৪ সালে সিপিআই(এম) তৈরি হওয়ার পর এই প্রথম হুগলী জেলায় রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই হুগলী জেলার পার্টি কর্মীরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত। অথচ বিগত ৪-৫ বছর আগেও জেলার সামগ্রিক পরিস্থিতিতে আমরা ভাবতে পারতাম না, এত বড় কাজ আমরা করতে পারি। ২০১১ সালে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর রাজ্যের যে জেলাগুলিতে তীব্র সন্ত্রাস নেমে আসে তার মধ্যে হুগলী জেলা অন্যতম। ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এই জেলায় কয়েক হাজার কর্মী ঘর ছাড়া হয়েছিলেন, হাজার হাজার মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, যার অনেক এখনও চলছে। জেল, জরিমানা সহ পার্টি অফিস দখল, পুড়িয়ে দেওয়া সহ অজস্র নারকীয় সন্ত্রাসের সাক্ষী হুগলী জেলা। কিন্তু একদিনের জন্যও কোথাও কোন ক্ষেত্রে পার্টির কাজকর্ম স্তদ্ধ হয়ে যায়নি, এলাকায় থাকতে না পারলেও অপেক্ষাকৃত সন্ত্রাসমুক্ত এলাকায় থেকে কাজ পরিচালনা হয়েছে। এত কিছুর পরেও আমাদের একজনও জেলা স্তরের নেতা বা তৎকালীন জোনাল স্তরের নেতা শত্রুপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেননি।
ধারাবাহিক ভাবে সাহসের সাথে ধৈর্যের সাথে লেগে থেকে কাজ করার জন্য আজ হুগলী জেলায় সর্বত্র সব অঞ্চলে, সব বুথে পার্টি কাজ করতে পারে। প্রায় সমস্ত পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করা গেছে। ধীরে ধীরে জেলার আন্দোলন সংগ্রামেও গতি এসেছে। বিগত তিন বছরে এখানে পার্টি সদস্য সংখ্যা বেড়েছে ২২০০। বর্তমানে পার্টি সদস্য সংখ্যা ১০ হাজারের কিছু বেশি। বর্তমানে ৩০০০-এর বেশি এজি সদস্য আছে। তিন হাজারে নেমে যাওয়া গণশক্তি পত্রিকা বর্তমানে জেলায় চলে সাড়ে চার হাজারের বেশি। এখনও প্রচুর দুর্বলতা আছে, পার্টি সংগঠনে তাকে কাটানোর প্রক্রিয়া জারি আছে।
এইরকম একটা রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রেক্ষাপটে হুগলী জেলায় সম্মেলনের সিদ্ধান্তে সমস্ত পার্টি কর্মী ও সমর্থক দরদীগণ অত্যন্ত উৎসাহিত। বিগত দু’মাস ব্যাপী প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে কর্মীরা কাজ করে চলেছেন। সকল এরিয়া এলাকাতেই প্রচুর দেওয়াল লিখন, ফ্ল্যাগ, পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিং-এ সেজে উঠেছে জেলা। ৩৩টি ওভারহেড গেট তৈরি হয়েছে। সম্মেলনের স্থান ডানকুনি লাল ঝাণ্ডা ও সুসজ্জিত বড় বড় তোরণে সেজে উঠেছে। পার্টির এরিয়া কমিটি, শাখা এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে নিবিড় প্রচারাভিযানকে হাতিয়ার করেছে। ৬ লক্ষ বাংলা, ৫০ হাজার হিন্দি এবং ২০ হাজার প্রচারপত্র নিয়ে সম্মেলন ও ২৫ তারিখের প্রকাশ্য সমাবেশ সফল করে তুলতে ইতমধ্যে ৪ লক্ষ পরিবারে পৌঁছাতে পেরেছে। শুধুমাত্র জনগণের কাছ থেকে অর্থসংগ্রহ নয়, জেলার পার্টি সদস্যদের কাছ থেকে অর্থসংগ্রহে এক অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। জেলার সকল পার্টি সদস্য, এজি সদস্যদের কাছে সম্মেলনকে সফল করে তুলতে তাঁর এবং তার পরিবারের কাছে সাধ্যমত সাহায্যের আবেদন করা হয়েছে, এজন্য একটি সুসজ্জিত খাম সকলকে দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে এই খামের মধ্যে নিজে এবং পরিবারের সকলে তাদের সাধ্যমত অর্থ দিয়ে খাম বন্ধ করে স্থানীয় পার্টি এরিয়া কমিটির কাছে জমা দিতে। এরিয়া কমিটি খাম খুলে সংগৃহীত অর্থের জন্য তাদেরকে রসিদ দিয়ে দেবে। এই সদ্ধান্তে পার্টি ও এজি সদস্যদের মধ্যে দারুণ উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। শ্রমজীবী, প্রান্তিক অংশের পার্টি সদস্যদের বহু ক্ষেত্রে অবদানের পরিমাণ পরিলক্ষিত করলে পার্টির প্রতি তাদের ভালোবাসা, আন্তরিকতা উপলদ্ধি করা যায়। এছাড়া সাধারণ মানুষও নানান ভাবে সাহায্য সহযোগিতার হাত প্রসারিত করছেন।
সম্মেলন ও সমাবেশের প্রচার উপলক্ষ্যে চারটি মহকুমাকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে দু’দিন ব্যাপী ফুটবল প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় সদ্য অনুষ্ঠিত সন্তোষ ট্রফিতে খেলা ৩জন খেলোয়াড় খেলেছেন। প্রখ্যাত ফুটবলার ভাস্কর গাঙ্গুলি, বিকাশ পাঁজি, হেমন্ত ডোরা উপস্থিত ছিলেন। হয়েছে ভলিবল প্রতিযোগিতা। এখানেও ভলিবল এসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক সহ রাজ্য ও জাতীয় দলের একাধিক খেলোয়াড় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠিত হয়েছে মহিলাদের ফুটবল প্রতিযোগিতা, গ্রামীণ শ্রমজীবী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ম্যারাথন দৌড়। বহু এলাকায় হয়েছে অঙ্কন প্রতিযোগিতা, পোস্টার লেখার প্রতিযোগিতা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও রক্তদান শিবির প্রভৃতি অনুষ্ঠান।
জেলার ২১টি স্থানে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা সভা। এই আলোচনা সভাগুলিতে মানুষের অংশগ্রহণ ঘটেছে চোখে পড়ার মত। পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজ্য কমিটির সদস্যরা ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রের খ্যাতনামা ব্যক্তিরা বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
জেলার সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কর্মীরাও জেলার বিভিন্ন এলাকায় নানা ধরণের সাংস্কৃতিক কর্মসূচি সংগঠিত করছেন। এছাড়াও আগামী ২১-২৪ ফেব্রুয়ারি চার দিন ব্যাপী ডানকুনি বিনোদিনী নাট্য মন্দিরে গান, নাটক, সিনেমা সহ নানান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলন স্থলে প্রয়াত সীতারাম ইয়েচুরি, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছাড়াও সলিল চৌধুরী, ঋত্বিক ঘটকের স্মরণে নানান প্রদর্শনী আয়োজন করার প্রস্তুতি চলছে। সম্মেলন সুচনার দিন ২২ তারিখ ডানকুনিতে অনুষ্ঠিত হবে রক্তদান শিবির।
আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি ডানকুনি স্পোর্টিং ফুটবল মাঠে বিশাল জনসভার জন্য অন্যান্য প্রচারের সাথে সাথে গ্রাম, শহর সর্বত্র চলছে পাড়া বৈঠক, গ্রুপ সভা। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলেই ২২ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি দু’দিন জেলা জুড়ে পাড়ায় পাড়ায় মিছিল ও স্কোয়াড সংগঠিত হবে।
সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত পার্টির রাজ্য সম্মেলনকে শুধুমাত্র একটা ইভেন্ট হিসাবে না দেখে ব্যাপক রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক তৎপরতা তৈরি করা গেছে। এটাই এপর্যন্ত সাফল্য। এখন জেলার সকল কমরেডগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছেন রাজ্যের সমস্ত প্রতিনিধি এবং নেতৃত্বের আগমনের জন্য। হুগলী জেলার সকল পার্টি কর্মীর কাছে সম্মেলন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করে তুলতে পারাই চ্যালেঞ্জ। নিশ্চয়ই এই কাজ পারা যাবে।