PB Statement

একটি জঘন্য নিদর্শন

১৪ ডিসেম্বর,২০২২,বুধবার

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) এর পলিট ব্যুরো নিম্নলিখিত বিবৃতি জারি করেছে:

একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ডিজিটাল ফরেনসিক বিশ্লেষণ সংস্থা (আর্সেনাল কনসাল্টিং) দ্বারা নতুন একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, যে জাল নথিগুলি ফাদার স্ট্যান স্বামীর "দেশদ্রোহীতার" প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল সেগুলি আসলে ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ফাদার স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটারে প্রবেশ করানো হয়েছিল। ফাদার স্ট্যান স্বামী ২০১৪ সাল থেকেই নজরদারির আওতাধীন ছিলেন।এই সময়ের মধ্যে তার কম্পিউটারে চল্লিশটি ফাইল রাখা হয়েছিল যা, ফরেনসিক রিপোর্ট অনুসারে তিনি কখনওই ব্যবহার করেননি। আরও চমকপ্রদ বিষয় হল যে জনসমক্ষে প্রকাশিত ফরেনসিক প্রমাণ ও তদন্ত ইঙ্গিত দেয় যে হ্যাকাররা পুনে পুলিশ কর্তৃক স্ট্যান স্বামীর আসন্ন গ্রেফতারের বিষয়ে আগে থেকেই জানত। তার গ্রেফতারের মাত্র একদিন আগে, তারা তাদের কার্যকলাপের চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। সব থেকে জঘন্য বিষয় এটাই যে স্ট্যান স্বামীর জামিন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল, তাকে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও প্রদান করা হয়নি, হেফাজতে তার মৃত্যু হত্যার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তিনি এমন একটি অপরাধের জন্য অভিযুক্ত হয়ে হেফাজতে মারা যান যা তিনি কখনও করেননি।

অন্যান্য অভিযুক্তদের কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রগুলির ফরেনসিক তদন্তের পরে এটি এই ধরনের পঞ্চম রিপোর্ট যা স্পষ্টভাবে হ্যাকিং এবং জাল ফাইলগুলিকে পূর্বনির্দিষ্ট করা ব্যক্তিদের কম্পিউটারে ঢোকানোর একটা চক্রান্ত প্রকাশ করে। ইতিমধ্যেই ফরেনসিক তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত যে এই ফাইলগুলি সম্পর্কে অভিযুক্তদের কোন ধারণা ছিল না বা তারা কখনও সেই ফাইলগুলিকে ব্যবহারও করেনি ।তবুও এই জাল ফাইলগুলিই ভীমা কোরেগাঁও মামলার সমস্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রধান তথাকথিত প্রমাণ হিসাবে পেশ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বেশিরভাগকেই ভয়ঙ্কর ইউএপিএ-আইনের অধীনে আটকে রাখা হয়েছে।

এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় যে এনআইএ এই প্রমাণ স্বীকার করতে নারাজ, শুধু তাইই নয়, তারা নিজস্ব উদ্যোগে এই নিয়ে কোন তদন্ত করতেও অস্বীকার করছে। এটাও সমান নিন্দনীয় যে এনআইএ যাদের অধীনস্ত সেই কেন্দ্রীয় সরকারও এই রিপোর্টগুলিকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছে।

অতীতের রিপোর্টগুলির সাথে সর্বশেষ রিপোর্টটি এই সরকারের এবং এনআইএ-এর কাজের গতি-প্রকৃতিকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেয়। যাদের বিরুদ্ধে সরকার আর তার এজেন্সিগুলোর নিজেদের তৈরি করা ছাড়া আর কোন প্রমাণ নেই তাদের জেলবন্দী করে রাখার এটা একটি জঘন্য নিদর্শন।আজ এই বিপজ্জনক প্রযুক্তি এবং ম্যালওয়্যার দ্বারা ভীমা কোরেগাঁও বন্দিদের নিশানা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই শাসকদের প্রতিপক্ষকেও একইভাবে লক্ষ্যবস্তু করা যেতে পারে।

সিপিআই(এম) দাবি করে যে, সমস্ত ভীমা কোরেগাঁও অভিযুক্তদের অবিলম্বে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হোক; এনআইএ তাদের জামিনের আবেদন এবং/অথবা মুক্তির আবেদনে আপত্তি করবে না; প্রাপ্ত সমস্ত ফরেনসিক প্রমাণকে গ্রাহ্য করে বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করে পুনরায় একটা স্বচ্ছ তদন্ত করতে হবে এবং তা করতে হবে একটা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন