Che on India

ভারতের দিকে চেয়ে- চে

সৌভিক ঘোষ

কিউবায় বিপ্লব সফল হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই চে গুয়েভারা’কে নতুন একটি দায়িত্ব দেন ফিদেল কাস্ত্রো। ডাক্তারির ব্যাগ নামিয়ে রেখে বুলেটের ব্যাগ আর রাইফেল কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন যে মানুষটি, ফিদেল তার সামর্থ্য জানতেন। আর তাই উল্লেখ করেছিলেন ‘নতুন যে কোনও কাজই ওকে দেওয়া হোক না কেন, কয়েকদিনেই ও সেই বিষয়ে পারদর্শী হয়ে উঠবে’। পড়াশোনা শেষ করে মোটরসাইকেলে চড়ে বিভিন্ন দেশ ঘুরতে বেরিয়েছিলেন আর্নেস্তো ডে লা সেরনা- কিছুদিন ঘুরলেন ঠিকই, কিন্তু প্রকৃতির সৌন্দর্যের তুলনায় মানুষের দুঃখ, দারিদ্র্য– বঞ্চনা, নিপীড়ন তার মাথায় গেঁথে দিল নতুন স্বপ্ন। তারপর থেকে বুয়েন্স আয়ার্সের সেই চিকিৎসক যুবকটি আর অন্য কোনও স্বপ্ন দেখেননি, সেই স্বপ্নের বুনোট এতই গভীর যে আজকের পৃথিবী চে গুয়েভারা আর বিপ্লবকে সমার্থক বলে চিনেছে, মনে রেখেছে।

অবশ্য এই রুপান্তরে ফিদেল কাস্ত্রোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। একটি রাত তারা দুজনে কথা বলে কাটিয়েছিলেন। তখনও চে গুয়েভারা বিপ্লবী হয়ে ওঠেন নি। সেই রাতটুকু চে শুনেছিলেন বেশি, বলেছিলেন ফিদেল। পরের দিনের সূর্য ওঠার আগেই নির্ধারিত হয়ে যায়- ফিদেল একা নন, কিউবার সংগ্রামে চে লড়বেন তার সাথেই।

সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়। কিউবায় সফল হয় বিপ্লব। সেই বিপ্লবের ফলাফলকে রক্ষা করতে শুরু হয় নতুন সংগ্রাম। ছোট দেশ। আরও ছোট তাদের অর্থনীতির ভিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে সাম্রাজ্যবাদ বলে আর কিছু নেই গোছের বক্তিমে করেন যারা কিউবা ঘুরে এসে একথা বলেন কিনা জানা নেই। আজও কিউবাকে লড়াই চালাতে হচ্ছে- সাম্রাজ্যবাদ আক্রমণ করে চলেছে, কখনো সেই আক্রমণের নাম অর্থনীতি, কখনো বাণিজ্য সম্পর্কিত শর্ত আবার কখনো ভাড়াটে গণতন্ত্রীদের দ্বারা অসন্তোষের প্রদর্শন।

১২ জুন, ১৯৫৯। চে গুয়েভারা হাভানা থেকে প্লেনে ওঠেন। প্রথমে মাদ্রিদ, পরে কায়রো হয়ে ভারতে আসেন। ৩০ জুন, ১৯৫৯। রাতে দিল্লীর পালাম বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় সেই বিমান। তার সাথে ছিলেন একজন গনিতবিদ, একজন অর্থনীতিবিদ, কিউবার পার্টি ও বিপ্লবী সেনাবাহিনীর তরফে একজন করে প্রতিনিধি এবং তার নিজস্ব দেহরক্ষী হিসাবে একজন। সব মিলিয়ে মোট ছ’জন।

পরেরদিন সকালে তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু’র সাথে দেখা করেন। তখনই জানা যায় আর্নেস্তো ডে লা সেরনা ভারত ভ্রমণে এসেছেন কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে। নেহরু’র সাথে কথোপকথনের সময়েই তিনি স্পষ্ট করে জানান ‘কিউবা ভারতের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়। ভারত থেকে তারা কয়লা, সুতির কাপড়, চটের সামগ্রী, ভোজ্য তেল, চা ও ট্রেনার এয়ারক্র্যাফট আমদানি করতে ইচ্ছুক। কিউবা থেকে তামা, গাড়ির টায়ারে প্রয়োজন হয় এমন রেয়ন, কোকো এবং চিনি রপ্তানি হবে’। হাভানা থেকে পাঁচজনকে সাথে নিয়ে তিনি এই জন্যই এসেছেন। সাম্রাজ্যবাদী অবরোধের মুখোমুখি কিউবার অর্থনীতিকে সচল রাখার দায়িত্বই তাকে দিয়েছেন ফিদেল কাস্ত্রো।

ইয়রোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাথে কিউবা বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইছে তখন। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক হুইপ জারী করে চলেছে- তারা চায়না কোনও দেশ কিউবার সাথে যোগাযোগ রাখুক। অবাধ বাণিজ্য, অবাধ স্বাধীনতার কথা বলে নিজেদের ঢাক নিজেরাই পেটানো এই দেশটিই সবচেয়ে বেশি হস্তক্ষেপ করে অন্য দেশের স্বাধীনতায়, সার্বভৌমত্বে। সেদিনও তাই, আজও তাই। কেউ কেউ এমন দ্বিচারিতা দেখেও পুঁজিবাদের উদারতায় আস্থা রাখেন, সবাই নয়।

নেহরু সমাজতন্ত্রী ছিলেন- এমন একটা সন্দেহ মহাত্মা গান্ধীর ছিল, প্যাটেল-বিড়লা মানে জাতীয় কংগ্রেসের ভিতরে থাকা দক্ষিণপন্থীদের তো ছিলই। নেহরুর সমাজতান্ত্রিক চিন্তাভাবনার প্রমাণ দাখিল করা আমাদের কাজ নয়, কিন্তু ‘স্টেটসম্যান’ সুলভ রুচি, আচরণ ও ভদ্রতাটুকু যে তার ছিল একথা আমাদের দেশেরই ইতিহাস। সেই কারনেই ফিদেল চে’কে পাঠিয়েছিলেন।

অন্যান্য ধনতন্ত্রী দেশ থেকে সরকারী প্রতিনিধি হয়ে যারা আসেন তাদের কথা আলাদা। চে যে সেই ধাতুতে গড়া কেউ না তার প্রমাণ সেবারের সফরসূচি। প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথাবার্তার পরের দিনই তারা গ্রামীন ভারত দেখতে যান। সেখানকার কৃষকদের সাথে পরিচিত হন, বুঝে নেন স্বাধীন ভারত নির্মাণের গোড়ায় ফাঁক-ফাঁকিটুকু কোথায়। জমিদার-জোতদারদের হাতে ব্যপক জমির মালিকানা, অন্যদিকে কৃষিজীবী জনতার হাতে কিছুই নেই। কিউবা ফিরে গিয়ে তিনি যে রিপোর্ট পেশ করেন তাতে এসবই পাওয়া যায়। তার কথা বলেন তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভি কে কৃষ্ণ মেননের সাথে। সেখান থেকে চলে যান অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউটে। যোজনা (প্ল্যানিং) কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। জাতীয় খাদ্য মন্ত্রক, অর্থনীতি ও বাণিজ্য এবং মানবোন্নয়ন মন্ত্রকের একাধিক আধিকারিকের সঙ্গেও কথা বলেনছিলেন। এই আলাপচারিতা চলাকালীনই তার বিশেষ মন্তব্য ছিল- ‘চিনি আপনাদের প্রয়োজন হবেই, কেননা আপনারা দেশের জনগণের জন্য প্রগতির পথে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমন হলে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, তখন চিনি ও অন্যান্য সামগ্রীর চাহিদা বাড়বে’। বুঝতে অসুবিধা হবার কথা না, কিউবার অর্থনীতি ও বাণিজ্য সংক্রান্ত দায়িত্ব তার হাতে তুলে দিয়ে ফিদেল সঠিক কাজই করেছিলেন।

চে বিপ্লবী ছিলেন। যেন তেন প্রকারেণ বাণিজ্য চুক্তি পাশ করিয়ে নেওয়ার মতো সুচতুর আমলার মানসিকতা তার কোনদিনই ছিল না। ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে, চাহিদা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে যেমন ইতিবাচক মনোভাব তিনি দেখিয়েছিলেন তার কারণ জাতীয় অর্থনীতি নিয়ে তার যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গী। জীবনযাত্রার মান উন্নত হলে তবে জনসাধারণের হাতে খরচ করার মত বাড়তি অর্থ রইবে, সেই বাড়তি অর্থের কারনেই বাজারে চাহিদা বাড়বে- প্রকৃত অর্থে অর্থশাস্ত্রী না হয়েও একথা বুঝতে তার অসুবিধা হয়নি। অথচ আজকের ভারতে অর্থনীতির সরকারী পণ্ডিতেরা (অর্থমন্ত্রী সহ) কিছুতেই সেকথা মানতে চাইছেন না।

che-agriculture
অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউটে
কে পি ভানুমতির সাথে সাক্ষাৎকার
ভারতে কৃষকদের মাঝে
           

দিল্লী থেকে চে গুয়েভারা কলকাতায় আসেন। বরানগরে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউটে যান। সেখানে তখনও কাজ করছেন প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ। এই প্রতিবেদন লেখার জন্য ইন্টারনেট ঘেঁটে তথ্য খুঁজতে গিয়ে চোখে পড়ে একজন মন্তব্য করেছেন চে গুয়েভারা কম্পিউটার ব্যবহার প্রসঙ্গে প্রশান্ত মহলাবিশ’কে কিছু জিজ্ঞাসা করলে তিনি নাকি উত্তর দেন ‘ঐ যন্ত্রটি অকাজের, আমরা এখনও পেন-পেন্সিল ও কাগজেই ভরসাতেই কাজ করি’। অবশ্য সেই মন্তব্যের তলায় সুচেতনা লিখেছেন তার ঠাকুমা তখন কলকাতার আইএসআই’তে কর্মরত ছিলেন। চে আইএসআই’তে এসেছিলেন ঠিকই, কিন্তু কম্পিউটার ঘরে যাননি, তখন ঐ যন্ত্র কেবল গবেষণার জন্যই ব্যবহৃত হত। চে’র মূলত আগ্রহ নিবিষ্ট ছিল জাতীয় নমুনা সংগ্রহ ও সমীক্ষার কাজ সম্পর্কেই।

নিজের ক্যামেরার সেই সময়ের কলকাতার কিছু ছবি তুলেছিলেন চে। আজকাল সেই ছবি ইন্টারনেটে সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। যা উল্লেখযোগ্য তা হল, চে গুয়েভারার ক্যামেরায় কলকাতার ব্রিটিশ যুগের স্থাপত্য কিংবা স্বাধীন ভারতের বিকাশ ধরা পড়েনি। কলকাতার রাস্তা, হকার, গবাদি পশু, ট্রামলাইনের পাশ দিয়ে চলা শ্রমজীবী মানুষ কিংবা কোটপ্যান্ট পরা ভদ্রজনের সামনে দাঁড়ানো হতদরিদ্র কৈশোর- এসবই রয়েছে সেই ফটো সিরিজে।

সেইবার প্রায় ১৭টি দেশ ভ্রমন করেন চে গুয়েভারা। কিউবায় ফিরেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের সামনে উত্তর দিয়েছিলেন- ‘ভারতের জনগণ কিউবার প্রতি সহমর্মী। আমরা সেই দেশে গেছি। দেশ নির্মাণের লক্ষ্যে তাদের সংগ্রাম প্রত্যক্ষ করেছি। আপাতত তারা কৃষিজমির যথাযথ ব্যবহার ও ব্যাক্তি মালিকানায় বিপুল সম্পত্তিজনিত সমস্যা সমাধানে মনোনিবেশ করেছেন’।

ভারতে থাকতে চে গুয়েভারা একটি সাক্ষাৎকারও দিয়েছিলেন। অল ইন্ডিয়া রেডিও’র তরফে কে পি ভানুমতি সেই সাক্ষাৎকার নেন। ভানুমতির ব্যাক্তিগত স্মৃতিচারণা থেকে আমরা জানতে পারি, তিনি চে’কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন- ‘আপনি তো কমিউনিস্ট। আমাদের মতো দেশ যেখানে একাধিক ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠী রয়েছে, এমন দেশে কমিউনিজমের আদর্শ কার্যকরী হবে না।’

চে’ এমন সোজাসাপটা প্রশ্ন এড়িয়ে যাননি, আমলা নন বলেই তেমন কিছু তার ধাতে ছিল না। তিনি ভানুমতিকে উত্তর দিলেন- ‘নিজেকে আমি এখনও কমিউনিস্ট বলি না। ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক পরিবারে আমার জন্ম। আমি নিজেকে এমন একজন সমাজতন্ত্রী মনে করি যে লড়াই করছে অত্যাচারী দেশগুলির বিরুদ্ধে, মানুষের সমতা, স্বাধীনতার অধিকারের পক্ষে। আমি ক্ষুধার কষ্ট জানি। নিপীড়ন, দারিদ্র্য, মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে বেঁচে থাকা এসবই আমি নিজের চোখ দিয়ে দেখেছি। লাতিন আমেরিকার বেকারত্বের সমস্যা তো আমি নিজের ছোটবেলা থেকেই দেখে বড় হয়েছি। কিউবা, ভিয়েতনাম কিংবা আফ্রিকার দুর্দশা প্রসঙ্গে একই কথা বলা যায়। পেটের খিদে মেটানোর লড়াই থেকেই মানুষের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু হয়। মার্কসবাদ-লেনিনবাদ থেকে আমরা সেই সংগ্রামে পথে এগিয়ে চলার দিশা খুঁজে পাই। কেউ যদি আজকের পৃথিবীতে বিপ্লবী হতে চায় তবে তাকে সেই পথেই এগোতে হবে যেগুলি মার্কস পর্যালোচনা করেছেন, ভবিষ্যতকে নির্মাণের জন্য বলেছেন’।

শুধুমাত্র নিজের দেশে অর্থনীতি, বাণিজ্য প্রসারের জন্য চে গুয়েভারা ভারতে আসেননি। সরকারী দস্তাবেজে চে নামটিও নেই, সেখানে উল্লেখ রয়েছে আর্নেস্তো ডে লা সেরনা- কিউবার জাতীয় নেতা হিসাবে। ২০০৭ সালে ওম থানভি’র লেখা বই ‘দ্য রোভিং রেভল্যুশনারি’ প্রকাশ হলে চে’র ভারত সফর নতুন করে খবরে উঠে আসে। ওম অবশ্য তার মূল লেখাটি হিন্দিতেই লিখেছিলেন। আমরা তারই ইংরেজি অনুবাদ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি।

ওম থানভি সেই বই লিখতে যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন। ভারতের জাতীয় মহাফেজখানা থেকে খুঁজে খুঁজে তথ্য টেনে বের করেছেন। কিউবাতেও গেছিলেন, সেই কথা দিয়েই এই লেখা শেষ হবে। হাভানায় চে’র ছোট্ট বাসভবনটি এখন ‘সেন্টার অফ চে গুয়েভারা স্টাডিজ’ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ওম সেখানেই পরিচিত হন সেন্টারের পরিচালকের সাথে। সেই পরিচালক চে’রই পুত্র ক্যামিলো গুয়েভারা মার্চ। বলিভিয়া থেকে চে’ নিজের মেয়েকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠি শুরু করেছিলেন এই বলে- ‘তোমাদের পিতা আজ এমন একজন মানুষ যার কথা ও কাজ একই’।

আগামী ২১ তারিখে কলকাতায় আসছেন চে’র কন্যা শিশু চিকিৎসক অ্যালেইদা গুয়েভারা। তার সাথেই এই সফরে থাকবেন চে’র নাতনী, অ্যালেইদার কন্যা অর্থনীতিবিদ এস্তেফানিয়া গুয়েভারাও। এমন সফরের উদ্দেশ্য বিশ্ব শান্তির জন্য সংহতি। ‘চে, তোমার মৃত্যু আমাকে অপরাধী করে দেয়’ বলেছিল যে শহর সেখানেই অ্যালেইদা এবং এস্তেফানিয়া সাক্ষী থাকবেন সেই সংগ্রামী আবেগের যা ভাষা, সংস্কৃতির পরিধি টপকে যায়, চিরকাল।

সেই একই সময়ে হাভানার সেই ছোট্ট বাড়িতে হয়ত কেউ ঢুকে পড়বে। তাকে চে’ সম্পর্কে জানতে সহায়তা করবেন ক্যামিলো গুয়েভারা মার্চ।

চে’র সেই চিঠি মনে রেখেই কলকাতা আরও একবার আপন করে নেবে অ্যালেইদা আর এস্তেফানিয়াকে।

যার কথা ও কাজ একই।

সেই বিপ্লবী সেবার কলকাতা চিনে গিয়েছিলেন।

অ্যালেইদা আর এস্তেফানিয়া’রা দেখে যাবেন কলকাতাও বিপ্লবী চেনে।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন