কয়েক শতাব্দী ধরেই নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাস নির্বিশেষে দুর্গাপূজাকে বাঙালি মানুষজন সম্প্রীতির উৎসব হিসাবে পালন করে এসেছেন। বাংলাদেশও বরাবর সেই ঐতিহ্যই পালন করে। সিপিআই(এম)-এর পলিট ব্যুরো প্রত্যাশা রাখছে সেই ঐতিহ্য বজায় থাকবে এবং আরও শক্তিশালী হবে।

কয়েক শতাব্দী ধরেই নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাস নির্বিশেষে দুর্গাপূজাকে বাঙালি মানুষজন সম্প্রীতির উৎসব হিসাবে পালন করে এসেছেন। বাংলাদেশও বরাবর সেই ঐতিহ্যই পালন করে। সিপিআই(এম)-এর পলিট ব্যুরো প্রত্যাশা রাখছে সেই ঐতিহ্য বজায় থাকবে এবং আরও শক্তিশালী হবে।
দেশের চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত কয়লা যোগানের ক্ষমতা আমাদের খনিগুলির রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে মজুত কয়লা না থাকার সমস্যার কারন হল যথাযথ পরিকল্পনার অভাব এবং দায়িত্ব পালনে অযোগ্যতারই একটি উদাহরণ। মোদী সরকার বিদ্যুৎ ও কয়লা মন্ত্রকের মধ্যে সমন্বয় সাধনের বুনিয়াদি কাজে ব্যর্থ এবং এখন সেই ব্যর্থতার জন্য কোল ইন্ডিয়াকে তারা বলির পাঁঠা বানাতে চাইছে। আজকের ভারত দেশের কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলির মধ্যে সমন্বয় ও পরিকল্পনার মতো সহজ বিষয় পরিচালনা করতেও মোদী সরকারের অক্ষমতার মূল্য দিচ্ছে।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আমলে দেশের জাতীয় সম্পদের নিরলস লুট অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় পতাকার বাহক সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়াকে টাটাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। মোদি সরকার কর্তৃক এই বিক্রি টাটাদের বিনামূল্যে উপহার দেওয়ার সমতুল্য। টাটারা এই বিক্রির সূত্রে ১৫৩০০ কোটি টাকার ঋণের দায় নেবে, বোঝাই যাচ্ছে পরবর্তীকালে সেই ঋণ সম্পর্কে নতুন সিদ্ধান্ত হবে। কেন্দ্রীয় সরকারকে কেবলমাত্র ২৭০০ কোটি টাকা নগদ দিয়েই এয়ার ইন্ডিয়ার ৪৬২৬২ কোটি টাকা মূল্যের বিপুল সম্পদের মালিক হল টাটা গোষ্ঠী। অবশিষ্ট ঋণের ৪৬,২৬২ কোটি টাকার দায় বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার, যার অর্থ এই ঋণ পরিশোধের ভার জনগণের উপরে চাপানো হবে।
বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা সত্ত্বেও কমরেড বিজন ধর পার্টির কাজে অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে গেছেন। পার্টির লক্ষ্যের প্রতি উচ্চ স্তরের অঙ্গীকারই তার এহেন আচরণের ব্যাখ্যা। ত্রিপুরায় হিংসাত্মক আক্রমণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পার্টি যখন সাহসিকতার সাথে লড়াই চালাচ্ছে তখন কমরেড বিজন ধরের এবং গত মাসে তারই সহকর্মী কমরেড গৌতম দাসের মৃত্যু পার্টির জন্য একটি বড় ক্ষতি।
একশো জনেরও বেশি প্রত্যক্ষদর্শী চারজন কৃষক এবং এক সাংবাদিককে গাড়ি চালিয়ে পিষে মারার ঘটনায় আশীষ মিশ্রকে সনাক্ত করেছেন, তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ইউপি পুলিশের উচিত ছিল তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা, কিন্তু তিনি এখনও অবাধে ঘোরাফেরা করছেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার নিজের ছেলে জড়িত, ঘটনার পরে তিনি কৃষকদেরই দোষারোপ করে এহেন নৃশংসতাকে সমর্থন করেছেন। সাইরেন বাজিয়ে কৃষকদের সমাবেশে গাড়ি চালিয়ে তাদের হত্যা করার স্পষ্ট প্রমাণ হিসাবে ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং রয়েছে। এই ঘটনায় আহত এবং নিহতদেরকে “বহিরাগত” বলে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি নিজেকে এবং তার আত্মীয়দের রক্ষা করার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের “খালিস্তানি” বলে দাবি করেছেন তিনি।
হেলিপ্যাড এলাকায় কৃষকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করার সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশীষ মিশ্র টেনীই যে তিনটি গাড়ি সমেত সেই বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে আসেন এবং কৃষকদের গাড়ি চালিয়ে পিষে দেন তা নিশ্চিত। এই জঘন্য কান্ডের শেষে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা তাজিন্দর সিংহ ভার্ককেও আক্রমণ করা হয় এবং তাকেও গাড়ি চালিয়ে পিষে মারার চেষ্টা চলে। এই হামলার ঘটনায় গুলি অবধি চলেছে এবং আশিস মিশ্র টেনি ও তার দলবলের ছোঁড়া গুলিতেই একজনের মৃত্যু হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার বিভিন্ন আন্দোলনে যৌথ সংগ্রামের ফলে দেশের শ্রমিক-কৃষকের মধ্যে যে দৃঢ় শ্রেণীগত ঐক্য গড়ে উঠেছে তারই সাফল্যের প্রমান আজকের ভারত বনধ, দেশজুড়ে কর্পোরেট শোষণের বিরুদ্ধে কৃষি, শিল্প ও পরিষেবাক্ষেত্রেসহ বৃহত্তর যুক্তফ্রন্টের সংগ্রামই হল এই আন্দোলনের রাজনৈতিক দিশা। যে রাজনৈতিক দলগুলি এখনো কর্পোরেটদের স্বার্থ রক্ষা করছে তারা জনগণের পক্ষ থেকে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখোমুখি হবে এবং জনগণের উত্তাল আন্দোলন আগামীদিনে জনবিরোধী রাজনীতিকে পশ্চাদপসারণ করতে বাধ্য করবে।
সংগ্রামরত কৃষকদের সাথে আলাপআলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে মোদী সরকার এখনও অস্বীকার করছে। মোদি সরকারের এহেন আচরনের নিন্দা করার পাশাপাশি বামদলগুলি দাবি জানাচ্ছে কৃষি আইনগুলিকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, এমএসপি বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিতে হবে, ন্যাশনাল মানিটাইজেশন পাইপলাইন প্রকল্প এবং শ্রম কোড বাতিল করতে হবে।
কৃষকদের উপর ভয়াবহ বর্বরতায় জড়িত যাদের ক্যামেরায় দেখা গেছে সেইসব পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। গুয়াহাটি হাইকোর্টের একজন সিটিং জজের অধীনে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছে সিপিআই(এম)। উচ্ছেদ কর্মসূচি এখনই বন্ধ করতে হবে, নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আসামে বিজেপি সরকারের সাম্প্রদায়িক, বিদ্বেষী রাজনীতির স্বরুপ উন্মোচন করতে এবং তাকে প্রতিরোধ করতে সেই রাজ্যের ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তিসমুহের লড়াইকে সমর্থন জানাচ্ছে পলিট ব্যুরো।