না ইনসাফির বিরুদ্ধে ব্রিগেড, লক্ষ হাতে কাজের দাবিতে ব্রিগেড - সায়নদীপ মিত্র

সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে সবচেয়ে চর্চিত শব্দ 'ইনসাফ যাত্রা'। রাজ্য রাজনীতির অভিমুখ নতুন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে 'ইনসাফ যাত্রা'র রাস্তায়। 'ইনসাফ যাত্রা'র এই স্রোতে পশ্চিমবঙ্গের পুনর্গঠনের লড়াই এবং বামপন্থার প্রতি যৌবনের আকর্ষণের ঢেউ উঠেছে। ৫০ দিনের এই অবিরাম পথ চলায় মানুষের উচ্ছ্বাস, আবেগ, ভালোবাসা এবং উদ্দীপনার স্রোতে ভাসতে ভাসতে আগামী ৭ই জানুয়ারি, ২০২৪ ইনসাফ ব্রিগেডে জনতার সমুদ্র আছড়ে পড়বে। যৌবনের স্রোতে জনগণের ঢেউ উঠবে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে। জীবন জীবিকার লড়াইয়ের বার্তা দিতে এবং গ্রহন করতে কানায় কানায় ভরে উঠবে ব্রিগেডের মাঠ। ধর্ম ও রাজনীতিকে একাকার করে ফেলার কদর্য রসায়নকে প্রত্যাখ্যান করবে ব্রিগেডের মানুষ। 'সবার উপরে মানুষ সত্য' প্রমান করবে বহু ইতিহাসের সাক্ষী ব্রিগেড।

বেকারির না ইনসাফির বিরুদ্ধে এই 'ইনসাফ যাত্রা' দীর্ঘ পথ হেঁটেছে। কাজের অধিকারের দাবিতে এই পথ হেঁটেছে। বছরে ২ কোটি কর্মসংস্থানের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যে ২ লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতির প্রতারনার বিরুদ্ধেও পথ হেঁটেছে। কার্যত ১০ বছর ধরে দেশের তরুণ প্রজন্মের সাথে এই নির্মম প্রতারণা চলছে। রাজ্য এবং দেশের সর্বত্র। বেকারি এখন সবচেয়ে বড় জ্বলন্ত সমস্যা। কিন্তু কেন্দ্রের সরকার অর্থনীতির বিকাশে বেকারি কমার দাবি করলেও বিশ্বব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক রিপোর্ট সেই দাবি পত্রপাঠ নাকচ করে দিয়েছে। তরুণ প্রজন্মের বেকারিতে ভারতই এখন বিশ্বের শীর্ষে। বিশ্বব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী ভারতে তরুন অংশের মধ্যে এখন বেকারির হার ২৩.২২ শতাংশ। অর্থনৈতিক সংকটে জেরবার পাকিস্তানকেও এই বেকারত্বের সংখ্যায় ছাড়িয়ে গেছি আমরা। পাকিস্তানে এই সংখ্যা ১১.৩ শতাংশ। এমনকি বাংলাদেশ বা ভুটানের থেকেও বেকারির হার দ্বিগুণের বেশি আমাদের দেশে। বাংলাদেশে ১২.৯ এবং ভুটানে ১৪.৪ শতাংশ। বিকাশ পুরুষের রাজত্বে কর্মসংস্থানের বিনাশ পর্ব চলছে এখন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ঘটা করে 'কৌশল দীক্ষান্ত সমারোহে' ঘোষণা করেছেন 'পিরিওডিক লেবার সমীক্ষা' রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে নাকি গত ৬ মাসে বেকারির হার কমেছে। অথচ বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্টে তরুণ অংশের মধ্যে বেকারির হার দেখেই প্রকৃত চেহারাটা আন্দাজ করা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করছে অর্থনীতি নাকি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু উপদেষ্ট সংস্থা 'সেন্টার ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি'র পরিসংখ্যান অন্য কথা বলছে। দেশে বেকারত্বের হার গ্রামে ৭.৮ শতাংশ এবং শহরে প্রায় ৮ শতাংশ। বিগত তিন মাসের মধ্যে এই হার সবচেয়ে বেশি। বোঝাই যাচ্ছে সরকারের দাবি ও পরিসংখ্যানের মধ্যে যথেষ্ট ফারাক থেকে যাচ্ছে। বেকারত্বের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের চেহারাটাও সমানভাবে উদ্বেগের। ২০২২ সালে যেখানে কর্মসংস্থানের হার ৩৬.৭ শতাংশ ছিল, সেখানে এই সময়ে কর্মসংস্থানের হার৩৫.৮ শতাংশ। অর্থাৎ কাজের সুযোগ ক্রমাগত কমছে। তরুণ প্রজন্মের এই বেকারত্বের মধ্যে নারীদের অবস্থাও অত্যন্ত সঙ্কটজনক। ১৫-২৯ বছর বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে বেকারত্বের হার ২০১৭-১৮ সালে ছিল ১৭.৮ শতাংশ। কেন্দ্রের সরকারের বানানো 'পিরিওডিক লেবার সমীক্ষা' অনুযায়ী এই হার এখন ১০ শতাংশ। কিন্তু ২০১১-১২ সালে নারীদের ক্ষেত্রে বেকারত্বের হার ছিল ৪.৮ শতাংশ। সরকারের এই কষ্টকল্পিত রিপোর্টও এক্ষেত্রে যথেষ্ট ম্লান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই 'পিরিওডিক লেবার সমীক্ষা' মরিয়া হয়ে বেকার সমস্যা কম দেখানোর চেষ্ট করলেও বিভিন্ন তথ্য ও সমীক্ষায় উঠে আসছে আমাদের দেশে ৮২ শতাংশ পুরুষ কর্মী এবং ৯২ শতাংশ মহিলা কর্মী ১০,০০০ টাকার কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। বর্তমান ভারতে ৫৮ শতাংশ স্নাতক উত্তীর্ণ এবং ৬২.৪ শতাংশ স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ যুব বেকারত্বের ভয়াবহতার শিকার। প্রথাগত কর্মসংস্থানের আওতার বাইরে থেকে গেছে দেশের শ্রমশক্তির একটা বিপুল অংশ। মজুরীবিহীন শ্রমিকের সংখ্যাও বিপুলায়তনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মজুরী এবং অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা কাটছাঁট করার লক্ষ্যে শ্রম আইন পাল্টে দিয়ে শ্রম কোড চালু করা হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তার লেশমাত্র থাকছেনা কর্মক্ষেত্রের এই অমানবিক চেহারায়।


সামাজিক নিরাপত্তাহীন কর্মসংস্থানের এই বেআব্রু চেহারা ক্রমশঃ প্রকট ও স্পষ্ট হয়েছে উদারীকরণ উত্তর যুগে। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশে শহরাঞ্চলে কর্মসংস্থানের প্রধান ভিত্তি ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি। কিন্তু নয়া উদারবাদের সাথে অসম যুদ্ধে এই ক্ষেত্রগুলি দুর্বল হতে শুরু করে। কাজের বাজার কার্যতঃ দখল করে নেয় পরিষেবা ক্ষেত্র। বর্তমানে শহরাঞ্চলে ৬০ শতাংশ কাজের বাজার এই পরিষেবার ক্ষেত্রের আওতায়। উৎপাদনক্ষেত্রের সাথে যুক্ত মাত্র ৩৫ শতাংশ মানুষ। বাকিটা পাইকারী ও খুচরা ব্যবসা অথবা নির্মাণ শিল্পের সাথে যুক্ত। এইসব কাজে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো সামাজিক নিরাপত্তা নেই। ৮২ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো কাজের লিখিত চুক্তি নেই। কর্মসংস্থানের চরিত্রই এখন আমাদের দেশে অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক। আসলে আজকের পৃথিবীতে এবং আমাদের দেশেও শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারগুলি অস্বীকার করার মাধ্যমে শ্রমের আর ঘামের দাম ক্রমাগত কমানো হচ্ছে। অরক্ষিত এই বিপুল সংখ্যক শ্রমিকরা উদ্বৃত্ত উৎপাদন এবং বিপুল মুনাফার প্রধান উৎস।

নদীমাতৃক আমাদের দেশে কৃষি এবং কৃষি নির্ভর নানা কাজকর্মের উপর গ্রামীণ অর্থনীতি প্রধানত নির্ভরশীল। গ্রামে ৬০ শতাংশ মানুষের আয়ের উৎস প্রধানত কৃষি। সাঁড়াশি আক্রমন সেখানেও। বৃহৎ কর্পোরেট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফড়েরা সরাসরি জমির নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষি পণ্যের বাজার দখল করে নেওয়ার ফলে কৃষক ফসলের দাম পাচ্ছে না। অন্যদিকে দেশের সরকার কৃষকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে চরম উদাসীন। কৃষক আন্দোলনের ধাক্কা খেলেও কর্পোরেটের দাসত্ব সরকারের ধ্যানজ্ঞান।
কর্পোরেটমুখী এই অর্থনীতির পরিণতিতে বৈষম্য আজকের ভারতে কদর্য চেহারা নিয়েছে। 'অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া'র রিপোর্ট বলছে নূন্যতম ১ শতাংশ মানুষের হাতে দেশের সম্পদের ৪০.৫ শতাংশ কুক্ষিগত রয়েছে। আর ১০ শতাংশ ধনীদের নিয়ন্ত্রণে আছে ৭২ শতাংশ সম্পদ। এই অজুত-কোটিপতিদের করছাড় দেওয়ার ব্যাপারে দেশের সরকার মুক্তহস্ত। শুধুমাত্র নিংড়ে নেওয়া হয় নিচের তলার ৫০ শতাংশ গরীব মানুষকে। যাদের হাতে দেশের সম্পদের পরিমান মাত্র ৩ শতাংশ। অথচ তারাই জিএসটি দেয় ৬৮ শতাংশ। কি বিচিত্র এই দেশের সরকার। এইসব না ইনসাফির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নাম 'ইনসাফ যাত্রা'। ব্রিগেডের মাঠ থেকে এই প্রতিবাদ প্রতিরোধে উন্নীত হবে।

'কর্পোরেট কম্যুন্যাল' নেক্সাসের দৌলতে আদানীর এখন পৌষমাস। কোম্পানীর শেয়ারের মূল্য নির্ধারণে জালিয়াতিতে অভিযুক্ত এই সংস্থার সম্পদ মোদিজির আশীর্বাদে ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সালে বেড়েছে প্রায় ৩৫০ শতাংশ। এই মুহূর্তে আদানীরা প্রায় ১৯১ টি প্রকল্প রূপায়নে ব্যস্ত। যার বাজার দর প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা। রেল সহ অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ব সম্পদের দিকে হাত বাড়িয়েছে এই আদানী গোষ্ঠী। দেশের সরকার এলআইসি বা স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে আদানীদের শেয়ার কেনায় বাধ্য করছে। কর্পোরেটের প্রতি প্রশ্নহীন দাসত্বের বাধ্যবাধকতায় জনগণের টাকা এবং এই সরকারী সংস্থাগুলিকে শেয়ারবাজারে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে দেশের সরকার। প্রতিদানে ইলেকটোরাল বন্ডের ছদ্মবেশে শাসক দল বিজেপির ভাঁড়ার উপচে পড়ছে কর্পোরেটের টাকায়।
উদার অর্থনীতি এবং হিন্দুত্বের রাজনীতির আস্ফালনে তাই চাপা পড়ে গেছে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, অপুষ্টি, শিশুমৃত্যু, অনাহারের মতো জ্বলন্ত সমস্যাগুলি। 'রামমন্দির নির্মাণ' রাজনীতির পরিসরে এখন সবচেয়ে চর্চিত বিষয়। রামলালার প্রতিষ্ঠাকে ঘিরেই দামামা বাজতে শুরু করেছে লোকসভা নির্বাচনের। মন্দির হচ্ছে রামের। অথচ পুজো হচ্ছে যেন মোদিজির। ধর্ম, রাজনীতি মিলেমিশে একাকার। ধর্মনিরপেক্ষতা আছে শুধু ছাপার অক্ষরে। লোকসভা ও রাজ্যসভা বিরোধীশূন্য করে একের পর এক দানবীয় আইন পাস করিয়ে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে।

New Delhi: Migrant workers along with their family members walk to their native village during a nationwide lockdown, imposed in the wake of coronavirus pandemic , at NH 24 near Akshardham in East Delhi, Sunday, March 29, 2020. (PTI Photo/Manvender Vashist)(PTI29-03-2020_000144B)

রাজনীতির এই অভূতপূর্ব সন্ধিক্ষণে ৭ জানুয়ারি ব্রিগেডের মাঠের অসীম তাৎপর্য। রাজ্য তো বটেই, দেশের মানুষও নজর রাখবে গণআন্দোলনের অগ্রবর্তী ঘাঁটি পশ্চিমবাংলা কি বার্তা দেয় তা শোনার জন্য। যুবদের যন্ত্রণা ও লড়াইয়ের কথা ভাগ করে নেবে বাকি জনতা।আরএসএস-বিজেপি-তৃণমূলের সাজানো স্ক্রীপটের বদলে রুটি রুজির কথা বলবে শীতের ব্রিগেড। কোচবিহারের মাটি ছুঁয়ে ইনসাফ যাত্রার শুরুর আগের দিন এই জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমার জামালদহে ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া শ্রমিকের নিথর দেহ বাড়িতে ফিরেছিল। মাঝেমধ্যেই মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, অথবা উত্তর ২৪ পরগনায় এভাবেই এক বা একাধিক পরিযায়ী শ্রমিকদের নিথর দেহ ফিরে আসছে। সরকারের কাছে এরা শুধুমাত্র একটা মৃত সংখ্যা। সরকার কোনো খবরই রাখে না এদের ।আর পেটের টানে ভিটেমাটির মায়া ত্যাগ করে এরাও বাধ্য হচ্ছে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে। ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই বাইরের রাজ্যে যাওয়া মানুষের সংখ্যা সুনামির চেহারা নিয়েছে। ভুয়ো জব কার্ড হোল্ডাররা বহাল তবিয়তে আছে। অথচ টাকা বন্ধ করে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে ন্যায্য প্রাপকদের। রাজ্য সরকার অবশ্য এই নির্মম বাস্তবকে স্বীকার করতে রাজি নয়। ৬ টি শিল্প সম্মেলন মিলিয়ে ১৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৩৯২ কোটি ২ লক্ষ টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে বলে রাজ্য সরকার তার বিজ্ঞাপনে এখন ব্যস্ত। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের ডি আই পিপি (ডিপার্টমেন্ট অফ পলিসি অ্যান্ড প্রমোশন) রিপোর্ট জানাচ্ছে বাস্তবে পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগের লিখিত প্রস্তাব এসেছে মাত্র ৫৭,১২৩ কোটি টাকার। ঘোষণার মাত্র ৪.১৬ শতাংশ। এগুলি শুধুই প্রস্তাব। প্রকৃত অর্থে বাস্তবায়িত হচ্ছে এর থেকেও অনেক কম। কিন্তু তৃণমূলের প্রতিশ্রুতির বন্যায় প্রতিটি মহকুমায় অন্ততঃ ১০ টি বড়-মাঝারি শিল্প গড়ার কথা বলা হয়েছিল। গ্রাম-শহর মিলিয়ে বছরে ১ কোটি বেকারের চাকরির ব্যবস্থা করার কথা ছিল। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রতারণা তৃণমূলের স্বভাবতগত বৈশিষ্ট। ফলে চাকরি হয় নি। লক্ষ লক্ষ শূন্য পদ পড়ে আছে। অথচ নিয়োগে অন্তহীন নিষেধাজ্ঞা। তৃণমূলের তোলাবাজিতে কারখানা বন্ধ হচ্ছে। আবার পৌরসভায় নিয়োগ, শিক্ষক নিয়োগ অথবা সরকারী অন্যান্য চাকরীতে নিয়োগ দূর্নীতি ও জালিয়াতির জাল সুদূর বিস্তৃত। শিখণ্ডী সংস্থা বা ভুয়ো কোম্পানীর তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ আজকে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ শিখরে। আর এখনো বেশিরভাগই তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে। কয়লা-বালি-গরু পাচারের টাকা অথবা চাকরী বিক্রির টাকা লিপস অ্যান্ড বাউন্ড-এর মতো কত ভুয়ো কোম্পানির হাত ধরে কালো থেকে সাদা হয়েছে তার ইয়ত্বা নেই।

এই সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও দেউলিয়া অর্থনীতির বেআব্রু চেহারাকে আড়াল করতে আরএসএস-এর সাজানো চিত্রনাট্য অনুযায়ী তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তরজা চলছে। সান্ধ্যকালীন সিরিয়ালের ঢঙে একাংশের মিডিয়া এই মেকী তরজা রঙীন মোড়কে পরিবেশন করছে। ইনসাফ যাত্রার জন্য এই মিডিয়াকূলের এয়ার টাইম বা নিউজ প্রিন্ট বরাদ্দ হয় নি।অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে শেষ পর্বে বাজার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াকে কিছুটা হলেও আত্মসমর্পন করতে হয়েছে।
আপাতত গন্তব্য একটিই। ৭ তারিখের ব্রিগেডের মাঠ। শুধুমাত্র ব্রিগেডের মাঠেই সেদিন ব্রিগেড হবে না। পুরো কোলকাতা ঐ দিন ব্রিগেড হয়ে উঠবে। জনসমুদ্রের চেহারা নেবে ব্রিগেডের মাঠ। কলকাতার রাস্তা। যৌবনের ডাকে জনগণের ব্রিগেড। বেকারের কাজ, কৃষকের ফসলের দাম, ক্ষেতমজুরের নূন্যতম মজুরি, শ্রমিকদের ঘামের দামের দাবিতে সব রাস্তা ব্রিগেডে মিশে যাবে ৭ জানুয়ারি। দাঙ্গাবাজ, লুটেরা, চাকরী বিক্রির অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ইনসাফ চাইবে ব্রিগেড।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন