শনিবার, ১৪ মে, ২০২২
অপ্রতিরোধ্য হারে শ্বাসরোধকারী মূল্যবৃদ্ধির ভারে দেশের জনগণের উপরে অভূতপূর্ব দুর্দশা চেপে বসছে। এর ধাক্কায় কোটি কোটি জনসাধারণ প্রতিনিয়ত গভীরতর দারিদ্যের শিকার হচ্ছেন, ক্ষুধার যন্ত্রণা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। বেকারির হার পৌঁছেছে অভূতপূর্ব সূচকে যার প্রভাবে জনজীবনের যন্ত্রণা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত এক বছরে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের দাম বেড়েছে ৭০ শতাংশ, সবজির দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ, ভোজ্য তেল ২৩ শতাংশ এবং খাদ্যশস্যের দামে ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোটি কোটি ভারতীয়ের প্রধান খাদ্য গমেরও দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশেরও বেশি। গম উৎপাদন কমেছে। শেষ এক বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে উৎপাদিত গম কেনা কমানো হয়েছে অর্ধেকেরও বেশি। এবছর গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৪.৪ মেট্রিক টন, বর্তমান পরিস্থিতিতে উৎপাদন হতে পারে সর্বোচ্চ ২০ মেট্রিক টন।
যাবতীয় পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য সহ রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই সঙ্গে গমের যোগানে তীব্র ঘাটতি সামগ্রিক মূল্যব্রিদ্ধিকে প্রভাবিত করছে। কয়লার যোগানে ঘাটতি সম্পর্কিত প্রতিবেদনেই বোঝা যাচ্ছে বিদ্যুতের দাম আরও বেড়ে চলেছে সেই কারনেই।
অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের উপর যাবতীয় সেস/সারচার্জ প্রত্যাহার সহ, মূল্যবৃদ্ধি বিশেষ করে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারে বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করার দাবী জানাচ্ছে বাম দলগুলি। গণবণ্টন ব্যবস্থা (পিডিএস)-র মাধ্যমে গমের সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে হবে। মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে গণবণ্টন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতেই হবে।
বামদলগুলির দাবীসমূহ
পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের উপর যাবতীয় সারচার্জ/সেস প্রত্যাহার করতে হবে।
গণবণ্টন ব্যবস্থা (পিডিএস)-র মাধ্যমে গমের সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে হবে।
ডাল, ভোজ্য তেল সহ সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণের কাজকে গণবণ্টন ব্যবস্থার অন্তর্গত করে গণবণ্টন ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করতে হবে।
আয়কর সীমার বাইরে থাকা প্রত্যেক পরিবারের হাতে প্রতি মাসে নগদ ৭৫০০ টাকা দিতে হবে।
এমএনরেগা (MGNREGS) প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বেকার ভাতার জন্য কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়ন করতে হবে।
শহরাঞ্চলে কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্পে আইন প্রণয়ন করতে হবে।
সমস্ত শুন্যপদে নিয়োগ করতে হবে।
আগামী ২৫-৩১ মে’র সময়কালে মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারি বিরোধী দেশব্যাপী সংগ্রামকে আরও ঐক্যবদ্ধ এবং সমবেত আন্দোলনে পরিণত করতে বাম দলসমূহ সারা দেশে নিজ নিজ পার্টি ইউনিটকে আহ্বান জানাচ্ছে।
সাক্ষর
সীতারাম ইয়েচুরি, সাধারণ সম্পাদক, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)
ডি রাজা, সাধারণ সম্পাদক, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি
দেবব্রত বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক, সারা ভারত ফরোয়ার্ড ব্লক
মনোজ ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক, আর এস পি
দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)-লিবারেশন