দার্জিলিং - নতুন সমীকরণে বিকল্পের লড়াই
জীবেশ সরকার
অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্রের ভোটদাতারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন আগামী ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ (শুক্রবার)। এই নির্বাচনে এই লোকসভা কেন্দ্রে বামপন্থী-গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বামফ্রন্ট সমর্থিত জাতীয় কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী কালিম্পঙের বাসিন্দা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুনীশ তামাঙ।
যে কোনও নির্বাচনই রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং অবশ্যই জনস্বার্থ সম্পর্কিত নীতির সংগ্রাম। সারা দেশ ও রাজ্যের সামগ্রিক রাজনৈতিক-আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে সিপিআই(এম) তথা বামফ্রন্টের কর্তব্য ও নির্বাচনী কৌশলগত লাইন নির্ধারণ করা হয়েছে। এই কৌশলগত লাইনের অভিমুখ হলো সারা দেশে বিজেপি’র বিরুদ্ধে ও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এবং রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ মাত্রায় ভোট একত্রিত করার জন্য বামপন্থী-গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির মধ্যে বাস্তব অবস্থা অনুযায়ী সমঝোতা করা ও এই নীতির পক্ষে ব্যাপক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা।
আরএসএস নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সর্বনাশা নীতির কারণে দেশ আজ সর্বক্ষেত্রেই বিপর্যয় ও বিপদের সম্মুখীন। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সামাজিক ন্যায় ও সম্প্রীতি, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো সহ সংবিধান প্রদত্ত সমস্ত নীতি ও অধিকারগুলিই আজ বিজেপি সরকারের দ্বারা আক্রান্ত। ব্যাঙ্ক, বিমা, রেল সহ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির ব্যাপক বিলগ্নিকরণ ও বেসরকারিকরণ দেশের স্বনির্ভর অর্থনীতিকেই বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এই সময়কালে আন্তর্জাতিক লগ্নিপুঁজির ভারতীয় বাহক বৃহৎ কর্পোরেট পুঁজিপতিদের দাপট ও আইনি-বেআইনি মুনাফা বাড়ছে রকেটের গতিতে। এর বিপরীতে আমজনতার জীবন-জীবিকা ভয়ানকভাবে আক্রান্ত। কর্মহীনতা, বেকারি আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনে সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-স্বাস্থ্য সহ সমস্ত মৌলিক অধিকার থেকে একদিকে যেমন জনগণকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিজেপি ও তাদের সহযোগীদের দ্বারা শাসিত রাজ্যগুলিতে আইন-শৃঙ্খলা ও মানবাধিকার ভয়ানকভাবে বিপন্ন। নারী নির্যাতনের পরিসংখ্যান লজ্জাজনক চিত্রও প্রকাশ করছে। সেই কারণেই জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষকে দমন করা ও প্রতিবাদকে দুর্বল করার জন্য বিজেপি ও তাদের পরিচালক কার্যকরি করে চলেছে বিদ্বেষ ও বিভাজনের রাজনীতির প্রকল্প।
আরএসএস’র ‘‘হিন্দু রাষ্ট্র’ নির্মাণের অ্যাজেন্ডা ‘‘হিন্দুত্বের’’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে আসলে কর্পোরেট হিন্দুত্বের ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র নির্মাণ করার ভয়ানক প্রকল্প গ্রহণ করেছে বিজেপি। এই কৌশলেরই আরেকটি রূপ হলো বিজেপি’র ‘‘এক দেশ এক ভোট’’ স্লোগান। এরা সংসদীয় ব্যবস্থাকেই নস্যাৎ করার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে — এটাই এখন ‘‘মোদীর গ্যারান্টি’’! ধর্মীয় স্লোগানের মধ্য দিয়ে নয়া ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার আরএসএস’র রাজনৈতিক প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে বিজেপি। আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাও শোচনীয় তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের সময়কালে। দুর্নীতি ও স্বৈরাচারের কলঙ্কজনক পীঠস্থানে পরিণত হয়েছে রাজ্য। চুরি, ঘুষ, ‘‘কাটমানি’’ সহ নানা অভিযোগে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদরা অভিযুক্ত এবং কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে জেল বন্দি। আরও অনেকেই অভিযুক্তের তালিকায়। অভিযুক্তের তালিকায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। একই সাথে বিজেপি’র সঙ্গে কার্যত প্রতিযোগিতা করে বিভাজনের রাজনীতিকে বিপজ্জনকভাবে কাজে লাগাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মতো পশ্চিমবঙ্গেও নারী নির্যাতনের ঘটনার ভয়ানক চিত্র ক্রমশ বেশি বেশি করে প্রকাশিত হচ্ছে। বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশের হাথরাস, মণিপুর বা গুজরাটের মতই এ রাজ্যেও সন্দেশখালি, হাঁসখালি, কামদুনি, ধূপগুড়ি সহ নানা বীভৎস নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রের ও রাজ্যের দুই শাসকদল বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের স্বৈরাচার, বিভাজন, দুর্নীতি, ঘৃণার রাজনীতি ও জনবিরোধী অর্থনীতির বিরুদ্ধে সমস্ত বামপন্থী, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে সমবেত করে বিজেপি-তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী সমস্ত ভোটকে সর্বোচ্চ মাত্রায় সংহত করাই অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে জনগণের কাছে সিপিআই(এম) তথা বামফ্রন্টের আহ্বান। এই আহ্বান কার্যকর করতেই পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট ও জাতীয় কংগ্রেস পরস্পরের সাথে আসন ভিত্তিক বোঝাপড়া করে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের সম্মুখীন। গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য এই লোকসভা নির্বাচনের সময়েই শুধু নয় অনেক আগে থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায় যে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস যে পরস্পরের বিরুদ্ধে তীব্র বাক্যবাণ ব্যবহার করে ‘কুকথা’ ও ভাষণের লড়াই চালাচ্ছে। এটাও আসলে আরএসএস’র একটি কৌশলী প্রচার। এর উদ্দেশ্য হলো সংবাদ মাধ্যমে ও ময়দানে ‘‘বাইনারি’’ বহাল রেখে জনজীবনের নানা প্রশ্নে আন্দোলনকারী বাম-গণতান্ত্রিক শক্তি যাতে কোনও পরিসর না পায় তা নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক একটি জ্বলন্ত উদাহরণ হলো দুর্নীতির অভিযোগে ঝাড়খণ্ড ও দিল্লির বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী গ্রেপ্তার হলেও পশ্চিমবঙ্গে এর ব্যতিক্রম ঘটে কেন? এই নির্বাচনে বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তির পরিসর প্রসারিত করা সমধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। নানা জাতি-জনজাতি, নানা ভাষা, নানা ধর্ম ও সম্প্রদায়ের সমাবেশে বৈচিত্র্যপূর্ণ দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্র। পাহাড়, সমতল, তরাই অঞ্চলের চা বাগান-বনবস্তি, কৃষি ক্ষেত্র, শিলিগুলির জনবহুল নগরী ও উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া নিয়ে গঠিত দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্রে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য রক্ষাই সিপিআই(এম) তথা বামফ্রন্টের অগ্রাধিকার। অপরদিকে প্রতিটি নির্বাচনের সময়ে বিজেপি আলাদা রাজ্য ‘‘গোর্খাল্যান্ড’’ সহ নানা প্রতারণামূলক প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট হাসিল করে। জনজীবনের সমস্যা, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সহ বিভিন্ন বিষয়গুলি স্থান পায় না এদের কথায় বা কাজে। তৃণমূল কংগ্রেসও বিগত কয়েক বছর ধরে প্রলোভন ও চমক-ধমকের রাজনীতি দ্বারা ভোট হাসিল করার খেলায় তৎপর থেকেছে।
দার্জিলিঙ পার্বত্য এলাকায় ‘গোর্খা জাতি’গত আবেগ একটি দীর্ঘকালীন বাস্তব বিষয়। এই আবেগকে মর্যাদা দেয় সিপিআই(এম)। তাই বাস্তবতার উপর দাঁড়িয়েই গোর্খা জাতির অধিকার ও উন্নয়নের জন্যই রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ স্বশাসন (Regional Autonomy) চায় বামফ্রন্ট তথা সিপিআই(এম)। আশির দশকে আলাদা রাজ্যের দাবিতে যখন দার্জিলিঙ পাহাড় সুভাষ ঘিসিঙ’র আন্দোলনের ফলে ভয়ানক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল, তখন সিপিআই(এম) ও রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার এই আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের নীতিকেই প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিল ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে দার্জিলিঙ গোর্খা হিল কাউন্সিল গঠন করার মধ্য দিয়ে। এই কাউন্সিলকে আরও শক্তিশালী ও সাংবিধানিক নিশ্চয়তা দেবার জন্য ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়াস নিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। কিন্তু বিজেপি বা তৃণমূল কংগ্রেস বামফ্রন্ট সরকারের এই উদ্যোগকে সমর্থন করেনি। এই দুই দলেরই কৌশল হলো পাহাড়বাসীর আবেগকে নিজেদের ক্ষমতা লাভের জন্য ব্যবহার করা। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাহাড় ও সমতলের জনগণের ঐক্য সম্প্রীতির বন্ধন ও জীবন-জীবিকার সংগ্রাম। বামফ্রন্ট চায় পাহাড়-সমতলের ঐক্য রক্ষা করেই গোর্খা জাতির ও পাহাড়ের সমস্ত জনজাতির জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং ষষ্ঠ তফসিলে স্বশাসন (Regional Autonomy)। পাহাড় ও সমতলের চা বাগান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, বাস্তু জমি, স্বাস্থ্য-শিক্ষা সহ সামাজিক বিষয়গুলি নিয়ে শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ (Joint Forum) যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, তাকে সফল করতে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারের জনবিরোধী নীতিগুলির বিরুদ্ধে ব্যাপক জনগণকে সমবেত করাই এখন লক্ষ্য। চা বাগান ও বনাঞ্চলের জমি যেভাবে কর্পোরেট মালিকদের হাতে রাজ্য সরকার তুলে দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই এখন আন্দোলনের অগ্রাধিকার। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার কর্পোরেটের স্বার্থে যে নীতি নিয়েছে তা আসলে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিরই অনুসারি। প্রশাসনকে ব্যবহার করে যেভাবে জমি মাফিয়ারা জবরদখল ও দুর্নীতি করে চলেছে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে হবে।
দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত চোপড়া বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট লুট ও সন্ত্রাসের বীভৎস চেহারা দেখেছে। এই সন্ত্রাসে শহীদ হয়েছে চোপড়ার তরুণ কমরেড মনসুর আলম। পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মদতপুষ্ট বর্তমান ‘জিটিএ’র দুর্নীতি, সমতলে শিলিগুড়িতে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পৌর কর্পোরেশন ও মহকুমা পরিষদের নানা দুর্নীতি, অব্যবস্থা, কাটমানি আদায় ও উন্নয়নহীনতা উদ্বেজনক কুনজির তৈরি করে চলেছে। এর সঙ্গে বিপজ্জনকভাবে দুই শাসকদলই প্রসারিত করছে বিভাজনের রাজনীতিকে। বর্তমান সাংসদ ও বিধায়করা বিজেপি দলের। শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশন ও মহকুমা পরিষদ তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত। চোপড়ার পঞ্চায়েতগুলি জবরদখল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বর্তমানে এরা সবাই কার্যত জনবিচ্ছিন্ন। মানুষ এখন এদের বিকল্প চাইছেন। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিঙ পার্বত্য এলাকার একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সমীকরণ সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি ‘‘গোর্খাল্যান্ড’’ সহ নানা প্রতিশ্রুতি ও প্রলোভন দিয়ে, এবং রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস পুলিশ-প্রশাসন ও প্রলোভনের মাধ্যমে পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করে কার্যত নিজেদের কবজায় নিয়ে রেখেছিল। এটাও ছিল আরেকটি ‘বাইনারি’। এই বাইনারি বিপরীতে কার্যক্রম শুরু হয় চা বাগান শ্রমিকদের যৌথ আন্দোলনের মঞ্চ জয়েন্ট ফোরামের আন্দোলনের মাধ্যমে। এবার তার অগ্রগতি ঘটেছে রাজনৈতিক সমীকরণে। পাহাড়ের একটি জনপ্রিয় ও জনভিত্তিসম্পন্ন রাজনৈতিক দল ‘‘হামরো পার্টি’’ এই বাইনারি থেকে বেরিয়ে এসে ‘‘ইন্ডিয়া ব্লক’’-এ যোগ দিয়ে জেলায় বামফ্রন্ট ও জাতীয় কংগ্রেসের সাথে যৌথ নির্বাচনী সমঝোতায় শামিল হয়েছে। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্রে এই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ শুধু এই নির্বাচনের জন্যই নয় আগামীদিনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এই প্রেক্ষাপটেই জনগণের অধিকার, দেশের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, কর্মসংস্থান, উন্নয়ন ও ঐক্য-সম্প্রীতি রক্ষার জন্য বামপন্থী-গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোটকে সর্বোচ্চ মাত্রায় একত্রিত করে সারা দেশ ও সারা রাজ্যের সাথে দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট সমর্থিত ও জাতীয় কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী ড. মুনীশ তামাঙকে জয়ী করার অর্থ বিকল্প প্রতিষ্ঠার লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
১) বামফ্রন্ট চায় পাহাড়-সমতলের ঐক্য রক্ষা করেই গোর্খা জাতির ও পাহাড়ের সমস্ত জনজাতির জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং ষষ্ঠ তফসিলে স্বশাসন (Regional Autonomy)। পাহাড় ও সমতলের চা বাগান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, বাস্তু জমি, স্বাস্থ্য-শিক্ষা সহ সামাজিক বিষয়গুলি নিয়ে শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ (Joint Forum) যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, তাকে সফল করতে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারের জনবিরোধী নীতিগুলির বিরুদ্ধে ব্যাপক জনগণকে সমবেত করাই এখন লক্ষ্য। চা বাগান ও বনাঞ্চলের জমি যেভাবে কর্পোরেট মালিকদের হাতে রাজ্য সরকার তুলে দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই এখন আন্দোলনের অগ্রাধিকার।
২) দার্জিলিঙ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত চোপড়া বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট লুট ও সন্ত্রাসের বীভৎস চেহারা দেখেছে। এই সন্ত্রাসে শহীদ হয়েছে চোপড়ার তরুণ কমরেড মনসুর আলম। পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মদতপুষ্ট বর্তমান ‘জিটিএ’র দুর্নীতি, সমতলে শিলিগুড়িতে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পৌর কর্পোরেশন ও মহকুমা পরিষদের নানা দুর্নীতি, অব্যবস্থা, কাটমানি আদায় ও উন্নয়নহীনতা উদ্বেজনক কুনজির তৈরি করে চলেছে।