বিমান বসু
যে সমাজে এখনও মেয়েরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মত লাঞ্ছনার শিকার, নারী শিক্ষার হার যেখানে শোচনীয়, আর স্কুল-ছুট মেঘের সংখ্যা এখনও যেখানে শতকরা ৩০ ভাগের বেশি, সেখানে বিদ্যাসাগরকে মূর্তি বানিয়ে জাদুঘরে তুলে রাখার উপায় নেই। শুধুমাত্র একজন শিক্ষারতী ব্যক্তিত্ব হিসাবে বিদ্যাসাগকে গণ্য না করে মানবতাবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক কুসংস্কার-বিরোধী বাস্তববাদী ব্যক্তিত্বের সকল গুণাবলীর সমন্বয়ের মূর্তি হিসাবে চিত্রিত করতে হবে। মাইকেল মধুসুদন দত্তের মন্তব্যটি উল্লেখ্য, ‘তার (বিদ্যাসাগরের) মধ্যে ছিল একাধারে প্রাচীন ঋষির মনীষা ও প্রজ্ঞা, ইংরেজের প্রাণশক্তি এবং বাঙালী মায়ের হৃদয়’। তাই যতদিন না সমাজের শেষ সন্তান খুলে যাচ্ছে ও স্কুল-পাঠ শেষ করে বেরিয়ে আসছে, যতদিন না সমাজে নারীদের আশ্বনবন, আপনি শীলতা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে এবং যতদিন না সমাজ বিজ্ঞানমনস্ক, বাস্তববাদী, কুসস্কারমুক্ত হতে পারছে, ততদিন তিনিই আমাদের প্রেরণা। তিনি যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন দেড়শো বছর আগে, নারীর মনে আত্মবিশ্বাস ও মুক্তির আকাঙ্খা সকারের যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার দারিত্ব আজ আমাদের উপর বর্তেছে। আর আমরা তা পালন না করলে উত্তরকাল আমাদের ক্ষমা করবেনা। এই আন্দোলনের পথিকৃৎ ছিলেন রামমোহন, ডিরোজিও ছিলেন উত্তরাধিকারী। কিন্তু বিদ্যাসাগরই তাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন, গতি দিয়েছেন আমাদের আধুনিক শিক্ষ তিনিই দুর্গতি। বিদ্যাসাগর আমাদের সকলের কাছে আদর্শের এক মূর্ত প্রতীক।
আমাদের মনে রাখতে হবে বিদ্যাসাগরই সম্ভবতঃ প্রথম আধুনিক মানুষ তৈরি করার ক্ষেত্রে অক্লান্ত যোদ্ধা ছিলেন। তাই তিনি তৎকালীন সমাজের অচলায়তন ভেঙে কূপমণ্ডূকতার পরিবেশকে বিভিন্ন করে সমাজসেবার, সমাজ সংস্কারমূলক কাজে যুগপৎ শিক্ষা প্রসারের কাজকে যুক্ত করে নিজের জীবন সঁপে দিয়েছিলেন। ঐ সময়ে বিদ্যাসাগর শিক্ষকতা করে ভাষা শিখিয়ে মোট তিনশো টাকা আয় করতেন। তাঁর নিজের প্রকাশনীর আয় বাদ দিলেও তৎকালে তিনশো টাকা অনেক টাকা। কিন্তু জীবনধারণ জীবনচর্চার ঐ অর্থের কণামাত্র বর করতেন, বাকী সবই ব্যয় করতেন সমাজহিতে।
বিদ্যাসাগর ছিলেন বাংলা ভাষার প্রথম যথার্থ শিল্পী। ১৮৪৪ সালে বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জ সাহেবের সাথে বিদ্যাসাগরের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারটি যে কত ফলপ্রসূ হয়েছিল ভ পরিচয় বহন করেছে Handing experiment of 101 vernacular schools. দেশে শিক্ষানীতি নির্বাণে বিদ্যাসাগরের সর্বপ্রথম বাণ ও শ্রেষ্ঠ কাজ ছিল বাংলাভাষায় শিক্ষার পথ সুখম করা এবং সুললিত বাংলা গদ্য সাহিত্যের সৃষ্টি করা। লক্ষ্য ছিল বাংলা তথা মাতৃভাষাকে শিক্ষার বাহন করা। সাধারণ মানুষের মধ্যে শিক্ষার পরিধিকে প্রসারিত করা। কিন্তু হার্ডিঞ্জের পরীক্ষামূল ব্যবস্থা সফল হয়নি। ১৮৪৯ সালে তা বাতিল হয়।
ব্যর্থতার কারণগুলি –
(১) উচ্চমানের ছাপা বইয়ের অভাব
(২) যোগ্য ও শিক্ষিত শিক্ষকের অভাব এবং
(৩) উপযুক্ত তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা না থাকা।
এই ব্যর্থতা বিদ্যাসাগরকে নিরুৎসাহ করেনি। তিনি অগ্রসর হয়েছিলেন ঐ অসাফল্যের কারণগুলি দূর করতে। তার মধ্যে প্রধান বিষয় হলো উচ্চমানের পাঠ্যপুস্তক রচনা ও প্রকাশ। তৎকালীন সময়ে বাংলাভাষা ছিল কথোপকথনের ভাষা অথচ সংস্কৃতভাষা এতই শক্ত যে সাধারণ ঘরের ছেলে-মেয়েদের ভালভাবে শেখাই সম্ভব হত না। এই বাধা দূর করতে বিদ্যাসাগর প্রথমে সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা এবং ব্যাকরণ কৌমুদী রচনা করলেন। এর পরই তিনি আবিষ্কার কালেন বাংলা বর্ণ। ১৮৫৫ সালে বর্ণ পরিচয় প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ রচনা করলেন। তার আগেই লেখা হয়ে গেছে শিশুশিক্ষার দ্বিতীয় পুস্তক বোধোদয়। বর্ণ পরিচয় ছিল বিদ্যাসাগর মহাশয়ের এক অদ্ভুত আবিষ্কার। তিনি রচনা করলেন আখ্যানমঞ্জরী, কথামালা। তাঁর জীবনচরিত, স্বরচিত গ্রন্থগুলির বিষয়বস্তু থেকেই তাঁর বিজ্ঞানমনস্কতা, কুসংস্কারমুক্ত মানসিকতা ও বাস্তববাদী মনের পরিচয় পাওয়া যায়।
সর্বসাধারণের মধ্যে শিক্ষা প্রসারে বিদ্যাসাগরের ভাবনা লক্ষ্য করা যায়। ১৮৫৭ সালের ১৪ এপ্রিল তদানীন্তন ডি পি আই গর্ডন ইয়ংকে লেখা এক চিঠিতে। ‘এদেশের দীনমজুরদের পারিশ্রমিক এত কম যে, দু’বেলা গ্রাসাচ্ছাদনই তাদের হয় না, সুতরাং তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করা তাদের পক্ষে অসম্ভব। সেক্ষেত্রে সরকার যদি তাদের সন্তানদের শিক্ষাকে অবৈতনিক করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তাহলেই তারা ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে পারবে নতুবা নয়।’ এর মধ্যেই নিহিত ছিল বিদ্যাসাগরের যুগোত্তীর্ণ বৈপ্লবিক মানসিকতার পরিচয়। এই চিঠি লেখার অনেক আগেই বীরসিংহ গ্রামে নিজ ব্যায়ে তিনি একটি অবৈতনিক নৈশ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তৎকালীন নবজাগরণের যুগে স্বীয় প্রতিভায় ভাস্বর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বঙ্গপ্রদেশে তথা ভারতে এক অনন্য প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব। নারীমুক্তির ক্ষেত্রেই বিদ্যাসাগর ছিলেন সবচেয়ে স্বরণীয়। সরকারী চাকুরীর ৪ বছর সময়কালের মধ্যেই বিভিন্ন জেলায় মেয়েদের জন্য প্রথম উচ্চশিক্ষার বিদ্যালয়ের সম্পাদক ছিলেন বিদ্যাসাগর। পরে যে বিদ্যালয়ের নাম হয় বেথুন স্কুল। বালিকাদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে তিনি সচেষ্ট হয়েছিলেন, কারণ তিনি জানতেন, যে সাহিত্য, ইতিহাস, গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষা নারীকে আত্মসচেতন করবে; তাদের মনের গভীরে প্রোথিত সংস্কারগুলির অবসান ঘটাবে এবং তাদের স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করবে। এই সময়ে বিদ্যাসাগরের অন্যতম কীর্তি বিধবা বিবাহ প্রবর্তন। ১৮৬০ সালের ১১ আগষ্ট তাঁর সহোদর শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্নকে বিদ্যাসাগর লিখেছিলেন, “বিধবাবিবাহ প্রবর্তন আমার জীবনের সর্বপ্রধান সৎকর্ম… এ বিষয়ের জন্য সর্বশ্রান্ত হইয়াছি এবং আবশ্যক হইলে প্রানান্ত পরিশ্রম স্বীকারেও পরাঙ্মুখ নই।’ বিধবা বিবাহ প্রচলনের পাশাপাশি বাল্য ও বহুবিবাহ রোধের জন্য বিদ্যাসাগরের সুবিদিত। ১৮৫০ সালে ‘বাল্য বিবাহের দোষ’ বিদ্যাসাগরের প্রথম সামাজিক লেখা। এই লেখার মধ্যেই প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় বৈজ্ঞানিক চিন্তা-ভাবনা। অপরিণত আধারে পরিণত শিশুর বিকাশ সম্ভব নয়। এই গূঢ় সত্য নিয়মটিকে প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, এমনকি মাতৃ স্বাস্থ্য বিষয়ক বর্তমান সময়ের ধ্যানধারণার অনেক আগেই বিদ্যাসাগর ভেবে নিতে পেরেছিলেন মাতৃস্বাস্থ্যের বিজ্ঞানটি। সেই যুগে বিদ্যাসাগর বলিষ্ঠভাবে বাল্যবিবাহের দোষ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উল্লেখ করেছিলেন, ‘আট বছরের মেয়েকে বিয়ে দিলে গৌরীদানের ফল পাওয়া যায়। ন বছরের মেয়েকে বিয়ে দিলে পৃথিবী দান করার ফল পাওয়া যায়। দশ বছরের মেয়েকে বিয়ে দিলে মারা যাবার পর লোকে দেবতাদের জায়গায় চলে যায়। এই রকম আজগুবী ধারণায় আটকে গিয়ে মানুষ ছোট ছোট মেয়েদের বিয়ে দিয়ে বিপদে ফেলে।’ তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, ‘এতে কত যে বিপদ তা কে না জানে। এমন কথাও আছে যে, মেয়ে যদি বিয়ের আগে নারীতে পরিণত হয় তাহলে সেই মেয়ের বাপের বংশ, মায়ের বশে নরকে যায়। তার বাবা-মা সারাজীবন পাপের বোঝা বয়। এতে যদি মানুষ এই নিয়মের ওপর রাগ করে সেটাও বলতে পারে না মনের রাগ মনেই পোষে।’ আমার প্রশ্ন পাঠক একবার ভাবুন, দেড়শো-দুশো বছর আগে সমাজে মানুষ কোন্ বিশ্বাসকে মান্য করে চলতেন। একথা ঠিক সাধারণভাবে বিদ্যাসাগরের মতো মনস্বী ব্যক্তিত্বের কর্মফলে সমাজের কিছু পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু দুঃখের হলেও বাস্তব সত্য এখনো কোথাও কোথাও বাল্যবিবাহ চালু আছে। এর বিরুদ্ধে বর্তমান সময়ে যাঁরা প্রযুক্তিবিদ্যার উৎকর্ষতার যুগে দূর যোগাযোগ ব্যবস্থার ফসল ভোগ করে সমাজে অবস্থান করছেন তাঁদের ইতিকর্তব্য নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরী কাজ।
‘… বিদ্যাসাগরের জীবন বৃত্তান্ত আলোচনা করিয়া দেখিলে এই কথাটি বারবার মনে উদয় হয় যে, তিনি যে বাঙালী বড়লোক ছিলেন তাহা নহে, তিনি রীতিমত হিন্দু ছিলেন। তাহাও নহে, তিনি তাহা অপেক্ষাও অনেক বেশি বড় ছিলেন, তিনি যথার্থ মানুষ ছিলেন।’ (বিদ্যাসাগর চরিত চারিত্র পূজা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।) এই যথার্থ মহামানবের জন্ম হয়েছিল ১২২৭ বঙ্গাব্দের ১২ই আশ্বিন, ইংরাজী ১৮২০ খ্রীষ্টাব্দের ২৬শে সেপ্টেম্বর দিবা বি-প্রহরে। ঈশ্বরচদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় পাওয়া যায় শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন প্রণীত বিদ্যাসাগর জীবনচরিত থেকে- “পিতা তাহার স্বভাব বুঝিয়া চলিতেন। যেদিন সাদা বস্তু না থাকিত সেদিন বলিতেন, আজ ভালো কাপড় পরিয়া কলেজে যাইতে হইবে। তিনি হঠাৎ বলিতেন, না, আজ ময়লা কাপড় পরিয়া যাইব। যেদিন বলিতেন, আজ স্নান করিতে হইবে, শ্রবণমাত্র দাদা বলিতেন যে, আজ স্নান করিব না; পিতা প্রহার করিয়াও স্নান করাইতে পারিতেন না। যে প্রবল জিদের সহিত ইশ্বরচন্দ্র পিতার আদেশ ও নিষেধের বিপরীত কাজ করতে প্রবৃত্ত সতেন, সেই দুর্দম জিদের সহিত তিনি পড়তে যেতেন। ক্ষুদ্র একগুঁয়ে মণ্ড মাথার অধিকারী বালক ঈশ্বর যখন মত্ত ছাতা নিয়ে বড়বাজারের বাসা থেকে পটলডাঙায় সংস্কৃত কলেজে যেতেন, মনে হতো একটা ছাতা ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে। অল্পকালের মধ্যেই বিদ্যাসাগর উপাধি অর্জন করেছিলেন তাঁর অসাধারণ শিক্ষা অর্জনের কীর্তির জন্য। ১৮৫০ সালে বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজের সাহিত্য অধ্যাপক হন এবং ১৮৫১ সালে উক্ত কলেজের প্রিন্সিপাল পদে যোগ দেন। বঙ্গদেশের চিরস্মরণীয় বরেনা এই মহাপুরুষের জীবনাবসান ঘটে কলকাতা শহরের বাদুড়বাগান অঞ্চলে ১২১৮ বঙ্গাদের ১৩ই শ্রাবণ, ইংরাজী ১৮৯১ খ্রীষ্টাব্দের ২১ জুলাই।
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বঙ্গপ্রদেশে নবজাগরণ সমাজজীবনকে যেভাবে দোলা দিতে শুরু করেছিল বিদ্যাসাগর তাকে আরো জোরে দোলা দিয়ে সমাজে এক বিরাট আলোড়ন তুলে দিয়েছিলেন। শিবনাথ শাস্ত্রী মহাশয়ের কথায়, “মানবচরিত্রের প্রভাব যে কি জিনিস, উগ্র, উৎকট ব্যক্তিত্বসম্পন্ন তেজিয়ান পুরুষগণ ধনবলে হীন হইয়াও যে সমাজ মধ্যে কিরূপ প্রতিষ্ঠা লাভ করিতে পারেন, তাহা আমরা বিদ্যাসাগর মহাশয়কে দেখিয়া জানিয়াছি। ডিরোজিওর সেই বিখ্যাত কথা, ‘মানবের চিন্তা ও কার্যকে স্বাধীন রাখিতে হইবে।’ এই বক্তব্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিদ্যাসাগর সমাজহিতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজ ও শিক্ষাবিস্তারের কাজে নিজেকে সর্বদা ব্যস্ত রাখতেন। মনে হয় বিদ্যাসাগর যে সময় জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই সময়ের ধর্ম পালনের জন্যই বিদ্যাসাগরের মতো একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন ছিল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, ‘বিধাতা সাত কোটি বাঙালী গড়িতে গড়িতে একটি মানুষ সৃষ্টি করিয়াছিলেন।’ এই মানুষ বিদ্যাসাগর অক্লান্তভাবে সামাজিক কু-আচারকে দু’হাতে সরিয়ে নিজের জীবনকে বিপন্ন করে প্রতিপক্ষকে রুখে শিক্ষার অধিকার পুরুষ ও নারী উভয়ের সমান তা প্রতিষ্ঠা করার জন্য এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন । তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন নারী শিক্ষার প্রসার না ঘটলে সমাজ আধুনিক হতে পারে না।
বিদ্যাসাগর তাঁর জীবন ও কর্ম দিয়ে আমাদের যা শিখিয়েছেন তার প্রকাশ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় উল্লেখ করা যায়- ‘আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না; আড়ম্বর করি, কাজ করি না; যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না, যাহা বিশ্বাস করি তাহা পালন করি না; ভুরি পরিমাণ বাক্য রচনা করিতে পারি, তিল পরিমাণ আত্মত্যাগ করিতে পারি না…….’ । কথায় ও কাজে সঙ্গতিপূর্ণ আচরণ ও অন্যায় ও অনাচারের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করার মাধ্যেমে বিদ্যাসাগরের কর্ম ও আদর্শকে প্রয়োগ করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বঙ্গীয় সাক্ষরতা প্রসার সমিতির পক্ষ থেকে ১৯৯১ সালে প্রসঙ্গঃ বিদ্যাসাগর নামে একটি সংকলন গ্রন্থ প্রকাশিত হয়, বিমান বসুর লেখা এই প্রবন্ধটি সেই বই থেকেই সংগৃহীত।