ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র পলিট ব্যুরো বিবৃতি:
রেলওয়ে পুলিশ বাহিনীর একজন কনস্টেবলের দ্বারা মুম্বাইগামী ট্রেনে তার থেকে অভিজ্ঞ এক সহকর্মী সহ অন্য তিনজন যাত্রীর ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডকে নিছক এক বিভ্রান্ত মানসিকতার প্রতিফলন হিসাবে দেখা উচিত নয়। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক ব্যখ্যা তেমনই, অবশ্য এক্ষেত্রে তদন্তটুকু শুরু হয়েছে। নিহত যাত্রীরা সবাই মুসলমান। অভিযুক্ত কনস্টেবল এক কোচ থেকে অন্য কোচে গিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলমানদের আক্রমণ করেছে। ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা প্রতিদিন বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা দিচ্ছেন, মুসলমান সম্প্রদায়কে সমাজের চোখে পিশাচ বানানো হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক অভিধানের প্রতিটি গালিগালাজ যেভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, এই ঘটনা তারই প্রত্যক্ষ ফলাফল। একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে, যার সত্যতা এখনো যাচাই করা হয়নি। সেই ভিডিওয় স্পষ্ট কিভাবে অভিযুক্ত কন্সটেবলটি নির্দিষ্টভাবে মুসলমানরা পাকিস্তানের দ্বারা পরিচালিত হয় বলে উল্লেখ করেছে। সে আরও বলছে যে মুসলমানরা যদি ভারতে থাকতে চায় তবে তাদের মোদি এবং যোগীকে ভোট দেওয়াই উচিত। অভিযুক্ত ব্যক্তির কথাবার্তায় কার্যত বিজেপি নেতাদের ব্যবহৃত ভাষারই প্রতিধ্বনি রয়েছে।
বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দেশকে বিপর্যয়কর পরিণতির দিকে নিয়ে যায় বলে সুপ্রিম কোর্ট বারবার সতর্ক করেছে। আদালত কঠোরভাবে তার মোকাবিলা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছে। সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনা সরকারীভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্বপ্রাপ্তদেরকে কিভাবে প্রভাবিত করছে এই ঘটনায় তা স্পষ্ট হয়ে যায়। সরকারী সুরক্ষাব্যবস্থায় এমন প্রভাব রীতিমত উদ্বেগজনক বিষয়। হিন্দুত্ববাদী শক্তির বিষাক্ত এজেন্ডা দেশকে কোন অতল গহ্বরে নিয়ে যাচ্ছে এই নিন্দনীয় ঘটনায় সেই সত্যই সামনে আসে। ভারতকে এবার সজাগ হতে হবে।