তেভাগার ৭৫ তম বর্ষ, মহান খাঁপুর - মানবেশ চৌধুরি ...

দ্বিতীয় পর্ব

১৯৪৬ সালে তিনজন কমিউনিস্ট প্রতিনিধি জ্যোতি বসু, রতনলাল ব্রাহ্মণ ও রূপনারায়ণ রায় প্রাদেশীক বিধান সভায় সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। রূপনারায়ণ রায়ের বাড়ি দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি থানার লালপুর গ্রামে। সংগঠক ও দরদীদের মনে আরও উৎসাহ।

অন্যদিকে আবার আগস্টে মর্মান্তিক ভ্রাতৃঘাতি দাঙ্গাও সংঘটিত হয়েছে।

    ১৯৪৬ সালেও ধানের খেতে খেতে নবীন ধানের হিল্লোল। এবার ধান ওঠার মরসুমে বর্গাদাররা আরও বেশি মরিয়া। কৃষকরা বলছেন, এবার তেভাগা আদায় করতেই হবে। কৃষক নেতারা এই মেজাজকে কুর্নিশ জানালেন। তাঁদের মনোভাব উপলব্ধি করে প্রাদেশিক কৃষক সভার কাউন্সিল মিটিং হলো ১৯৪৬’র সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতায়। ঝড়ের গতিতে গড়ে উঠল প্রস্তুতি। বৃহত্তর বাংলার ২৮টি জেলার মধ্যে ১৯টি জেলায় ৬০ লক্ষ বর্গাদার, কৃষক, গ্রামীণ নিপীড়িত মানুষ গড়ে তুললেন তেভাগা সংগ্রাম। যা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণিম অক্ষরে লেখা আছে এবং  যা এখনও সংগ্রামীদের মনে আলোড়ণ তৈরি করে ও নতুন নতুন সংগ্রামে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণীত করে।

        বলাবাহুল্য এই মহারণ সংঘটিত হয়েছিল বঙ্গীয় প্রাদেশিক  কৃষক সভার দ্বারা।  কমিউনিস্ট পার্টির প্রত্যক্ষ সহায়তায়। কমিউনিস্ট পার্টির প্রাদেশিক কমিটি কৃষক তথা কমিউনিস্ট নেতাদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে দাবি ঠিক করে দিলেন মূলত তিনটি – ১) নিজ খৈলানে ধান তোল, ২) আধি নাই – তেভাগা চাই, ৩) কর্জা ধানের সূদ নাই। সাংগঠনিক আহ্বান - প্রতি বাড়ি থেকে ‘একজন মানুষ, একটা লাঠি আর একটা করে টাকা’ চাই। তার সঙ্গে যুক্ত হল জাতীয় স্বাধীনতার দাবি – ব্রিটিশ গভর্মেন্ট সরে যাও – আজই গদি ছেড়ে দাও।  , জাতীয় গভর্মেন্ট চাই।

সাব্যস্ত হলো, গ্রামে গ্রামে ভলান্টিয়ার বাহিনী তৈরি করা হবে। দ্রুত এভাবেই সংগঠিত হলেন কৃষক কর্মীরা। মেয়েরা তৈরি হলেন ধান কোটার ‘গাইন’ হাতে। সর্বত্যাগী পুরুষ ও নারী নেতা-নেত্রী গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়লেন। গ্রামগুলো থেকে এগিয়ে এলেন সব কিছু উজাড় করার মন নিয়ে শত শত কৃষক ভলান্টিয়ার। দিকে দিকে রণডংকা বেজে উঠল। শুরু হলো তেভাগার মহা সংগ্রাম। একটা কথা মনে রাখতে হবে, নেতা বলুন, কর্মী বলুন, তাঁদের সিংহভাগ ছিলেন বয়সে তরুন।

দিনাজপুর জেলায় তেভাগা আন্দোলনের সূচনা হয় ১৪ই পৌষ (৩০ বা ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৪৭। পুলিশের সঙ্গে লড়াই করে, পুলিশের হাত থেকে বন্দুক কেড়ে ভেঙে যেখানে লড়াই হোল তা দিনাজপুর জেলার আটোয়ারি থানার রামপুরমলানি গ্রামে। ফুলঝরি কমরেডের বর্গাজমিতে। বন্দুক ভাঙার নায়িকা নারী বাহিনী। নেত্রী রোহিনী, জয়মণি প্রমুখ। ২০শে পৌষ (ইংরাজীর ১৯৪৭ – ৪ জানুয়ারি তারিখ)

জানুয়ারির ৪ তারিখ দিনাজপুরের উপকণ্ঠে চিরিরবন্দর থানার তালপুকুর গ্রামে প্রথম শহিদ হলেন শিবুরাম আর সামিরুদ্দিন।

২০ শে ফেব্রয়ারি খাঁপুরের যুদ্ধে রণক্ষেত্রেই ১৪ জন, পরে বালুরঘাট হাসপাতালে আরও ৮ জন। তার বাইরেও আরও তিন জন শহিদ হয়েছিলেন বলে মণিকুন্তলা সেনের বই থেকে জানা যায়।

২১শে ফেব্রয়ারি বালিয়াডাঙ্গি থানার ঠাকুরগাঁ জেলার ঠুমনিয়া গ্রামের ৪ জন, ঠাকুরগাঁতে তার কয়েকদিন পরেই ২৬শে ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মিছিল হয়েছিলো, সেদিনও ৯জন শহিদ হলেন। ঠাকুরগাঁ ছিল তেভাগা আন্দোলনের ঝটিকা কেন্দ্র।

১৯৩৮–’৩৯ সাল থেকেই, খাঁপুরের আট কিলোমিটার পশ্চিমের পতিরামের কৃষ্ণদাস মহন্তের বাড়ি, তখন কৃষক আন্দোলনের কেন্দ্র।

      এখানে খাঁপুরের হত্যাকাণ্ডের ৩দিন আগে ১৭ই ফেব্রুয়ারি, মতান্তরে ১৪ই ফেব্রুয়ারি ৩ জন জোতদারের খৈলান ভেঙে হাজার সংগ্রামী দশের খৈলানে ধান তুলতে সক্ষমপর হয়েছিলেন। পুলিশের জুলুম হয়েছিল। ৪ জন কৃষক নেতা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। নারী বাহিনীর বুদ্ধিমত্তায় ২ জন নেতা গ্রেপ্তার এড়াতে পেরেছিলেন।

   খাঁপুরে ছিলেন নিবেদিত প্রাণ সাম্যব্রতী, ছিলেন ট্রেনিংপ্রাপ্ত সংগঠিত জঙ্গী ভলান্টিয়ার বাহিনী,  ছিলেন লড়াইয়ের কায়দা জানা নারী বাহিনী। এই গ্রামের মানুষ দুর্ভিক্ষের সময় কালোবাজারী-মজুতদারী কারবারকে লড়াই করে প্রতিরোধ করেছিলেন, সেই খাঁপুরে আর আশে পাশের গ্রাম কৈগ্রাম, গুটিন, খোরনা   কেওটশ্বর, জন্তিগ্রাম, পাইকপাড়া, সফরপুর, বেলঘরিয়া, খোরনা, সেওয়াই, কামালপুর, ডাংবিরল, পাল্লা, কুচিলা, মারগ্রাম, রাজারামপুর ইত্যাদি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। ইত্যাদি গ্রামের কৃষকরাও জেগে উঠলেন।  

তেভাগার সংগ্রাম বিপুল বিক্রমে শুরু হয়ে গেল। শুরু হয়ে গেল খৈলান ভাঙ্গার বিশাল লড়াই।

    নেতা কর্মীদের উপর হামলা করার সাহস হল না জমিদার জোতদার পক্ষের, কিন্তু মামলাতে জেরবার করা শুরু হল। পুলিশ ক্যাম্প বসল জমিদার বাড়ির সিংহবাহিনী কাছারিতে।

খাঁপুরের জমিদার অসিত মোহন সিংহ, তাঁর শ্রেণীর অন্যদের নিয়ে মিথ্যা মামলা চাপালেন অজস্র। কৃষকদের গরু-বলদ অন্যায়ভাবে খোঁয়াড়ে ঢোকালো। যেমন সাঁওনা কোলকামারের গরু দূরের বটুনের খোঁয়াড়ে ঢোকালো, গুরুচরণ বর্মণ নামে এক আধিয়ারের গরু ৩রা বা ৪ঠা ফাল্গুন ১৩৫৩ জমিদারের বরকন্দাজ আটক করে খোঁয়াড়ে নিয়ে যাচ্ছিল। গুরুচরণ তাঁর গরুকে কেড়ে নিলেন। কৃষক কর্মীদের উপর আবার মিথ্যা মামলা জারি হলো। পুলিশ এই আন্দোলন পর্বে মাঝে মাঝেই গ্রামে আসতো নেতা ও কর্মিদের ধরতে, কৃষক আন্দোলনকে সন্ত্রস্ত করতে।

    ৭ই ফাল্গুন শেষ রাতে অন্ধকারের মধ্যে ৩টি ট্রাকে ও একটি জিপে করে এক বিরাট পুলিস বাহিনী খাঁপুর গ্রামে এসে হাজির হলো। ভলান্টিয়ার বাহিনী দেখলো যে পুলিস গ্রামে ঢুকলো। জানা গেল, গোপেশ ডাক্তার, ফটিক কোলকামার সহ পাঁচ জনকে পুলিশ ধরতে পেরেছে।  তখন ছিপ ছিপ করে বৃষ্টি পড়ছিল আর প্রচণ্ড আঁধারও ছিল। এই অবস্থাতেই শিবু বর্মন ও অন্যরা পুলিশের গাড়ি যেদিক দিয়ে বেরোবে, এখন যেখানে শহিদ বেদী, সেখানে খোঁড়া হলো সড়কের প্রস্থ বরাবর একটা ট্রেঞ্চ, আর রাস্তার ধারের একটা নিমগাছ কেটে তৈরি হলো ব্যারিকেড। কাড়া নাকাড়া বেজে উঠল, শঙ্খধ্বনী হতে থাকল। আশে পাশের সংগ্রামী কৃষকরা বুঝলেন, এটা বিপদের সংকেত, লড়াইয়ের সংকেত। তাঁরা এই সংকেত শুনতে পেয়েই আবার, ঐ একই ভাবে পাশের পাড়াকে জানিয়ে দিলেন। এভাবে দ্রুত এক পাড়া থেকে অন্য পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ল লড়াইয়ের ধ্বনী। দূর দূরান্তরেরর গ্রামের কৃষক কর্মীরা পর্যন্ত জানতে পারলেন- খাঁপুরে পুলিস ঢুকেছে, কৃষক নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত, চলো সবাই, তাঁদের বাঁচাতে হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রায় দুই হাজার লড়াকু গ্রামবাসী এসে হাজির হলেন খাঁপুরে। পতিরাম থেকে এক এলো এক জংগী বাহিনী।

      আটককৃত লড়াকু নেতাদের নিয়ে বালুরঘাটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করতেই পুলিশের গাড়ি ব্যারিকেড আর গর্তে আটকে গেল। উপায়ান্তর না দেখে পুলিশ গাড়ি থেকে নামতে বাধ্য হলো। নেমেই দেখে শুধু কালো কালো মাথা। মানুষ আর মানুষ। তাঁদের মুখে একটাই কথা। তাঁরা সোচ্চারে দাবি তুলছেন – আমাদের নেতাদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা চলবে না। তাঁদের ছেড়ে দিয়ে চলে যাও তোমরা।

    এগিয়ে এলেন যশোদারানী সরকার, দুই সন্তানের জননী, হাসিখুসী নারী নেত্রী, তাঁর স্বামী নীল মাধব সরকার আত্মগোপন করে আছেন। যশোদারানীর চোখে আগুন, বুকে আগুন। নারী ভলান্টিয়ার বাহিনী নিয়ে তিনি এগিয়ে গেলেন। তাঁদের হাতে ঝাঁটা বারুণ। তাঁরা দাবি তুললেন, আমাদের নেতাদের ছেড়ে দাও। পুলিস নেতাদের ছাড়ার বদলে গুলি ছুঁড়লো। মা যশোদা শহীদ হয়ে গেলেন। আন্দোলনের নেতা চিয়ার সাই শেখ, লম্বা চেহারার বিশালদেহি কমরেড। পেশায় দিন মজুর। সামান্য একটু দূরেই তাঁর বাড়ি। তিনি জ্বরে আক্রান্ত। কিন্তু ক্ষেপে উঠে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে, পুলিসভ্যানের টায়ারের চাকায় দা দিয়ে আঘাত করতে শুরু করলেন। তাঁকে পর পর তিনটি গুলি করে হত্যা করল পুলিস।

    এই শহীদান দেখে কৃষক কর্মীরা হতচকিত হলেন না। কেউ বাড়ি ফিরে গেলেন না। একটাই দাবি- আমাদের নেতাদের ছেড়ে দিয়ে চলে যাও। পুলিশ ঝাঁকে ঝাঁকে ১২০রাউন্ড গুলি চালালো। পাশের জমিদার অসিত মোহন সিংহের সিংহ বাহিনী কাছারি থেকেও গুলি চালানো হলো। অকুস্থলেই ১৪ জন কৃষক কর্মী শহিদ হলেন। বালুরঘাট সদর হাসপাতালে মারা গেলেন আরও ৮ জন। সবাইকে আত্রেয়ী নদীর খাড়ির ধারে একই গর্তে পুঁতে দিল জহ্লাদরা।

মুসিলিম লিগ মন্ত্রী সভা জমিদার-জোতদার-মজুতদারদের মন্ত্রী সভা। সেই মন্ত্রীসভা কৃষকদের কোন শ্রেণীদাবি মেনে নিতে পারে না।

জেলার কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ নেতারা তেভাগা সংগ্রাম বিরোধী মঞ্চ গড়েছিলেন। এই মঞ্চের পক্ষ থেকে বাংলা সরকারের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে দাবি জানানো হলো – কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র ফৌজ গ্রামে গ্রামে পাঠানো হোক। মালদহের জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৌরেন মিশ্রের উদ্যোগে হিন্দু-মুসলমান জোতদাররা ৭ দিনের মধ্যে ২৫ হাজার টাকা তেভাগা লড়াই মোকাবিলার জন্য তুলে ফেললেন। সৌরেন মিশ্রের আসল রূপ জানা গেল কিছু পরেই। তিনি ছিলেন আসলে আর এস এস নেতা।

এখানে বলার, দেশভাগের সময় মধ্যবিত্ত বাবু–হিন্দুদের বিরাট অংশ, যারা দলগতভাবে ছিলেন কংগ্রেসী, তাঁরাও আলাদা পশ্চিম বঙ্গের জন্য বিপুল প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছিলেন। আর এস এস–হিন্দুমহাসভা-শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী তখন রাজনৈতিক ভাবে দুর্বল। তাদের উদ্দেশ্য সফল করার দায় নিয়েছিল- ঐ কংগ্রেসীরা। জয়া চ্যাটার্জির Bengal Divided বা তার বাংলা সংস্করণ ‘বাংলা ভাগ হল – হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা ও দেশ বিভাগ ১৯৩২ – ১৯৪৭’ পুস্তকের পাতায় পাতায় এই বাক্যের সত্যতা মিলবে।

তালপুকুরে শিবুরাম–সমিরুদ্দিন শহীদ হবার দিন সন্ধায় দিনাজপুর শহরকে আলোক মালায় সজ্জিত করেছিল শহরবাসী জমিদার-জোতদার তথা কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ পার্টি।

    খাঁপুরে এতো জন বীরের মৃত্যুর পরে, ঘটনাস্থলের মাত্র ২০ কিলো মিটার দূরে অবস্থিত, বালুরঘাট মহুকুমা শহরের কংগ্রেসী নেতাদের দোরে দোরে ঘুরে বেরিয়ে, তাঁদের সহানুভূতি যাচ্ঞা করছিলেন লড়াইয়ের অন্যতম নেতা কালী সরকার। কোন সাড়া পান নি তিনি।  

    এসবের বিপরীতে বিধানসভার অভ্যন্তরে কমিউনিস্ট প্রতিনিধিরা তেভাগার লড়াই ও তার ওপর অত্যচারের কাহিনীগুলি বার বার তুলে ধরেছেন। রূপনারায়ণ রায় ভাষণ দিয়েছেন, তাঁর এলাকার আঞ্চলিক উপভাষায়। সরকার একটা বিল আনতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু সরকারী দলের সদস্যদের বিরোধিতায়, তা প্রত্যাহার করে নেয়।    

লড়াইয়ের সূত্রে ও সুযোগ নিয়ে শত শত কমরেডকে কারাবন্দী করা হয়। কাউকে রাজশাহী জেলেও। সেই জেলের খাপড়া ওয়ার্ডের যুদ্ধে শহিদ হন ঠুমনিয়ার কম্প্ররাম সিং।

    কালী সরকার ছিলেন খাঁপুর তেভাগা সংগ্রামের অন্যতম নেতা। মহরমের সময় যে জংগান গাওয়া হয়, সেই গানের সুরকে ভিত্তি করে ১৯৪৯ মতান্তরে ১৯৫০ সালে রাজশাহী জেলে তিনি লিখলেন তেভাগার জং। জেলের কমিউনিস্ট বন্দিদের পরিচালনায় জেলখানাতেই ৭দিন ধরে যে নভেম্বর বিপ্লবী বার্ষিকী পালিত হয়, সেখানে এই গান গেয়ে প্রথম হন তিনি।

    আমরা উল্লেখ করেছি ১৯৪৬ ‘এর দাঙ্গার বীভৎসতার কথা। কিন্তু খাঁপুর সহ দিনাজপুরের কোন জায়গতেই সাম্প্রদায়িকতা থাবা বসাতে পারে নি। কারণ, আগেই থেকেই এ জেলার হিন্দু-মুসলমান কোন না কোন লড়াইয়ের মধ্যে ছিলেন।    

    এর থেকে আমরা যে শিক্ষা নিতে পারি তা হলো - শ্রেণীর দাবি, গরিবের দাবি, জনমানুষের দাবি নিয়ে লড়লে যে শক্তি অর্জিত হয়, সে শক্তিব্যুহকে ভেদ করা প্রতিক্রিয়াশীলদের সাধ্য নয়।

বাংলার তেভাগা ও তারই অঙ্গ খাঁপুরের এই মহান সংগ্রাম ও আত্মবলিদানের ঘটনা বৃহত্তর বাংলা ও বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার শ্রেনী ও গণ আন্দোলনের মোড়কে ইতিবাচক দিকে ঘুরিয়ে দেয়। যে কথা আমরা সব সময় বুঝতে পারি।
শিল্পী দেবব্রত মুখোপাধ্যায় এর আঁকা ছবি


শেয়ার করুন