৫ এপ্রিল ২০২৩ (বুধবার)
১
ফ্যাসিবাদ কায়েমের পূর্বে হিটলারের একটি কথা শোনা যাক – ” আমরা সংসদীয় গণতন্ত্রের পথে আর্য জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার সংগ্ৰাম করছি , আর সে কারণেই এই মিটিংয়ের গোপনীয়তা কঠোরভাবে রক্ষা করা হবে”। এভাবেই শুরু হয়েছিল হিটলারের দীর্ঘ বক্তৃতা। হিটলার বললেন ,গণতন্ত্রের গর্ভে কখনও ব্যাক্তিমালিকানা পুষ্ট হতে পারে না, শ্রেষ্ঠ জাতি উঠে দাঁড়ায় একজন সর্বশক্তিমান নেতার হাত ধরে। আজ শ্রেষ্ঠত্বের সংস্কৃতিকে জাতীয় জীবনে ফিরিয়ে আনাটা নরম হাত দিয়ে সম্ভব নয় । এর জন্য প্রয়োজন কঠিন কঠোর লৌহ মুষ্টি। ইহুদি আর কমিউনিষ্টদের জার্মানের মাটি থেকে নিঃশেষে মুছে ফেলতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের স্বর্ণ গর্ব অতীত।
২
৫ই এপ্রিল ২০২০, রাত ৯ টা মহাপ্রলয়ের আগে এক অজানা আতঙ্কের নিঃশব্দ রাত্রি ফিরিয়ে আনার আকুন্ঠ চেষ্টা। হাজার হাজার মানুষ হেঁটে আসছে একমুঠো ভাতের তাগিদে। আগামীকালের সেই রাত তাদের সন্তানের বর্ণপরিচয় হয়ে উঠবে না। গুজরাটের দাঙ্গার ঠিক আগের মুহুর্তে হিটলারের মতই মোদী এক শীর্ষ পর্যায়ের গোপনীয় সভা করেছিলেন। পুলিশকে তর্জনী তুলে নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন কাল থেকে রাস্তায় থাকবে শুধু বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। রাস্তায় পুলিশ থাকবে ;তবে তাদের সবেতন ছুটি। তারই মাঝখানে ডি.জি. পি চক্রবর্তী প্রবল আপত্তি তুলেছিলেন। ওই ভরা সভাতে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন পেশাগত দায়িত্বের কথা। মোদীর চোখ হয়ে উঠেছিলো রক্তবর্ণ। অন্যরা ছিলেন মেরুদন্ডহীন স্তন্যপায়ী, নীরবে মেনে নিয়েছিলেন। যেন তারা একেবারে দুগ্ধবতী গাভী।
৩
চাই বা না চাই শঙ্করাচার্য মাঝে মাঝে অনেকটা এগিয়ে যাচ্ছেন। সবই মায়া। খেতে না পাওয়া মানুষের বর্তমান নরক যন্ত্রনায় আলো নিভানোর নিদানে সত্যিই কী করোনার সঙ্কট মিটে যাবে? আসলে যারা মাইলে পর মাইল বাচ্ছা বগলে করে পথ হাঁটছেন তারা তো এখন নিষ্প্রদীপই আছেন। আর এখানেই আগামীর সংকট লুকিয়ে আছে।
৪
আমাদের রাজ্যে ক’দিন গন্ডি কাটা হচ্ছিল। এখন কিছুটা থেমে গেছে। রেশনের দোকানের দিকে তাকালেই সভ্যতার সংকটের কথাই মনে পড়ে। যে মানুষগুলো ঘন্টার পর ঘন্টা রেশনের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সেখানে আজ এইদিনটাকে মনের খাতায় লিখে রাখ “ গাওয়া হচ্ছে না। গাওয়া হচ্ছে বহুতল বাড়ির সামনে। আজ মনে হচ্ছে সে কবিতা আজও লিখতে পারলাম না; “যে কবিতা হবে গান স্লোগান মেশিন গান”.। মনে রাখতে হবে আগুনে বয়লারে বিস্ফোরণের আগে হাঁফিয়ে উঠছে মানুষ।
আসলে দুর্নীতির চক্রবূহে তৃণমূল । আর দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে মানুষ ক্ষুব্ধ। তাই মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে একটাই রাস্তা দাঙ্গা লাগাও, মানুষকে ভাগ করো। তবে মানুষ ও জাগছে।