শেয়ার করুন
শ্রমিক লংমার্চ (২০১৯)
সিআইটিইউ,আইএনটিইউসি,এআইটিইউসি,এইচএমএস,এআইইউটিইউসি,টিইউসিসি,এআইসিসিটিইউ,ইউটিইউসি,শিল্পভিত্তিক ফেডারেশন সমূহ এবং ১২ জুলাই কমিটি,ব্যাঙ্ক, বীমা,রেল,বিএসএনএল,প্রতিরক্ষা শিল্পের শ্রমিক কর্মচারীগণ মিলে ২০১৯ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর কলকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে রাজ্য ট্রেড ইউনিয়ন কনভেশন থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বাঁচাও, কাজ ও মজুরি বাঁচাও, ছাটাই রোধ করো, নতুন শিল্প চাই,কাজ চাই, কম খরচে শিক্ষা চাই, এন.আর.সি মানছি না, রাজ্য বাঁচাও, দেশ বাঁচাও প্রমুখ দাবীতে দক্ষিণবঙ্গে চিত্তরঞ্জন থেকে কলকাতা এবং উত্তরবঙ্গে ৭টি জেলা পরিক্রমা করে শিলিগুড়িতে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হওয়া লং মার্চে সমাজের সব অংশের মানুষকে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ৩০শে নভেম্বর পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ রেল ইঞ্জিন কারখানা গেট থেকে শুরু হয়ে ১২ দিনের এই লং মার্চ ২৮৩ কিমি পথ অতিক্রম করে ১১ই ডিসেম্বর কলকাতার রানী রাসমণি রোডের ঐতিহাসিক সমাবেশে পৌঁছায় আরেকদিকে ১লা ডিসেম্বর থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন দিনে ৭টি জেলা পরিক্রমা করে ১০ই ডিসেম্বর দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়িতে এক বিশাল সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। লং মার্চের দাবিগুলিকে সমর্থন করে এবং শ্রমিক কর্মচারীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে লং মার্চে অংশগ্রহণ করেন রাজ্যের সংগ্রামী কৃষক,ক্ষেতমজুর,ছাত্র,যুব, মহিলা সহ সমাজের নানা অংশের মানুষ।
রাজ্যের শ্রমজীবী মানুষের এই ঐতিহাসিক লং মার্চের পরই সারা দেশের সমস্ত কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ও শিল্প ভিত্তিক ফেডারেশন সমূহ ও অন্যান্যদের ডাকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের জনবিরোধী নীতি পরিবর্তন দাবিতে এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থবাহী ১২ দফা দাবীকে সামনে রেখে ৮ই জানুয়ারী,২০২০ দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের আহ্বান জানানো হয়।
ধর্মঘটের দাবিসমূহ :-
১)সর্বজনীন রেশন ব্যবস্থা প্রচলনের মধ্য দিয়ে সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে হবে। ২) কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করে বেকারি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।সকলের জন্য স্থায়ী সম্মানজনক কাজ। ৩) কোনো ব্যতিক্রম না করে সমস্ত শ্রম আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং আইন ভঙ্গকারীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। ৪) কেন্দ্রীয় ও রাজ্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বিলগ্নিকরন বন্ধ কর। ৫) শিক্ষা,স্বাস্থ্যসহ সামাজিক প্রকল্পের কর্মীদের শ্রমিকের মর্যাদা। ৬) ঠিক প্রথার সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করে স্থায়ী কাজে স্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ এবং ঠিককর্মীদের স্থায়ীকরন সাপেক্ষে সমান কাজে সমান বেতন ও সুবিধা। ৭) দ্রব্যমূল্যের সূচকের নিরিখে পরিবর্তনশীল ২১,০০০ টাকা নূন্যতম মজুরি। ৮) সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় বরাদ্দের সংস্থানসহ নূন্যতম ১০,০০০ টাকা সার্বজনীন পেনশন। ৯) সমস্ত গ্রামীণ ও শহরের পরিবারের জন্য মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কর্মসংস্থান নিশ্চিয়তার মাধ্যমে বার্ষিক অধিকতর দিনের কাজ। ১০) স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কৃষিপণ্যের লাভজনক দাম সহ বিপণন এবং গ্রামীন দারিদ্র্য নিবারণে কৃষকের ঋণ মুকুব। ১১) বোনাস, প্রভিডেন্ট ফান্ড আইনের সমস্ত যোগ্যতাসীমা প্রত্যাহার করতে হবে-- গ্র্যাচুইটির পরিমান বাড়াতে হবে। ১২) আবেদনের ৪৫ দিনের মধ্যে ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে। অবিলম্বে আই এল ও কনভেনশন ৮৭ এবং ৯৮ ধারার মান্যতা দিতে হবে।
রাজ্যের দু দফা দাবি :- ১) বন্ধ কারখানা খুলতে হবে এবং রুগ্ন কারখানা পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। ২) কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের পুনরুজ্জীবন করতে হবে।