Site icon CPI(M)

We will win the fight for the right to education and work

কলতান দাশগুপ্ত

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শুক্রবার

স্বাধীনতা দিবসের দিন সকালে অনেকের ফোনে একটা অদ্ভুত রিংটোন বেজেছিল। ফোনের ওপার থেকে সরকারি ভাষ্য জনগণ কে অনুরোধ করছিল দেশের জাতীয় পতাকার সাথে একটা সেলফি নেওয়ার! সেই সেলফি টি কোন একটি ওয়েবসাইটে আপলোড করলে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে এই ঘোষণাও ফোনের ওপার থেকে হয়েছিল!!যেহেতু ওটা রেকর্ডেড ভয়েস ফলে জিজ্ঞেস করার সুযোগ হয়ে উঠল না যে মণিপুরে তো ইন্টারনেট বন্ধ বহুদিন, সেখানকার কোন বাসিন্দা জাতীয় পতাকার সাথে সেলফি তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশমতো সেটা আপলোড করবেন কিভাবে? বা আমার দেশের লক্ষ লক্ষ বেকার যুবর কোন একজন যদি এই সার্টিফিকেট পেয়ে থাকেন তাতে তার জীবনের কি কি পরিবর্তন ঘটবে? স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে স্রেফ একটা সেলফি আপলোড করে একটি অপ্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট পাওয়াটাই এই দেশের মানুষের কাছে কেন্দ্রীয় সরকারি বার্তা।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দেশে এখন অমৃত কাল চলছে। দেশের যে কোন কাজের মধ্যে অমৃতকাল নামটা যোগ করে দিয়ে মহার্ঘ কিছু একটা দেখাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। ইনি সেই ব্যক্তি যিনি স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতাকেও অবিলম্বে নির্বাচনী জনসভায় পরিণত করে ফেলতে পারেন। ১৪ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় দেশের উন্নতির বিষয়ে যতগুলো কথা বলেছেন তার কোনটাই আজ পর্যন্ত দিনের আলো দেখে দেখেন। যদি ওনার কথামতো দেশ অর্থনৈতিক উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছতো তাহলে দেশের বেকারদের এত যন্ত্রণার মধ্যে থাকতে হতো না। দেশের প্রধানমন্ত্রী তো লোকসভায় যান না, গেলে জানতে পারতেন যে তার সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সরকারি বিভিন্ন চাকরির আবেদনপত্র জমা পড়েছে ২২ কোটি, কিন্তু নিযুক্ত হয়েছেন মাত্র ৭.২ লক্ষ। ২০২১-২২ সালে ১ কোটি ৮৬ লক্ষ আবেদনকারীর মধ্যে নিযুক্ত হয়েছেন মাত্র ৩৮ হাজার ৮৫০ জন। স্বাধীনতার পরবর্তী পর্যায়ে এদেশের তরুণ সমাজের জন্য এত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কখনো ছিল না।

করোনা চলাকালীন লকডাউনের কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকারত্বের হার রেকর্ড হারে বেড়েছিল। চলতি বছরে বেকারত্বের হার কার্যত মহামারীর সময়ের বেকারত্ব কে ছুঁয়ে ফেলছে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বেকারত্বের হারের যে গড় প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে লকডাউনের সময় ২০২০ সালে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়ে ছিল ৮%। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে বেকারির হার ৭.৯৫%। এর মধ্যে যদি আরেকটু বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখা যাবে শহরে বেকারত্বের হার ৭.৯৩% এবং গ্রামে সেটা ৭.৪৪%। অর্থাৎ এই অমৃত কাল বলে আমাদের সামনে যা উপস্থিত করা হচ্ছে সেটা আসলে লকডাউনের পরিস্থিতির সমান। একদিকে ভয়ঙ্কর বেকারি উল্টোদিকে মূল্যবৃদ্ধি মানুষকে যন্ত্রণার শীর্ষে পৌঁছে দিচ্ছে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমির রিপোর্ট যদি ২০১৪ থেকে খেয়াল করা যায় তাহলে দেখা যাবে ১৪, ১৫, ১৬ এই তিন বছরে বেকারত্বের হার ছিল যথাক্রমে ৫.৪৪, ৫.৪৪, ৫.২ %। আবার ২০২২ এবং ২০২৩ সালে বেকারত্বের হার বেড়ে ৭.৩৩ এবং ৭.৯৫ % পৌঁছে গেল। ২০১৪ সালে ভোটে লড়ার সময় নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন প্রতি বছর ২ কোটি বেকারের চাকরি হবে। এ রাজ্যেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে ভোটে লড়ার সময় ঘোষণা করেছিলেন প্রতি বছর ২ লাখ বেকারের চাকরি হবে। এদের ঘোষণাপত্র আসলে যে স্বপ্নে পোলাও রান্না ফলে যত খুশি ঘি দিতে অসুবিধা নেই সেটা আজ দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। একের পর এক কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। এর ফলশ্রুতি হিসেবে বেকারের মজুদ বাহিনী বাড়ছে । শহরের দিকে কাজ না পাওয়ায় কম মজুরিতে রেগায় কাজের চাহিদা বাড়ছে। কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তথ্য থেকে আমরা জানতে পারছি যে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আগস্ট এই পাঁচ মাসে রেগায় কাজের জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন ১৭.১০ কোটি মানুষ। ১৯২০-২১ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৪.৪০ কোটি। করোনা মহামারীর সময় কলকারখানা বন্ধ থাকার ফলে রেগায় নাম নথিভূক্ত করার উৎসাহ অনেক বেড়েছিল। আবার স্বাভাবিক নিয়মেই লকডাউন উঠে গেলে এই উৎসাহে খানিক ভাটা পড়েছিল। কিন্তু চলতি বছরে দেখা যাচ্ছে এই নাম নথিভুক্তির সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। গতবছর রেগায় কেন্দ্রীয় বাজেট বরাদ্দ ছিল ৮৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। চলতি বছরে বাজেট বরাদ্দ ৬০ হাজার কোটি টাকা। প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ টাকা বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে এমন কাজের ক্ষেত্রে যেখানে দেশের গরিব অংশের যুবরা যুক্ত।

বাংলার যুবসমাজ এখন জোড়া আক্রমণের সামনে। একদিকে তৃণমূলের সৌজন্যে সিঙ্গুর, শালবনী, হলদিয়া, রঘুনাথপুর, কাটোয়া, চকচকা সহ সারা রাজ্যের কর্মসংস্থানের ধ্বংসের ছবি আজ সকলের সামনে প্রতিফলিত হচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপি গোটা দেশের শিল্পসম্ভাবনা কে পরিকল্পনা মাফিক ধ্বংস করছে । বি এস এন এলের প্রযুক্তি ও পরিকাঠামো ব্যবহার করে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা মোবাইলে ৫জি পরিষেবা দিতে পারছে অথচ শুধু বি এস এন এলের অধিকার নেই ৫জি পরিষেবা দেওয়ার। আক্রমণ শুধু বিএসএনএল’এ সীমাবদ্ধ নয়। চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস, অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট, ব্রিজ অ্যান্ড রুফ, বেঙ্গল কেমিক্যালের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধ করার ফতোয়া দিয়েছে নতুন বিজেপি সরকার। করোনা মহামারীর সময় প্রয়োজনীয় প্রতিষেধক ওষুধ অত্যন্ত সফলভাবে তৈরি ও বিপণন করতে পেরেছিল বেঙ্গল কেমিক্যালস। এইরকম একটি সংস্থাকে পুনরুজ্জীবন না ঘটিয়ে বিজেপি দেশের যুবদের সাথে প্রতারণা করছে, একইসাথে তৃণমূল এই বেঙ্গল কেমিক্যালের জমি সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দিচ্ছে ব্যবসা করার জন্য। রেলের মতো ব্যাপক কর্মসংস্থানমুখী রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রও আজকে তীব্র আক্রমণের মুখে। সমগ্র রেলের পরিষেবা ক্ষেত্রকে বেসরকারি হাতে তুলে দিতে বদ্ধপরিকর মোদী। রেলের কর্মচারীদের নির্দিষ্ট সময়ের আগে বাধ্য করা হচ্ছে অবসর নিতে। অন্যদিকে লক্ষ লক্ষ পদ শূন্য। ২০১৯ সালের পর থেকে স্থায়ী নিয়োগ হয়নি রেলে। একই লোক কে দিয়ে একাধিক কাজ করানোর প্রবণতা বাড়ছে। ফলে বিপদ ও বাড়ছে। প্রতিরক্ষা শিল্পকেও বেসরকারি হাতে তুলে দিতে বদ্ধপরিকর মোদী সরকার।

মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমশ তলা‍নিতে ঠেকছে। মানুষের খরচের হার কমায় ভোগ্যপণ্য শিল্প এবং ক্ষুদ্র শিল্পের করুণ হাল দেশে। এর সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য কর্মী এক ভয়াবহ আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। বস্ত্র শিল্প ও তুলো চাষিদের ক্ষেত্রেও এক ভয়াবহ ভবিষ্যতের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।অর্থনীতির এই মন্দার ভয়াবহ জের পড়েছে কৃষি এবং কৃষকের উপর। বীজ, সার, কীটনাশকের দাম যেহারে বাড়ছে তাতে কৃষি আর লাভজনক পেশা থাকছে না। বৃহৎ পুঁজি বাজারে আসার ফলে ছোট কৃষক, খেতমজুররা কর্মহীন। ফসলের ন্যায্য দাম দিচ্ছে না সরকার। কিসান মান্ডি গুলো কার্যত গরীব কৃষককে কোন সাহায্য করতে পারছে না।পরিণতিতে আত্মহত্যার রাস্তা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে বহু মানুষ। আমাদের রাজ্যে নিজেদের এলাকা ছেড়ে দলে দলে যুব, পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ভিনরাজ্যে ছুটছে।দলে দলে লোক ভীড় করছেন শহরে। শহরেও একটা চাকরিতে জীবন চলছেনা বহু মানুষের। সকালে চাকরিতে যাওয়ার আগে বা সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে বাইক ট্যাক্সির কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। বাইক বা গাড়িতে করে খাবার বা অন্যান্য জিনিসপত্র বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন শহরের বেশ কিছু যুবক যুবতী। এই নতুন ধরনের কাজে, যেখানে জীবনের ঝুঁকি আছে, সেখানে নিরাপত্তার নুন্যতম ব্যাবস্থা রাখেনি রাষ্ট্র।

এসএসসি, পিএসসি, কলেজ সার্ভিস কমিশন, প্রা‌ইমারি শিক্ষকের চাকরির স্বপ্ন দেখা প্রতারিত যুবদের ক্ষোভ প্রতিদিন কোথাও না কোথাও আছড়ে পড়ছে এই শহরের বুকে। হাসপাতালের নার্স, স্কুলের প্যারাটিচার, এসএসকে, এমএসকে শিক্ষকরা তাঁদের হকের দাবিতে রাজপথে প্রতিদিন আলোড়ন তুলছে। পুলিশ দিয়ে নির্মমভাবে তাঁদের আন্দোলন দমন করা হচ্ছে, চাকরির দাবীতে কলকাতার রাজপথে লড়তে এসে খুন হতে হচ্ছে মইদূল মিদ্যাদের। ১০০ দিনের কাজ যারা করলেন তাদের বকেয়া বেতনের পরিমাণ ২,০০০ থেকে ২০,০০০ অব্ধি। পঞ্চায়েতে টাকা নেইকারণ তৃণমূল নেতারা ওই টাকা হজম করে পেল্লায় বাড়ি, গাড়ি হাকিয়েছেন। সরকারি চাকরির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। একটার পর একটা কলকারখানায় প্রতিদিন তালা ঝুলছে। নতুন শিল্প স্থাপনের ন্যূনতম কোনও উদ্যোগ নেই। এলাকা উজাড় করে ভিন রাজ্যে ছুটতে হচ্ছে কাজের জন্য, কিছু কিছু গ্রাম কার্যত যৌবনশূন্য। কলেজ ক্যাম্পাসে তোলাবাজদের দাপটে অনার্স-পাশের সিট লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কলেজে প্রতিবাদ করার মতো কোনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই নেই। ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ। স্কুল-কলেজে পড়াশোনার খরচ প্রতিদিন লাগামছাড়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যত কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই। কেন্দ্রীয় সরকার নীতির অন্ধ অনুসরণ করে এই রাজ্যেও জাতীয় শিক্ষানীতি চালু হয়ে গেলো। পড়াশোনার অধিকার থেকে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তদের দূরে ঠেলে দেওয়ার ব্যাবস্থা পাকা করা হলো। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর ইতিহাস বইতে ইচ্ছাকৃতভাবে বদল ঘটানো হচ্ছে। কোথাও টিপু সুলতানের বীরত্বের কাহিনী মুছে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও বা বাদ পড়ছে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের কবিতা।
“হেথায় আর্য, হেথা অনার্য, হেথায় দ্রাবিড়, চীন —
শক-হুন-দল পাঠান মোগল এক দেহে হল লীন।
পশ্চিম আজি খুলিয়াছে দ্বার, সেথা হতে সবে আনে উপহার,
দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে,
এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে।” এই ভাবনা হজম করে নেওয়া আর এস এসের পক্ষে মুশকিল। বাংলায় আবার ছাত্রছাত্রীরা যে বই পড়ছে তাতে কোনও এক আন্দোলনের নেতা হিসাবে যার কথা উল্লেখ আছে, তিনি আজ নিয়োগ দূর্নীতির দায়ে জেল খাটছেন। কয়েক হাজার স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বাংলায়। নবম শ্রেণিতে নথিভূক্ত হলেন যতজন, তার থেকে ২ লাখ ছাত্র ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেন না। কোথায় গেলো এই বিপুল সংখ্যক বাচ্চা ছেলেমেয়েরা। রাষ্ট্র জানে না।

রাষ্ট্র জানে এদেশের যৌবন ক্ষেপে আছে তার ওপর। এই অসহিষ্ণু যৌবনের তেজ যে ছারখার করে দিতে পারে রাষ্ট্রের মাতব্বরদের ভাবনা সেটা তারা বিলক্ষণ বোঝেন।তাই ধর্ম, জাত, পোশাক খাবারের মাধ্যমে এই যৌবনকে ভাগ করে দিতে চান তারা। আজও উত্তরপ্রদেশের রামপুরে স্কুলে মিড ডে মিল খাওয়ার সময়ে জাত অনুযায়ী বাচ্চারা আলাদা থালায় খায়। উচ্চবর্ণের মালিকের জমির মধ্যে দিয়ে নীচুজাতের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া যাবে না বলে কিছুদিন আগে তামিলনাড়ু তে ব্রিজ থেকে দড়ি দিয়ে বেধে মৃতদেহ নামানো হয়েছিল। এই পরিবেশ বদলাতে এদেশের যৌবন কাজের দাবিতে, শিক্ষার দাবিতে সবাইকে একসাথে জোটাতে চায়। কারণ আজ সন্ধ্যায় রান্নার গ্যাস অর্ডার করার সময় কেউ আপনার ধর্ম,জাত, পোশাকের খবর রাখবে না। গত ১১ই সেপ্টেম্বর ফালাকাটার কমিউনিটি হলে যেকোনো ধরনের একটা সামান্য চাকরির জন্য স্নাতকোত্তর ও বি এড করা চাকরি প্রার্থীরাও যখন ভিড় করেছিলেন হাজারে হাজারে তখন কিন্তু কেউ তাদের ধর্ম বা জাতের খোঁজ রাখেনি।

এটা আজ দিনের আলোর মত স্পষ্ট যে এই সমাজে, এই রাজত্বে, নিজের অধিকার লড়েই নিতে হবে। এই কারণে বামপন্থী ছাত্র-যুবরা দীর্ঘদিন ধরে সকলের জন্য শিক্ষা ও কাজের দাবী দিবস উপলক্ষে ১৫ ই সেপ্টেম্বর দিনটাকে পালন করে থাকে। বর্তমানে এটা আর কেবলমাত্র পালনের দিন নয়। এই রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করা, এই রাষ্ট্রকে যৌবনের শক্তি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য, যৌবনের তেজের আগুনে এই রাষ্ট্রের গোপন এজেন্ডাকে পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়ার জন্য এই দিনটাকে আমরা বেছে নিয়েছি। সকলের হাতে স্থায়ী কাজ দেওয়ার লক্ষ্যে, সকলের পেটে দুবেলা দুমুঠো ভাত যোগান দেওয়ার লক্ষ্যে, সকলের মাথার উপর একটা পাকা ছাদের লক্ষ্যে, সকলের মুখে একটা সুন্দর মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে তোলার লক্ষ্যে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর গোটা রাজ্যের পাহাড় থেকে সাগর পর্যন্ত গোটা যৌবন নিজের অধিকারের দাবিতে রাস্তায় মাটি কামড়ে পড়ে থাকবে। রাষ্ট্র চায় ওদের ছকে মানুষকে খেলাতে। আমরা রুটি রুজির লড়াইতে ওদের কিস্তিমাত করবো।

শেয়ার করুন