গতবারের বাজেট পেশ করতে গিয়ে নিজের ভাষণে অর্থনীতিকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। এরপর থেকে দারিদ্র, বেকারি, আয়ের বৈষম্য, কৃষি সঙ্কট, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া – অর্থনীতির সবকটি সুচকেই ক্রমাগত দেশের অবনতি পরিস্কার হতে থাকে, অথচ এবারের বাজেট অধিবেশনে সেই নিয়ে কোন আলোচনাই ছিল না। অর্থমন্ত্রী দাবি করেছেন, অর্থনীতির কাঠামো মজবুত করা হয়েছে এবারে ফলাফলের জন্য মাসছয়েক সবাইকে আশা নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমান জাতীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ বিষয় কিভাবে সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি করা যায়। মানুষের কেনার ক্ষমতা কমে গেলে বাজারে চাহিদার ঘাটতি তৈরি হয়, বিক্রি কমে যায় এবং কলকারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, একই সাথে ব্যাপক হারে কমতে শুরু কর পরোক্ষ কর আদায়। এর অবধারিত ফলাফলে একদিকে যেমন জিনিষপত্রের দাম বাড়তে থাকে তেমনই অন্যদিকে বেকারির হার বেড়ে গিয়ে নতুন সঙ্কট তৈরি হয়। এর মোকাবিলায় মানুষের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন খাতে সরকারি ব্যয় বরাদ্দ বাড়াতে হয় যাতে মানুষের হাতে খরচ করার মতো টাকা থাকে। অন্যথায় বাজারে স্থায়ী মন্দা তৈরি হয়ে তার প্রভাবে জিনিষপত্রের দাম আরও বেশি বাড়বে, বেকারি বাড়বে, দারিদ্র বাড়বে – সামগ্রিক ধাক্কায় দেশের উন্নয়নশীল কাঠামো ভেঙ্গে পড়ে নতুন করে আরও অনেকগুলি বৈদেশিক ঋণের কবলে পড়তে হবে। সঙ্কটকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে তারপরে এধরনের ঋণগ্রহণে কোন সমাধান তো হবেই না বরং জাতীয় কোষাগারে ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় আরও বেশি করে সরকারি ব্যয় বরাদ্দ কমে যাবে। ফলে সমস্যা আরও বাড়বে বৈ কমবে না।
এমতাবস্থায় বাজেট পেশ করে গ্রাম উন্নয়নে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হল। টাকার অংকে গতবারের তুলনায় তা বেড়েছে মনে হলেও এই সময়ে মুল্যবৃদ্ধির হার হিসাবে আনলেই বোঝা যাবে বরাদ্দ কার্যত কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তা হল দুটি বড় সরকারি প্রকল্পেই ব্যয় বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হল যেগুলিতে গ্রাম ভারতে কর্মসংস্থান হয়। রেগা প্রকল্পে বরাদ্দ কমান হয়েছে, ফসল বিমা প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী আশা কৃষি প্রকল্প – সবক্ষেত্রেই বরাদ্দ বাড়ানোর বদলে কমান হয়েছে। অনাহার মোকাবিলায় খাদ্যে ভর্তুকির বরাদ্দও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ……… আরও বিশদে জানতে লিংক ব্যবহার করুন
গনশক্তি
দ্য টেলিগ্রাফ
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
শেয়ার করুন