বিশ্বরূপ ব্যানার্জি
ইস্পাত কারখানাগুলি ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে সমস্যাকে অতিক্রম করে উৎপাদন ক্ষমতার পূর্ণাঙ্গ ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে লাভজনকভাবে আজও বিরাজমান। তাই ইস্পাত কারখানাগুলিকে বিক্রি করা বা বন্ধ করা অথবা ঘুরপথে বেসরকারিকরণের যে চেষ্টা চলছে তার বিরুদ্ধে ৯ জুলাই দেশব্যাপী ধর্মঘট হতে চলেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি বা বন্ধ দেশের স্থায়ী সম্পদ নষ্ট করে স্বাধীন ও স্বনির্ভর অর্থনীতি ধ্বংস করার যে চেষ্টা তার বিরুদ্ধেই এই ধর্মঘট। দুর্গাপুর স্টিল ও অ্যালয় স্টিল সহ অন্যান্য ইস্পাত কারখানাগুলির আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ যখন একান্ত জরুরি, তখন সরকার বা কোম্পানি সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে না। ফলে আগামী দিনে কারখানাগুলির টিকে থাকা রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্ককর সমস্যা তৈরি হবে। তাই আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের দাবিতে সকলের ও দেশের স্বার্থে এই ধর্মঘটকে মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে পৌঁছে দিতে হবে।

সাড়ে তিন হাজার ঠিকা শ্রমিক দুর্গাপুরের প্ল্যান্ট থেকে বলপূর্বক উচ্ছেদ করা হলো শুধুমাত্র সিআইটিইউ’র সাথে যুক্ত থাকে বলে, সভ্য সমাজে এটা মেনে নেওয়া যায় না। কারণ এত বছর ধরে কারখানায় তাদের অবদান এবং রুটি-রুজি হঠাৎ করে জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়া হলো। পরিবারগুলি অসহায় অমর্যাদাকর অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ডুবতে থাকল, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও বর্বরচিত। গুন্ডা রাজের অভিনব রূপ। এই ঠিকা শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতেই এই ধর্মঘটে অংশগ্রহণ জরুরি। কারখানার সম্প্রসারণ অথবা আধুনিকীকরণ অথবা পুনর্গঠন ইত্যাদির জন্য যদি একান্ত নির্দিষ্ট কোনও বস্তি উচ্ছেদ হয় বা কোনও এলাকায় মানুষকে স্থানান্তরিত করতে হয় তাহলে তাদের সম্মানজনক বিকল্প পুনর্বাসন ও রুটি রুজির সহায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্যোগ কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য দায়িত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দপ্তরগুলিকে নিতে হবে। হটকারী বস্তি উচ্ছেদের প্রতিবাদেও এই ধর্মঘট। যারা ঠিকা শ্রমিক হিসাবে কাজ করছেন নিয়ম ও আইন অনুযায়ী, তাদের সকলকে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ইএসআই ভুক্ত করতে হবে, যা অনেক জায়গায় সঠিকভাবে রূপায়িত হচ্ছে না।
ঠিকা শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে এবং যে কোনও নতুন নিয়োগকে কেন্দ্র করে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু পদ্ধতি অবলম্বন করা প্রয়োজন। কেবলমাত্র তৃণমূলের দাদাদের অর্থ দিয়ে দিয়ে সিন্ডিকেট রাজের মাধ্যমে নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। তাই প্রতিবাদ জরুরি। স্থায়ী পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও স্থানীয়দের কিছু বিশেষ সুযোগ কোথাও কোথাও দেওয়া প্রয়োজন পরিস্থিতির বিচারে যা কারখানাকে দীর্ঘ সময় রক্ষা করতে সাহায্য করবে, তাই এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কানে ধর্মঘটের মাধ্যমে জল ঢোকাতে হবে। মহিলা কর্মী নিয়োগ প্রায় একেবারেই বন্ধ অথচ কারখানায় এবং অন্যান্য পরিষেবায় মহিলা কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। বিধিবদ্ধ নিয়ম বন্ধ। এই নিয়োগগুলিতে মহিলাদেরও একটি সুনিশ্চিত প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে নিয়োগ করতে হবে। ট্রেনিদের ট্রেনিং পিরিয়ড শেষ হলে স্থায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা জরুরি কারখানার স্বার্থে, যা বহুদিন বন্ধ আছে। কেবল তাদের সার্টিফিকেট দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ কারখানায় এজ মিক্সিং-এর যেভাবে অবহেলা করছেন ভবিষ্যতে এর ফলে ভয়ঙ্ককর সমস্যা তৈরি হবে। ইস্পাতের কাউন্সিল রক্ষা করা, হাসপাতাল রক্ষা করা, স্কুলগুলিকে রক্ষা করা, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে ভবনগুলিকে রক্ষা করা, খেলাধুলার জায়গা হিসাবে স্টেডিয়ামকে রক্ষা করা ইত্যাদি দাবির পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ লড়াই চলছে।
স্থায়ী ও ঠিকা শ্রমিকদের বেতন চুক্তির বকেয়া সহ অন্যান্য দীর্ঘ বকেয়াগুলি মিটিয়ে দেওয়ার কোনও লক্ষণ কর্তৃপক্ষ দেখাচ্ছে না। আট বছর অতিক্রম করলেও নতুন বেতন চুক্তি সংগঠিত হয়নি এখনও। বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমিকরা। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ধর্মঘট করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারখানার যেসব অবসরপ্রাপ্ত কর্মী যারা এখনও অন্যান্য সহযোগী শিল্পে যুক্ত থেকে পরিষেবা দিচ্ছেন, তাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী উপায় অনুযায়ী বসবাস করার ক্ষেত্রে কোয়ার্টার ও কোম্পানির জায়গা বা জমিকে কেন্দ্র করে অতীত থেকে চলে আসা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় লিজিং ও লাইসেন্সিং যে ব্যবস্থাগুলি কোম্পানি বিভিন্ন সময় গ্রহণ করেছে তার একটি সুসঙ্গত ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন সুষ্ঠু মীমাংসা করার স্বার্থে। এই ব্যাপারেও কোম্পানির আগ্রহের ভীষণ অভাব।
কারখানায় কর্মরত অবস্থায় ঠিকা বা স্থায়ী শ্রমিক যারা দুর্ঘটনাজনিত কারণে প্রাণ হারিয়েছেন অথবা স্থায়ীভাবে অচল অথবা শারীরিক অসামর্থ্য হয়েছেন, তাদের পরিবারের একজনকে স্থায়ী নিয়োগের সুযোগ দিতে হবে গৃহীত চুক্তি অনুযায়ী। কিন্তু কোম্পানি তা দিতে অস্বীকার করছে। এর বিপক্ষে প্রতিবাদ করেও ফল পাওয়া যায়নি। তাই এটিও ধর্মঘটের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
কারখানা ধারাবাহিকভাবে লাভজনক থাকার সত্ত্বেও ঠিকা ও স্থায়ী শ্রমিক তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে যেভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না যদিও কারখানা লাভ বা ক্ষতি শুধুমাত্র শ্রমিকদের উপর নির্ভর করে না। সেই কারণেই প্রতিবাদ জরুরি। স্থায়ী ও ঠিকা শ্রমিকদের ন্যূনতম মাসিক পেনশন সাড়ে সাত হাজার টাকা হওয়া প্রয়োজন। ধর্মঘটের এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। নজরদারির নামে শ্রমিক ও তাদের নেতৃত্বদের নতুন কৃৎকৌশল ব্যবহার করার অছিলায় যে নজরবন্দি করার চেষ্টা চলছে কর্তৃপক্ষ দ্বারা তার গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। প্রতিবাদী কণ্ঠ রোধ করার এটি একটি প্রয়াসও বটে। আর এই আধিপত্যবাদকে যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য ধর্মঘটে অংশগ্রহণ জরুরি। বকেয়া বেতন, ন্যায্য বোনাস অন্যান্য বকেয়া শর্তপূরণ করার দাবিতে নিয়ে আন্দোলন সংঘটিত হচ্ছে বারংবার। অবিলম্বে ‘বেতন চুক্তি সম্পন্ন কর’, ‘পাইকারি হারে আউটসোর্সিং বন্ধ কর’, ‘নতুন ইনসেনটিভ চালু করো’ - ইত্যাদি দাবিতে ধারাবাহিক লড়াই সংগ্রাম চলছে।
আশপাশে যে সহায়তা শিল্পগুলি সহ যে পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে সেইসব ছোট বড় সংস্থা সহ সকলকে বাঁচাতে বা রক্ষা করতে ধর্মঘট সফল করা একান্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। শ্রমিকদের জীবন মানে উন্নয়ন আশপাশের উন্নয়ন অর্থাৎ শিক্ষা স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামোর উন্নতি পরিষেবা ভেঙে পড়ছে। বহু আধা সরকারি সরকারি বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান, কিছু সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সামগ্রিক ইস্পাত অঞ্চলকে কেন্দ্র করে। এগুলিতে বহু মানুষের রুটি রুজি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জীবনধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে এদের। তাই এই অর্থনৈতিক সামাজিক পরিমণ্ডলকে টিকিয়ে রাখতে ধর্মঘট জরুরি হয়ে পড়েছে।
যৌথ ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে গণতান্ত্রিক বিভিন্ন বৃহত্তম মঞ্চ প্রতিবাদী মঞ্চ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের বেঁচে থাকার তাগিদে ধারাবাহিক লড়াই আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে। এই ধর্মঘট সেক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে সাহায্য করবে।
বহু লড়াই সংগ্রাম ঘাম রক্ত-মৃত্যু জীবন যৌবন ও ত্যাগ তিতিক্ষার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন সরকারের আমলে গড়ে ওঠা এই রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলি যে ঐতিহাসিক ভূমিকা দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে স্বনির্ভর অর্থনীতির স্বার্থে স্বাধীন ভারতবর্ষের স্বার্থে গড়ে উঠেছিল, তাদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করা ঐতিহাসিক দায়িত্ব। স্থায়ী শ্রমিক সংখ্যা কমছে, তাও বছরে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকার টার্নওভার যা এই নিরিখে দেশের চতুর্থ বৃহত্তম পাবলিক সেক্টর, ইস্পাতের উৎপাদনও বেড়েছে উৎপাদনশীলতাও বেড়েছে। ট্যাক্স ও ডিভিডেন্টের মাধ্যমে সরকার বাজেটের একটা অর্থ সাহায্য পাচ্ছে, দেশের অর্থনীতি বিভিন্নভাবে উপকৃত হচ্ছে এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে। অথচ এখানে কর্মরত স্থায়ী ও ঠিকা শ্রমিকদের বেতনের সমাধান হয়নি, সংশোধিত হলো না বহু ভাতার, পরিবর্তিত হলো না বাজারদর অনুযায়ী বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার। উলটে কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন অধিকার। প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা শ্রমিকদের বহু কষ্টার্জিত এবং ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত নিরাপদে থাকার দরকার। ঠিকা শ্রমিকরা মাসে ২৬ দিন কাজ করে ১৩ দিনের বেতন পাচ্ছেন এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড সেই অনুপাতে পাচ্ছেন না এবং ইএসআই থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই লুট তৃণমূলের সিন্ডিকেট ও কর্তৃপক্ষের একাংশের সহযোগিতায় সংগঠিত হচ্ছে। বন্ধ কলকারখানাগুলি খোলা তাদের শ্রমিকদের বকেয়া মেটানো, এই জমিতে নতুন কারখানা খোলা ইত্যাদিও ধর্মঘটের গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
এখন যেসব কাজ হচ্ছে তার বেশিরভাগ অংশ ঠিকা প্রথায় করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। আউটসোর্সিং-এর নামে নামে যা হচ্ছে তাতে প্লান্টগুলির সামগ্রিক কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ইস্পাত অঞ্চলের শ্রমিক ও তাদের পরিবাররা মানুষের স্বার্থে গণতান্ত্রিক কাঠামোয় যে সমবায়গুলি গড়ে তুলেছিল, তার পরিচালন ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রকে পদদলিত করে, ভোট লুট করে সমবায়গুলির অন্তর্জলি যাত্রা শুরু হয়েছে তৃণমূলের বাহিনীর দ্বারা। তাকে ফিরিয়ে আনা, মানুষের অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করা, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সমবায়ের পুনরুত্থান ঘটানো দরকার।
শ্রম কোড চালু ও পূর্বের শ্রম আইন বাতিল করার যে প্রয়াস জারি রয়েছে, তাতে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার, ধর্মঘটের অধিকার, প্রতিবাদ করার অধিকার, দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন করার অধিকার আইন করে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। তার বিরুদ্ধেই এই ধর্মঘট। ইস্পাত অঞ্চলের লড়াই সংগ্রাম ও মর্যাদাপূর্ণ ইতিহাস রয়েছে। আজও লড়াই সংঘটিত হচ্ছে অ্যালয় স্টিল বাঁচানোর জন্য। দুর্গাপুর স্টিল রক্ষার, দুর্গাপুরের বিভিন্ন শিল্প বাঁচানোর সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে।
কর্পোরেট জগৎ এবং আন্তর্জাতিক লগ্নিপুঁজি প্রবল চাপ সাধারণ মানুষ ও শ্রমিক এবং কৃষকদের মাথার ওপরে বোঝা বাড়িয়ে আর্থিক মন্দা ও ভুল অর্থনীতিকে মোকাবিলা করতে চাইছে। আর সরকার মালিকদের সহজে ব্যবসার নামে নিয়ম বহির্ভূত সাহায্য করছে, মালিকের পক্ষে আইন তৈরি করছে, শ্রমিক এবং শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের ওপর অত্যাচার নামিয়ে আনছে, শ্রমিকদের আয় কমছে মালিকের লাভ বাড়ছে। নির্বাচনের সময় মালিকরা নির্বাচনী বন্ধের নামে কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে শাসক দলগুলিকে। এর মাধ্যমে মালিক পক্ষ শাসককে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। ফলে সরকারের কাছ থেকে যে প্রতিদান তারা নিচ্ছে, তাতে দেশের মানুষ আরও প্রান্তিক হচ্ছে এবং কৃষক আত্মহত্যা করছে এবং শ্রমিক কাজ হারাচ্ছে, নতুন কাজের সৃষ্টি হচ্ছে না, বেকার বাহিনী মজুত হচ্ছে, শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি নিয়ে দর কষাকষির ক্ষমতা কমছে। এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও প্রতিবাদ জরুরি যা বিকল্প অবস্থান তৈরিতে সাহায্য করবে।
এই উদারনীতি সাথেই যুক্ত সাম্প্রদায়িকতা, বিদ্বেষ যা মানুষকে বিভাজিত করতে চাইছে, তার বিপক্ষেও ঐক্যবদ্ধ লড়াই অত্যন্ত জরুরি। সেখানেই এই ধর্মঘট এক ঐতিহাসিক আহ্বান।