কোন পথ ধরে ২৩তম পার্টি কংগ্রেস (পর্ব ২)

ষষ্ঠ পার্টি কংগ্রেস (বিজয়ওয়াদা-১৯৬১)

পঞ্চম কংগ্রেসের সময় থেকেই পার্টির মধ্যে যে দুটি ভিন্ন মত ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠেছিল প্রত্যাশা করা হয়েছিল যে ষষ্ঠ কংগ্রেসে সেই বিভেদের একটি অবসান ঘটবে এবং একটি ঐক্যমতের ভিত্তিতে পার্টি চলতে পারবে। কিন্তু ১৯৬০ সালের নভেম্বরে মস্কোতে তে ৮১ পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় তার ঘোষণার পরবর্তীতে (৮১ পার্টির বিবৃতি) এই বিভেদ প্রশমিত হওয়ার বদলে আরও প্রকট হয়ে ওঠে। সুধাংশু দাশগুপ্তের লেখা অনুসারে "যাঁরা আশা করেছিলেন যে ৮১ পার্টির সম্মেলনের পর ৮১ পার্টির বিবৃতির ভিত্তিতে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরীণ মতাদর্শগত বিরোধের অবসান ঘটাবার সূত্র পাওয়া যাবে তাঁরা অল্প কিছুকালের মধ্যেই হতাশ হলেন।

লক্ষ্য করবার বিষয় যে, ৮১ পার্টির মহাসম্মেলনের পর ৮১ পার্টির বিবৃতি নিয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির ঊর্ধ্বতন কমিটিতে, সি.ই.সি-তে বা জাতীয় পরিষদে(ন্যাশনাল কাউন্সিল) কোথাও আলোচনা হল না।ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরে কর্মসূচি, কর্মনীতি ও মতাদর্শ নিয়ে যে মতপার্থক্য দিনের পর দিন বেড়ে উঠছিল এবং তীব্র হয়ে উঠছিল তা দূর করার জন্য কোন প্রচেষ্টাই করা হলো না।"

এইরকম এক পরিস্থিতিতে ১৯৬১ সালের ৭ থেকে ১৬ এপ্রিল বিজয়ওয়াদাতে ষষ্ঠ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। মুষ্টিমেয়র হাতে সম্পদের কেন্দ্রীভবন, বেকারি বৃদ্ধি, বর্ধিত করের বোঝা, বর্ধিত দমন-পীড়ন সহ বিদেশ নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দেয় এই পার্টি কংগ্রেস। ঐক্যবদ্ধ নতুন ভারত গড়ার লক্ষ্যে বৃহত্তর গণভিত্তিক রাজনৈতিক আন্দোলনের জন্য মিত্রশক্তিকে কাছে টেনে আনার লক্ষ্য ঘোষিত হয়। রক্ত পতাকা উত্তোলন করেছিলেন মুজফফর আহমদ। এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল যখন তখন ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধ তীব্র হয়েছিল।এই প্রেক্ষাপটে শাসক দলের সঙ্গে সরাসরি সহযোগিতার পক্ষে ছিল একটি মত।অপর মত ছিল শান্তিপূর্ণ পথে সীমান্ত বিরোধ মীমাংসা। এই সময় পার্টিতে মতাদর্শগত পার্থক্য দূর করতে পার্টি কর্মসূচি ও রাজনৈতিক প্রস্তাব গ্রহণের জন্য দুটি খসড়া তৈরি করা হয়। কিন্তু ঐক্যমত্য না হওয়ায় দুটি দলিল পেশ হয় ষষ্ঠ কংগ্রেসে। এই কংগ্রেসে বিতর্ক তীব্র হলে ভাঙ্গন এড়াতে সমঝোতার ভিত্তিতে রাজনৈতিক লাইন ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এই সম্মেলন থেকে ১১০ জনের জাতীয় পরিষদ,২৪ জনের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়। কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন - অজয় কুমার ঘোষ, এস এ ডাঙ্গে, ভূপেশ গুপ্ত,জেড এ আহমেদ, এম এন গোবিন্দন নায়ার। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন অজয় কুমার ঘোষ। ১৯৬২ সালে অজয় কুমার ঘোষ প্রয়াত হলে ডাঙ্গে চেয়ারম্যান ও ই এম এস নাম্বুদিরিপাদ সাধারণ সম্পাদক হন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পার্টির ভাঙ্গন এড়াতে পার্টির সংবিধান সংশোধন করে ডাঙ্গের জন্য চেয়ারম্যান পদটি গঠন করা হয়।

S A Dange
S. A. Dange,
EMS Namboodiripad

সপ্তম পার্টি কংগ্রেস (কোলকাতা-১৯৬৪)

First Polit Bureau of CPI(M)

১৯৬৪ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই ঐতিহাসিক কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এই কংগ্রেস থেকে কমিউনিস্ট আন্দোলনের নবপর্যায়ের সূচনা। রাষ্ট্রের শ্রেণী-চরিত্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিরোধ,ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধ সংক্রান্ত বিতর্ক, বিদেশ নীতির প্রশ্নে সংস্কারমূলক ঝোঁক, জাতীয় ক্ষেত্রে আন্দোলন পরিচালনার অভিমুখ নিয়ে মতাদর্শগত পার্থক্যের অনিবার্য পরিণতিতে পার্টি ভাগ হয়। পার্টির বিপ্লবী অংশ আহুত এই কংগ্রেস থেকে গঠিত হয় নতুন দল সিপিআই(এম)। জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের কর্মসূচি গ্রহণ করায় আন্দোলনের নতুন পর্যায়ের সূচনা ঘটে এই কংগ্রেস থেকে। পার্টির ভাঙ্গন এড়াতে আলোচনার সমস্ত পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হলে ১৯৬৪ সালের ১১ এপ্রিল জাতীয় পরিষদের এক বৈঠক থেকে ৩২ জন সদস্য বেরিয়ে এসে ১৪ এপ্রিল একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেন সকল পার্টি সদস্যদের জন্য। সেখানে তারা খোলাখুলি ডাঙ্গে সহ সংশোধনবাদী নেতৃত্বের প্রতি তাদের অনাস্থা ব্যক্ত করেন এবং এর ভিত্তিতেই গোটা দেশের ১,০০,০০০ পার্টি সদস্যের প্রতিনিধিকারী ১৪৬ জন সদস্যকে নিয়ে ১৯৬৪ সালের ৭-১১জুলাই তেনালি কনভেনশান অনুষ্ঠিত হয়।

সেই কনভেনশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মার্কসবাদ-লেনিনবাদের ভিত্তিতে একটি বিপ্লবী পার্টি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আহুত হয় সপ্তম কংগ্রেস। সরকারের গণতন্ত্রবিরোধী ও জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই সংগঠিত করার মাধ্যমেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হয়। সংশোধনবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ একদশকের বেশি সময়কাল ধরে চলতে থাকা মতাদর্শত সংগ্রামের পরিণতিতে অনুষ্ঠিত সপ্তম পার্টি কংগ্রেস নতুন পার্টি কর্মসূচী ও আশু কর্তব্য সম্পর্কে প্রস্তাব গ্রহণ করে। পলিটব্যুরোয় নির্বাচিত নয়জন সদস্য পরবর্তীকালে ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনে ‘নবরত্ন' হিসাবে পরিচিত হয়। 

এই কংগ্রেস থেকে ৪১ জনের কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত হয়।পলিট ব্যুরো সদস্যরা ছিলেন- পি সুন্দরাইয়া, এম বাসবপুন্নাইয়া, পি রামমূর্তি, হরকিষাণ সিং সুরজিৎ জ্যোতি বসু, এ কে গোপালন, ই এম এস নাম্বুদিরিপাদ, প্রমোদ দাশগুপ্ত, বি টি রণদিভে।

এই পার্টি কংগ্রেস থেকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন পি সুন্দরাইয়া।

P Sundaraiya
P Sundarayya

অষ্টম পার্টি কংগ্রেস (কোচিন-১৯৬৮)

২৩ ডিসেম্বর-২৯ ডিসেম্বর,১৯৬৮ সিপিআই(এম) এর অষ্টম কংগ্রেস, কেরালার কোচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রের অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপ ও সংসদীয় রীতিনীতি উল্লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন পরিচালনার সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী গ্রহণ করে এই কংগ্রেস। কোচিন কংগ্রেস পর্যালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সপ্তম কংগ্রেসে গৃহীত পার্টির কর্মসূচীগত মূল্যায়ন ও পার্টি লাইনের সঠিক অবস্থানকেই ঊর্ধ্বে তুলে ধরে। গণসংগঠন, সংসদীয় ফ্রন্ট এবং পার্টির সাংগঠনিক অবস্থারও পর্যালোচনা করা হয় এই কংগ্রেসে। বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গ ও কেরালায় দুটি যুক্তফ্রন্ট সরকারে পাটির অংশগ্রহণ এবং এই সরকারগুলির মাধ্যমে সীমাবদ্ধ ক্ষমতা সত্ত্বেও জনগণের স্বার্থে কাজ করার বিষয়টি আলোচিত হয়। এর মাধ্যমে বুর্জোয়া-ভূস্বামী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণকে এবং গণতান্ত্রিক শক্তিকে সহায়তা করে গণআন্দোলনকে বিকশিত করার কৌশলকে সঠিক বলে চিহ্নিত করে অষ্টম কংগ্রেস। এই কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবার সময় জাতীয় ক্ষেত্রে তীব্রতর অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক সংঘাতের পথে যেতে শুরু করেছিল। এর ফলে দুটি ঝোঁক দেখা দিয়েছিল-এককেন্দ্রিক ব্যবস্থা ও একেবারে ফেডারেল ব্যবস্থা। সঙ্কট মোকাবিলায় শাসকদল গণতন্ত্রবিরোধী পন্থাকে আঁকড়ে ধরেছিল। অষ্টম কংগ্রেস এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাম ও গণতান্ত্রিক ঐক্য প্রতিষ্ঠার উপর জোর দিয়েছিল।

এই সম্মেলন থেকে ২৮ জনের কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত হয়। পলিট ব্যুরো সদস্যরা ছিলেন ৯ জন: পি সুন্দরাইয়া, এম বাসবপুন্নাইয়া, পি রামমূর্তি, হরকিষাণ সিং সুরজিৎ, জ্যোতি বসু, এ কে গোপালন, ই এম এস নাম্বুদিরিপাদ, প্রমোদ দাশগুপ্ত, বি টি রণদিভে। সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত হন সুন্দরাইয়া।

Harkishan Singh Surjeet with Fidel Castro

নবম পার্টি কংগ্রেস (মাদুরাই-১৯৭২)

১৯৭২ সালের ২৭জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত মাদুরাইতে এই পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়।ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের স্বৈরাচারী শাসন প্রতিহত করতে বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে ব্যক্তিস্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষার ডাক দেওয়া হয় এই কংগ্রেস থেকে। দেশে স্বৈরতান্ত্রিক একদলীয় শাসনতন্ত্র কায়েমের সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে সমস্ত বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক দল, সমস্ত গণতান্ত্রিক সংগঠন ও ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানায়। একদলীয় শাসন কায়েমের লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমান ফ্যাসিবাদী ঝোঁককে প্রতিহত করতে নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানায় পার্টি। পার্টির এই আহ্বান যে কত সঠিক ছিল তা ১৯৭৫ সালের ২৫শে জুন দেশে জরুরি অবস্থা কায়েমের মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছিল। এই কংগ্রেস জাতীয় পরিস্থিতির বিশ্লেষণের মাধ্যমে জাতিসত্তার প্রশ্নটিকে জাতীয় অখণ্ডতার প্রশ্নে পুনর্বিবেচনা করেছিল। জাতিসত্তার প্রশ্নে পৃথক হয়ে যাবার অধিকার সংক্রান্ত ধারাটি এই কংগ্রেসেই পার্টি কর্মসূচীতে সংশোধিত হয়।

কেন্দ্রীয় কমিটি হয় ৩১ জন সদস্যের। পলিট ব্যুরোতে নির্বাচিত হন- পি সুন্দরাইয়া, এম বাসবপুন্নাইয়া, পি রামমূর্তি, হরকিষাণ সিং সুরজিৎ, জ্যোতি বসু, এ কে গোপালন, ই এম এস নাম্বুদিরিপাদ, প্রমোদ দাশগুপ্ত, বি টি রণদিভে। এই কংগ্রেস থেকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন পি সুন্দরাইয়া।

P Sundarayya & Leela Sundarayya

দশম পার্টি কংগ্রেস ( জলন্ধর-১৯৭৮)

১৯৭৮ সালের ২-৮ এপ্রিল জলন্ধরে হয় দশম কংগ্রেস। ষষ্ঠ সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয় হলে সিপিআই(এম)-এর সমর্থনে কেন্দ্রে প্রথম অ-কংগ্রেসী জনতা সরকার গঠিত হয়।নতুন পরিস্থিতিতে এই পার্টি কংগ্রেস বাম, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও স্বৈরতন্ত্রবিরোধী গোষ্ঠীর সম্পর্ক সুদৃঢ় করার আহ্বান জানায়। কেন্দ্রে জনতা সরকার ক্ষমতায় আসার পর কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গে সিপিআই (এম)-এর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। পরে ত্রিপুরাতেও বামফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়। এই প্রেক্ষাপটেই অনুষ্ঠিত হয় দশম কংগ্রেস। এই কংগ্রেস সমস্ত গণতান্ত্রিক ও স্বৈরতন্ত্র-বিরোধী দল ও গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার উপর জোর দেয়। একই সঙ্গে পার্টির রাজনৈতিক প্রভাব ও সম্মান বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সাংগঠনিক দুর্বলতার বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য এই কংগ্রেস থেকে প্লেনাম অনুষ্ঠানের ডাক দেয়। যা পরে সালকিয়া প্লেনাম হিসাবে চিহ্নিত হয়। কেন্দ্রে মোরারজী দেশাইয়ের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম অ-কংগ্রেসী সরকারের ক্ষমতায় আসীন হওয়া সম্পর্কে এই কংগ্রেসের মূল্যায়ন ছিল—একনায়কতন্ত্রী স্বৈরতন্ত্রী শাসনের অবসান মানেই তার শ্রেণীভিত্তির অবসান নয়। এই প্রেক্ষাপটে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সমস্ত বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট গড়ার ডাক দেওয়া হয়।

এই সম্মেলন থেকে ৪৪ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। পলিটব্যুরোর সদস্য হন - ই এম এস নাম্বুদিরিপাদ,পি সুন্দরাইয়া,এম বাসবপুন্নাইয়া, পি রামমূর্তি, হরকিষাণ সিং সুরজিৎ, সমর মুখার্জি, এ বালাসুব্রহ্মন্যম,ই বালানন্দন, বি টি রণদিভে,জ্যোতি বসু, প্রমোদ দাশগুপ্ত।

Pramode Dasgupta & Jyoti Basu

একাদশ পার্টি কংগ্রেস (বিজয়ওয়াদা-১৯৮২)

একাদশ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮২ সালের ২৬ থেকে ৩১ জানুয়ারি বিজয়ওয়াদাতে। একাদশ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিল জনতা সরকারের পতন ও কেন্দ্রে ইন্দিরা গান্ধীর ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের প্রেক্ষাপটে।জনতা পার্টির সরকার কংগ্রেস সরকারের অনুসৃত আর্থিক নীতিকে অনুসরণ করে চলার ফলে দেশের জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে দীর্ণ জনতা সরকারের পতন ঘটার পর পুনরায় ১৯৮০ সালে কংগ্রেস ক্ষমতায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফিরে আসে। এর ফলে গণতন্ত্র ও ব্যক্তিস্বাধীনতা বিপন্ন হয়ে পড়ে। বিভিন্ন ধরনের কালাকানুন জারি হয়। তবে জনতা পার্টির ভরাডুবি ঘটলেও সিপিআই(এম)-এর শক্তি বৃদ্ধি ঘটে। এই প্রেক্ষাপটে একাদশ কংগ্রেস দেশের ঐক্য ও সংহতির সামনে বর্ধিত বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে কংগ্রেস (আই) দলের স্বৈরতন্ত্র কায়েমের বিরুদ্ধে বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তির আন্দোলনকে আরও ক্রিয়াশীল করার আহ্বান জানায়।

কেন্দ্রীয় কমিটি হয় ৪২ জন সদস্যের। পলিট ব্যুরো সদস্য হন - ই এম এস নাম্বুদিরিপাদ, এম বাসবপুন্নাইয়া, পি রামমূর্তি, হরকিষাণ সিং সুরজিৎ, সমর মুখার্জি, ই বালানন্দন, বি টি রণদিভে, জ্যোতি বসু, প্রমোদ দাশগুপ্ত।

E Balanandan
Samar Mukherjee

ছবিঃ কিছুক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ছবি না মেলায় প্রাসঙ্গিক ছবি ব্যবহৃত হয়েছে


শেয়ার করুন

উত্তর দিন