১৩ মার্চ, ২০২৫
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) - এর পলিট ব্যুরোর স্টারলিংক চুক্তি নিয়ে প্রেস বিবৃতি
জিও ও এয়ারটেল এলন মাস্কের স্টারলিংকের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে দেশে উচ্চগতির স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা স্পেকট্রাম বরাদ্দ ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। সুপ্রিম কোর্ট ২জি মামলায় রায় দিয়েছিল যে স্পেকট্রাম একটি মূল্যবান সম্পদ এবং এটি কেবলমাত্র উন্মুক্ত, স্বচ্ছ নিলামের মাধ্যমে বেসরকারি সংস্থাকে বরাদ্দ করা যেতে পারে। স্টারলিংককে অনুমোদনের জন্য যে কোনো বেসরকারি চুক্তি দেশের আইনের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। জিও, এয়ারটেল ও স্টারলিংক একত্রে একটি ‘কার্টেল’ তৈরি করে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ক্ষেত্রে আধিপত্য করতে চাইলে তার খেসারত গুনতে হবে ভারতের লক্ষ লক্ষ গ্রাহককে।
পাশাপাশি, স্যাটেলাইট স্পেকট্রামকে অবশ্যই কৌশলগত (স্ট্র্যাটেজিক) ব্যবহার—যেমন প্রতিরক্ষা এবং ইসরো-র কাজকর্ম—উদ্দেশ্যে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। এটি শুধু স্পেকট্রাম বরাদ্দের প্রশ্ন নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ও বটে। স্যাটেলাইট প্রযুক্তি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, যুদ্ধ বা প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্যের বাস্তব সময়ে তথ্য আদানপ্রদান, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, ফসলের তথ্য, গুরুত্বপূর্ণ কক্ষপথীয় অবস্থান বরাদ্দ, প্রাকৃতিক সম্পদের মানচিত্রায়ণ ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হতে পারে। এ ধরনের তথ্যের ওপর বেসরকারি কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ আমাদের পরিকল্পনা ও সামরিক/প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ব্যবহারকে ব্যাহত করতে পারে। তাই ইসরো ও অন্যান্য ভারতীয় সংস্থা যারা এই কাজে সক্ষম তাদের স্বার্থসহ আমাদের জাতীয় ও নিরাপত্তাগত স্বার্থকে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করা চলবে না।
এই ধরনের টেলিকম সেবা একটি দেশের প্রতিরক্ষার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেন সেনাবাহিনীকে স্টারলিংক সেবা বন্ধ করার মার্কিন হুমকি জেলেনস্কিকে মার্কিন দাবি মেনে নিতে বাধ্য করেছিল—যার মধ্যে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ হস্তান্তর এবং মার্কিন তত্ত্বাবধানে রাশিয়ার সাথে আলোচনা অন্তর্ভুক্ত। একটি মার্কিন কোম্পানিকে অত্যন্ত কৌশলগত স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম ও কক্ষপথের বরাদ্দ অবস্থান(অরবাইটাল স্লট) দিয়ে দেওয়া এবং মহাকাশে একচেটিয়া আধিপত্য গড়ে তোলাকে আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ বিবেচনা করতে হবে।