২রা জানুয়ারি ২০২১
কৃষক আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারের উদ্দেশ্যে চরমপত্র ঘোষণা করা হল – দাবী মানা না হলে ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২১ সাধারণতন্ত্র দিবসে কৃষকেরা একযোগে দিল্লিতে প্রবেশ করবেন
নয়া দিল্লী, ২রা জানুয়ারি ২০২১ – দেশের রাজধানীতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার সাত সদস্যের কো-অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষ থেকে ভারতের সরকারের উদ্দেশ্যে চরমপত্রের ঘোষণা করা হল - বলা হয়েছে আগামী ২৬ শে জানুয়ারি, দেশের সাধারণতন্ত্র দিবসের দিনই নিজেদের ট্রাক্টর, ট্রলি এবং অন্যান্য যানবাহনের সাহায্যে কৃষকেরা রাজধানীর ভিতরে প্রবেশ করবেন। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ঐ দিন সরকারি কর্মসূচির কুচকাওয়াচের পরে “কৃষকদের সাধারণতান্ত্রিক কুচকাওয়াচ” পরিচালিত হবে।
প্রেস বিবৃতি প্রকাশের সময় উপস্থিত ছিলেন বলবির সিং রাজেওয়াল, দর্শনপাল, গুরনাম সিং চাধুনি, অশোক ধাওয়ালে ( হান্নান মোল্লার জায়গায় প্রতিনিধিত্ব করেন), জগজিৎ সিং দল্লেওয়াল, শ্রী অভিমন্যু কোহাদ এবং ( শিব কুমার শর্মা কাক্কাজির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন) এবং যোগেন্দ্র যাদব।
কৃষক নেতারা জানিয়েছেন “আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উদ্দেশ্য কি তা আমরা অনেক আগেই স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলাম এবং একথাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল এই আন্দোলনের দুটিই সম্ভাব্য ফলাফল হতে পারে – হয় তিনটি নয়া কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বাতিল করতে হবে অথবা আমাদের সরিয়ে দিতে বলপ্রয়োগ করতে হবে সরকারকে। আন্দোলনের ফলাফলকে নিশ্চিত করার সময় এসে গিয়েছে, আর তাই আমরা ২৬ শে জানুয়ারির তারিখটিকে নির্বাচন করেছি কারন ঐ দিনটি জনগণের ক্ষমতাকেই প্রধান হিসাবে তুলে ধরে এবং প্রয়োজনে আগামী দুই মাস দিল্লিতে ধৈর্য সহকারে এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নিজেদের দাবী পূরণে সচেষ্ট থাকব”।
২০২১ সালের ২৬শে জানুয়ারি অবধি কৃষকেরা তাদের আন্দোলনকে আরও তীব্র করা হবে বলে জানান। দেশ জাগৃতি অভিযানের নামে সরকারের প্রচারের বিরুদ্ধে আগামী ৬ জানুয়ারি থেকে ২০শে জানুয়ারি অবধি সারা দেশজূড়ে অসংখ্য র্যালি, সম্মেলন এবং ধর্নার আয়োজন করা হবে। লহরি/সংক্রান্তির দিনটিকে কিষাণ সংকল্প দিবস হিসাবে পালন করা হবে। ১৮ই জানুয়ারি মহিলা কিষাণ দিবস হিসাবে উদযাপিত হবে। ২৩শে জানুয়ারি দেশের সকল রাজ্যের প্রধান কেন্দ্রগুলিতে রাজ্যপালের সামনে নেতাজি সুভাষ বসুর জন্মদিবসকে আজাদ হিন্দ কিষাণ দিবস হিসাবে পালিত হবে। সিঙ্ঘু সীমান্তে প্রেস সম্মেলন চলাকালীন গতকালই ঘোষণা করা হয়েছে যে আগামী ৪ তারিখে সরকারের সাথে আলোচনা সভা ব্যার্থ হলে ৬ই জানুয়ারি কৃষকেরা কে এম পি এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করবেন এবং একই সাথে শাজাহানপুরে আটকে রাখা কৃষকদের জমায়েত দিল্লীর অভিমুখে যাত্রা করতে শুরু করবে।
কৃষকনেতারা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন সরকারের সাথে শেষ আলোচনা সভায় কৃষক আন্দোলনের মাত্র দুটি ছোট দাবী মেনে নেওয়া হয়েছে, যদিও সেই সম্পর্কে সরকারের তরফে লিখিত বক্তব্য আদায় করতে হবে। এই আন্দোলনের প্রধান দাবিসমুহ এখনও মেনে নেওয়া হয়নি। তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবী সম্পর্কে সরকার বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে – কৃষকদের পক্ষে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তিনটি কৃষি আইন বাতিল ব্যাতিত কোন বিকল্পই তারা মেনে নেবেন না। ন্যুনতম সহায়ক মূল্যে ফসল কেনার আইনি অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করতেও সরকার রাজি নয়। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার পক্ষ থেকে জানানো হয় - “কোন বিকল্প প্রস্তাবেই কৃষকেরা রাজি নন, যদি ২৬শে জানুয়ারির মধ্যে আমাদের দাবিসমুহ সরকার না মেনে নেয় তবে দিল্লী অভিমুখে শান্তিপূর্ণ উপায়ে যাত্রা করা ব্যাতিত অন্য কিছু আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না”।
শেয়ার করুন