সুস্নাত দাশ
আজাদ হিন্দ ফৌজ ও সরকার : ধর্মনিরপেক্ষতার অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত
সুভাষচন্দ্র বসু যে দেশের সেরা দেশপ্রেমিকদের অন্যতম আজ তা সকলেই জানেন, মানেন ও স্বীকার করেন। কিন্তু এই স্বীকৃতি তাঁকে অনেক বাধা-বিঘ্ন, দুর্গম পথ, আঘাত সহ্য করে সর্বস্ব বিলিয়ে অর্জন করতে হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ১৯আগষ্ট, ১৯৩৯ সালে মধ্য-কলকাতায় ঐতিহ্যশালী ‘মহাজাতি সদন’ (নামটি কবিরই দেওয়া)-এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে ‘দেশনায়ক শীর্ষক যে অবিস্মরণীয় ভাষণ প্রদান করেন তাতে তিনি বলেছিলেন, “সুভাষচন্দ্র বাঙালি কবি আমি, বাংলাদেশের হয়ে তোমাকে দেশনায়কের পদে বরণ করি ……….”
এই অনুষ্ঠানের মাত্র এক সপ্তাহ পূর্বেই ১২ই আগষ্ট (১৯৩৯) ওয়ার্ধায় অনুষ্ঠিত জাতীয় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির এক বৈঠকে সুভাষচন্দ্রের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করে যে প্রস্তাবটি গৃহীত হয় তা হল : “গুরুতর নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য শ্রীযুক্ত সুভাষচন্দ্র বসুকে বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সমিতির সভাপতির পদের অযোগ্য বলিয়া ঘোষণা করা হইল এবং ১৯৩৯ সালের আগষ্ট মাস হইতে তিন বৎসরের জন্য তিনি কোন নির্বাচিত কংগ্রেস কমিটির সদস্য হইতে পারিবেন না।”
বলাবাহুল্য সারা বাংলা জুড়ে কংগ্রেস জাতীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনমত তীব্র আকার ধারন করে। বামপন্থীরা সহ বাংলার সুভাষ-অনুগামী কংগ্রেসকর্মীরা সেদিন প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ফেটে পরেছিল বলে জানিয়েছেন ঐতিহাসিক অমলেশ ত্রিপাঠী। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই ঘটনা ছিল এক যুগ-সন্ধিক্ষণের পর্ব। কারণ কংগ্রেস থেকে বিতাড়িত সুভাষচন্দ্রের সামনে ‘ফরোয়ার্ড ব্লক’ নামক স্বতন্ত্র একটি বামপন্থী দল গঠন করে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামে সরাসরি লিপ্ত হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায়ই ছিল না। এবং এরই সূত্র ধরে দেশের বাইরে চলে গিয়ে নেতাজি আজাদ হিন্দ বাহিনী ও অস্থায়ী সরকার গঠনের মাধ্যমে ব্রিটিশ-সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তার সলতে পাকানোর কাজটি প্রায় দুই বছর ধরে চলেছিল কলকাতা মহানগরীতেই। ১৯৪৩ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নেতাজী যে আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন করেছিলেন তাতে ধর্মীয় সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল ভারতীয়ের ঐক্যবদ্ধ থাকা ছিল তাঁর আর্দশের অন্যতম প্রধান শর্ত। তাঁর এই সর্বস্বপণ করে দেশের মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পরার সংগ্রামে সেদিন কাঠবেড়ালির ভূমিকার মতো বাঙলার কমিউনিস্টদের ভূমিকা কিছুমাত্র কম ছিল না, যার অনেক বৃত্তান্ত পাওয়া যায় ভগৎরাম তলোয়ারের স্মৃতি-কথা ‘আমি নেতাজীর অর্ন্তধানে সঙ্গী ছিলাম’ (নবমপত্র); স্নেহাংশুকান্ত আচার্য-র ‘ব্যক্তিগত দিনলিপি’ (এন.বি.এ) এবং সুধী প্রধানের ‘সুভাষচন্দ্র ভারত ও অক্ষয়শক্তি’ (পি.পি.এইচ)। লেনার্ড গর্ডনও তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন যে সুভাষচন্দ্রের ভাল রকম আস্থা ছিল ভারতীয় কমিউনিস্টদের উপর। গর্ডন দেখান যে বসুর কংগ্রেস-সভাপতি কালে যথা সোমনাথ লাহিড়ি, বঙ্কিম মুখার্জী, গোপাল হালদার প্রমুখ কমিউনিস্ট নেতা তাঁর সঙ্গে নানা সময়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছিলেন।
রাজনৈতিক জীবনের অন্তিম পর্বে সুভাষচন্দ্র বসু সাম্প্রদায়িক সমস্যা সমাধানে গভীরভাবে নিমগ্ন হন। ১৯৩৮ সালে লীগ সভাপতি জিন্নার সঙ্গে হিন্দু মুসলমান সমস্যা সমাধানে পত্রালাপ করেন। তবে মুসলিম লীগ ভারতীয় মুসলমানদের প্রামাণিক এবং প্রতিনিধি স্থানীয় সংগঠন এবং কংগ্রেস দ্বারা নিয়োজিত কমিটিতে কোন মুসলমান অন্তর্ভুক্ত হবেনা—এরূপ দাবীর তীব্র প্রতিবাদ ( যদিও ওয়ার্কিং কমিটির নামে ) জানান। অন্যদিকে ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হয় ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯। ইতিমধ্যে সুভাষচন্দ্র কংগ্রেস হতে বহিষ্কৃত হয়েছেন ১১ আগস্ট, ১৯৩৯। তাসত্বেও বিশ্বযুদ্ধের সুযোগ কাজে লাগাতে সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেসকে (সরাসরি গান্ধীজীকে) অনুরোধ করেন। কিন্তু কংগ্রেসের দিক হতে কোন ইতিবাচক ইঙ্গিত পেলেন না। অবশেষে মুসলিম লীগ সভাপতি জিন্না এবং হিন্দু মহাসভার সভাপতি সাভারকরের সঙ্গে ও দীর্ঘ আলোচনা করেন। এমনকি, স্বাধীন ভারতবর্ষে জিন্নাই প্রধানমন্ত্রী হবেন—এরূপ প্রস্তাব পর্যন্ত দিয়েছিলেন। প্রস্তাবটি ২ বছর পূর্বে কুমিল্লায় প্রদত্ত বসুর বক্তৃতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ । কলকাতা কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনার জন্য বসু মহানগরীর জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে বসু হিন্দু মহাসভা এবং মুসলিম লীগ উভয় সংগঠনের সহযোগিতা চান। এমনকি নিচনোত্তররর পর্বে ও হিন্দু মহাসভার সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে উদ্যোগী হন। কিন্তু প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। অবশেষে মুসলিম লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হলেন। তবে তার এই পদক্ষেপে হিন্দু নেতাদের সঙ্গে সঙ্গে সুভাষ সমর্থক মুসলিমরাও অসন্তুষ্ট হন। বস্তুত সুভাষচন্দ্র বসু সাম্প্রদায়িক দলগুলিকে অস্পৃশ্য বিবেচনা করতেন না। বরং স্বাধীনতা সংগ্রামের মুলস্রোতে (কংগ্রেসের পতাকাতলে) সামিল করতে সচেষ্ট ছিলেন। কর্পোরেশনে ইউরোপীয়দের প্রাধান্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রতিরোধে ইহা অপেক্ষা উত্তম পন্থা আর কি ছিল? এটা অনেকে মনে করলেও সুভাষচন্দ্রর এটা ছিল এক ধরনের দুর্বলতা বা সীমাবদ্ধতা ।
ইতিপূর্বে সুভাষচন্দ্র বসু ৩ মে, ১৯৩৯ সালে ফরোয়ার্ড ব্লক গঠন করেন। কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন ১১ আগস্ট ,১৯৩৯। ঠিক এক বছর পরে (১১ আগস্ট, ১৯৪০) ফরোয়ার্ড পত্রিকায় কংগ্রেসকে সংগ্রাম আরম্ভ করতে অনুরোধ করা হল। যদিও ইতিপূর্বেই সুভাষচন্দ্র হিন্দু-মুসলমান ঐক্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ৩ জুলাই,১৯৪০ তারিখে সিরাজ দৌলা দিবস পালনের ডাক দিয়েছিলেন। যদিও হক মন্ত্রীসভা হলওয়েল স্মৃতি স্তম্ভ অপসারণের আশ্বাস দেন; প্রতিশ্রুতি ছিল অস্পষ্ট। শেষপর্যন্ত ২ জুলাই, ১৯৪০ সুভাষচন্দ্র কে গ্রেপ্তার করা হল। এর পূর্বে সুভাষচন্দ্র দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছিলেন, কিন্তু তিনি দেশের মধ্যে থেকেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে প্রস্তুত ছিলেন এবং ১৯৪০ সালে স্বয়ং বোম্বাই গিয়ে গান্ধীজি, মহ: আলি জিন্নাহ ও সাভারকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে এক মহাজাতিক ঐক্য গঠনের প্রয়াস তিনি রবীন্দ্রনাথের পরামর্শেই হয়তো গ্রহণ করেছিলেন; কিন্তু তা কার্যকর হয় নি।
বস্তুত চিত্তরঞ্জন দাশ পরবর্তীকালে সুভাষচন্দ্র অপেক্ষা বেশি অন্য কোন নেতা মুসলিম সমর্থন বা আস্থা, বিশেষ করে বাঙলায়, পাননি। আর আই-এন-এ পর্বে বসুর প্রতি মুসলমানদের সুগভীর আস্থার বিবরণ পাওয়া যায় আই-এন-এ র তিন মুসলিম অফিসার শাহনওয়াজ খান, আবিদ হাসান, এবং এম জেড কিয়ানির স্মৃতি চারণে। অন্যদিকে বিপান চন্দ্র অভিযোগ করেছেন যে অন্যান্য নেতাদের মতন সুভাষচন্দ্র বসু ও কংগ্রেসের কর্মকাণ্ডে হিন্দু প্রতীক ব্যবহার করতেন। শাহনওয়াজ খান এবং আবিদ হাসানের বিবরণে কিন্তু অভিযোগটি সমর্থিত নন। আবিদ হাসান লিখেছেন, “নেতাজি ধর্মকে জাতীয়তাবাদ হতে সম্পূর্ণ পৃথক রেখেছিলেন। যদিও তিনি নিজে প্রচণ্ড ধর্মপ্রাণ ছিলেন, কিন্তু জনসমক্ষে কোন প্রকার ধর্মীয় প্রার্থনা অনুমোদন করতেন না । শাহনাওয়াজ খান লিখেছেন, “ ধর্ম সম্বন্ধীয় বা প্রাদেশিক ভেদাভেদ তাঁর কাছে কিছু মাত্র ছিলনা। এসব তিনি আমলই দিতেন না । হিন্দু, মুসলিম , শিখ সবাইকে তিনি সমান চোখে দেখতেন এবং এই ভাবই সমগ্র আজাদ হিন্দ ফৌজকে অনুপ্রাণিত করেছিল। আজাদ হিন্দ দলে ধর্মগত বা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের নামগন্ধ ছিল না, অথচ প্রত্যেক লোকেরই নিজ নিজ ধর্মমত অনুসারে উপাসনা করার অধিকার ছিল।'' মুসলিমদের সহযোগিতায় সুভাষচন্দ্র ও অভিভূত হয়েছেন। ঘোষণা করেন, “ সারা পৃথিবী জানুক এবং আমাদের শত্রুরা জানুক যে পূর্ব এশিয়ায় ধর্ম জাতি নির্বিশেষে সকল ভারতীয় (হিন্দু মুসলমানদের ) জন্যে একত্রে থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বস্তুত সুভাষচন্দ্র সাম্প্রদায়িকতাকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পথে অন্তরায় বিবেচনা করলেও সমস্যা মনে করেন নি। স্মরণ করে দিয়েছেন সোভিয়েত রাশিয়ার কথা। সোভিয়েত রাশিয়া যদি একাধিক ধর্মাবলম্বীদের এক রাষ্ট্র এবং শাসনের অধীনে রাখতে সমর্থ হয় ভারতবর্ষে সম্ভব নয় কেন? মুক্ত কণ্ঠে তিনি ঘোষণা করেন স্বদেশপ্রেমিক মুসলমান ও স্বদেশ প্রেমিক হিন্দুর মধ্যে কোন তফাৎ নেই। বসুর ভাষণের যথার্থতার প্রমাণ পাওয়া গেল হাবিবের মধ্যে। নেতাজি আকর্ষণে ( মাতৃভূমির মুক্তির আকাঙ্ক্ষাও অবশ্যই ছিল ) নেতাজির গলার মালা ক্রয়ে সর্বস্ব দান করেন। দানের মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। এমনকি, স্ত্রী, পুত্র নিজেও আই-এন-এ তে যোগদান করেন। জার্মানি হতে জাপান সাবমেরিণ যাত্রাকালে তাঁর সঙ্গী ছিলেন আবিদ হাসান। আই-এন-এ সিক্রেট সার্ভিসে বহু মুসলমানকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাদের ভারতবর্ষে পাঠানো হয়েছিল মুসলিমদের মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী প্রচার চালানোর জন্য। জীবনের শেষ বিমান যাত্রায় একমাত্র সঙ্গী হিসাবে নির্বাচন করেন একজন মুসলমানকে, হাবিবুর রহমান। যাত্রা পূর্বেই আজাদ হিন্দ সরকারের দায়িত্ব (তার অনুপস্থিতে) অর্পণ করেন আরেকজন মুসলমানকে, এম জেড কিয়ানি।
আজাদ হিন্দ বাহিনীতে ধর্মনিরপেক্ষতার একটা বড় জায়গা ছিল, যদিও সুভাষচন্দ্র বসু গীতা ও রুদ্রাক্ষ তার শরীরে ধারণ করতেন কিন্তু বিশ্বাসে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ। তার আজাদ হিন্দ ফৌজের হিন্দু-মুসলমান-শিখ সবারই অস্তিত্ব ছিল সমান। যে রান্না হতো সেখানে সব রকম ধরনের মানুষই সহায়তা করতেন। খাওয়া দাওয়া ভোজন পর্ব একসঙ্গেই সারা হত। অর্থাৎ কোন ধর্মীয় ভেদাভেদ কে প্রশ্রয় দেওয়া হতো না তবে সেই সময়ে একবার একটা ধর্মীয় গোঁড়ামি দেখা গিয়েছিল, আজাদ হিন্দ ফৌজের গরুর ও শূকরের মাংস নিয়ে কোনো বাছবিচার চলতো না। এটা যে কত বড় পদক্ষেপ আজকে দাঁড়িয়েও তা বোঝা যায় এই নিষিদ্ধ মাংস ভক্ষণ নিয়ে সমস্যা হয়েছিল বলে নেতাজি নিজে দাঁড়িয়ে তার সমাধান করেছিলেন। তার বাহিনীতে ছিল জয় হিন্দ ধনী সব ধর্মের লোক থাকবে, সব ধর্মাচরণ চলবে নিজের মতো; কোনো বিরোধ থাকবেনা--- হিন্দুস্তান যেখানে সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার এটাই ছিল নেতাজির মতাদর্শ ও দর্শন।ব্যক্তিগতভাবে ধার্মিক ছিলেন,নিজে পট্টবস্ত্র পড়ে সিঙ্গাপুরে রামকৃষ্ণ মিশনে কালীপুজো দুর্গাপুজো করেছেন। রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজদের সঙ্গে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তিনি নেতাজি রামকৃষ্ণ মিশনে প্রায় ছয় লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন আজাদ হিন্দ সরকারের পক্ষ থেকে ছাত্রাবাস গড়ে তোলার জন্য। রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ ভাস্বরআনন্দ নেতাজির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে তাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য জেল হেফাজতে রাখা হয়েছিল কিছুদিন। ফলে সুভাষচন্দ্র বসু, নেতাজি কখনো হিন্দু ধর্মীয় আচার আচরণ থেকে বিচ্যুত হননি। কিন্তু তিনি হিন্দু-মুসলমান-শিখ-জৈন-বৌদ্ধ সকল ভারতীয়কে সম চোখে দেখতেন; কোন বৈষম্য বা ধর্মীয় বিভাজন সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দিতেন না। আই-এন-এ’র চরম আর্থিক দুর্দিনেও তার মুসলিম পরিষদদের মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি না মেলায় চেট্টীয়ার সম্প্রদায়ের আর্থিক দান গ্রহণে অসম্মত হলেন। ধর্মনিরপেক্ষতার এমন দৃষ্টান্ত সুভাষচন্দ্র বসু ব্যতীত কোন স্বাধীনতা সংগ্রামী স্থাপন করেছেন ?