মে দিবস, ২০২৫ - ২০ মে সর্বভারতীয় ধর্মঘটকে সফল করার শপথ নিন

তপন সেন

ভারতবর্ষে কলকারখানা গড়ে উঠতে থাকে উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই। শিল্প বিকাশের সাথে সাথে জন্ম হয় শ্রমিকশ্রেণির। আর যে কথাটা এ বছর মে দিবসের প্রাক্কালে সকলের স্মরণে নিয়ে আসা উচিত তা হলো জন্মলগ্ন থেকেই ভারতবর্ষের শ্রমিকশ্রেণি লড়াই আন্দোলনের পথেই এগিয়েছে। তবে শুরুতে এ সব লড়াই ছিল বিক্ষিপ্ত ও অসংগঠিত।

আমাদের ভাবতেই গর্ব হয় যে ১৮৬০ সালের মে মাসে হাওড়া স্টেশনের ১২৬০ জন মুটিয়া মজুর ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে এক দিনের ধর্মঘট করেন। এই ধর্মঘটের মাধ্যমেই ভারতবর্ষে শ্রমিক জাগরণের সূচনা। এই ধর্মঘটের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হচ্ছে ১৮৮৬ সালে আমেরিকার হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে ঐতিহাসিক মে-দিবসের ঘটনাবলী সংগঠিত হবার ২৬ বছর আগেই ভারতের শ্রমিকশ্রেণি ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে ধর্মঘট করেছিলেন।

মে দিবসের ঐতিহাসিক আন্দোলনের কথা আমাদের সকলেরই অল্প বিস্তর জানা। ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের চাপে ফ্রান্সে ১৮৪৮ সালে প্যারিস শহরের জন্য দৈনিক ১০ ঘণ্টা ও অন্যত্র ১১ ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণ করা হয়। জার্মানিতে ১৮৩৪ সালে ১০ ঘণ্টা কাজের আইন চালু হয়। আমেরিকায় ১৮৪০ সালে কেবলমাত্র সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১০ ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারিত হয়। পরবর্তী সময়ে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্য শহরের শ্রমিকরাও ১০ ঘণ্টা কাজের সময় মানতে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করে। আমেরিকার শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি উত্থাপন করে ১৮৬৬ সালে। ১৮৬৬ থেকে ১৮৮৬ দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলন। ১৮৮৬ সালের ১ মে সারা দেশ জুড়ে ধর্মঘট ডাকা হয়। শিকাগো শহরে শ্রমিক মিছিলের উপর পুলিশের গুলিবর্ষণে বহু শ্রমিক হতাহত হয়। ১৮৮৯ সালে ২য় আন্তর্জাতিকে ঘোষণা করা হয়েছিল পৃথিবী জুড়ে ১ মে ‘মে দিবস’ পালন করা হবে এবং ১৮৯০ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বজুড়ে শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে পালিত হতে শুরু করে ‘আন্তর্জাতিক মে দিবস’। মনে রাখতে হবে ১৮৪৮ সালে ‘কমিউনিস্ট ইশ্‌তেহার’ প্রকাশিত হয়। এই পুস্তকে মার্কস–এঙ্গেলস পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শ্রমিকশ্রেণির যে আন্তর্জাতিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আহ্বান জানান –‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’।

আজ এত বছর পরে ঐতিহাসিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত ৮ ঘণ্টার কাজের ব্যবস্থাটাই ভেঙে দিতে চাইছে শাসকশ্রেণি। বিশ্বজুড়ে নানা প্রতিরোধ আন্দোলন চলছে। আমাদের দেশেও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন চুপ করে বসে নেই। সমসাময়িক পুঁজিবাদের ক্রমবর্ধমান পদ্ধতিগত সঙ্কটের ফলে উদ্ভূত ভারতের শ্রমিক শ্রেণির আন্দোলনকে এক অভূতপূর্ব কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। শাসক শ্রেণির প্রতিক্রিয়া ক্রমশ আগ্রাসী ও নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠছে, গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতরে শ্রমিকদের সম্মিলিত সংগ্রামের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। কর্মক্ষেত্র এবং জাতীয় স্তরে শ্রমিক শ্রেণিকে নিরস্ত্র করা বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা স্পষ্টভাবে নয়া-ফ্যাসিবাদী চরিত্রেরই প্রতিফলন।

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে সরকার ২৯টি শ্রম আইন বাতিল করে চারটি শ্রম কোড প্রণয়ন করেছে, যার মাধ্যমে শ্রমিকদের প্রায় দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। এই শ্রম আইন শ্রমিকদের দাসত্বে আবদ্ধ করার পাশাপাশি কর্পোরেট-সাম্প্রদায়িক শাসনব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করছে, যা অর্থনীতি ও সমাজের উপর একচেটিয়া কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। এই চারটি শ্রম বিধি শুধুমাত্র শ্রম আইন নয়, এটি গোটা প্রশাসনিক শাসন ব্যবস্থাকে কর্তৃত্ববাদী রূপ দেওয়ার একটি পরিকল্পিত প্রকল্পের অংশমাত্র। এই শ্রম বিধিগুলো ২০১৯ ও ২০২০ সালে গৃহীত হলেও, শ্রমিক শ্রেণির লাগাতার প্রতিরোধের ফলে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এর প্রয়োগকে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।

কিন্তু বিজেপি সরকার তৃতীয় দফার শাসনে, যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠতা আগের চেয়ে কম, শ্রম বিধিগুলো বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং ২০২৫ সালের এপ্রিলের মধ্যেই এই বিধিগুলো কার্যকর করার পরিকল্পনা করছে।

এই প্রেক্ষাপটে, কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলোর যৌথ মঞ্চ ও স্বাধীন ক্ষেত্রভিত্তিক ফেডারেশনসমূহ জনগণের উপর কার্যত দাসত্বের শর্ত আরোপ করার এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন আরও তীব্র করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই লক্ষ্যে, ১৮ মার্চ, ২০২৫ নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত শ্রমিকদের জাতীয় সম্মেলন থেকে আগামী ২০ মে, ২০২৫ সারাদেশ ব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। আমাদের অবশ্যই এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে এবং দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটকে ব্যাপকভাবে সফল করে তুলতে হবে, যা শাসক শ্রেণির দাসত্ব চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান ও প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে শ্রমিক শ্রেণির দৃঢ় সংকল্পকে আরও একবার প্রমাণ করবে।

শ্রম বিধিগুলো বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য হচ্ছে— কর্পোরেট-সাম্প্রদায়িক শাসনের স্বৈরাচারী দখলদারিত্ব নিশ্চিত করা, জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা এবং শ্রমিক শ্রেণির শোষণকে তীব্রতর করা। এর মাধ্যমে দেশের প্রাকৃতিক ও সরকারি সম্পদ কর্পোরেট স্বার্থে লুটপাটের পথ সুগম করা হচ্ছে।

           Source:Google

উদাহরণস্বরূপ, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, মোদি সরকার তথাকথিত ‘জন বিশ্বাস আইন’-এর (১) বিধান অনুসারে, বয়লার আইন, বন আইন, চা আইন, রাবার আইন, ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি আইন ইত্যাদি সহ ৪২টি আইনের অধীনে কর্পোরেটদের ১৮০টি অপরাধকে ডিক্রিমিনেলাইজ করেছে। এই সব অপরাধের জন্য কারাদণ্ডের বিধান প্রত্যাহার করা হয়েছে, শুধুমাত্র জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যার মাধ্যমে তাদের শ্রম আইন লঙ্ঘনের অবাধ লাইসেন্স দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় বাজেটে আরও ১০০টি অপরাধকে অনুরূপভাবে ডিক্রিমিনেলাইজ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এগুলি শ্রম আইন সহ যাবতীয় ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘনের লাইসেন্স ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়া, শ্রম সমাধান এবং শ্রম সুবিধা পোর্টালগুলি নিয়োগকর্তাদের দ্বারা অবিচলিত শ্রম আইন লঙ্ঘনকে সহজতর করার জন্যই অভিযোগ ভিত্তিক পরিদর্শন কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে।

অন্যদিকে, শ্রমিকদের কষ্টার্জিত অধিকার আদায়ের জন্য সম্মিলিত পদক্ষেপকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে। এর ভয়াবহতা এতটাই যে শ্রমিক এবং তাদের ইউনিয়নগুলির সম্মিলিত অভিযোগ দায়েরকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর ধারা ১১১ অনুযায়ী'সংগঠিত অপরাধ' হিসাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যার ফলে জামিন অযোগ্য কারাদণ্ড সহ পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই, বিভিন্ন রাজ্যে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি তুলে ধরার কারণে ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। শ্রম আইন বাস্তবায়নের আগেই, গেট মিটিং, বিভাগীয় সভা, লিফলেট বিতরণ, স্মারকলিপি জমা দেওয়া ইত্যাদি নিয়মিত ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম, বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠান/বিভাগে, কার্যত নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এ সমস্তই করা হচ্ছে শ্রমিকদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার জন্য।

সংগঠিত ও অসংগঠিত, উভয় ক্ষেত্রে শ্রম সম্পর্ক পুনর্গঠনের মাধ্যমে অস্থায়ী ও অনিরাপদ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটি কেবলমাত্র শ্রম ব্যয় কমানোর জন্য নয়, বরং ট্রেড ইউনিয়নগুলিকে দুর্বল ও নিশ্চিহ্ন করার জন্যও পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। শ্রম কোডগুলি এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে, যার মাধ্যমে স্থায়ী কর্মসংস্থান বিলুপ্ত হয়ে ব্যাপক আউটসোর্সিং, শিক্ষানবিশ, প্রশিক্ষণার্থী, ইন্টার্ন ইত্যাদির মাধ্যমে শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হবে।

এই পরিস্থিতিতে এটা স্পষ্ট যে, শাসক শ্রেণি শ্রম বিধিগুলো বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে শ্রমিকদের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে চায়, যাতে কর্পোরেট স্বার্থে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করা যায় এবং সমাজে বিষাক্ত সাম্প্রয়িক বিভাজন সৃষ্টি করা যায়। মোদি সরকার সাধারণ মানুষের উপর করের বোঝা চাপিয়ে সরকারি কোষাগারকে তার মুষ্টিমেয় কিছু বন্ধুর লুটপাটের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ, ক্যাপেক্স ইনসেনটিভ, এমপ্লয়মেন্ট লিঙ্কড ইনসেনটিভ ইত্যাদির মতো প্রকল্পগুলি মূলত বড় বড় কর্পোরেটদের শ্রমিকের মজুরি সংক্রান্ত ব্যয় ও উৎপাদন ব্যয়ের খরচ বহন করার ব্যবস্থা করছে। এই ব্যবস্থা জনগণের অর্থ নিষ্কাশনের পাইপলাইন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই কর্পোরেট সংস্থাগুলি, যাদের বেশিরভাগই একচেটিয়া সংস্থা, তারা কোনও রিটার্ন সরকারকে দেয় না বা কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করে না। অন্যদিকে, সরকার প্রকৃতপক্ষে ‘মনরেগা’, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং দরিদ্রদের উপকারকারী অন্যান্য জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য বাজেট বরাদ্দ প্রকৃত অর্থে কমিয়ে দিয়েছে।

সব মিলিয়ে, এই সরকার নব্য উদারনৈতিক নীতির চরম কর্তৃত্ববাদী ও নিও-ফ্যাসিবাদী রূপ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। UAPA, PMLA, BNS এর মত আইন সহ অসংখ্য প্রশাসনিক ও নির্বাহী ব্যবস্থার (Ordinance/ Administrative order) মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী অভিপ্রায়ের সাথে হিংস্র কর্তৃত্ববাদ প্রদর্শন করে তারা স্বৈরাচারী শাসনকে আরও শক্তিশালী করছে।

এই বার্তাটি শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে এবং শাসকের এই আক্রমণগুলি প্রতিহত করার জন্য এবং কেবল তাদের কষ্টার্জিত অধিকারই নয়, বরং সমগ্র সমাজ এবং জাতিকে কর্পোরেট- সাম্প্রদায়িক দুষ্টচক্রের শাসনের বিকৃত চক্রান্ত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তুত করতে হবে। তাদের সচেতন করতে হবে যে এই সাধারণ ধর্মঘট আমাদের জাতিকে বাঁচানোর এই সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

আসন্ন দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটকে শুধুমাত্র আমাদের দেশের শ্রমিকশ্রেণির দ্বারা নব্য-উদারবাদী নীতির আনুষ্ঠানিক সূচনার পর থেকে ধারাবাহিক অন্যান্য সাধারণ ধর্মঘটগুলির মধ্যে একটি হিসাবে দেখা উচিত নয়। এই ধর্মঘটকে শ্রম কোড বাস্তবায়ন বন্ধ করার এবং সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাসক শ্রেণির সমগ্র কর্তৃত্ববাদী পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং প্রতিবাদ সংগ্রামের একটি উচ্চতর পর্যায়ের সূচনা হিসাবে দেখা দরকার। এটি নব্য-উদারবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামকে আরও উচ্চতর স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিত্তি তৈরি করবে, যেখানে শ্রমিক শ্রেণি পুঁজিবাদকে অতিক্রম করার ক্ষেত্রে তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকা সম্পর্কে আরও সচেতন হবে।

এই ধর্মঘট ভারতের শ্রমিক শ্রেণির সবচেয়ে বড় কর্মসূচি হতে চলেছে, যা অধিকার এবং জীবিকার উপর শাসক শ্রেণির বর্বর আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হিসাবেই গৃহীত হয়েছে। দেশের শ্রেণি-ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়ন হিসাবে, সিআইটিইউ এই সাধারণ ধর্মঘটকে শ্রমজীবী শ্রেণির নেতৃত্বে পালটা আক্রমণের একটি নতুন পর্যায়ের সূচনা করার ঐতিহাসিক দায়িত্ব হিসাবে গ্রহণ করছে। আজকের সংগ্রাম জনগণ ও জাতীয় অর্থনীতির উপর কর্পোরেট লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে; এই ধর্মঘট গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও শ্রমস্থলে কঠোর সংগ্রামে অর্জিত অধিকারগুলোর ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে। এই ধর্মঘটকে সফল করে তোলাই হবে এই মে দিবসের ঐতিহাসিক আহ্বান। আসুন সকলে সারা দেশের শ্রমজীবী মানুষের সাথে এই সংগ্রামে জয় লাভ করার জন্য সার্বিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই। মে দিবস দীর্ঘজীবী হোক! শ্রমিক-কৃষক ঐক্য দীর্ঘজীবী হোক!

১. ‘জন বিশ্বাস আইন’, ২০২৩ (Jan Vishwas (Amendment of Provisions) Act, 2023) হলো বেশ কিছু অপরাধের জন্য অতীতে কারাদণ্ডের শাস্তি হতো, তার পরিবর্তে এখন শুধু আর্থিক জরিমানা দিলেই অপরাধী পার পেয়ে যাবে। এটি মূলত শ্রমবিধি বা বিভিন্ন শ্রম আইন লঙ্ঘন করলে এখন কিছু অর্থ জরিমানা দিলেই যাতে মালিকপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পার পেয়ে যেতে পারে, তার জন্যই এই আইন মোদি সরকার তৈরি করেছে।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন