ভারতের জাতীয় আন্দোলন ও আর এস এস – (চতুর্থ পর্ব)

ধারাবাহিক রচনায় - গৌতম রায়

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ তাদের আদর্শগত ভিত্তির মূল উপাদান হিসেবে ডাক্তার কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার কে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে ।জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমসাময়িক সাম্প্রদায়িক এবং মৌলবাদী উপাদান গুলি কে সঙ্ঘীয় ভাবধারা অনুযায়ী একটা সুসংবদ্ধ রূপ দিয়ে, ধর্মান্ধ মৌলবাদী চিন্তা-চেতনার বিকাশ কে, সাংগঠনিক স্তরে উপনীত করবার ক্ষেত্রে, সংঘের প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ারের  ভূমিকা এবং অবদানের কথা তারা সবসময় অত্যন্ত কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করে থাকে।

ডাক্তার কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার

                হেডগেওয়ারকে সাংগঠনিক পরিকাঠামো এবং আদর্শগত ভিত্তির  অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হিসেবে ধরবার সবথেকে বড় কারণ হল ;সংঘের যাবতীয় চিন্তা চেতনার মূল উপাদানের যে সাম্প্রদায়িক ,মৌলবাদী দৃষ্টিভঙ্গি - তাকে  সুসংবদ্ধ রূপ দিতে উচ্চবর্ণীয় ব্রাহ্মণ্যবাদী ভাবধারা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, সেই রাজনৈতিক হিন্দু উচ্চবর্ণীয় উচ্চবর্গীয় ব্রাহ্মণ্যবাদী চিন্তা-চেতনার বিকাশের ক্ষেত্রে আরএসএস কেতার জন্মলগ্ন থেকে সবথেকে বেশি প্ররোচিত ,প্রভাবিত করেছিলেন এই হেডগেওয়ার।

                  হেডগেওয়ারের আদি নিবাস ছিল বর্তমান তেলেঙ্গানার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। স্থানীয় সামাজিক পরিকাঠামো তাদের কোঙ্কোনাস্থা ব্রাহ্মণ বলা হয়, যারা চিৎপাবনব্রাহ্মণ নামে পরিচিত ।ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থা য়  জাত ও বর্ণ নির্ভর পরিকাঠামো তে, প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা-চেতনার বিকাশের ক্ষেত্রে এই চিৎপাবন ব্রাহ্মণেরা   আমাদের দেশের সামাজিক ইতিহাসের ক্ষেত্রে দীর্ঘকাল ধরেই অত্যন্ত নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে চলেছে।

                     বিন্ধ্য পর্বতের অপরপ্রান্তের  সামাজিক পরিকাঠামোতে  উচ্চবর্ণের, উচ্চবর্গের ,অভিজাত মানুষদের আধিপত্য বিস্তারের ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণ্যবাদী ,মনুসংহিতা নির্ভর চিন্তা চেতনার প্রসার- প্রয়োগ এবং প্রচারের ক্ষেত্রে ,এই চিৎপাবন  ব্রাহ্মণেরা খুবই নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে যুগ যুগ ধরে। সেই পরিবারের সন্তান আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ার।

                   তবে হেডগেওয়ারের  পিতৃপুরুষের আদি নিবাস ত্যাগ করে যে  নাগপুরের বাসিন্দা হয়েছিলেন, তার পিছনে প্রকৃত কারণ যাই ই থাকুক না , এই ঘটনাক্রমটিকে সঙ্ঘ সবসময়ে নিজেদের তথাকথিত ভাবাদর্শের অনুকুলবাহী ঘটনা হিশেবেপ্রচার করে থাকেনিজেদের ব্রাহ্মণ্যবাদী মানসিকতাকেই গৌরবান্বিত করতে। হেডগেওয়ারের পিতৃপুরুষদের এই তেলেঙ্গানা অঞ্চল ত্যাগ করার প্রধান কারণ ছিল;( এটা সঙ্ঘী য় ব্যাখ্যা।এই কারণ টি ই যে ওই পরিবারের তেলেঙ্গানা ত্যাগের প্রকৃত কারণ, তেমন কোনো ইতিহাস নির্ভর তথ্যপ্রমাণ নেই।তবে মুসলমান সমাজ সম্পর্কে ঘৃণার রাজনীতি ছড়ানোর অন্যতম মূলধন হিশেবে এই ঘটনাটিকে সঙ্ঘ খুবই ব্যবহার করে থাকে) যে সময়ে তারা পৈত্রিক আবাস ত্যাগ  করে, সেই সময় সেই অঞ্চলটি ছিল হায়দ্রাবাদের নিজামের সাম্রাজ্যের অধীন।

                 মুঘল শাসনাধীন বা মুসলমান শাসনাধীন কোনো পরিকাঠামোর মধ্যে থেকে, বৈদিক ভাবধারার ( সেই ভাবধারা কে সঙ্ঘ নিজেদের মতো করে ব্যাখ্যা করে)কোনো  বিকাশ সম্ভবপর নয় --এই বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়েই হেডগেওয়ারের  পূর্বপুরুষ ,তাদের চিৎপাবন ব্রাহ্মণত্ব কে বজায় রাখবার তাগিদেই ,তেলেঙ্গানার প্রত্যন্ত গ্রামের পৈতৃক ভিটে ত্যাগ করে, মারাঠা ভোঁসলে সাম্রাজ্যের অন্তর্গত নাগপুরে এসে বসবাস করতে শুরু করে।

                  আরএসএস তাদের কর্মকাণ্ডের বিস্তারের ক্ষেত্রে প্রথমেই তাদের ভাষায় পরম নিষ্ঠাবান চিত্রা বন্ধন চিত পাবন ব্রাহ্মণ হেডগেওয়ার এর পূর্বপুরুষের কেবলমাত্র বৈদিক নিষ্ঠার প্রতি আকর্ষণ হেতু মুসলমান নিজামের শাসনাধীন পৈতৃক নিবাস ত্যাগ করে মারাঠা ভোঁসলের শাসনাধীন নাগপুরে চলে আসার ঘটনাটিকে অত্যন্ত জোরের সঙ্গে উল্লেখ করে থাকে সূচনা পর্ব থেকেই সূচনা কর্তার দৃষ্টিভঙ্গি কতোখানি 'বিশুদ্ধ ব্রাহ্মণ্যপন্থী' ,অর্থাৎ; রাজনৈতিক হিন্দু চিন্তা চেতনারদ্বারা তাড়িত ছিল, সেটা দেখাতেই হেডগেওয়ারের পূর্বপুরুষদের মুসলমান নিজামের রাজত্বের অধীন পিতৃপুরুষের ভিটে ত্যাগ করে ,' হিন্দু' ভোঁসলে সাম্রাজ্যের অধীন নাগপুরে চলে আসার ঘটনাকে উল্লেখ করা হয়।

                           ভারতবর্ষের চির প্রবাহমান বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকে ,সমন্বয়ী  চেতনাকে, উচ্চবর্ণের, উচ্চবর্গের, অভিজাত সম্প্রদায়ের মানুষদের চিন্তা-চেতনা প্রসূত বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারা তাড়িত ,ব্রাহ্মণ্যবাদী ভাবধারায় সম্পুর্ণভাবে নিমজ্জিত একটি মোরকের ভেতর দিয়ে   দেখিয়ে ,তাকেই বৈদিক সভ্যতা ও সংস্কৃতির একমাত্র নিদর্শন এবং সেই নিদর্শন থেকেই ,যে হিন্দু ধর্মের কথা আরএসএস বলে থাকে, সেই ভাবনাচিন্তা কে সংক্রমিত করবার লক্ষ্যে, নিজেদের প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ারের  জীবন বৃত্তান্তের  সবকটি ধারা-উপধারা কে তারা বর্ণনা করে থাকে ।

                    আরএসএস তাদের সঙ্ঘীয়  ভাবধারায় এটাই প্রচার করে যে, হেডগেওয়ারের এক অতিবৃদ্ধ প্রপিতামহ  মুসলমান জনজীবনের সাংস্কৃতিক প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করে, আর এসএসীয়   দৃষ্টিভঙ্গি সংহত বৈদিক সভ্যতা, সংস্কৃতি,  ভাবধারার কেন্দ্রভূমি ,হিন্দু ভোঁসলে সাম্রাজ্যের  অন্তর্গত নাগপুর কে বেছে নিয়েছিলেন বৈদিক ভাবধারার সঙ্গে নিজের জীবন ও পরিবারকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে।

                বৈদিক যুগের চিন্তা চেতনাকে রাজনৈতিক হিন্দুত্বের জারিত করে মানুষের সামনে তুলে ধরে ,প্রাচীন বৈদিক যুগের যাবতীয় সাংস্কৃতিক- সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গুলি যে রাজনৈতিক হিন্দুদের সামাজিক -রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সমতুল্য ছিল --এটা  ই প্রমাণ করা  রাজনৈতিক হিন্দু সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী শিবিরের একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যের দিকে দৃষ্টি রেখেই হেডগেওয়ারের অতিবৃদ্ধ প্রপিতামহের সাত পুরুষের বাস তেলেঙ্গানা থেকে হিন্দু ভোঁসলে সাম্রাজ্যের অন্তর্গত নাগপুরে চলে আসা এবং বৈদিক ভাবধারার চর্চা করার বিষয়গুলিকে তুলে ধরে ,প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা কে, রাজনৈতিক হিন্দুরা তাদের রাজনৈতিক আগ্রাসন এবং ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে' সাম্প্রদায়িকতা'কে যেভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে তুলে ধরেছে ,ঠিক সেভাবেই দেখাতে চেষ্টা করে।

             সেই লক্ষ্যেই তারা এটা প্রচার করে থাকে যে ,নিজামের সাম্রাজ্য যেহেতু মুঘল সংস্কৃতির ধারা উপধারা  র নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক অভিঘাতে অভিষিক্ত, তাই সেখানে আরএসএস প্রাচীন ভারতীয় মূল্যবোধের নাম করে যে রাজনৈতিক হিন্দু সংস্কৃতির কথা বলে, সেই হিন্দু সংস্কৃতির কোনোরকম প্রচলন ছিল না। আরএসএসের   কাঙ্খিত রাজনৈতিক হিন্দু সংস্কৃতি, যেটাকে তারা প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি হিসেবে বিকৃত ইতিহাসের একটি  স্মারক হিসেবে তুলে ধরতে চায়, সেই বিকৃত চিন্তাভাবনার ইতিহাস ,অর্থাৎ; জাতি-ধর্ম-বর্ণবাদী ,অভিজাত, উচ্চবর্গীয় দের শ্রেণীশোষণের সহায়ক দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবেই বৈদিক শিক্ষার প্রচলন ভোঁসলে সাম্রাজ্যে ছিল এবং সেটি নাগপুর অঞ্চলে ই ছিল --তাই সেই আকর্ষণেই হেডগেওয়ারের  পূর্বপুরুষেরা মুসলমান সাম্রাজ্যে ত্যাগ করে, মুসলিম রাজ্যের অধিবাসী হয়ে  পড়ে না থেকে চলে এসেছিলেন নাগপুরে।এটাই আরএসএস তাদের কৌশলী প্রচারে তুলে ধরে।

                   সঙ্ঘে সদর দপ্তর নাগপুর কে ধর্ম বর্ণ জাতপাত ভিত্তিক একটা  মহত্ত্বের মোড়কে মুড়িয়ে রাজনৈতিক হিন্দু মতাদর্শের সকল স্তরের লোকের সামনে তুলে ধরাটাই আরএসএসের প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য ।সেই লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যেই তারা হেডগেওয়ারের   পূর্বপুরুষের তেলেঙ্গানার ত্যাগ করে ভোঁসলে  সাম্রাজ্যের অন্তর্গত নাগপুরের চলে আসার অন্তর্নিহিত কারণ কে এভাবে একটা ব্রাহ্মণ্যবাদী ভাবধারার অভিঘাতে, বৈদিক সভ্যতা- সংস্কৃতি- শিক্ষা ইত্যাদির কল্পিতস্বর্গরাজ্য হিসেবে দেখাতে চায়।

                  যে শহরে আরএসএসের প্রতিষ্ঠা  হয়েছিল, অর্থাৎ ;নাগপুর  শহরটি যে সঙ্ঘের ভাবাদর্শের প্রাচীন বৈদিক সভ্যতা- সংস্কৃতির চর্চার বর্তমান যুগ উপযোগী এক পীঠভূমি -- এটা প্রথম থেকে তুলে ধরা ছিল আরএসএসের   অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক লক্ষ্য ও কর্মসূচি ।বলাবাহুল্য; জাতি- ধর্ম -বর্ণ ভিত্তিক,ব্রাহ্মণ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির নিরিখেই প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার একটি বিকৃত চিত্রের  উপস্থাপনার ভেতর দিয়ে, এই নাগপুর কে গৌরবান্বিত করে, নিজেদের সংগঠনের  প্রতিষ্ঠার  শহর এবং পরবর্তীকালে সদর দপ্তর কে ঘিরে এক ধরনের কল্পিত ,উচ্চাভিলাষী  ভাবনা রচনা ই  ছিল আরএসএসের হেডগেওয়ারের  পরিবারের তেলেঙ্গানা ত্যাগ করে নাগপুরের চলে এসে, বসতি স্থাপন করা ঘিরে নানা ধরনের গল্পের উপস্থাপনার প্রথম এবং প্রধান কারণ।

             আমাদের মনে রাখা দরকার; আরএসএস, তাদের তথাকথিত আদর্শ এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি' সাম্প্রদায়িকতা'র প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে এই ধরনের কল্পকাহিনীকে কিন্তু চিরদিন সব থেকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে এসেছে। সেই ভাব ধারাতেই তারা হেডগেওয়ার জীবন -কর্মধারা-কর্মসূচি -ভাবাদর্শ, সবকিছুকে একটা মহত্ত্বের চরম সীমায় নিয়ে গিয়ে ,সামাজিক বিভাজন কে মূল লক্ষ্য হিসেবে স্থির করে,সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিরিখে মানুষের সামনে তুলে ধরতে সক্রিয় থেকেছে।

               হেডগেওয়ারের  পরিবার তেলেঙ্গানা চিৎপাবন ব্রাহ্মণ হওয়া সত্বেও, কেন নিজামের শাসনকালে চলে এসেছিল ভোঁসলে সাম্রাজ্যের  অন্তর্গত নাগপুরে-- তার কোনো প্রামাণ্য ইতিহাস কিন্তু আরএসএস আজ পর্যন্ত উপস্থাপিত করতে পারেনি। এই অভিবাসন কি রাজনৈতিক কারণে ঘটেছিল ?নাকি সামাজিক কারণে? কিংবা অর্থনৈতিক কারণে?--তা সঠিকভাবে জানা যায় না।  

                 অথচ ,এই অভিবাসনকে আরএসএস তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে, তাদের সংগঠনের উচ্চবর্গীয় ,উচ্চবর্ণীয়, ব্রাহ্মণ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে, প্রাচীন ভারতীয় ভাবধারার সমার্থক ,সদর্থক হিসেবে দেখাবার লক্ষ্যে সব সময় ব্যবহার করে থাকে ।কিন্তু প্রশ্ন হল চিতৎপাবন ব্রাহ্মণেরা  আজও গোটা অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা তে সামাজিকভাবে অত্যন্ত উচ্চ অবস্থানে বিরাজ করেন ।সামাজিক বিধি-বিধান নির্মাণের ক্ষেত্রে এই চিৎপাবন  ব্রাহ্মণদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে ।সমাজের বুকে ব্রাহ্মণ্যবাদী চিন্তা-চেতনাকে অবলম্বন করে ,প্রতিক্রিয়াশীলতার বিকাশ- প্রসার- প্রয়োগের ক্ষেত্রে  এই  চিৎপাবন ব্রাহ্মণরা সপ্তদশ, অষ্টাদশ শতক , উনবিংশ শতকে যেমন সক্রিয় ছিল,  বিশ  শতকের শেষ পর্বেও ঠিক তেমনভাবেই সক্রিয় ছিল। এমনকি একুশ শতকেও তাদের সেই সক্রিয়তা একেবারে অবলুপ্ত হয়ে গেছে -এ কথা জোর দিয়ে বলতে পারা যায় না।

                চিৎপাবন ব্রাহ্মণদের এহেন সামাজিক অবস্থান সত্ত্বেও, সেই সামাজিক অবস্থানে থাকা হেডগেওয়ারের  পরিবারকে কে কেন নিজাম শাসনাধীন, অর্থাৎ ;মুসলমান শাসনাধীন, তেলেঙ্গানার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উচ্ছেদ হতে হল- তা এক রহস্য।প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা, বৈদিক সভ্যতার ধ্যান ধারণা কে  যে ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির ধ্যানধারণার সমার্থক হিশেবে দেখাবার কথা আরএসএস বলছে, সেই সংস্কৃতি চর্চার অভাব জনিত কারণেই তাদেরকে চলে আসতে হয়েছিল নাগপুরে-- এর কোনোইতিহাস সম্মত প্রমাণ আমাদের হাতে নেই।

                  অথচ, এই বিষয়টিকেই আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ারের   জীবন চর্চার অন্যতম মূলধন হিসেবে দেখিয়ে ,সঙ্ঘীয়  ভাবধারায় প্রাচীন বৈদিক সভ্যতার সাথে ,ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতিকে একাত্ম করে দেখানো, যেটা আরএসএসের রাজনৈতিক অভিসন্ধি আর  এক এবং একমাত্র লক্ষ্য --সেটাকেই তারা দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে করে এসেছে।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন