ওয়েবডেস্ক প্রতিবেদন
রাজ্য চালাচ্ছে চোর-লুটেরাদের সরকার। চাকরি পেতে, ন্যায্য সরকারী প্রাপ্য আদায় করতে এমনকি বন্যার মতো দুর্যোগের পরিস্থিতিতে পীড়িতদের প্রয়োজনীয় ত্রানসামগ্রীও লুট করছে সরকারের মদতপুষ্ট বাহিনী। স্কুল-কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ যাবতীয় শুন্যপদ বছরের বছর নিয়োগ নেই, সরকারী কর্মচারীদের প্রাপ্য ভাতা বকেয়া পড়ে রয়েছে অথচ রাজ্য সরকার ক্লাবের পূজোয় জনগণের টাকায় নির্মিত তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ ঘোষণা করছে। এই সমস্ত অহেতুক খরচকে আইনি বৈধতা পাইয়ে দিতে আদালতে মামলাও লড়ছে সরকার, সেও জনগণের টাকা খরচ করেই।
রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে একের পর এক নেতা, প্রভাবশালীদের হেফাজতে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। সবই কালো টাকা, অথচ কলকাতার মেয়র টিভির পর্দায় ঘোষণা করছেন অবৈধ সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য রাজ্যে বিনিয়োগের পরিস্থিতি নষ্ট হতে পারে। সামনে বসে থাকা সাংবাদিকদের কেউই তাকে প্রশ্ন করছে না তার মানে কি এই রাজ্যে ব্যবসা করতে কালো টাকা ছাড়া গতি নেই?
কেন্দ্রীয় সমীক্ষায় প্রকাশিত তথ্য মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় সারা দেশে পশ্চিমবঙ্গ এক নম্বরে রয়েছে। এক পয়সা কার্যকরী বিনিয়োগ নেই, নতুন কলকারখানা নেই, শিল্প নেই- আবার চাষের কাজেও সরকারী উদ্যোগে লাভজনক দাম পেতে উপযুক্ত বন্দোবস্ত বলতে কিছুই নেই। মূল্যবৃদ্ধি একা আসে না, হাত ধরে টেনে আনে বেকারির অভিশাপকেও। অথচ সরকারী অনুষ্ঠানে অস্থায়ী চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিচ্ছেন ‘শিল্প হয়েছে, কেউ জানতে পারেনি’!
রাজ্যের মানুষ আহ্বান জানিয়েছেন ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’। কলকাতার রাজপথের সাথেই প্রত্যেক জেলায় সেই স্লোগান শুনে জনসাধারণ মিছিলে সামিল হচ্ছেন। লুটেরা সরকার উৎখাত না করে মুক্তি নেই এই কথা স্পষ্ট।
বামপন্থীরা এই লড়াইতে মানুষের সাথে ছিল, আছে, থাকবে। আক্রমন হলে মিছিলের সামনে থাকবে, জনসমাবেশ থেকে আদালতের লড়াই সর্বত্রই আমরা ছিলাম, আছি, থাকবো।
৩১শে আগস্ট বর্ধমান সদরে শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ প্ররোচনা দেয়, হামলা করে। প্রতিরোধ হলে বেগতিক বুঝে লাঠি চার্জ করা হয়, পার্টির নেতা, কর্মী সহ অনেকেই আহত হন। একাধিক কর্মী, সমর্থক সহ গ্রেপ্তার করা হয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায় চৌধুরীকেও। প্রথম দফায় কিছুজন মুক্তি পান গত সপ্তাহের শেষের দিকেই, গতকাল সন্ধ্যায় বাকি সবার জামিন মঞ্জুর করেছে দায়রা আদালত।
১৪ দিনের জেল হেফাজত কাটিয়ে মুক্ত হয়েছেন যারা –
ক্রম | নাম |
১ | আভাস রায় চৌধুরী |
২ | অনির্বাণ রায় চৌধুরী |
৩ | সৌরভ সরকার |
৪ | সঞ্জয় মৃধা |
৫ | সমরেন্দ্র নাথ মল্লিক |
৬ | সুনীল মণ্ডল |
৭ | শেখ ফিরোজ |
৮ | আনারুল সেখ |
৯ | পরেশ মাজি |
১০ | সোমলাল সোরেন |
১১ | সুজিত হেমব্রম |
১২ | শুকদেব বাগদি |
১৩ | আশুতোষ বাগ |
১৪ | বকতিয়ার চৌধুরী |
১৫ | দিলীপ হাজরা |
১৬ | কার্তিক কাওয়ারা |
১৭ | মধুসুদন মাঝি |
১৮ | সুকুমার ঘড়ুই |
১৯ | আশাই মির্জা |
২০ | তারকনাথ চ্যাটার্জী |
২১ | চন্দু বাগদী |
২২ | হরিপদ বাগদী |
২৩ | মহসিন সেখ |
২৪ | নারায়ণ দাস |
২৫ | মইনুদ্দিন সেখ |
২৬ | শুকুর সেখ |
২৭ | মোজাফফর সেখ |
২৮ | মিহির রাজবংশী |
২৯ | সাহাবুল ইসলাম |
৩০ | বিনকাশেম সেখ |
৩১ | রামলাল টুডু |
কমরেড আভাস রায়চৌধুরী আজ সকালে পার্টির রাজ্য দপ্তরে সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় উপস্থিত হলে রাজ্য সম্পাদক মঃ সেলিম ও পার্টির অন্যান্য নেতৃত্বরা তাকে লাল সেলাম সহ অভিনন্দন জানান।
এমন গ্রেপ্তারীর উদ্দেশ্য যে আসলে ‘ভয় চেপে রেখে ভয় দেখানোর কৌশল’ এসব বামপন্থীরা পার্টিতে যুক্ত হওয়ার সময় বুনিয়াদি পাঠ্যক্রমে শিখে আসেন। তাই আমাদের স্পষ্ট ঘোষণা আগেও যা ছিল এখনও তাই থাকছে। মানুষের স্বার্থে ন্যায্য অধিকারের লড়াইতে একচুল জায়গা ছাড়া হবে না, বাকি রইল আমাদের উপরে হামলা, আক্রমন ও হুমকি সহ যা কিছু- হম দেখেঙ্গে।
ওয়েবডেস্কের পক্ষে- সৌভিক ঘোষ