আজ ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে ওঠার একশো বছর। ১৯২০ সালে আজকের তারিখে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্গত তাসখন্দ - এ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা হয়।
ভারতের বুকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অবসানে কমিউনিস্ট আন্দোলনের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে - এদেশের স্বাধীনতার লড়াইতে পূর্ণ স্বাধীনতার প্রথম দাবি তোলে কমিউনিস্টরাই।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অধীনে পরাধীন অবস্থায় এবং তারপরে স্বাধীন ভারতে কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে বহু লড়াই সংগ্রাম হয়েছে। দেশে শ্রমিক কৃষক দের সংগ্রাম, সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কমিউনিস্টরা নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করেছে। এই ধারা বেয়েই ১৯২০ সালে এ আই টি ইউ সি, ১৯৩৫ সালে সারা ভারত কৃষক সভা এবং ১৯৩৬ সালে এ আই এস এফ গঠিত হয়, এরপরে ১৯৪৩ সালে সাংস্কৃতিক সংগঠন আইপিটিএ গড়ে ওঠে।
১৯৪৬ সালে তেভাগার আন্দোলন এবং তারও আগে গ্রেট ফ্যামিন রোখার বিরুদ্ধে আন্দোলন চলে যে দুর্ভিক্ষে - অনাহার ক্লিষ্ট অবস্থায় ৩০ লক্ষ মানুষের জীবনহানি হয়। এই সময়ে কমিউনিস্টরা লঙ্গরখানা খোলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করেন - সেই সময়ে জন স্বাস্থ্য আন্দোলনের ফলশ্রুতিতেই গড়ে ওঠে পিপলস্ রিলিফ কমিটি বা পি আর সি। বিভিন্ন পর্বে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে - এগুলির মধ্যে মাইলস্টোন বলা যায় ১৯৫৩ সালের ট্রাম ভাড়া বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন। অনেকেই মনে করেন এক পয়সা ভাড়া বৃদ্ধির বিরুদ্ধে এত ব্যাপক আন্দোলনের কি প্রয়োজন ছিল, তারা ভুলে যান স্বাধীনতার পরেও ট্রাম ওয়েজ কোম্পানি ছিল ব্রিটিশ মালিকানাধীন। সেই সময়ে কোম্পানির কোনো লোকসান ছিল না, বরং লাভজনক ই ছিল। তা সত্ত্বেও শুধু মুনাফার স্বার্থে তারা ভাড়া বৃদ্ধি করেছিল, ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়েছিল সরকারের সাথে আলোচনা করেই ডক্টর বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মদিনে ১লা জুলাই - তাদের এই মনোভাব জনগণের মেনে নেয় নি, আন্দোলনের চেহারা সেই কারণেই এত ব্যাপক আকার ধারণ করে।
এই আন্দোলন সংগ্রামের পথ বেয়েই অতীতের ত্রিবাংকুর - কোচিন যা পরে কেরালা হয় সেখানে লাল পতাকা উড্ডীন হয়েছে। ই এম এস নাম্বুদিরিপাদের নেতৃত্বে ভারতের প্রথম কমিউনিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় কেরালায়। সেই সরকারকে উৎখাত করতে শুরু থেকেই দেশীয় এবং বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির প্রভাবে চক্রান্ত শুরু হয়। ১৯৫৭ সালের সময়টাকে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বুঝতে হবে আজকের প্রজন্মকে। তখন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সামরিক উত্থান চলছে, শ্রীলঙ্কায় – বার্মাতে, পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারকে হঠিয়ে দিয়ে সামরিক শাসন জারি করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় কেরালায় কমিউনিস্টদের পরিচালনায় সরকারকে দেশের শাসক এবং শোষক গোষ্ঠী যেমন মেনে নিতে পারেনি, তেমনই দেশী বিদেশী প্রতিক্রিয়ার শক্তিও এর বিরুদ্ধে চক্রান্তের জাল বিস্তার করেছিল। ন্যায্য কাজকর্মের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য তৈরি করেছিল। এর পরেও যখন গণতান্ত্রিক পথে কেরালায় কমিউনিস্টদের সরকার ফেলা গেল না তখন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে চরম অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে কেরালার সরকারকে উচ্ছেদ করা হল। এই ভাবে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারের উপরে ৩৫৬ ধারার অপপ্রয়োগের দ্বারা শাসক গোষ্ঠী এবং শাসকদলের মনোভাব স্পষ্ট হয়ে যায়। এই অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমাদের রাজ্য সহ সারা দেশে সাধারণ মানুষ, বাম কর্মী সমর্থকেরা মিছিল করেন। কেরালায় ই এম এস নাম্বুদিরিপাদের সরকার প্রথমেই জমির পুনর্বিন্যাসে (Land Reforms) যে কাজ করে তা সারা দেশে কোন সরকার (কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য) করেনি – জমিদারদের স্বার্থের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবার সাহসও দেখায় নি, এছাড়াও কেরালায় কমিউনিস্ট সরকার জনস্বার্থবাহী একের পর এক সিদ্ধান্ত নেয় যা নতুন নতুন সাফল্যের নজীর তৈরি করেছিল, এইসব দেশের শাসকশ্রেণীর মনে ভীতি তৈরি করে। তাই এই সরকারকে উচ্ছেদ করতে তারা যে কোন উপায়ে স্বার্থসিদ্ধির রাস্তা বেছে নিয়েছিল। এতে সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল শাসকেরা মানুষের স্বার্থে কমিউনিস্টদের সৃষ্টিশীল কাজকে দমিয়ে রাখতে, ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর। তখন আমাদের দেশের পুঁজিপতিরা নিজেদের মুনাফা লোটার জন্য নতুন নতুন স্বপ্ন দেখছিল, সেই অবস্থায় একটি রাজ্যে কমিউনিস্টদের সরকার বিকল্প ব্যাবস্থার মধ্যে দিয়ে জনস্বার্থবাহী কর্মসূচি সফল করে তুললে তাদের মুনাফা লাভের স্বপ্নে বাধা তৈরি হতে পারে – এই শ্রেণীস্বার্থগত অবস্থান থেকেই কেরালার কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়।
কেরালায় ই এম এস নাম্বুদিরিপাদ সরকারের পতন হয় ১৯৫৯ সালে, এর আট বছর বাদে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম অকংগ্রেসি যুক্তফ্রন্ট সরকার গড়ে ওঠে। যদিও ৬৫ সালে কেরালায় মধ্যবর্তী নির্বাচনে বহু প্রার্থিই জেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন এবং পুনরায় ই এম এস নাম্বুদিরপাদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপরে ১৯৭৭ সালে কেন্দ্রে যখন জনতা পার্টির সরকার পশ্চিমবঙ্গে তারা কমিউনিস্টদের সাথে জোট বাঁধার সময়ে উৎকট ক্ষমতার আস্ফালন দেখায়, শেষ অবধি সেই জোট করা যায়নি। কমরেড প্রমোদ দাশগুপ্ত আহ্বান রেখেছিলেন ঐক্য বিরোধী জনতা পার্টিকে পরাস্থ কর এবং স্বৈরাচারী কংগ্রেসকে পরাস্থ কর (মনে রাখতে হবে এর দুবছর আগেই ইন্দিরা গান্ধীর সরকার ১৯৭৫ সালে সারা দেশে জরুরী অবস্থা জারী করে)। মানুষ এই আহ্বানে অভূতপূর্বরুপে সাড়া দেন – বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে প্রথম বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
বামফ্রন্ট সরকার প্রথম থেকেই জনসার্থবাহী কর্মসূচি রুপায়িত করতে শুরু করে, অপারেশন বর্গা এবং জমির পাট্টা বিলি করা হয়, কৃষিক্ষেত্রে আমাদের রাজ্য অনেকটাই মজবুত ভিতের উপর উঠে আসে – এই সাফল্যের ফলেই পশ্চিমবঙ্গে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় অনেকটা, তাই স্বাভাবিক কারনেই বাইরে থেকে পণ্য কিনে এনে বিক্রি করার বদলে এই রাজ্যেই শিল্পস্থাপনের স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। এটা ছিল ন্যায্য - স্বাভাবিক দাবী। পণ্যের বাজার যখন রয়েছে তখন বাইরে থেকে পণ্য এনে বিক্রির বদলে যদি আমাদের রাজ্যেই শিল্পস্থাপন হয় তবে পণ্যের সুলভ দাম, বাজারের বিস্তার ছাড়াও রাজ্যের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় যে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি হত তা হল প্রচুর কর্মসংস্থান। গত পরশু রিজার্ভ ব্যাংকের প্রতিবেদনেও সেই কথাই স্পস্ট হয়েছে – ২০০৮-০৯ নাগাদ কর্মসংস্থানের চিত্র ছিল প্রতি হাজারে ৩৫ আর ২০১৮-১৯ সালে সেই চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি হাজারে মাত্র ১৬। অর্থাৎ সারা দেশে বেকারত্বের সমস্যাই সবচেয়ে বড়, সারা পৃথিবীতে এই নিরিখে আমাদের দেশের অবস্থা সবচেয়ে করুণ।
এই প্রসঙ্গে দিল্লিতে দুটি কেন্দ্রীয় সরকারের কথাও উল্লেখ করার প্রয়োজন। প্রথমটি ভি পি সিংহের সরকার। সেই সরকারে কমিউনিস্টরা অংশগ্রহন না করলেও তার সাথে কিছুটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ভি পি সিং’র সরকার গরীব মানুষের স্বার্থে কিছু কর্মসূচির কথা নিজেদের কাজ হিসাবে রেখেছিল। গরীব আদিবাসি এবং বিশেষ করে তফসিলদের মধ্যে বিভাজনের উদ্দেশ্যে বিহারে কর্পুরি ঠাকুরের আমলে যেভাবে অ্যানেক্সচার ১ এবং অ্যানেক্সচার ২’র ব্যাবস্থা করা হয়েছিল তার বদল ঘটিয়ে দিল্লিতে ভি পি সিং’র আমলে সিদ্ধান্ত হয় ক্রিমি লেয়ার বাদ দিয়ে বাকি সবাইকেই তফসিলভুক্ত হবার সুবিধা দেওয়া হবে। সরকারে না থাকলেও ‘জাতের নামে বজ্জাতি’ করে গরীব মানুষের মধ্যে বিভাজন রুখে দিতে এই কাজকে কমিউনিস্টরা সমর্থন করেছিল। আমার মনে পড়ছে সেই সময় একটি কাজে দিল্লিতে রয়েছি, কিছুজন রাস্তায় মিছিল বের করে স্লোগান দিচ্ছে ‘ভি পি সিংহ, হায়! হায়!’ কেন? মন্ডল কমিশনের সুপারিশকে মেনে নিয়ে কর্পুরি ঠাকুরের বিভাজনের নিতিকে নাকচ করে দেওয়া হবে এই তাদের উস্মার কারন। অথচ এই তফসিলি, আদিবাসী মানুষদের সংখ্যা দেশে কম নয় – আমাদের রাজ্যেই প্রায় ৩৬% তফসিলি মানুষজন এবং ৬% আদিবাসী মানুষের বাস রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন রথ চালনার রশি সবাইকার হাতে টান না পেলে রথ এগোবে না, আমাদের সেকথা মনে রাখতেই হয়। স্বামী বিবেকানন্দের কথা কেউ কেউ প্রায়ই উচ্চারণ করেন – তারা হয়ত তার শিক্ষার কথা ভুলে যান বা ইচ্ছাকৃত ভুলে থাকতে চান - তিনি বলে গেছেন মুচি মেথরদের দিকে তাকিয়ে থাকার কথা। যুগ যুগ ধরে সামাজিক অবিচার, অত্যাচার, বঞ্চনার শিকার হয়ে যারা মূলধারার তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে তাদেরকে পুনরায় মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার কাজে সুবিধাভোগী শ্রেণীভুক্ত কিছু মানুষের বরাবরই প্রবল আপত্তি – এদের পরাস্থ করেই কমিউনিস্টদের এগোতে হয়েছে, পরেও হবে। ২০০৪ সাল নাগাদ দিল্লিতে যে ইউপিএ সরকার গঠন হয় কমিউমিস্টরা বাইরে থেকে তাকে সমর্থন দিয়েছিল। এই সরকারের আমলেই আজকের এমএনআরইজিএ বা এমএনরেগা প্রকল্পের সূচনা হয় যা গ্রামের গরীব মানুষদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছিল। আমাদের কিছু কথা এই সরকার একবারেই মেনে নিতে পারে নি, কিন্তু কিছু কথা মেনেও নেয়। এমএনরেগা সেইরকমই একটি সাফল্য – এই কৃতিত্ব কমিউনিস্টদেরই। বর্তমান পরিস্থিতে গ্রামের মানুষদের কাজের সমস্যা মেটাতে সেই প্রকল্পের পরিসর আরও বাড়ানোর দাবীও আমরাই করছি।
সরকার পরিচালনাই হোক কিংবা সরকারের কাজের ক্ষেত্রে সমর্থন জানানোই হোক কমিউনিস্টদের এই নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতেই কাজ করতে হয়। এই কারনেই কেরালায় কিংবা ত্রিপুরায় কমিউনিস্ট সরকারের বিভিন্ন জনস্বার্থবাহী কাজ দেশের মুনাফাখোর, শঠগোষ্ঠীরা সহ্য করতে পারে নি। ত্রিপুরায় কর্মসংস্থানের প্রশ্নে কিংবা অতীতের চাষআবাদের পদ্ধতি পাল্টে আধুনিক পদ্ধতি প্রবর্তনের কাজে কমিউনিস্ট সরকার যথেষ্ট সফল ছিল।
কমিউনিস্টদের কেউ অপছন্দ করতেই পারে – কিন্তু তাদের সেই অপছন্দে ভীত হয়ে মানবতাবাদ, দেশপ্রেম কিংবা জনগণের উন্নতি সাধনেই দেশের উন্নতি সম্ভব এই সংকল্প থেকে কমিউনিস্টরা সরে আসে না।
একথা ঠিক পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু তার মানে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের সাফল্যগুলিকে তুচ্ছ করা যায় না – আজ সোভিয়েত ইউনিয়ন নেই, তার মানে কি এই যে ১৯১৭ সালে বলশেভিক বিপ্লব, লেনিনের বিপ্লবী শিক্ষা, আদর্শ এবং সমাজতন্ত্রের সাফল্যগুলি ভুল ছিল? একেবারেই নয়! এই দৃষ্টিভঙ্গিতেই কমিউনিস্টরা বিচার করে, করতে হয়। সঠিক মতাদর্শগত অবস্থান বজায় রেখে নতুন পরিবেশ-পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নতুন নতুন কর্মসূচির উপরে ভিত্তই করে পথ চলতে হয় - সাফল্য অর্জন করার লক্ষ্যে দৃঢ় থাকতে হয়। একশো বছরের কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসে দক্ষিনপন্থী – সংশোধনবাদী এবং বামপন্থী – সংকির্নতাবাদী এই দুই প্রকারের বিচ্যুতিই দেখা দিয়েছে, তবুও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) কমিউনিস্ট মতাদর্শগত অবস্থান সঠিক রেখে মার্কসবাদ – লেনিনবাদের যথার্থতা অনুযায়ী পথ চলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। একশো বছরের ইতিহাসে সাফল্য এবং ব্যার্থতা দুইই রয়েছে – ব্যার্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, কিন্তু সাফল্যকে সফলতা হিসাবেই চিহ্নিত করতে হয় এবং ভুলত্রুটি সংশোধন করে আরও বড় সাফল্য অর্জনের পথে চলতে হয়। বামফ্রন্ট সরকার বহু সাফল্যের সাথে পরিচালিত হয়েছে, সেই কাজে কি ত্রুটি কিছুই নেই? তা নয়, অজানা পথে চলতে গেলে ত্রুটি থাকবেই – কিন্তু সাফল্যটাই বড় কথা। এই হিসাব করেই আমাদের – কমিউনিস্টদের আগামিদিনের পথ চলতে হবে। একশো বছরের লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস থেকে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করে ভারতে শোষণভিত্তিক সমাজব্যাবস্থার অবসান ঘটিয়ে শোষণহীন সমাজব্যাবস্থা গড়ে তুলতে আমাদের লড়াই সংগ্রামে নিবিড়ভাবে যুক্ত থাকতে হবে। জনগণের বন্ধু হয়ে তাদের সাথে থেকে তাদের সমস্যা সমধানের লক্ষ্যে পথ চলাই আমাদের কাজ – আমাদের এই বিশ্বাস আরও নেশি দৃঢ় করতে হবে একদিন আমাদের দেশ - ভারতও শোষণহীন সমাজব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে সফল হবে।