রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র পলিট ব্যুরো নিম্নলিখিত বিবৃতি জারী করেছেঃ
২০০২ সাল থেকে গুজরাট গণহত্যার প্রসঙ্গে ন্যায়বিচারের দাবীতে নিরলস সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া তিস্তা শীতলবাদ’কে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে পলিট ব্যুরো। তার গ্রেপ্তারী কার্যত সবাইকে হুমকি দেওয়া যারা কোন সরকার কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অপদার্থতায় ঘটা সাম্প্রদায়িক হিংসার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। দেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকারের উপরে এ এক ঘৃণ্য আক্রমন।
সংশ্লিষ্ট ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ যে অদ্ভুত রায় দিয়েছে তার প্রভাবেই গুজরাট প্রশাসন এই গ্রেপ্তারী চালিয়েছে। সেই রায়ে আদালতে আবেদনকারীদেরই অপরাধী সাব্যস্ত করে বলা হয়েছে ‘বিচারব্যবস্থার অসাধু ব্যবহারকারী প্রত্যেককেই কাঠগড়ায় তুলতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গৃহীত হবে’।
এহেন রায়ের অর্থ হবে কেউই কোর্ট নির্ধারিত ‘সিট’-র কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন না যেমন এই ঘটনায় জাকিয়া জাফরি ও তিস্তা শীতলবাদ করেছিলেন। আইনী প্রক্রিয়ার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে এদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দীর্ঘ ষোল বছর ব্যাপী এদের লড়াইকে তাচ্ছিল্যের সাথে ‘মনগড়া ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রান্না চাপানো’ বলে দাগিয়ে করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গেই মনে রাখতে হবে সিট’র তদন্তের সাথে কোর্টের নির্দেশেই অ্যামিউকাস কিউরি’ও যুক্ত করা হয়। সিট’র একাধিক সুপারিশকে মান্যতা দেওয়ার সাথে এই কোথাও বলা হয়েছিল যে এই ঘটনায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘৃণাপ্রচারের বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখতে ভারতীয় দণ্ডবিধির (ইন্ডিয়ান পিনাল কোড) সংশ্লিষ্ট ধারাগুলিকেও যুক্ত করতে হবে। ২০০৪ সালে সুপ্রিম কোর্টই গুজরাটের ঘটনায় রাজ্য সরকারের মাথাদের ‘আজকের নীরো’ বলে চিহ্নিত করেছিল। সাম্প্রতিক রায়ে অতীত দিনের পর্যবেক্ষণের লেশমাত্র নেই। এই রায়ে তিস্তা শীতলবাদের মতো যারা দেশের বিচারব্যবস্থার উপরে আস্থাশীল তাদেরকেই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সংশয়হীন হয়েই বলা চলে এই মামলা কিউরেটিভ পিটিশনের জন্য উপযুক্ত।
অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার করে তিস্তা শীতলবাদ, শ্রীকুমার সহ অন্যান্যদের মুক্তির দাবী জানাচ্ছে পলিট ব্যুরো।