কোন যুক্তিতে মমতাকে বিজেপি বিরোধী বলা যায়?
গৌতম রায়
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার আসন্ন নির্বাচনী সংগ্রামে কে সব থেকে বড় শত্রু , এ নিয়ে একটা বিতর্কের পরিবেশ একাংশের মানুষ তৈরি করেছেন।বিজেপি কে তাঁরা প্রধান শত্রু হিশেবে নির্ধারণ করে , যাবতীয় অবিজেপি দলগুলিকে বিজেপিকে রোখার প্রশ্নে একজোট হওয়ার পক্ষে তাঁরা জোরদার সাওয়াল করছেন।এই প্রশ্নে তাঁরা রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস কে ই মনে করছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বার সবথেকে বড়ো শক্তি। সংবাদমাধ্যম যেভাবে গত লোকসভা ভোটের পর থেকে আসন সংখ্যার নিরিখে বামপন্থীদের নিঃশেষিত শক্তি হিশেবে তুলে ধরতে চাইছে, সেই প্রচারের প্রতি আস্থা রেখেই এই অংশের বেশ কিছু মানুষ, তাঁদের ভিতর রাজনীতিকেরা আছেন, সমাজকর্মী আছেন, শিল্পী,সাহিত্যিক থেকে সাধারণ কলেজ পড়ুয়াও আছেন, তাঁরা এটাই বলতে চাইছেন যে, বাম- কংগ্রেসের একত্রিত শক্তি পারবে না বিজেপি কে রুখতে।সেটা পারে একমাত্র বাম- কংগ্রেস এবং তৃণমূলের ভিতরে নির্বাচনী সমঝোতা হলে।এই অংশের মানুষদের কাছে এই রাজ্যে গত শতকের নয়ের দশক থেকে বিজেপিকে পায়ের নীচে জমি করে দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসের যে ভূমিকা সেটি আদৌ বিবেচ্য নয়। গত দশ বছর ধরে তৃণমূল এই রাজ্যে শাসকের ভূমিকা তে থেকে যে সীমাহীন দুর্নীতি করেছে, সেটাও তাঁদের কাছে প্রধান বিচার্য বিষয় হিশেবে উঠে আসছে না।
বিজেপি যে প্রধান শত্রু , এই বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।বিজেপিকে বিচার করতে গেলে সবার আগে বিচার করতে হবে তাদের মূল পরিচালক আর এস এস কে।ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্ট মানসিকতা প্রসূত এই সংগঠনটি নিজেকে সামাজিক , সাংস্কৃতিক সংগঠন হিশেবে মেলে ধরলেও এদের সুপ্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি হল, সাম্প্রদায়িকতা।এই লক্ষ্যেই ১৯২৫ সালের জন্ম মুহূর্ত থেকে আর এস এস নিজেদের যাবতীয় শাখা সংগঠন কে পরিচালিত করেছে। সেই লক্ষ্যেই বিজেপিকেও তারা পরিচালিত করে।পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা ভোট কে কেন্দ্র করে সেই সাম্প্রদায়িকতার তাস গোটা হিন্দুত্ববাদী শিবির একটা নোতুন উদ্যমে খেলতে শুরু করেছে। তাই এই প্রেক্ষিতে বিজেপিকে ঠেকানোর প্রশ্নটার জরুরি ভিত্তি নিয়ে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না।কিন্তু বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলের সঙ্গে নির্বাচনী সংগ্রামে আপোষ করে লড়াই,যেটাকে ওঁরা বলছেন, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা- এই যুক্তির বাস্তবতা এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষিত কতোখানি?
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু সাম্প্রদায়িক রাজনীতি সামাজিক ক্ষেত্রে আর এগোতে পারে নি।ফলে সংসদীয় রাজনীতিতেও এই রাজ্যে তারা আর এঁটে উঠতে পারে নি।হিন্দু স্বার্থে দেশভাগে যিনি শ্যামাপ্রসাদের সবথেকে বড়ো সহযোগী ছিলেন, সেই নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আর হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে জড়িত রাখলে সুনিশ্চিত থাকবে না বুঝেই, হিন্দুত্ববাদী শিবির ত্যাগ করেছিলেন।
সাতের দশকে এই রাজ্যের বুকে জরুরি অবস্থা বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থীরা সর্বাংশে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির জোরে লড়েছিলেন।জয়প্রকাশ নারায়ণের সঙ্গে যাঁরা লড়েছিলেন, তাঁদের ভিতরে আর এস এসের একদম ঘরের লোক হরিপদ ভারতীর মতো লোকেদের অবস্থানের জেরে, প্রয়োজনীয় সতর্কতা জ্যোতি বসু, প্রমোদ দাশগুপ্তেরা অবলম্বন করেছিলেন। ‘৭৭ সালে বামফ্রন্টের সঙ্গে জনতা পার্টির নির্বাচনী সমঝোতা না হওয়ার ক্ষেত্রে হরিপদ ভারতীর মতো সঙ্ঘ কর্মীদের দ্বারা প্রফুল্লচন্দ্র সেনের প্রভাবিত হওয়ার বিষয়টি খুব বড়ো ভূমিকা পালন করেছিল।প্রথম বামফ্রন্টের আমলে, মরিচঝাঁপি ঘিরে বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা করতে বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে এই হরিপদ ভারতীর নেতৃত্বে আর এস এস অত্যন্ত সক্রিয় ছিল।তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইকে দিয়ে বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে মরিচঝাঁপি ঘিরে কুৎসা করার বহু চেষ্টা করেও আর এস এস ব্যর্থ হয়।
তাই আর এস এস বা তার রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি কতোখানি দেশের পক্ষে, মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর , তা বামপন্থীদের নোতুন করে বোঝাবার কিছু নেই।বামফ্রন্টের ৩৪ বছরের শাসন কালে এই রাজ্যে আর এস এসের সাংগঠনিক প্রসার কিন্তু অত্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল।২০১১ তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যে ক্ষমতাসীন হওয়ার অব্যবহিত পরেই কিন্তু নদিয়া- উত্তর চব্বিশ পরগণার মধ্যবর্তী গয়েশপুরে আর এস এস একটা বিশাল সাংগঠনিক সভা করে।মমতার উগ্র সমর্থক খবরের কাগজগুলো পর্যন্ত আর এস এসের গয়েশপুরের সেই সাংগঠনিক সভা সম্পর্কে লিখেছিল, গত পঁচিশ বছরে এই ধরণের সভা করবার সাহস পশ্চিমবঙ্গের বুকে সঙ্ঘের হয় নি।যাঁরা আজ মমতার সঙ্গে সমঝোতা করে বিজেপিকে আটকানোর কথা বলছেন, তাঁদের কাছে বিনীত প্রশ্ন, মমতা ক্ষমতায় আসা মাত্র ই সাংগঠনিক প্রসারের এই সাহস এবং সুযোগ পশ্চিমবঙ্গে আর এস এস কি করে পেল?
যে মমতা ই পারবেন আসন্ন বিধানসভার ভোটে বিজেপিকে রুখতে বলে একাংশের সঙ্কীর্ণতাবাদী রাজনীতিক এবং নিজেদের লিবারেল বলে দাবি করা লোকজনেরা বলছেন, তাঁদের সেই মমতাই আর এস এসের মুখপত্র ‘ পাঞ্চজন্যে’ র সম্পাদক তরুণ বিজয়ের লেখা ‘কমিউনিস্ট সন্ত্রাস’বইটির উদ্বোধনে মোহন ভাগবত, মদধদাস দেবী, এইচ ভি শেষাদ্রির মতো শীর্ষস্তরের আর এস এস নেতার উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে সঙ্ঘের উদ্দেশে বলেছিলেন; আপনারা যদি আমাকে মাত্র এক শতাংশ মদত দেন, আমি লাল সন্ত্রাস খতম ঈরে দেব( দি টেলিগ্রাফ, ১৫\০৯\২০০৩) ।সেই অনুষ্ঠানে আর এস এস ঘনিষ্ঠ , বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলের আহ্বায়ক, তথা উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপির টিকিটে দু বার রাজ্যসভায় যাওয়া বলবীর পুঞ্জ( এর পেশা ছিল সাংবাদিকতা,সংবাদমাধ্যম কে তাঁবেদার তৈরিতে ইনি বিজেপিকে বিশেষ রকমের সাহায্য করেছিলেন) সেই অনুষ্ঠানে বলেছিলেন; আমাদের প্রিয় মমতাজী হলেন সাক্ষাৎ দুর্গা।এহেন মমতা বিজেপির মোকাবিলায় একমাত্র অবলম্বন, পাঠক, বিশ্বাস করতে পারেন?
বিগত বিধানসভা নির্বাচনের(২০১৬) কিছুদিন পর বিজেপি নেত্রী তথা আর এস এস ঘনিষ্ঠ কুমারী উমা ভারতী প্রকাশ্যে বলেছিলেন, সেই নির্বাচনে আর এস এসের সাহায্য ছাড়া মমতার দলের রাজ্যে ক্ষমতা দখল সম্ভবপর ছিল না।২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের বছরে এই রাজ্যে আর এস এসের শাখা ছিল ১১০০ টি।পরের এক বছরে সঙ্ঘের ১৩৫০ টি শাখা বৃদ্ধি পায় আমাদের রাজ্যে( টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ২৬\০৩\২০১৮) ।এই সময়ে কেবল দক্ষিণবঙ্গের ৬৫০ টি জায়গাতে আর এস এসের ৯১০ টি শাখা ছিল।উত্তরবঙ্গের ৩৭৩ টি স্থানে ছিল ৪৫২ টি শাখা।কেবলমাত্র উত্তরবঙ্গেই এই সময়ে আর এস এসের সাপ্তাহিক সংযোগরক্ষাকারী সভা হতো ১০২৯ টি।মাসিক সভা হতো ২২৬ টি( ঐ) ।গত দুই বছরে, বিশেষ করে ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের পর এই সংখ্যা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে, তা সহজেই অনুমেয়।এরপর ও কি এই যুক্তি খাটে , মমতাই একমাত্র পারবেন এই রাজ্যে বিজেপিকে ঠেকাতে?
মমতা ২০১১ তে এই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেই সংখ্যালঘু উন্নয়নের নামে ওয়াকফের টাকা দিয়ে একাংশের ইমাম, মোয়াজ্জিনদের সামান্য কিছু ভাতা দিতে শুরু করেন।মমতার এই কর্মীকান্ড আর এস এস – বিজেপিকে বিশেষ ভাবে এই রাজ্যে রাজনৈতিক হিন্দু মানসিকতাকে সংহত করবার কাজে কি সাহায্য করে নি? মমতা বামফ্রন্টের আমলে স্বামী পরিত্যক্তা মুসলমান মেয়েদের আর্থিক পুনর্বাসনের জন্যে রেখে যাওয়া আর্থিক সংস্থান টিকে বন্ধ করে দেন।মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে মাদ্রাসায় নিয়োগ বন্ধ করে দেন।মুসলমান সমাজের আর্থ- সামাজিক- সাংস্কৃতিক কোনো উন্নতির কথা না ভেবে একটা ছোট অংশের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সামান্য কিছু টাকা পাইয়ে দিয়ে ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের ভিতর , একটা না পাওয়ার হতাশা তৈরি করে , তাঁদের সাম্প্রদায়িক করে তুলে,মোদি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার আগেই এই রাজ্যে সামাজিক মেরুকরণের কাজ জোর কদমে শুরু করে দেন।পরবর্তীতে , ২০১৪ সালে মোদি কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেই মমতার এই ধর্মের নামে মানুষে মানুষে বিভাজন তৈরির প্রক্রিয়া কেই সফল ভাবে গোটা দেশে প্রয়োগ করেন।পরবর্তীতে ইমাম ভাতার পাশাপাশি মমতা চালু করেন পুরোহিত ভাতা।এরফলে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার ষোলকলা পূর্ণ হয়।সেই মমতা করবেন বিজেপির মোকাবিলা? এতো রবীন্দ্রনাথের ভাষা ধার করে বলতে হয়;’ এ যে দেখি , জলে ভাসে শীলা।’
মমতা তাঁর গত দশ বছরের শাসনকালে বিজেপি ব্যাতীত অন্য কোন রাজনৈতিক দলকে প্রবল প্রশাসনিক হেনস্থার বাইরে রেখেছিলেন? সমস্ত অবিজেপি দলগুলি র জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে , সাধারণ কর্মীকে তিনি বাধ্য করেছেন রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেসে হয় যোগদান করতে, নতুবা প্রাচীন সামন্ততান্ত্রিক প্রভুদের মতো, তৃণমূলের বশ্যতা স্বীকার করতে।প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যে আচরণ মমতা করেছেন, তার একাংশ ও কেন তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে করেন নি? মমতা যে কোনো ভোট সামনে এলেই নানা রকমফেরে বিজেপি বিরোধিতার কথা বলেন।অথচ তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত তিনি কিন্তু বিজেপির মস্তিষ্ক আর এস এসের বিরুদ্ধে একটি শব্দ উচ্চারণ করেন নি।গত দশ বছরে , মমতার শাসনকালে সরসঙ্ঘচালক যে নিরাপদবৃত্তে, মসৃণভাবে পশ্চিমবঙ্গ সফর করেছেন, কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সভা করেছেন, অতীতে রাজ্য প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে এভাবে পশ্চিমবঙ্গের বুকে একজন ও সঙ্ঘপ্রধান সফর বা সভা করতে সক্ষম হন নি।তারপর ও কি আমাদের বলতে হভে, মমতাই একমাত্র পারবেন, আগামী বিধানসভার ভোটে বিজেপিকে ঠেকাতে?
মমতার দলের যে সমস্ত লোকেরা, জনপ্রতিনিধিরা আজ বিজেপির কেষ্টবিষ্টু হয়ে বসে আছেন, সেইসব ব্যক্তিরা তৃণমূল কংগ্রেস দলটিতে থাকাকালীন আর এস এস- বিজেপির চর হয়ে কাজ করেন নি– একথা কি নিশ্চিতভাবে বলা যায়? আজকে বিজেপি দলে এই রাজ্যের এমন অনেক জনপ্রতিনিধি আছেন, যাঁরা তৃণমূলে থাকার সময়েও আর এস এস- বিজেপির হয়েই কাজ করে গিয়েছেন।আজকের একাধিক বিজেপি সাংসদ আছেন, যাঁরা নোটবন্দির সময়কালে তৃণমূল দল প্রকাশ্যে নোটবন্দির বিরোধিতা করলেও, এঁরা নোটবন্দির পক্ষে গলা ফাটিয়েছেন।তাই তৃণমূলে থেকে বিধানসভায় জিতে, সেইসব লোকেরা অচিরেই দলত্যাগ বিরোধী আইন বাঁচিয়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন না, সেই নিশ্চয়তা কোথায়?
গত কয়েকবছর ধরে রামনবমীকে কেন্দ্র করে এই রাজ্যে খোলাখুলি দাঙ্গার উস্কানি দিচ্ছে আর এস এস – বিজেপি।সেই উস্কানি মোকাবিলায় মমতার প্রশাসন কেন কোনো প্রশাসনিক ভূমিকা পালন করে নি? মমতার দল ই বা কেন বিষয়টির রাজনৈতিক মোকাবিলার বদলে, বিজেপির হাত শক্ত করবার লক্ষ্যে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার পথে হাঁটছে।রামনবমীতে বিজেপি অস্ত্র মিছিল করছে।শিশু,নারীদের সেই মিছিলের সামনে রাখা হচ্ছে।এই মিছিলের বিরোধিতার নাম করে মমতার দল হনুমান জয়ন্তী পালন করছে প্রকাশ্যে।বিজেপির রামনবমীর অস্ত্র মিছিলের বিরুদূধতার নাম করে মমতার দল হনুমানজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে অস্ত্র মিছিল বের করছে। এভাবে উগ্র ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িকতাকে পারস্পরিক প্রতিযোগিতায় যে মমতা এবং তাঅঁর দল , তৃণমূল কংগ্রেস ঠেলে দিচ্ছে, সেই দল সাম্প্রদায়িকতা মোকাবিলার প্রশ্নে বিজেপিকে রুখবে, এটা বিশ্বাসযোগ্য? বিজেপির রামনবমীর অস্ত্র মিছিলের মোকাবিলায়, মমতার দলের হনুমান জয়ন্তী কতোখানি অহিংস ছিল , তা বোঝা যায়, সেই মিছিলের লোকেদের দ্বারা ভাটপাড়া তে মৌলানা আবুল কালাম আজাদের মূর্তি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায়।এহেন মমতা পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভার ভোটে বিজেপি প্রতিরোধের আইকন হবেন, তা কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য?
সংসদীয় রাজনীতির নিরিখে রাজ্যসভায় মোদির সরকার বিপদে পড়লেই মমতার দল, তৃণমূল কংগ্রেস যে কোনো উপায়ে সরকারের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এন আর সি র প্রশ্নে যে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভায় বিজেপির বিপদতারণের ভূমিকা পালন করে, সেই তৃণমূল কংগ্রেস এ রাজ্যের ভোটে বিজেপিকে ঠেকাবে, এটা একটি শিশু ও বিশ্বাস করবে? এন আর সি বিরোধী আন্দোলন, শাহিনবাগকে বিধ্বস্ত করতে বিজেপি সংগঠিত করে দিল্লি গণহত্যা।ভয়াবহ অত্যাচার চালায় জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র- শিক্ষকদের উপর।সাফুরা জারগার থেকে ডাঃ কাফিল খান, উমর খলিদেরা বিজেপির প্রতিহিংসার শিকার হন।প্রতিটি অবিজেপি রাজনৈতিক দল এঁদের পাশে দাঁড়ালেও, তৃণমূল কংগ্রেস একটি বারের জন্যেও ভারতের বহুত্ববাদী সংস্কৃতি রক্ষার জন্যে লড়াই করা, এইসব মানুষদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে? সেই তৃণমূল রুখবে এ রাজ্যে বিজেপিকে?