March 10, 2020
বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দরে ‘রেকর্ড’ পতন ঘটল। গত তিন দশকের মধ্যে অশোধিত তেলের দাম শতাংশ হিসাবে এক দিনে এতটা পড়েনি। এর ফলে দেশের বাজারে পেট্রল-ডিজেলের দর আরও কমবে কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘিরে আর্থিক মন্দার আশঙ্কায় অশোধিত তেলের দর কমছিলই। এই অবস্থায় দামে স্থিতিশীলতা আনতে গত সপ্তাহে বৈঠকে বসে ওপেক গোষ্ঠী ও রাশিয়া। কিন্তু বৈঠক ভেস্তে যায়। এ দিন বাজার খোলার পরে অশোধিত তেলের দর এক সময়ে প্রায় ৩১% পড়ে যায়, ব্যারেল প্রতি দাম হয় ৩১.০২ ডলার। পরে অবশ্য দাম কিছুটা উঠে ৩৬ ডলার ছাড়ায়। অনেকেই মনে করাচ্ছেন, তেলের বাজারে ২০১৪-২০১৬ সালের পরিস্থিতির কথা। তখন মূলত আমেরিকার অশোধিত তেলের বাজার দখল করার লক্ষ্যে বিশ্বের বৃহত্তম দুই তেল উৎপাদনকারী দেশ— সৌদি আরব ও রাশিয়া তেলের উৎপাদন বাড়ানোয় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পড়ে যায়। তার পর উৎপাদন ছাঁটাইয়ের জন্য তিন বছরের চুক্তি করে তারা। এ বারও উৎপাদন ছাঁটাই নিয়ে সহমত নয় ওপেক গোষ্ঠী এবং রাশিয়া।
কলকাতায় ইন্ডিয়ান অয়েলের পাম্পে গত ১২ দিনে লিটার পিছু পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমেছে যথাক্রমে ১.৩৭ টাকা ও ১.৪৩ টাকা। সংস্থাটি জানিয়েছে, ১০/০৩/২০ তা আরও কমছে যথাক্রমে ৩০ পয়সা ও ২৫ পয়সা করে। এর ফলে লিটার পিছু পেট্রল ও ডিজেলের দর হবে যথাক্রমে ৭২.৯৮ টাকা ও ৬৫.৩৪ টাকা।
ভারত জ্বালানির প্রায় ৮০ শতাংশই আমদানি করে। এখনও পর্যন্ত অশোধিত তেলের উৎপাদন ছাঁটাইয়ের আভাস মেলেনি। তা না-হলে তেলের দর নীচের দিকেই থাকার সম্ভাবনা। তবে এ ক্ষেত্রে আপাতত কাঁটা ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম। এ দিন প্রতি ডলারের দাম ৩০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৭৪.১৭ টাকা। ডলারের তুলনায় টাকার দাম পড়লে অশোধিত তেল আমদানির খরচ বাড়তে পারে। তবে যে হেতু অশোধিত তেলের দামই বিপুল কমছে, তাই অন্তত সার্বিক ভাবে দেশের বাজারে আরও কিছুটা সুরাহা মিলবে বলেই আশা সংশ্লিষ্ট মহলের।
সীতারাম ইয়েচুরি আজ এক ট্যুইট বিবৃতিতে বলেছেন- বিশ্ব জুড়ে তেলের দাম ৩০% কমেছে। এর সুফল অবশ্যই অবিলম্বে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো উচিত। তেলের দাম অবিলম্বে কমানো উচিত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পার্টির পক্ষ থেকে GST লাগু হওয়া সংক্রান্ত আলোচনার সময় বলা হয়েছিল পেট্রোপন্যের মূল্যকেও GST র আওতায় আনার জন্য। সেটা হলে পরে রাজ্য ভিত্তিক VAT-এর বাড়তি করের বোঝা থেকে সাধারণ মানুষ অনেকটা মুক্তি পেত।