মার্কসবাদ – লেনিনবাদের মতাদর্শগত ভিত্তিতে কমিউনিস্ট আন্দোলন পরিচালিত হয়। মার্কসবাদ – লেনিনবাদ হল বিপ্লবী তত্ব। এই তত্ব আত্মস্থ করতে হয় প্রয়োগের জন্য। তাই একে প্রয়োগের মতবাদও বলা হয়। জার্মান দার্শনিক ফয়েরবাখ সম্পর্কিত থিসিসে কার্ল মার্কস বলেছেন, “এতকাল দার্শনিকেরা নানাভাবে দুনিয়াটাকে ব্যাখ্যা করেছেন, কিন্তু মূল প্রশ্ন হলো একে (দুনিয়াটাকে – লেখক) পরিবর্তন করা”। এর মূল অর্থ হলো, শোষণভিত্তিক দুনিয়াটাকে পাল্টে দেওয়া – এটাই দর্শনের মূল লক্ষ্য হতে হবে। এই নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই মার্কসীয় মতাদর্শের প্রতিষ্ঠা।
মার্কসীয় মতবাদে অন্ধ অনুকরণের কোন সুযোগ নেই। মতাদর্শকে অবলম্বন করে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কমরেড লেনিন বলেছেন “মার্কসবাদ কোন আপ্তবাক্য (Dogma) নয়, এটা চলার ক্ষেত্রে পথনির্দেশক।” এর অর্থ হলো মার্কসীয় মতবাদকে অবলম্বন করে সমাধানের পথ অতিক্রমের রাস্তা খুঁজে বার করতে হবে। এই মতবাদে সৃজনশীলতার (Creativity) সম্পুর্ন সুযোগ রয়েছে। দ্বান্দিকতা (Dialectics) কে মার্কসবাদের মর্মবস্তু বলা হয়। এই দ্বান্দিকতা প্রসঙ্গে কমরেড লেনিন বলেছেন, “নির্দিষ্ট পরিস্থিতির সুনির্দিস্ট বিশ্লেষণই দ্বান্দিকতার মর্মবস্তু।”
নির্দিষ্ট পরিস্থিতির সুনির্দিষ্ট বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে দুই, তিন, চার রকমের মত আসতে পারে। সেই মতগুলির মধ্যে বিতর্ক তাই স্বাভাবিক। সেইজন্য কমিউনিস্ট আন্দোলনে মতাদর্শগত বিতর্ক (মতাদর্শের প্রয়োগকে ঘিরে) এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। মার্কসবাদের উপলব্ধির ক্ষেত্রে বিতর্ক, আবার মতবাদ প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিতর্ক। একথা নিঃসন্দেহে বলা চলে বিতর্ক মার্কসীয় মতাদর্শলে পুষ্ট করে, শক্তিশালী করে।
আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনে বিতর্ক
তাই তো আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের সূচনা পর্ব থেকে আমরা নানাবিধ বিতর্ক লক্ষ্য করি। বাকুনিন, প্রুধো, ব্ল্যাঙ্কি – এদের বিরুদ্ধে মার্কস ও এঙ্গেলসকে তীব্র মতাদর্শগত সংগ্রাম পরিচালনা করতে হয়েছে। যে হেগেলের দর্শনের দ্বারা মার্কস অনুপ্রানিত হয়েছেন, সেই হেগেলীয় দর্শনের ভাববাদী অন্তর্বস্তুর বিরুদ্ধে মার্কস ( ও এঙ্গেলস) -কে তীব্র সংগ্রাম করতে হয়েছে।
বিশ্বের প্রথম সফল সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের নেতা কমরেড লেনিনকে প্লেখানভ, মার্তভ এদের বিরুদ্ধে মতাদর্শগত সংগ্রাম পরিচালনার করতে হয়েছে। মার্কসবাদের বিপ্লবী অন্তর্বস্তুকে রক্ষা করার জন্য এই সংগ্রাম ছিল গুরুত্বপূর্ন। কার্ল কাউটস্কির বিরুদ্ধেও তাকে এই সংগ্রাম পরিচালনা করতে হয়েছে। রুশ বিল্পবের ইতিহাসে এই ধরনের অসংখ্য মতাদর্শগত সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে আমরা অবহিত।
চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও চীনের বিপ্লবী সংগ্রামের ইতিহাসে বহু গুরুত্বপূর্ন মতাদর্শগত সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছে। চীনে কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসকে দক্ষিণপন্থী সংশোধনবাদ ও বাম সংকীর্ণতাবাদী ঝোঁকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাতে হয়েছে। চেন তু সিউ ও লি লি শানের নেতৃত্বে বিচ্যুতির বিরুদ্ধে মাও সে তুং’র নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছে। বিপ্লব পরবর্তী সময়ে ‘মহা উল্লম্ফন’ ও ‘সাংস্কৃতিক বিপ্লব’ -এর নামে যে বিচ্যুতির প্রকাশ ঘটে তার বিরুদ্ধে চীনের কমিউনিস্ট পার্টিকে সংগ্রাম করতে হয়েছে।
ভারতের অভিজ্ঞতা
ভারতের বুকে কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পুর্তি হচ্ছে ২০২০ সালের ১৭ই অক্টোবর বিগত শতবর্ষে শ্রেণী সংগ্রাম ও গণসংগ্রামের ক্ষেত্রে বহু উল্লেখযোগ্য ভূমিকা কমিউনিস্ট পার্টি পালন করেছে। আন্দোলন – সংগ্রামের ধারায় কমিউনিস্টরা অসাধারণ নজীর স্থাপন করেছেন। এখনও করে চলেছেন। এই সময়কালে ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলন প্রত্যক্ষ করেছে অসংখ্য মতাদর্শগত সংগ্রাম। ১৯২০ সালে পার্টি প্রতিষ্ঠার পর পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে কমিউনিস্টরাই প্রথম উত্থাপন করেছিল। সদ্য গড়ে ওঠা পার্টিকে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্যে বৃহত্তর মঞ্চ গড়ে তোলার প্রশ্নে প্রবল বিতর্কের মধ্যে পড়তে হয়। এম এন রায়-এর উপনিবেশকরণ তত্ত্ব’র বিরুদ্ধে পার্টিকে তীব্র মতাদর্শগত সংগ্রাম করতে হয়েছে।
পার্টির কর্মসূচী যে কোন কমিউনিস্ট পার্টির সর্বাপেক্ষা গুরুত্ত্বপূর্ন দলিল। পরাধীন ভারতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে কর্মসূচীর প্রশ্নে ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনে তীব্র বিতর্ক চলেছে। ১৯৩০ থেকে ১৯৩৬-এর মধ্যে পার্টিকে কর্মসূচী লক্ষ্যে ৩টি দলিল গ্রহণ করতে হয়। এটাও সঠিক যে সেই সময়ে বিশ্ব কমিউনিস্ট আন্দোলনে বিশেষ করে তৃতীয় আন্তর্জাতিকের অভ্যন্তরে তীব্র বিতর্ক চলছিল। বাম সংকির্ণতাবাদী বিচ্যুতির প্রতিফলন ঘটেছিল তৃতীয় আন্তর্জাতিকের ষষ্ঠ কংগ্রেসে। তারই প্রতিফলন ১৯৩০ ও তৎপরবর্তী দলিলে ঘটেছিল। আন্তর্জাতিকের সপ্তম কংগ্রেস (১৯৩৫ সালে) পুর্বেকার বাম বিচ্যুতি থেকে নিজেকে মুক্ত করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা প্রয়োজন ১৯৩৬ সালে দত্ত-ব্রাডলে থিসিস (রজনী পাম দত্ত ও বেন ব্র্যাডলের নামে) এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করেছিল। এই থিসিসে পরিস্কারভাবে বলা হল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সমস্ত শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। বৃহত্তর মঞ্চ গড়ে স্বাধীনতার লড়াইতে যারা যোগদান করতে ইচ্ছুক তাদের সকলকে নিয়ে আসতে হবে।
১৯২০ সালে, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হলেও পার্টি কর্মসূচী প্রথম গৃহীত হয়েছিল ১৯৫১ সালে। তখন ভারত আর পরাধীন নয়। দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। জাতীয় মুক্তির লড়াই জয়যুক্ত হয়েছে। বিপ্লবের স্তরের পরিবর্তন হয়েছে। সেই পরিস্থিতির পরিবর্তনকে বিবেচনায় রেখে পার্টি যখন কর্মসূচী রচনায় অগ্রসর হয় তখন তীব্র মতাদর্শগত বিতর্কের আবির্ভাব ঘটল। ১৯৪৭ সালে আমরা যে স্বাধীনতা পেলাম তা প্রকৃত স্বাধীনতা নাকি মেকি স্বাধীনতা, এই নিয়ে গুরুতর বিতর্ক হয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টিতে। বিতর্কের মধ্যে দিয়ে দ্বিতীয় কংগ্রেসে ‘ঝুটা স্বাধীনতার’ ভ্রান্ত তত্ত্ব উপস্থিত করা হয়। পরবর্তীকালে এই ভ্রান্ত তত্ব খারিজ হয়, ঝুটা স্বাধীনতার তত্বকে বাতিল করা হয়। বলা হয় রাজনৈতিক স্বাধীনতা ভারত অর্জন করলেও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা লাভ হয় নি। বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী পুঁজি যথেষ্ট শক্তি লাভ নিয়ে এদেশে বিরাজ করছে। ক্রমান্বয়ে তার শক্তি বৃদ্ধি হচ্ছে। ১৯৬৪ সালে সপ্তম পার্টি কংগ্রেস থেকে ভারত রাষ্ট্রের শ্রেণীচরিত্র প্রসঙ্গে বলা হলো বৃহৎ পুঁজিপতি – জমিদারদের রাষ্ট্র হল ভারত যা ক্রমাগত বিদেশী লগ্নী পুঁজির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ হচ্ছে। সপ্তম পার্টি কংগ্রেসের মধ্যে দিয়ে সিপিআই(এম) গঠিত হলো। ভারতে দক্ষিনপন্থী সংশোধনবাদের বিরুদ্ধে মতাদর্শগত সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে সিপিআই(এম) গঠিত হলো। এ প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ভারতের বুকে দক্ষিনপন্থী সংশোধনবাদ ও বাম সংকির্নতাবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছে বিশেষ করে দ্বিতীয় কংগ্রেসের (১৯৪৮) পর থেকে।
ভারতীয় বিপ্লবের ভর এবং বিপ্লবের শ্রেণী জোটের প্রশ্নে দীর্ঘকালীন বিতর্কের অবসান ঘটল ১৯৬৪ সালে সপ্তম পার্টি কংগ্রেসে কর্মসূচী গ্রহনের মধ্যে দিয়ে। ভারতীয় সমাজে সামন্তবাদের অবশেষ বিরাজ করছে, সাম্রাজ্যবাদী অর্থনৈতিক শোষণও রয়েছে। গনতান্ত্রিক বিপ্লবের কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে। গনতান্ত্রিক বিপ্লবের কাজ সমাধা করেই ভারতীয় সমাজ সমাজতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হবে। শ্রমিকশ্রেনীর নেতৃত্বে, শ্রমিক – কৃষক মৈত্রীকে মর্মবস্তু করে জনগন্তান্ত্রিক জোট গড়ে উঠবে। কৃষক সমাজের মধ্যে গরীব কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের উপর সর্বাধিক জোর দিয়ে এই জোট গড়ে উঠবে। মধ্যবিত্ত অংশ এই জোটের শরিক হবে। জাতীয় পুঁজিপতিদের এই জোটে আসার সুযোগ রাখতে হবে।
সিপিআই(এম) গঠিত হওয়ার পর নকশালপন্থার নামে অতি বামপন্থী ঝোঁক কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরে মাথা চাড়া দেয়। চীন ও ভারতের সাদৃশ্য যেমন রয়েছে আবার গুরুতর পার্থক্যও রয়েছে। অতি বামপন্থীরা শুধুমাত্র সাদৃশ্যের উপরে জোর দেয়। চীনের নয়া গনতান্ত্রিক বিপ্লবের অনুকরনের কথা প্রচার করে তারা। চীনের চেয়ারম্যানকে (মাও যে দং) ভারতের চেয়ারম্যান বলে ঘোষণা করে। ব্যাক্তি হত্যার রাজনীতিকে গুরুত্ব দেয়। এই বাম সংকির্নতাবাদী বিচ্যুতির বিরুদ্ধে তীব্র মতাদর্শগত সংগ্রাম সিপিআই(এম)-কে পরিচালনা করতে হয়েছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সংশোধনবাদী ঝোঁক এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে বাম হঠকারী ঝোঁকগুলির বিরুদ্ধে সিপিআই(এম) মতাদর্শগত সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। মার্কসবাদ – লেনিনবাদের মতাদর্শের ভিত্তিতে এই সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছে। তবে এই মতাদর্শগত সংগ্রাম আপোষহীন ভাবে পরিচালনার সময়ে এই দুই সমাজতান্ত্রিক দেশের স্বপক্ষে বলিষ্ঠভাবে অবস্থান নিতে সিপিআই(এম)-এর অসুবিধা হয় নি। সমাজতন্ত্রবিরোধী কুৎসার মোকাবিলায় দৃঢ়তার সাথে পার্টি ভূমিকা পালন করেছে।
মার্কসবাদকে ভিতর থেকে দুর্বল করার লক্ষ্য নিয়ে ইউরোপের কয়েকটি কমিউনিস্ট পার্টি সম্মিলিতভাবে ‘ইউরোকমিউনিজম’ এর তত্ত্বের অবতারনা করে। ইউরোকমিউনিজমের ভ্রান্ত তত্ত্বগত অবস্থানের বিরুদ্ধে সিপিআই(এম) ১৯৭০-এর দশকের শেষদিকে ১৯৮০-এর দশকের শুরুর কালে বিশেষ গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে।
১৯৯০-৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের বিপর্যয়ে বিশ্ব কমিউনিস্ট আন্দোলনের একাংশের মধ্যে দিশেহারা ভাব দেখা দিল। সেই সময়ে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের মতাদর্শের ভিত্তিতে একদিকে বিপর্যয়ের কারঙ্গুলিকে চিহ্নিত করা ও অপরদিকে মার্কসবাদ – লেনিনবাদের স্বপক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল সিপিআই(এম)। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপর্যয়কে ব্যাবহার করে যারা মার্কসীয় সমাজ বিজ্ঞানকে দুর্বল করতে উঠে পড়ে লেগেছিল, তাদের জবাব দিল সিপিআই(এম)’র মতাদর্শগত দলিল, যা ১৯৯২ সালে চতুর্দশ কংগ্রেসে গৃহীত হয়েছিল। ঐ বিপর্যয় আসলে মার্কসবাদ – লেনিনবাদের মতাদর্শের থেকে গুরুতর বিচ্যুতির বিপর্যয়। পূর্ব ইউরপে সমাজতন্ত্রের বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে একবিংশ শতাব্দীতে সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী সংগ্রাম নতুন উদ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
মতাদর্শগত সংগ্রামের ধারা অক্ষুন্ন রেখে সিপিআই(এম) অগ্রসর হচ্ছে। মতাদর্শগত সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে মার্কসবাদ – লেনিনবাদ পুষ্ট হয়ে চলেছে। ২০১২ সালে বিংশতিতম পার্টি কংগ্রেস থেকে সিপিআই(এম)’র মতাদর্শগত দলিলে, বিলম্বিত পুঁজিবাদের মতাদর্শ ‘উত্তর আধুনিকতা’-র বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ মতাদর্শগত সংগ্রাম পরিচালনার আহ্বান জানানো হয়েছে। পুঁজিবাদী সংকট থেকে দৃষ্টি ফেরানোর জন্য বাস্তব জগৎ তথা কঠোর বাস্তবতার পরিবর্তে কাল্পনিক জগৎ ও সাজানো মিথ্যার দিকে আকৃষ্ট করার ‘উত্তর সত্য’ মতবাদের বিরুদ্ধে মার্কসবাদীদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
ভারতীয় সমাজে মৌলবাদ, ধর্মান্ধতা, কুপমন্ডুকতা, বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক মতবাদের বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রাম পরিচালনা করতে হচ্ছে। এই মুহূর্তে ভারতের মতো দেশে এটা গুরুত্বপূর্নও বটে।
মিথ্যা, অবাস্তবতার ভিত্তিতে প্রস্তুত মতাদর্শের বিরুদ্ধে তীব্র মতাদর্শগত সংগ্রাম ব্যাতিরেকে সর্বহারার বিপ্লবী আন্দোলন অগ্রসর হতে পারে না। মতাদর্শগত বিচ্যুতি ও বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম ব্যাতিরেকে শোষণ বিরোধী বিপ্লবী সংগ্রাম সাফল্য অর্জন করতে পারে না। সেই জন্যই সমগ্র কমিউনিস্ট আন্দোলনে মতাদর্শগত সংগ্রামের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। শ্রেণী সংগ্রামের ধারাকে তীক্ষ্ণতর করার লক্ষ্যে মতাদর্শগত সংগ্রাম তীব্রতর করতে হবে।