তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত পশ্চাদপদ এবং ভয়ানক নয়া আইন খারিজ করতে হবে
তারিখঃ ২৮ মে, ২০২১
প্রেস বিবৃতি
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) – এর পলিট ব্যুরো নিম্নলিখিত বিবৃতি জারি করেছেঃ
গত ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ভারত সরকার দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আইনে কিছু রদবদলের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এই নয়া আইনের আওতায় ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ, ট্যুইটার ইত্যাদি রয়েছে। ২৬ মে, ২০২১ থেকে এই নয়া আইন কার্যকরী হবে। এর ফলে যেসমস্ত মেসেজিং সার্ভিস দেশে চালু রয়েছে তারা প্রত্যেককে আদালত কিংবা সরকারের আদেশে যে কোনো মেসেজের “ফার্স্ট অরিজিনেটর” অর্থাৎ প্রথম সুত্র জানাতে বাধ্য থাকবে।
ইতিমধ্যেই ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ জানিয়েছে এমন আইনে তাদের অ্যাপ ব্যবহারকারীদের মেসেজ পাঠানো সংক্রান্ত ঘোষিত তথ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত নীতি লঙ্ঘিত হবে। সংস্থাগুলির এই যুক্তিকে প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষজ্ঞেরা সমর্থন করেছেন। সিকিউরিটি প্রোটোকল লঙ্ঘন করা হলে অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যাক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গ হবে এবং সেক্ষেত্রে হ্যাকিং এবং সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংক্রান্ত অন্যান্য দুষ্কর্মের সম্ভাবনাও বাড়বে।
এখন কার্যত ফেসবুককে নিজেদের তথ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতিকে বদলে ভারতে ব্যাবসা করার ক্ষেত্রে হোয়াটস্যাপের সুরক্ষায় আগের তুলনায় কম বিধিনিষেধ বলবৎ করতে হবে। ভারতের ক্ষেত্রে ফেসবুক হোয়াটস্যাপের ডেটা নিজেদের আওতাধীন করতে পারবে যদিও ইউরোপের দেশগুলিতে একই ব্যাবসার ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের স্পস্ট নির্দেশ রয়েছে কোনো সংস্থা কখনোই অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যাক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গ করতে পারবে না।
বিভিন্ন সময়ে বিজেপির নেতা-নেত্রিরা ট্যুইটারে নানা অসত্য তথ্য প্রচার করেছেন, ট্যুইটারের পক্ষ থেকে তাদের চিহ্নিত করা হয় এবং সেই সব ট্যুইটকে ভুয়ো খবর বলে প্রকাশ করা হয় – এখন কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লি পুলিশের সাহায্যে ট্যুইটারকে ভয় দেখাতে চাইছে। ট্যুইটারের কার্যালয়ে পুলিশি অভিযান চালিয়ে ভিয় দেখানোর কাজে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রককে এমন নির্লজ্জ্বের ন্যায় দলীয় স্বার্থে ব্যাবহার করার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে সিপিআই(এম)।
অ্যাপের সুরক্ষাবিধিকে দুর্বল করে দিয়ে জনগনের ব্যাক্তিগত মেসেজের তথ্যকে সরকারের পক্ষে নজরদারি চালানোর লক্ষ্যে সহজলভ্য করে দেওয়ার আইন এক ভয়ানক এবং পশ্চাদপদ মানসিকতার পরিচয় দেয়। নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে লঙ্ঘন করে এহেন আইন আসলে এক শক্তিশালী পুলিশি রাষ্ট্রের অভিমুখে এগোনোর পথে চলা। সিপিআই(এম)-এর পলিট ব্যুরো এমন সকল আইন অবিলম্বে খারিজ করার দাবী জানাচ্ছে।