ওয়েবডেস্ক প্রতিবেদন
দুনিয়ার মজদুর এক হও
মার্কস -এঙ্গেলস আহ্বান রেখেছিলেন। তারা গোটা পৃথিবীর মানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন, সেই লক্ষ্যে চলার পথে এগোনোর খসড়াও প্রস্তুত করেছিলেন।
পুঁজিবাদ একটা আন্তর্জাতিক শক্তি তাই এর বিরুদ্ধে লড়াইতে শ্রমিকশ্রেণীকেও আন্তর্জাতিক সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। দুনিয়াজূড়ে শ্রমিকশ্রেনীর মূল পরিচয় একটাই – তারা নিপীড়িত, বঞ্চিত এবং শোষিত। সেই শোষণের অবসানে আন্তর্জাতিক সংহতির প্রয়োজন – মার্কস, এঙ্গেলস এই উপলব্ধি ভবিষ্যতের জন্য রেখে যান। যদিও প্রথম আন্তর্জাতিক শেষে মার্কস এবং এঙ্গেলসের মৃত্যুপরবর্তী সময়ে বিশিষ্ট পন্ডিত, তাত্বিকদের হাতে পড়ে সেই আন্তর্জাতিকের চরিত্র সংশোধিত হয়! বিপ্লবী দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক উদ্দেশ্য পাল্টে আপস-রফার রাস্তায় চলতে থাকে।
লেনিন আপস-রফাপন্থী এই সংশোধনবাদী ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন। ১৯১৪ সালে সেই সংশোধনবাদী জোট ভেঙ্গে যায়। লেনিনের নেতৃত্বে গঠিত হয় দুনিয়ার মজদুরদের এক হবার প্রকৃত তৃতীয় আন্তর্জাতিক – কমিন্টার্ন।
রোজা লুক্সেমবুর্গ এবং কার্ল লিবনেখট’র স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে ৩৪ টি বিভিন্ন কমিউনিস্ট এবং সোশ্যালিস্ট পার্টির মোট ৫২ জন প্রতিনিধি একজোট হন আজকের দিনে, ১৯১৯ সালে, মস্কোতে সেই তৃতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম সম্মেলন শুরু হয়। এই সম্মেলনের আলোচনায় প্রধান বক্তব্য রাখেন লেনিন নিজে, আলেকজান্দ্রা কোলনতাই এবং ত্রতস্কি। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল সংগ্রামের রণকৌশল হিসাবে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাসি এবং প্রলেতারিয় একনায়কত্বের যে কোনও একটিকে নির্ধারণ করার যুক্তি – প্রতিযুক্তি। এই সম্মেলনের আলোচনায় কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে কার্যনির্বাহী কমিটি স্থাপনা করা হয়, গেওর্গি জিনোভিয়েভ সেই কমিটির চেয়ারম্যান হন। তৃতীয় কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক বা কমিনটার্ন সারা পৃথিবীতে মার্কসবাদ, লেনিনবাদের মতাদর্শ প্রচারে এবং কমিউনিস্ট আন্দোলনের সমর্থনে এক বিরাট ভূমিকা পালন করেছিল।
১৯৪৬ সাল অবধি এই কমিন্টার্ন কাজ করে, পরে ১৯৪৭ সালে আন্তর্জাতিক সংঘের নাম বদলে কমিনফর্ম হয়।
ওয়েবডেস্কের পক্ষে – সৌভিক ঘোষ