একবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশক সভ্যতা এক ক্ষুদ্র অণুজীবের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত। অলৌকিকবাদীরা পৃথিবী ধ্বংসের নিদান দিচ্ছে। ধর্ম এখন ছুটিতে আছে। পুঁজিবাদের একাধিপত্যের বিজ্ঞান আজ জনবিজ্ঞানে রূপান্তরিত। কোভিড -১৯ কে পরাস্ত করতে টিকা (ভ্যাকসিন) কে আবিষ্কার করবে তারজন্য রাত জেগে কাজ করছে পৃথিবীর ল্যাবরেটরি।
কিন্তু সংক্রমণ ছড়ানো কিভাবে আটকানো যাবে? মৃত্যুর মিছিলের সংখ্যা কি পন্থায় রোধ করা যাবে ? যে যে পদ্ধতিগুলো আছে তার সর্বোচ্চ সর্বৎকৃষ্ট পন্থা গুলোর শুধু ব্যবহার নয়,সঠিক সময়ে ব্যবহারের উদাহরণ তৈরি করেছে ভারতের সমুদ্রপকূল কেরালা রাজ্য। শুধু ভারতে নয়, বিশ্বের কাছে উদাহরণ তৈরি করেছে, অন্তত
দ্যা ওয়াশিংটন পোষ্ট সংবাদপত্রের তাই অভিমত।
যে কোন বিপর্যয়কে শক্ত হাতে পরিকল্পনা মাফিক মোকাবিলা করে বারবার দেশ কে পথ দেখায় কেরালা। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বে কেরালার বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট পরিচালিত সরকার কোভিড-১৯ মোকাবিলাতেও একই রকম নজির গড়েছে।
দ্যা ওয়াশিংটন পোষ্ট সংবাদ পত্রিকা কোভিড-১৯ এর সঙ্গে কেরালা রাজ্যের লড়াইয়ের চিত্র তুলে ধরেছে এই লড়াইয়ে সংযুক্ত বেশ কিছু মানুষের সাথে, কেরালা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা, WHO এর অন্যতম উপস্থাপক হেনক বেকডাম , কেরালার ৩০ হাজার স্বাস্থ্য কর্মী একজন সিভা টি এম, সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাহিদ জামিল, কোভিড-১৯ থেকে আরোগ্য রুগীর আত্মীয় থমাস।
এই সময়ের রোগের সাথে লড়াইয়ে কথা তুলে ধরে কেরালায় বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সরকারের প্রশংসা করা হয়েছে,এই সংবাদ পথে। উল্লেখ করা হয়েছে এক সপ্তাহ আগে রাজ্যে ২০০জন আক্রান্ত হলেও, বর্তমানে টা ৫০.. আক্রান্তরা খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসায় সারা দিচ্ছেন।
*বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে আশা কর্মীরা কেমনভাবে আক্রান্তদের খুঁজে বার করছেন।
*রুট ম্যাপের মাধ্যমে বিদেশীদের সনাক্ত ও চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা।
*কোয়ারানটিনে যাতে মানুষের মধ্যে একঘেয়েমি না আসে তার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা ৩০-৪০ শতাংশ সংযোগ বাড়ানো।
*অবসাদগ্রস্তদের জন্যলাইভ কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করা।
*প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিদর্শন। *জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে কোয়েন্টাইন স্ট্যাটাস খতিয়ে দেখা।
*মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতিদিন সন্ধ্যায় সঠিক তথ্য দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করা,
*প্রচুর পরিমানে স্যানিটাইজার তৈরি করা ।
*ব্রেক দ্যা চেন এর সচেতনতা গড়ে তোলা।
* ভুয়ো খবর রুখতে আযাপ চালু করা
*মিড ডে মিলের হোম ডেলিভারী, সেচ্ছাসেবক বাহিনী, ২০টাকায় বা বিনামূল্যে খাবার পৌঁছানো।
তাদের বক্তব্য থেকে মূলত রি বিষয় গুলি উঠে এসেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথায়, তিনি আশাবাদী, কিন্তু যেকোনো খারাপ অবস্থার জন্য কেরালা প্রস্তুত।
কেরল সরকারের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘করোনা রুখতে আমাদের মূল তিনটি হাতিয়ার। জনসচেতনতা বৃদ্ধি, স্পষ্ট নির্দেশের সঙ্গে তথ্যের স্বচ্ছতা এবং দ্রুত পদক্ষেপ।” ৩ ফেব্রুয়ারি কেরলে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায়। গোটা দেশের নিরিখেওওই ব্যক্তি প্রথম করোনা আক্রান্ত। কেরলের ওই আধিকারিকদের দাবি, তার আগে থেকেই করোনা রোখার জন্য একটি আঁটোসাঁটো পরিকল্পনা তৈরি করা হয় যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবস্থা অনুযায়ী আরও সংশোধিত করা হয়েছে।