শুভ্রা সেনগুপ্ত
তারিখ – ১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ (২৫শে মে, ২০২৪)
কাজী নজরুল ইসলামের জীবন নিয়ে লিখতে গিয়ে তাঁর বন্ধুরা কখনো অতিরঞ্জিত করেছেন তাঁর জীবনের নানা দিক নিয়ে। আবার কেউ বীরপূজা করে গেছেন তাঁদের রচনায়। নজরুলের জন্মের একশো বছরের ও বেশী সময় কেটে গেছে। আজও তাঁর জীবনের প্রথম দিকের বহু ঘটনা অন্ধকারে আচ্ছন্ন। তাঁর পরিবার পরিচয় কুয়াশা ঢাকা। তিনি এমন কোনো বিখ্যাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেননি, যে পরিবারের কোন বিশেষ পরিচিতি ছিল। তাঁর কোনো আত্মীয়স্বজন পাওয়া যায়নি যাঁদের কাছে তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠার অভ্রান্ত এবং জরুরী তথ্যগুলি নির্ভুল জানা যেতে পারে। তিনি যখন স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন তখন তাঁর দুই পুত্র কাজী সব্যসাচী ও কাজী অনিরুদ্ধ বালকমতি। তাঁরা তাঁদের বাবার কথা সামান্যই জানতেন। স্ত্রী প্রমীলাও স্বামীর প্রথম জীবন সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানতেন না কারণ নজরুল কিশোর বয়স থেকেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু পাড়াগাঁয়ের ছেলে দুখু মিঞা কীভাবে নজরুল ইসলাম হয়ে উঠলেন ………… সে এক অজানা রহস্য। তাঁর জন্মস্থান বর্ধমানের চুরুলিয়া। অত্যন্ত হতদরিদ্র একটি পরিবারে তিনি জন্মেছিলেন। নজরুলের বাবা মাজার ও মসজিদ থেকে সামান্য আয় করতেন। আয়ের আরএক অংশ আসতো জমিজমা থেকে। তবে সহায়-সজন এত কম ছিল যে, তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর নয়-দশ বছরের নজরুলকে রোজগারের পথ বেছে নিতে হয়েছিল। নজরুল ইসলামের চাচা বজলে করিম লেটো দলের অধিকারী ছিলেন। এছাড়া মসজিদে কিছুদিন ঈমামতির কাজ করতে গিয়ে তাঁর ধর্মীয় শিক্ষার ভিত গড়ে উঠেছিল। মায়ের উপর অভিমানেই তিনি ঘর ছেড়েছিলেন। নতুন পরিবেশ, নতুন নতুন বন্ধু তাঁকে শুধুই নিজের পরিবার থেকে দূরে নিয়ে যেতে লাগলো জন্মস্থান চুরুলিয়ার সঙ্গে বাড়তে লাগলো দূরত্ব। নিজের নাম হিসেবে নজরুল শব্দটা পাকাপোক্ত বেছে নিলেও স্কুলজীবনে তিনি ইসলাম না লিখে লিখতেন ‘এসলাম’। কিন্তু নজরুল যখন সেনাবাহিনীতে ছিলেন তখন করাচি থেকে যে লেখা পাঠাতেন প্রকাশের জন্য, সেখানে ‘ইসলাম’ লেখা থাকতো তাঁর নামের পাশে। তিনি বিভিন্ন বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন কিন্তু কোথাও বেশীদিন থিতু হতে পারেননি। তাঁর জীবনের বৈশিষ্ট্য ছিল প্রতিবাদ ও রহস্যজনক বিষয়ের প্রতি অদম্য কৌত‚হল। তাঁর পরিবারে সুফীবাদের প্রচলন ছিল। তাই ছোট বয়স থেকেই নজরুলের ধর্মীয় আবেগ ছিল চোখে পড়ার মত। লেটোর দলে নজর কেড়েছিলেন তাঁর সংগীতের সহজাত প্রতিভা। সেখানে তাঁকে হিন্দু পৌরানিক কাহিনী জানতে হয়েছিল অভিনয়ের জন্য। কারণ দর্শকরা ছিলেন বেশীরভাগ হিন্দু। এই লেটোর দলের শিক্ষা তাঁর পরবর্তী জীবনেও কাজে লেগেছিল। এরপরে তিনি মাথরুন নবীনচন্দ্র ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন কিন্তু কোনো সহায়ী আর্থিক সাহায্য না পাওয়ায় সেখান থেকে চলে আসেন। এরপর রানীগঞ্জ-আসানসোল এলাকায় রুটির দোকানে ও রেলওয়ে গার্ডের বাড়িতে কিছুদিন কাজ করেছেন। নজরুলের জীবনের এইসব ঘটনা লক্ষ্য করলে বোঝা যায় পিছুটানহীন এই মানুষটি বারবার স্থান পরিবর্তন করেছেন এবং তাঁর অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের জন্য সব জায়গায় তিনি খুব সহজেই মিশে যেতে পেরেছেন।
তাঁর চরিত্রের এই সহজিয়া দিকটিই মুগ্ধ করেছিল মুজাফ্ফর আহমেদ অর্থাৎ কাকাবাবুকে। একুশ বছর বয়সের যুবকটিকে দেখেই কাকাবাবুর খুব ভালো লেগে যায়। ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকার’ গ্রাহক ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সাহেব ও মুহম্মদ মোজাম্মেল হক সাহেব। ঐ পত্রিকায় নজরুল ইসলাম নিয়মিত চিঠিপত্র লিখতেন। ১৯১৯ সালে নজরুল ইসলাম একটি কবিতার পান্ডুলিপি পাঠিয়েছিলেন পত্রিকা অফিসে। এই কবিতাটি পড়ে অনেকেই বিরুপ সমালোচনা করেছিলেন কিন্তু মুজাফ্ফর আহমেদ কবিতাটির মধ্যে কবির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিলেন। তাঁর এই কবিতা এবং ‘হেনা’, ‘ব্যথার দান’ প্রভৃতি ছোট গল্প পড়ে তিনি বুঝেছিলেন যে বাংলাসাহিত্যের আকাশে একজন নবজ্যোতিষ্কের উদ্ভব হতে চলেছে। মূলত: তাঁরই উদ্যোগে কবিতাটি “বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকায় ছাপানো হয়। মুজাফ্ফর আহমেদ লিখেছেন – “সাধারণত কবিতা সম্বন্ধে আমি নির্লিপ্ত থাকতাম, কিন্তু কেন জানিনে, নজরুল ইসলামের কবিতাটির বিষয়ে আমি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেম। অর্থাৎ, কবির কাঁচা রচনার কাঁচা সমঝদার বনে গিয়েছিলেম।”
১৯১৯ সালের জুলাই-আগষ্ট মাসে ঐ পত্রিকায় “মুক্তি” কবিতাটি ছাপা হয় এবং যতদূর জানা গেছে এটাই ছিল কাজী নজরুল ইসলামের পত্রিকায় প্রথম ছাপানো কবিতা।
এরপর থেকেই কাকাবাবু ও নজরুল ইসলামের মধ্যে পত্রালাপ শুরু হয়। এপর ৪৯ নম্বর বেঙ্গলী রেজিমেন্ট ভেঙে দেওয়ার কথাবার্তা শুরু হলে নজরুলের জীবনে আবার অনিশ্চয়তা নেমে আসে। তখন মুজাফ্ফর আহমেদ তাঁকে পরামর্শ দেন যে কবিসত্তার স্ফুরণ ঘটাতে হলে নজরুলের কলকাতাতেই আসা উচিৎ।
১৯২০ সালের জানুয়ারী মসের চতুর্থ সপ্তাহে নজরুল সাতদিনের ছুটিতে কলকাতায় আসেন। সঙ্গী বন্ধু এবং সাহিত্যিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়। শৈলজানন্দই ৩২, কলেজস্ট্রীটে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির অফিসে নজরুলকে নিয়ে আসেন। ঐ দিনই তাঁদের সঙ্গে কাকাবাবু মুজাফ্ফর আহমেদের প্রথম দেখা। নজরুলের সুঠাম স্বাস্থ্য ও প্রাণখোলা হাসি কাকাবাবুকে মুগ্ধ করেছিল প্রথম দর্শনেই। মুজাফ্ফর আহমেদ লিখেছেন – “পৃথিবীতে আমার ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করার লোকের সংখ্যা খুব কম। যাঁরা আমার চেয়ে বয়সে বহু ছোট অনেক হৃদ্যতা হওয়ার পরেও আমি তাঁদের কথাবার্তায় ‘আপনি’ ব্যবহার করি। নজরুলের সঙ্গে আমার হৃদ্যতা অনেক বেড়ে যাওয়ার পরেও আমি তাঁকে “কাজী সাহেব” বলতাম। সে আমায় বলত “আহমেদ সাহেব”। ক’বছর পরে নজরুলই একদিন জোর করে আমাদের সম্পর্ককে ‘তুমিতে’ নামিয়ে নিয়ে এসেছিল”।
“বঙ্গীয় সাহিত্য সমিতির” অফিসের পাশের একটি ঘরে থাকতেন মুজাফ্ফর আহমেদ, ঐ ঘরেই আর একটি চৈৗকি পেতে দেওয়া হল কাজী নজরুল ইসলামের জন্য। সেই দিন রাতেই সকলের অনুরোধে নজরুল গলা ছেড়ে গান ধরলেন – “পিয়া বিনা মোর জিয়া না মানে বদরী ছায়ী রে”। নজরুলের চরিত্রের সব থেকে ভালো গুণ হল সকলকে খুব কম সময়ের মধ্যে আপন করে নেওয়া। যে কোন আসরে গান গাইতে বসলে কেউ তাঁকে ছাড়তে চাইতো না। চটকলের বাঙালী মজদুর বা মাঠে মাঠে কৃষকদের মধ্যে ঘুরে তিনি গান গেয়েছেন, বক্তৃতা করেছেন শুধু শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে নয় – খেটে খাওয়া শ্রেণীর মধ্যেও তাঁকে ঘিরে উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। এই বিষয়টি কাকাবাবুর নজর এড়ায়নি। তিনি নজরুলকে সবসময় কাছে কাছে রাখতেন, সুপরামর্শ দিতেন। একদিন কাকাবাবু নজরুলের কাছে জানতে চাইলেন যে নজরুল রাজনীতিতে যোগ দেবে কিনা। জবাবে নজরুল বলেন, “তাই যদি না দেব তবে ফৌজে গিয়েছিলাম কিসের জন্যে?” দেশের অবস্থা তখন খুবই উত্তপ্ত। একদিকে পাঞ্জাবে যে নিষ্ঠুর অত্যাচার মানুষ নিতে পারেনি। ১৯১৯ সালের শাসন সংস্কার আইন দেশের মানুষেরা কিছুতেই মানতে চাইছে না। রুশ দেশের শ্রমিকদের বিপ্লবের জোয়ার এসে লাগছে এদেশের জনসমুদ্রে। দিকে দিকে ধর্মঘট। এই সময় ১৯২০ সালের ১২ই জুলাই নজরুল ইসলাম ও কাকাবাবু সম্পাদনায় প্রকাশিত হলো “নবযুগ”, যদিও তাঁদের নাম থাকল অনুচ্চারিত। নজরুল ইসলামের জোরালো লেখার গুণে এই কাগজ যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেতে লাগলো। ‘কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতিকথা’ (১৯৬৯) বইটিতে মুজাফ্ফর আহমেদ লিখেছেন – “আমাদের ৩/৪ বি, তালতলা লেনের বাড়িটি ছিল চারখানা ঘরের একটি পুরো দোতলা বাড়ি। নজরুল আর আমি নিচের তলার পূর্বদিকের অর্থাৎ বাড়ির নীচের দুক্ষিণ-পূর্ব কোণের ঘরটি নিয়ে থাকি। এই ঘরেই কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি লিখেছিল। সে কবিতাটি লিখেছিল রাত্রিতে। ………. সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে এসে আমি বসেছি এমন সময়ে নজরুল বলল, সে একটি কবিতা লিখেছে। পুরো কবিতা সে আমায় পড়ে শোনালো। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার আমিই প্রথম শ্রোতা। নজরুল তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আমাকেই প্রথম পড়ে শোনালো। অথচ, আমার স্বভাবের দোষে না পারলাম তাকে আমি কোনো বাহবা দিতে, না পারলাম এতটুকু উচ্ছ¡সিত হতে”।
১৯২২ সালের ২৬শে জানুয়ারী শুক্রবার “বিজলী” পত্রিকায় “বিদ্রোহী” কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এর আগেই নজরুল ‘আনোয়ার’ ও ‘কামাল পাশা’ লিখে যথেষ্ট পরিচিতি পেয়েছেন কিন্তু বিদ্রোহী প্রকাশিত হওয়ার পর কাজী নজরুলের নামই হয়ে গেল “বিদ্রোহী” কবি। এই কবিতা যেমন একদিকে তাঁকে খ্যাতির চ‚ড়ায় বসিয়ে দিল আর এক দিকে মোহিতলাল মজুমদার সহ একদল কবি-সাহিত্যিক বিরূপ মন্তব্য করতেও ছাড়লেন না। নজরুলের কলম থেমে থাকলো না। রচনা করলেন একের পর এক কালজয়ী কবিতা ও গান। কিন্তু নজরুল চঞ্চল স্বভাবের। কোনো জায়গায় তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে রাখা যেত না। তাঁর চরিত্রের এই দিকটির জন্য তিনি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বারবার। তাঁর কবি প্রতিভাও বিঘিœত হয়েছে এইসব কারণে। তবে তিনি যে একজন সর্বজনগ্রাহ্য কবি ও সংগীত সাধক হয়ে উঠেছিলেন কালক্রমে তার পিছনে কিছু সুহৃদ ব্যক্তির ভ‚মিকা অবশ্যই ছিল। যদিও কাকাবাবুর কথা না শুনেই তিনি কুমিল্লা চলে গিয়েছিলেন আলী আকবর খানের সঙ্গে। নজরুল সারাজীবন একটু ভালোবাসার কাঙ্গাল ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে করতে একটু আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের মুখ দেখার জন্য তিনি অনেক সময়েই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বার বার তাঁর পথে অনেক দেরি হয়ে গেছে। মুজাফ্ফর আহমেদের মত মানুষের সান্নিধ্যে তিনি যদি আগাগোড়া থাকতে পারতেন তাহলে কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যবাদী চেতনার সার্বিক স্ফুরন হয়তো আমরা দেখতে পেতাম আরো সুচারুভাবে। নজরুল ইসলাম আজও আমাদের প্রাণিত করেন, উদ্বুদ্ধ করেন তাঁর ক্ষুরধার লেখনীনি:সৃত কবিতায় গানে। তবু কবির অভিমানী কন্ঠস্বর আজও আমাদের কানে বাজে –
“তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু, আর আমি জাগিব না
কোলাহল করি সারা দিনমান কারো ধ্যান ভাঙিব না
নিশ্চল-নিশ্চুপ
আপনার মনে পুড়িব একাকী গন্ধ বিধূর ধূপ”।
জৈষ্ঠের খরতাপের মধ্যে তাঁর আবির্ভাব। বিদায় নিয়েছেন শরতে সাদা মেঘের ভেলায় কিন্তু সৃজনছন্দে তিনি অনন্তকালের জন্য ঠাঁই করে নিয়েছেন মানুষের হৃদয়ে। চিরবিদ্রোহী ও অসাম্প্রদায়িক কবি হিসেবে তিনি বাঙালির অন্তরে ভাস্বর। তাঁর জীবনকাল ছিল ৭৭ বছরের কিন্তু তাঁর সাহিত্যজীবন ছিল মাত্র ২৩ বছরের। এই স্বল্প সময়ে কাজী নজরুল যা সৃষ্টি করে গেছেন তা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর এই অনুজটিকে উৎসর্গ করেছিলেন তাঁর ‘বসন্ত’ কাব্যগ্রন্থ। নজরুলকে অভিনন্দন জানিয়ে কবিগুরু লিখেছেন – “আয় চলে আয়রে ধূমকেতু/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু/দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন”।
আমাদের সামাজ, চেতনা এক ঘোর অমানিশার মধ্যে ক্রমশ: ডুবে যাচ্ছে সেই সময় বিদ্রোহী কবির সাম্যবাদী চেতনা আমাদের বিবেককে নবীন মন্ত্রে দীক্ষিত করুক এই স্বপ্ন নিয়েই আমাদের প্রতিদিনের পথ চলা।
(প্রাবন্ধিক শ্রীমতি শুভ্রা সেনগুপ্ত একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এবং কাজী নজরুল ইসলামের সহধর্মিণী শ্রীমতি প্রমীলা দেবীর (আশালতা সেনগুপ্ত) আত্মীয়া।)