Indian Freedom Struggle And RSS – A Retrospective (Part-8)

ভারতের জাতীয় আন্দোলন ও আর এস এস – (অষ্টম পর্ব)

ধারাবাহিক রচনায়ঃ গৌতম রায়

আরএসএস চিরদিনই তাদের কল নায়কদের জীবন কাহিনীর এক কল্পিত আখ্যানের ভেতর দিয়ে কর্মী সমর্থকদের কাছে উগ্রতা কে ই  দেশপ্রেমের  সমার্থক হিসেবে উপস্থাপিত করে, তার পাশাপাশি চিরন্তন ভারতবর্ষের, বহুত্ববাদী চেতনা এবং  সমন্বয়বাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে অস্বীকার করে,  মুসলিম বিদ্বেষ কেই  স্বদেশ প্রেমের অন্যতম বড় উপপাদ্য বিষয় হিসেবে দেখাবার চেষ্টা করে ।ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কোনো লড়াই না করে, ব্রিটিশ ভারতকে ,রাজনৈতিক হিন্দু ভারতে পরিণত করাই ছিল আরএসএসের এক এবং একমাত্র লক্ষ্য এবং আদর্শ ।              

সেই পথেই তারা আজও তাদের নিজেদের যাবতীয় রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মধারা কে পরিচালিত করে। সেই ভাবে কর্মপদ্ধতি পরিচালনার ক্ষেত্রে, নিজেদের পছন্দের চরিত্র গুলিকে নায়কোচিত সম্মান দিতে গিয়ে যেভাবে হেডগেওয়ার কে ব্যবহার করে, তাতে হেডগেওয়ারের  জীবনের যে সমস্ত কাহিনীকে তারা উপস্থাপিত করে, সেখানে ব্রিটিশবিরোধী একটি-দুটি কষ্টকল্পিত ঘটনাক্রম উল্লেখ করলেও, নাগপুরের  স্কুল জীবন থেকে তার কুড়ি বছরের বয়সে কলকাতা মেডিকেল কলেজে পড়তে আসার সময়কাল পর্যন্ত বর্ণনার ক্ষেত্রে, একটিবারের জন্য আরএসএস উল্লেখ করে না।
                

প্রাসঙ্গিক সময়ে বাল গঙ্গাধর তিলক ,চাপেকর ভাইয়েরা  সহ বিভিন্ন বিপ্লবীদের সশস্ত্র প্রতিরোধে গোটা বোম্বাই প্রেসিডেন্সি যখন উত্তাল , আগুন যখন পুনে  শহরকে অতিক্রম করে নাগপুর শহরে এসে পড়েছিল, হেডগেওয়ার যদি ব্রিটিশের বিরুদ্ধে এতই উদ্বুদ্ধ হয়ে থাকতেন,  তাহলে সেই সব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তার কেন কোনরকম সংযোগ গড়ে  উঠলো না -এই গুরুতর প্রশ্ন সম্পর্কে কিন্তু আরএসএস নেতৃত্ব, তাদের বৌদ্ধিক চিত্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে আশ্চর্যজনক নীরবতা পালন করে যায় ।
                     

আরএসএস তাদের কর্মী সমর্থকদের ভেতরে নিজেদের প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ার কে একজন বিশিষ্ট ইংরেজ বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী চরিত্র হিসেবে উপস্থাপিত করতে গিয়ে, তার  স্কুল জীবনের পরেই সোজা চলে আসে, তার কুড়ি বছর বয়সের প্রথম কালের সমক্ষে। এই সময় ক্ষেপণের বর্ণনার ক্ষেত্রে তারা বলে থাকে যে , ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী কর্মকান্ডের সঙ্গে নাকি হেডগেওয়ার সংযুক্ত ছিলেন এবং নাগপুর সন্নিহিত অঞ্চলে নানা বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি নাকি সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ।কিন্তু এ সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রমাণ তারা উপস্থাপিত করে না।
                      

বাল গঙ্গাধর তিলক গ্রেপ্তার হওয়ার পর গোটা অ্যাংলো  ইন্ডিয়ান সংবাদপত্র এবং ইংল্যান্ডের বিভিন্ন খবরের কাগজ যেভাবে তিলকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াতে থাকে,  সেই পর্যায়ক্রম পুনে শহর কে অতিক্রম করে ,নাগপুরে ও  বেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, অথচ ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আরএসএসের দাবিমতো , সোচ্চার হেডগেওয়ার , সেই পর্যাক্রমে  কি ভূমিকা পালন করেছিলেন –সেই সম্পর্কে কিন্তু আরএসএস আজ পর্যন্ত একটি শব্দ উচ্চারণ করেনি ।
              

তিলকের যখন বিচার পর্ব শুরু হয় ,  সেই সময় , হেডগেওয়ার নাগপুরে ই  অবস্থান করছেন। গোটা পুনে শহরসহ বোম্বাই প্রেসিডেন্সি উত্তাল হয়ে উঠেছে এই বিচারের নামে প্রহসনের বিরুদ্ধে, অথচ সে সম্পর্কে হেডগেওয়ার আদৌ কোনো রকম আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন– এমন কোনো তথ্য প্রমাণ আজ পর্যন্ত আরএসএস উপস্থাপিত করতে পারেনি। তদানীন্তন বোম্বাইয়ের টাইমস অফ ইন্ডিয়া নেতৃত্বে অ্যাংলো  ইন্ডিয়ান খবরের কাগজ গুলি তিলকের বিরুদ্ধে মারাত্মক নেতিবাচক প্রচার শুরু করে দেয় ।
             

যে চিৎপাবন ব্রাহ্মণ হিসেবে হেডগেওয়ার কে একটা ‘দেবত্ব ‘ আরোপ করে জীবনের চরম সীমায় প্রতিষ্ঠাতাকে    সংঘ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় –সেই চিৎপাবন ব্রাহ্মণ সহ ,গোটা ব্রাহ্মণ সমাজ সম্পর্কে টাইমস অফ ইন্ডিয়া সেসময় অত্যন্ত নেতিবাচক খবরা-খবর প্রকাশ করতে থাকে। তিলকের ব্রাহ্মণ্যত্বের  দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের ভেতরে একটি জাতপাতের সীমারেখা টেনে ,হিন্দু-মুসলমানের বিভাজনের মতোই, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি চেয়েছিল ,সেই আন্দোলনের ভেতরে উচ্চবর্ণ- নিম্নবর্ণের একটি বিভাজন রেখা তৈরি করতে ।
                  

ব্রিটিশের সেই ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে একটি শব্দ কিন্তু হেডগেওয়ারের   কাছ থেকে সেই সময় বা পরবর্তীকালেও কখনো আমরা পাইনি ।টাইমস অফ ইন্ডিয়ার ভারতীয় সংস্করণে যে ধরনের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছিল ,কার্যত প্রায় তাকেই অনুসরণ করেছিল ইংল্যান্ডের সমস্ত খবরের কাগজ গুলি ।ডেইলি মেইল পত্রিকায় তখন লেখা হয়েছিল;
            There is nothing fanatic about from Poona murder.Poona is the centre of much ofthe sedition and mutiny hatching of the whole country.The poona Brahmin is notorious throughout the whole of India, and the educated among them particularly so.By their newspapers, by their secret messengers and signs, they are endevouring to stir up a revolt against the British power.
                               

কলকাতায় ডাক্তারি পড়তে যাওয়ার আগে, কৈশোর এবং প্রথম যৌবনে, ব্রিটিশবিরোধী মানসিকতা এবং ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র প্রতিরোধের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে হেডগেওয়ারের   যুক্ত থাকার যে কল্পকাহিনী আরএসএস, তার কর্মী-সমর্থকদের সামনে উপস্থাপিত করে, বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে নিজেদের ভূমিকা কে প্রমাণ করতে চায়, সেখানে কিন্তু একটিবারের জন্য তারা এটা কোনো ই সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ সহকারে বলতে পারি না যে ; তিলক কে গ্রেফতার ,মামলার নামে,  বিচারের নামে প্রহসন, তাঁর কারাবাস– এই সমস্ত গোটা পর্যায়ক্রম কে ঘিরে গোটা বোম্বাই প্রেসিডেন্সির  উত্তাল হয়ে ওঠা এবং নানাভাবে, নানা পর্যায়ের  ব্রিটিশবিরোধী যে সমস্ত সশস্ত্র প্রতিরোধের কর্মসূচি,  তার একটি র সঙ্গে ও যদি হেডগেওয়ারের যদি  নূন্যতম যোগাযোগ থাকত, তাহলে ঐ সমস্ত ঘটনাক্রমের সঙ্গে যুক্ত যে সমস্ত মানুষজনদের নাম ,ব্রিটিশ পুলিশের নথিপত্রে থেকে পাওয়া গেছে ,তাতে হেডগেওয়ারের  নাম কেন নেই?
                 

হেডগেওয়ার কোন অবস্থাতেই সেইসময়ের উত্তাল বোম্বাই ,পুনে, নাগপুরের ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের সঙ্গে বিন্দুমাত্র যুক্ত যে  ছিলেন না- তা খুব স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ে যায় ।ব্রিটিশ পুলিশ বা গোয়েন্দাদের কোনো  খাতাতেই হেডগেওয়ারের  নামের স্পর্শ  পর্যন্ত নেই।
                       

লোকমান্য তিলকের   বিরুদ্ধে মামলা চলাকালীন বিভিন্ন ব্রিটিশ মালিকানাধীন পত্র-পত্রিকা গুলি ,তিলক সহ গোটা বিপ্লবী পরিমণ্ডল সম্বন্ধে নানা ধরনের কুৎসা, প্ররোচনা, বিভাজনের রাজনীতি করে গেছে। সেই সমস্ত অপচেষ্টার বিরুদ্ধে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পুনার  যুব সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশের প্রতিবাদ- প্রতিরোধে মুখর  হয়েছে ।
              

বোম্বাই প্রেসিডেন্সি কে অতিক্রম করে সেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধ কলকাতা শহরেও  ধ্বনিত হয়েছে ।দেশের অন্যান্য প্রান্তে ও হয়েছে ।কিন্তু কোথাও কোনো ধরনের প্রতিবাদ- প্রতিরোধের সঙ্গে হেডগেওয়ার বা পরবর্তীকালে তার আরএসএস সৃষ্টি সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত যে সমস্ত ব্যক্তিত্ব ,তাদের কোনো রকম ন্যূনতম সংযোগ পর্যন্ত থাকার ইতিহাস গত তথ্য প্রমাণ নেই।
                 

তিলকের মামলা চলাকালীন তিলকের বিরুদ্ধে কঠোরতা অবলম্বন করা হয়নি বলে ব্রিটিশ পত্র-পত্রিকাগুলো সরকারের প্রচন্ড সমালোচনা করেছে। লন্ডনের স্ট্যান্ডার্ড নামক বহুল প্রচলিত খবরের কাগজ লর্ড স্যান্ডহার্স্ট  কে প্রচুর গালাগালি দিয়েছিল। কারণ; তিলক বোম্বাই লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি সদস্য হওয়া সত্ত্বেও , লর্ড স্ট্যান্ডহার্টস যেহেতু তার ভেটো প্রয়োগ করে ,তিলকের মত ব্যক্তির ব্যবস্থাপক সভার সদস্য পদ খারিজ করেননি সেই কারণে ।
                     

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমকালীন ভারতীয় পত্র-পত্রিকাতে ব্রিটিশ মালিকানাধীন পত্র-পত্রিকাগুলো কঠিন কঠোর সমালোচনা যেমন ভারতীয় সংবাদপত্রগুলি পরিচালকেরা করেছিলেন,  তেমন ই  বহু ভারতীয় যুবক- দেশপ্রেমিক মানুষ ,চিঠিপত্রে  ব্রিটিশের সেই নিন্দনীয় মানসিকতার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।ভারতবর্ষীয় মালিকানাধীন একটি পত্র পত্রিকাতেও, ব্রিটিশ মালিকানাধীন পত্র-পত্রিকা গুলিতে লোকমান্য তিলক ও তাঁর সহযোগীদের সম্পর্কে যে ধরনের কুৎসা প্রচলিত হচ্ছে ,সে সম্পর্কে, কিংবা তিলকের কার্যক্রমকে সমর্থন জানিয়ে হেডগেওয়ারের  একটি চিঠি পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি ।
                 

তাহলে এই প্রশ্ন তোলা খুব স্বাভাবিক,  কিসের ভিত্তিতে নাগপুর শহরের স্কুল জীবন অতিক্রম করার পর, কুড়ি বছর বয়সের প্রারম্ভে হেডগেওয়ারের   কলকাতা মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়তে আসার সময় কাল টিতে হেডগেওয়ার ,ব্রিটিশ বিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র প্রতিরোধের সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে-  যে আরএসএসের  পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ,সেই বিষয়টি তারা তাদের কর্মী-সমর্থকদের মাথায় গেঁথে দিতে চায় – তার স্বপক্ষে প্রমাণ কি?
কোন্ তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তারা এইসব উদ্ভট দাবি করে –এ প্রশ্ন তোলা অত্যন্ত সঙ্গত ।
                 

লোকমান্য বালগঙ্গাধর তিলকের  বিচারের নামে প্রহসনের শেষে ছয় মাসের কারাবাস থেকে মুক্তি পান প্রধানত ম্যাক্সমুলার চেষ্টায় ।ম্যাক্সমুলার কে এই কাজের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে সেইসময় ভারতবর্ষের জাগ্রত বিবেকের যে আওয়াজ, সেই আওয়াজে ন্যুনতম ভূমিকা ছিল না হেডগেওয়ার, বি এস মুঞ্জে সহ তার সঙ্গীসাথী, যারা পরবর্তীকালে আর এস এস তৈরি করে তাদের।তাহলে প্রথম জীবনে কোথায়, কবে , কি ভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী কর্মকান্ড এবং বিপ্লবী পর্যায়ক্রমের সাথে হেডগেওয়ার যুক্ত রইলেন?
                

হেডগেওয়ারের কলকাতাতে ডাক্তারি পড়তে যাওয়ার আগের যে পর্যায়ক্রমে তার ব্রিটিশ বিরোধিতার আষাঢ়ে গল্পের ভিতর দিয়ে আর এস এস তাদের প্রতিষ্ঠাতাকে একজন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী হিশেবে দেখাতে চায়, সেই সময়কালে বোম্বাই প্রেসিডেন্সি জুড়ে যুব সম্প্রদায়ের ভিতরে তিলকের বিরুদ্ধে ব্রিটিশের অন্যায় ঘিরে যে ক্ষোভ, সেই ক্ষোভ প্রকাশের ন্যুনতম মাধ্যমে আমরা কিন্তু হেডগেওয়ারকে পাই না।ম্যাক্সমুলারের ভূমিকার দরুণ ব্রিটিশ যখন তিলকের শাস্তির মেয়াদ কমাতে বাধ্য হয়, তখন টাইমস অফ ইন্ডিয়া লেখে;
               ” we do not hesate to express our complete disagreement with the mistaken clemency which has prompted the Bombay Government to release Mr Tilk from confinement when one – third of his sentence remained unexpired.It will be interpreted as a sign of weakness and irresolution.The relise of Mr.Tilak was doubtless intended as an exhibition of generosity, but it will be regarded as a proof of repentance.Had Mr.Justice Strachey inflicted upon Mr.Tilak a severe and exemplary sentence, we should not have been inclined to quarrel with a remission of a portion of his punishment, but considering the exceptional gravity of the offence, the sentence was surprisingly light, and no good reason appears to have existed for reducing it”(Times of India08/09/1898)
                       

হেডগেওয়ার এবং আর এস এস প্রতিষ্ঠায় তার সবথেকে বড়ো সহযোগী, যিনি পরবর্তীতে মুসোলিনীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্কের ভিতর দিয়ে ফ্যাসিবাদী ধ্যানধারণাতে আর এস এসকে পরিচালিত করবার ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, সেই ডাঃ বি এস মুঞ্জে, যাদের বূরিটিশ বিরোধিতার কথা সঙ্ঘ খুব ফলাও ভাবে প্রচার করে থাকে, তিলকের উপর ব্রিটিশের এই নির্যাতন পর্বে তাদের টিকিটি কোথায় বাঁধা ছিল, সে সম্পর্কে সঙ্ঘ কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি শব্দ ও খরচ করে না।

Spread the word

Leave a Reply