২০০৯ সালে ৫টি দেশ মিলে তৈরী হয়েছিল BRICS । ব্রাজিল-রাশিয়া-ইন্ডিয়া-চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ঠিক তখন আমেরিকাতে তৈরী সাব প্রাইম বা বন্ধনী সংকটের হাত ধরে নিদারুণ এক অধ:পতনের মুখোমুখি হয়েছিল বিশ্ব পুঁজিবাদী দুনিয়া। অর্থনীতির মন্দায় আক্রান্ত অতলান্তিকের এপার ওপার সবাই। এখনও তার সমাধানের তল খুঁজে পাওয়া যায়নি। আসলে পুঁজিবাদী অর্থনীতির ধরনটা অনেকটা ত্যানা কাপড়ের মতো। একদিকে গিট্টু মারলে অন্যদিক ফেঁসে যায়।
২০২৩ সালের ২২-২৪ আগষ্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে যখন ব্রিকসের ১৫তম অধিবেশন বসেছে তখন পুঁজিবাদী বিশ্বায়নের পাগলা ঘোড়া দম হারিয়ে বেতো ঘোড়ায় পরিণত হয়েছে। খুব জোর করলেও বলা যাবে না বিশ্বের সব থেকে ধনী জোট জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো ঠিক কার হাতে রয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির চাবিকাঠি। আমেরিকা থেকে জার্মানি সবাই ধুঁকছে। আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক থেকে ক্রেডিস স্যুইস ব্যাঙ্ক দেউলিয়া। এরকম সময় ব্রিকসের বৈঠকে আরও ৬টি দেশ যুক্ত হলো। দেশগুলি হলো ইরান-সৌদি আরব- ইজিপ্ট -সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ,ইথিওপিয়া এবং আর্জেন্টিনা। সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়েছে ৪০টি দেশ ব্রিকসে যুক্ত হবার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ২২টি দেশ ইতিমধ্যেই আবেদন করেছে।
কি এমন ঘটলো যে দুনিয়ার তাবড় তাবড় সংগঠন থেকে মুখ ফিরিয়ে কেন এখন ব্রিকসে ঢুকতে চাইছে বহু দেশ । আসলে রকমারি বিজ্ঞাপনের চটক উড়ে গেছে। যেসব কথাগুলো বলা হয়েছিলো যে শ্রম, মেধা, প্রযুক্তি, পুঁজি, জ্ঞান সব কিছুর পৃথিবীজোড়া বাধাহীন সুষম বিস্তার ঘটবে। যা বলেছিল তা হয়নি। একমাত্র পুঁজির অবাধ যাতায়াত ঘটেছে। ফাটকা পুঁজির আর্বিভাব ও অন্তর্ধানে এক একটা দেশ দুমড়েমুছড়ে গেছে, কাঠামোগত পূর্নবিন্যাসের নামে একটা দেশের সার্বভৌম অস্তিত্ব ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় বড়লোক কোম্পানী আর ধনী দেশগুলোর একচেটিয়া দাপাদপি। নানান বিধিনিষেধের রমরমা।
ফলত সংকট বাড়তে থাকলো। উন্নত দেশগুলোর রাজনীতিতে নয়া ফ্যাসিস্ত দলবলের সুর চড়া হতে লাগলো। ট্রাম্প থেকে ফ্রান্সের লা পেন, জার্মানির AFD হয়ে ইতালিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্ষমতাসীন হলো নয়া ফ্যাসিস্ত ‘ব্রাদার্স অব্ ইতালি’। যাদের মূল কথাই হলো – উগ্র জাতীয়তাবাদ। সংকট ঘনীভুত হলো।
নরেন্দ্র মোদি অথবা ইজিপ্টের এর সিসি, তো কোনদিন এই রাজনীতির বিপক্ষে ছিলেন না, তাহলে? ইরান ও সৌদি আরব তো পরস্পরের শত্রু । ইসলামিক দুনিয়ার সিয়া-সুন্নি বিরোধ তো সুপ্রাচীন কালের। এক হলেন কেন?
কারণ অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা। ঐ ধনী দেশগুলির ইচ্ছেমতো চাপিয়ে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা, বেগোরবাই করলেই নানান শর্তর কড়া দাওয়াই পরিস্থিতি ঘোরালো করেছে। অবস্থাটা কি রকম জটিল বোঝার জন্য একটিমাত্র দেশের কথা উল্লেখ করছি – ইরান। সে তার খনিজ তেল বিক্রি করতে পারবে না এমনকি যারা ওদের থেকে কিনবেন তাদেরকে নানানভাবে বানিজ্য জগতে অপদস্থ করবে আমেরিকা। কিন্তু সর্বশেষ কঠিন অবস্থান হলো ইরান তার বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় যে সব উন্নত দেশগুলির ব্যাঙ্কে রেখেছে তাও তারা ব্যবহার করতে পারবে না। তাহলে দেশটা চলবে কি করে?
ভাত দেবার নাম নেই, কিল মারার গোঁসাই ,এই মার্কিন দাদাগিরি এখন দেশে দেশে চলছে। বিশ্বের ঐ উন্নত ৭টি দেশ বর্তমানে ৩৬টি দেশের ওপর নানান কিসিমের বিধি নিষেধাজ্ঞার পরোয়ানা ঝুলিয়ে রেখেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশে দেশে এখন চলছে নয়া উদার অর্থনীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য জন মতের বিস্ফোরণ। ভেনেজুয়েলাতে চলছে চরম মুদ্রাস্ফিতি। অথচ তৈল বন্দর ব্রজগ্রান্দতে কোনও জাহাজ ভিড়তে পারবে না। এরফলে একদিকে বিশ্বায়নের জোলাপ দিয়ে সমস্যা আটকানো যাচ্ছে না অন্যদিকে উন্নত দেশগুলিও সঙ্কটে ভুগছে। ইউরো ইউনিয়ন ভেঙে গ্রেট ব্রিটেন বেরিয়ে গেল কেন? মুনাফায় টান পড়েছে। তার ওপর ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ঠিকানা ব্রাসেলসের কর্তাবাবাদের নানান বিধি-নিষেধ। তীব্র হচ্ছে শ্রমিক অসন্তোষ। ঘরে বাইরে দুদিকের ঠ্যালা সামলাবার মুরোদ নেই। তার থেকে বেরিয়ে যাওয়া ভালো। একটার পর একটা বিলিতি সরকারের শীঘ্রপতন ঘটছে।
বিশ্বায়নের বজ্র আটুনি যতো বেশি ফস্কা গেরোতে পরিণত হয়েছে ততো বেশি গোটা পৃথিবী জুড়ে বহুমুখি বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। যারা ভেবেছিলেন দাঁও মারবেন তারা বুঝছেন যে টক্কর নেবার দেশ হাজির হয়েছে।
নি:সন্দেহে তার নাম চীন। বাণিজ্যের সমস্ত শাখাতেই তার উজ্জ্বল উপস্থিতি তাক লাগিয়ে দেবার মতো। কৃত্রিম মেধা বিপনি থেকে সোয়াবিন চাষ কোনটাতে নেই। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পুঁজিবাদী জোটের এখন পয়লা টার্গেট হলো চীন। অবস্থাটা কিরকম ঘুরে গেছে বুঝে নেবার জন্য শুধু আফ্রিকা মহাদেশের দিকে তাকান। অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী এই মহাদেশ গৃহযুদ্ধ – জাতিদাঙ্গায় বিপর্যস্ত। নানান সামরিক জোটের দ্বন্দ্ব ও নির্বিচার গণহত্যা মহাদেশটাকে রক্তশূণ্য করে দিয়েছে। মাটির তলার সম্পদের ওপর একচেটিয়া দখল রাখতে বহুজাতিক কোম্পানীগুলো এসব কাজিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে টিকিয়ে রাখে। এতে সরকারগুলো হয়ে পরে বেপুথু অন্যদিকে নির্ভরশীল হয়ে পরে ঋণের জন্য। IMF, WB এদের কাছে যায় যাদের পরিচালনমন্ডলীর সদস্যগুলো হল মূলত: ঐ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ছাপ্পা মারা লোক। রক্তের গন্ধে খুশবু ছড়ালেই কি আতর হয়?
ঠিক এই জায়গাতেই সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশে বন্ধু দেশের নাম চীন। সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া থেকে শিল্প-প্রযুক্তি সরবরাহ সবকিছুতেই এগিয়ে এসেছে চীন। খুব সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাঙ্কের দেওয়া তথ্য বলছে গোটা আফ্রিকার ৪৯টা দেশের ৩৯% ঋণ রয়েছে বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক অর্থভান্ডারের কছে। ৩৫% ঋণ নিয়েছে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির কাছ থেকে। ১২% ঋণ নিয়েছে চীনের কাছ থেকে। অঙ্কের হিসেবে চীন অনেক পিছিয়ে। তাহলে এতো হৈ চৈ হচ্ছে কেন? কারণ দেশগুলো তার ঋণের জন্য ভিক্ষে করতে যাচ্ছে না ওইসব ধান্দাপুঁজির তালেবরদের কাছে। বর্হিবানিজ্যের অভিমুখ এতটাই ঘুরে গেছে যে আজ নয় – ২০০৯ সালেই সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশের বর্হিবাণিজ্যের নিরিখে আমেরিকাকে টপকে যাওয়া দেশটার নাম চীন।
গত দেড়বছরের ওপর চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। রাশিয়া যে সব ঠিকঠাক, পুতিন একেবারে কষ্টিপাথরে ঘষা স্বচ্ছ মানুষ তা নয়। কিন্তু বহুদিন থেকেই রাশিয়ার একটা অভিযোগ সর্বাগ্রে সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনার সামরিক জোট ন্যাটো সারা ইউরোপকে পকেটে পুরে রাশিয়ার সীমান্তে হাজির হয়েছে। ব্যাপারটা দুদিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এক , ইউরোপের বহু দেশে নয়া ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন শুরু হয়েছে। যার অন্যতম শক্তিশালী অবস্থান হচ্ছে ইউক্রেন, যাকে সবরকমভাবে মদত দিয়ে চলেছে আমেরিকা, গ্রেট ব্রিটেন। সারা ইউরোপ বলছি না কারণ এ প্রশ্নে জার্মানি ও ফ্রান্সের বেশ কিছুটা ভিন্ন অবস্থান রয়েছে। দু্ই ,সোভিয়েত উত্তর লরঝড়ে হয়ে যাওয়া রাশিয়ার অর্থনীতি তেল ও গ্যাসের ব্যবসাতে বিপুলভাবে লাভ করেছে। এতে শঙ্কায় পরে গিয়েছে বহুজাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলো। একদিকে রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অন্যদিকে মুনাফার কাঁটায় টেনশন ধরা পড়েছে।
সুতরাং বিশ্ববাজারে যদি রাশিয়ার প্রভাব ঠেকাতে হয় তাহলে তাকে যুদ্ধে নামিয়ে দাও। কিন্তু হিসেবটা বড্ডো কাঁচা হয়েছে। কারণ ধারণা ছিলো যদি রাশিয়ার গ্যাস ও তেলের বড়ো খরিদ্দার ইউরোপ জুড়ে সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া যায় তাহলে খাবে রাম ধাক্কা। হলো না, ধাক্কা খাবার বদলে ঐ রাশিয়ার খনিজ তেল কমদামে বিপুল পরিমাণে কিনে আবার ঐ ইউরোপেই বেশিদামে বিক্রি করে বিরাট বিদেশী মুদ্রা অর্জন করলো ভারতবর্ষ। ধাক্কা খাবার বদলে এই দুসরা সব হিসেবকে গুবলেট করে দিলো। গত দেড় বছরে রাশিয়ার তেলের সব থেকে বড়ো খদ্দের হলো দুটো দেশ চীন এবং ইন্ডিয়া।
এই তেলের হিসেবেই গোটা পৃথিবীতে আমেরিকা একঘরে হয়ে গেলো। কিরকম ? বিশ্বে সবথেকে বেশি তেল পাওয়া যায় যেসব দেশে তারা হলো রাশিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইরাক, ইরান, সৌদি আরব, কুয়েত, সিরিয়া, নাইজেরিয়া ইত্যাদি। আমেরিকা আন্তর্জাতিক তেলবাজারে রাশিয়াকে কড়কে দেবার জন্য তার প্রভাব খাটিয়ে ঠিক করলো একটা নির্দিষ্ট দামে তেলের দাম স্থির রাখতে হবে। এতে এসব দেশগুলো ব্যাপক ক্ষীপ্ত হলো। রাশিয়া করলো কি, এসব তেলের মজুত দেশগুলিকে বললো উৎপাদন কমিয়ে দিন। কারণ বাজারে চাহিদা কম। এমনকি ‘ওপেক’ যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব সবথেকে বেশি তারাও বলে দিলো “উৎপাদন কম করতে হবে”। ব্যাস পাশার দান উল্টে গেলো। বাজারে তেল কম সরবরাহ হলে স্বাভাবিকভাবেই দাম চড়তে থাকলো। রাশিয়া সমেত বাকি দেশগুলোর পোয়াবারো। এমনকি গোটা মধ্য এশিয়াতে আমেরিকার সব থেকে বিশ্বস্ত সৌদি আরবও তেল প্রশ্নে বিগড়ে গেলো। মারতে গেলো ছক্কা, বেরিয়ে এলো পুট।
এসব ওঠানামতে যা হলো তাতে ব্রিকসের মুখ্য দেশগুলির পারস্পরিক অবস্থান, বোঝাপড়া যথেষ্ট কাছাকাছি এলো এবার যদি ঐ বিধ্বংসি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে রেহাই পেতে হয় তাহলে এমন কোনও জোটে যাওয়া নিরাপদ সেখানে এসব ছলচাতুরি নেই। এদিক থেকে ‘ব্রিকস’ আপাতত ঠিকঠাক। এছাড়া রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য দেশ হচ্ছে রাশিয়া ও চীন, যাদের ভেটো দেবার ক্ষমতা আছে। সুতরাং বিপদে পড়লে বিপত্তারিনির সুতো পরলে কিস্যু হবে না। এরাই ঠেকাবে।
এবার দেখা যাক নতুন ৬টি দেশকে নিয়ে নবগঠিত ব্রিকসের ১১টি দেশ কি করবে বলে জানালো। প্রথমত -ব্রিকসের বাণিজ্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের নিজস্ব মুদ্রাভিত্তিক বিনিময় ব্যবস্থা চালু হবে । এটা যদি সত্যি সত্যি করতে পারে তাহলে ডলার পোক্ত বুনিয়াদ কেঁপে উঠবে। কারণ বিশ্ববাণিজ্যে মূলত চলে ডলার কেন্দ্রীক লেনদেন। ফলত ডলার শক্তিশালী হয় এবং আমেরিকার দাদাগিরিও চলে। দ্বিতীয়ত – যদি ব্রিকসের অর্ন্তভুক্ত কোনও দেশ সঙ্কটে পড়ে তাহলে বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে পারবে উদ্বৃত্ত দেশ। যদি আর্জেন্টিনা কমজোরি হয়ে পড়ে তাকে সাহায্য করতে পারে চীন। এটা একটা চমৎকার বিকল্প ব্যবস্থা। তৃতীয়ত – ২০১৪ সাল থেকে চালু হয়েছে ব্রিকসের নিজস্ব ব্যাংক New Devlopment Bank যার চেয়ারম্যান হচ্ছেন দিলমা রৌসেফ। কে এই দিলমা? ব্রাজিলের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। যার বিরুদ্ধে ঝুটা দুর্নীতির অভিযোগ চাপিয়ে সরকারটা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছিলো। ক্ষমতার তক্তে বসানো হলো নয়া ফ্যাসিস্ত বোলসোনারোকে। ওয়াশিংটনের তুতোভাই ক্ষমতায় এসেই পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন অরণ্যকেই বিক্রি করে দেবার ব্যবস্থা করেছিলেন। এসব লোক নিজের মাকে চিতায় তুলে তার আগুনে কল্কে ধরাতে পারে।
কিন্তু দিলমা একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেন যে কোনও দেশের ঋণ মুকুব করার জন্য ধার দেওয়া যাবে না। বরং পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য অর্থ সাহায্য করা হবে। তৃতীয় বিশ্বের মানুষ দিলমা জানেন ঋণের জাল কিভাবে ছিবড়ে করে দিচ্ছে একটার পর একটা দেশকে। সাম্প্রতিকতম উদাহারণ – দেউলিয়া শ্রীলংকা।
বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার সোভিয়েত উত্তর একমেরু বিশ্ব বিলুপ্তির পথে। নতুন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে গণতন্ত্র ও সঠিক বিচারবোধ থাকা প্রয়োজন। উত্তরের গুটিকয়েক দেশের প্রতি এটা বিশ্বজোড়া বাকি দক্ষিণের দেশগুলির বহু দিনের দাবী ছিলো। কর্ণপাত না করাটাই ছিলো দস্তুর। ‘ব্রিকস’ এই পর্যালোচনাকে সম্মান জানাবে এটাই আশা।
একটা প্রশ্ন “ব্রিকস” কি নয়া সাম্রাজ্যবাদের বিকল্প ? মনে হয় না। তার কারণ ‘ব্রিকস’ ভুক্ত বহু দেশ অভ্যান্তরীন ক্ষেত্রে সবরকম ব্যাভিচারকে নিয়ম করে ফেলেছে। তবে এটা নিশ্চিত যে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন দেশগুলির থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে অবশিষ্ট প্রচুর দেশ। এটা ইতিবাচক। পুঁজিবাদী দুনিয়ার ফাটল ধরছে।