বাবিন ঘোষ
‘This above all: to thine own self be true,
And then it must follow as the night the day,
Thou canst not then be false to any man.’
শেক্সপীয়রের হ্যামলেট নাটকের পোলোনিয়াসের এই সংলাপ জর্জি দিমিত্রভ লিখে রেখেছিলেন তাঁর ডায়রিতে, যখন তিনি নাৎসী জার্মানির জেলে বন্দি। নিজের প্রতি সৎ থাকা মানে গোটা দুনিয়ার সামনেও সৎ থাকা। রাইখস্তাগে আগুন লাগানোর মিথ্যা মামলায় ১৯৩৩ এর জানুয়ারির শেষ দিকে গ্রেপ্তার করা হয় দিমিত্রভ’কে। সেই লিপজিগ মামলায় নিজের তরফে নিজেই সওয়াল করেন। একবারের জন্যেও নিজের কমিউনিস্ট পরিচিতি কে লুকোনোর চেষ্টা করেন নি নাৎসী জমানায় আদালতে দাঁড়িয়ে। বরং আদালত কক্ষকে ব্যবহার করলেন কমিউনিস্ট মতাদর্শ প্রচারের কাজে। তীক্ষ্ণ যুক্তিবাণে, অথচ শিষ্ঠাচার বজায় রেখেই, যুক্তি আর প্রতিযুক্তি দিয়ে ফালাফালা করলেন সরকারী পক্ষের সকল সাজানো সাক্ষীদের বয়ানকে। সরকারি তরফে শেষ পর্যন্ত কৌঁসুলি হিসাবে নামানো হয় থার্ড রাইখের প্রায় দ্বিতীয় সবচাইতে শক্তিশালী নেতা এবং সে সময়ের নাৎসী জার্মানির প্রধানমন্ত্রী হার্মান গোয়েরিং কে। আদালতে গোয়েরিঙের সওয়ালকে এমন সুচারুভাবে ছিন্নভিন্ন করলেন দিমিত্রভ নিজে, যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গোয়েরিঙ তাঁকে আদালতের বাইরে “দেখে নেওয়ার” হুমকি দিয়ে বসল’! কিন্তু বিচারে শেষ পর্যন্ত মুক্তি দিতেই হল’ দিমিত্রভ কে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা একটি অভিযোগ ও প্রমাণ করতে সক্ষম হল’ না মহাশক্তিধর থার্ড রাইখের কৌসুলিরা।

অধ্যয়ন ছিল তাঁর যাপনের একটি অঙ্গ। সাহিত্য, রাজনীতি, ইতিহাস নিয়ে প্রগাঢ় পড়াশোনা তো ছিলই, রাইখস্তাগ (তদানীন্তন জার্মান সংসদ ভবন) এ আগুন লাগানোর মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলে যাওয়ার পর থেকে এই সকল পড়াশোনার বিষয়ের সাথে যুক্ত হল’ আইন। ১২ বছর বয়স থেকে ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য, ১৮’এ পা দিয়েই বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়া শহরের ছাপাখানা কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়নের নেতা হওয়া মানুষটা প্রথাগত পড়াশোনার সুযোগ তেমন পেলেন কই? কিন্তু লেনিনের রাজনীতির এক উদ্যমী ছাত্র হিসাবে স্পষ্ট বোধ তাঁর ছিল যে
‘বুদ্ধি দিয়ে চিন্তা দিয়ে বিপ্লবের কাজে সাফল্যের সঙ্গে অংশগ্রহন করতে হলে অধ্যয়ন অপরিহার্য।’
তাঁর নিজের দেশ বুলগেরিয়া’র ইতিহাস সম্বন্ধে অত্যন্ত সচেতন এবং গর্বিত ছিলেন। তাঁর দেশে তুর্কি সাম্রাজ্যবাদী দখলদারির বিরুদ্ধে পাঁচশ’ বছরের মুক্তির সংগ্রাম তাঁকে প্রতিনিয়ত উদবুদ্ধ করেছে। নিজের মাতৃভাষার প্রতি অকুন্ঠ ভালবাসা ছিল। তাঁর নিজের এবং সর্বোপরি তাঁর নেতৃত্বে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন বুলগেরিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির ফ্যাসিবিরোধী দৃঢ় অবস্থান এবং অকৃত্রিম দেশপ্রেম সে দেশের মানুষকে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পথে উদবুদ্ধ করেছিল। বলকান ইতিহাসের নামি (এবং অ-বাম) গবেষক ইয়ানিস সিকেলস তার ‘ন্যাশনালিজম ফ্রম দ্য লেফট’ গ্রন্থে বিশদে লিখেছেন কীভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বুলগেরিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি সে দেশের মানুষের ফ্যাসিস্ত সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় সংগ্রামের অন্যতম মঞ্চ হয়ে উঠেছিল। সিকেলস যদিও এই সাফল্যের পেছনে দিমিত্রভের ‘জাতীয়তাবাদী কৌশল’-কেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, দিমিত্রভের গোটা রাজনৈতিক জীবনটা দেখলে বোঝা যায় যে দেশপ্রেম তাঁর জীবনদর্শনের একটা ভিত্তি ছিল’, স্রেফ কোনো চালাকির বিষয় ছিলনা। লিপজিগ শহরের আদালত কক্ষে রাইখস্তাগ মামলায় সরকারি পক্ষের তরফে তাঁকে “বর্বর বুলগেরিয়ান” বলে সম্বোধন করা হয়। তিনি শান্তভাবে জবাব দিয়েছিলেন যে বুলগেরিয়ার তদানীন্তন জার্মান-মদতপুষ্ট ফ্যাসিস্ত শাসকগোষ্ঠী যথার্থভাবেই বর্বর। কিন্তু সাধারণ বুলগেরিয় নাগরিকেরা সাংস্কৃতিকভাবে ঋদ্ধ একটি জাতি যারা তাদের মাতৃভাষাকে, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে লাগাতার পাঁচশ বছর ধরে মমতার সাথে রক্ষা করে, চর্চা করে চলেছেন তুর্কি দখলদারীদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও। মাথার উপর মৃত্যুর পরোয়ানা থাকা অবস্থায় এসব বক্তব্য স্রেফ ‘কৌশল’ হতে পারে না! বিশ্বযুদ্ধের পরেও যখন দেশ পরিচালনার প্রশাসনিক দায়িত্ব পান দিমিত্রভ, যুগোস্লাভিয়া ও ম্যাসিডোনিয়ার সাথে একত্রে ‘দক্ষিণী স্লাভ ফেডারেশন’ গ’ড়ে তোলার চেষ্টা করেন। নিজের মাতৃভাষা, সেই ভাষার মানুষ ও দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি গভীর ভালবাসা বাদে এ ধরনের ভাবনা ও পরিকল্পনা সম্ভব হতে পারেনা। আবার এই মানুষই ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন মানুষের আন্তর্জাতিক সংহতি গ’ড়ে তোলার প্রয়োজন বুঝতেও ভুল করেননি। আসলে লেনিনবাদী চর্চায় খেটে খাওয়া মানুষের শ্রেণীসংগ্রামের একেকটি পর্যায়ের একেকটি স্তরে প্রধান দ্বন্ধকে ঠিকমত চিহ্নিত করার যে প্রক্রিয়া এবং সেই দ্বন্ধের নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সকল প্রয়োজনীয় শক্তির সমন্বয় ঘটানো যে কোনো ডগমা নয়, তা বুঝতে অহরহ ভুল হয়ে যায় অনেকেরই।
কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের বিখ্যাত সপ্তম কংগ্রেসে তাঁর সেই বিখ্যাত বক্তব্য রাখার আগেও তিনি ফ্যাসিবাদের স্বরূপ বুঝেছিলেন? ফ্যাসিবাদের যে সংজ্ঞা তিনি সূত্রায়িত করেন এবং সহজ ভাষায় সপ্তম কংগ্রেসে পেশ করেন, সেটা তিনি স্রেফ বই পড়েই বুঝে গেছিলেন? ১৯২২ সালের অক্টোবর মাসে ইতালিতে ঘটে গেছিল মুসোলিনি’র নেতৃত্বে ‘মার্চ অন রোম’। ফ্যাসিস্ত পার্টি ক্ষমতায় এল। এর মাত্র কয়েক মাস বাদেই ১৯২৩ সালে বুলগেরিয়ায় ক্যু ঘটিয়ে ক্ষমতায় এলো সে দেশের ফ্যাসিস্তরা। সেপ্টেম্বর ১৯২৩ এর বুলগেরিয়ায় ফ্যাসিবিরোধী পালটা গণ অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ছিলেন দিমিত্রভ। সেই অসফল পালটা অভ্যুত্থানের শাস্তি হিসাবে পরবর্তী ২২ বছর তাঁকে নিজের দেশছাড়া হয়ে থাকতে হয়। নিজের চোখে দেখেছেন জার্মানিতে ফ্যাসিবাদী রাজনীতির উত্থান একদম গোড়া থেকে। সেই ফ্যাসিস্ত নাৎসী সরকারের দেওয়া মিথ্যা মামলায় জেলে থাকতে হয়েছে দীর্ঘদিন, লিপজিগ আদালতের রাইখস্তাগ অগ্নিসংযোগ মামলায় অসামান্য আইনি লড়াই জিতে ছিনিয়ে আনতে হয়েছে নিজের মুক্তি। চোখের সামনে দেখেছেন জার্মানিতে কীভাবে বামপন্থী ও বৃহত্তর গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের অনৈক্যের ফায়দা তুলে নাৎসীরা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন না করা সত্ত্বেও ক্ষমতা দখল করেছিল। কীভাবে ক্ষমতা দখলের পরে বামপন্থীদের আক্রমণ করা তো বটেই, বুর্জোয়া সংসদীয় রাজনীতিকেও মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল নাৎসীরা। মানে, ব্রেখটের সেই চরিত্র আর্তুরো উই-এর প্রতিহতযোগ্য উত্থান ‘resistible rise’-কে প্রতিহত করতে না পারার গোটা ইতিহাস তিনি দেখেছিলেন এবং তার থেকে শিক্ষা নিয়েছিলেন। আবার এর উল্টোদিকে তিনি দেখেছিলেন তাঁর সেই মামলা চলাকালীন কীভাবে দেশ বিদেশের বৃহত্তর গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন মানুষ (অ-কমিউনিস্ট হওয়া সত্ত্বেও) তাঁর অন্যায় বন্দিদশার বিরুদ্ধে, নাৎসীদের নগ্ন স্বৈরতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন। ব্রিটেনের তৎকালীন সলিসিটর জেনারেল স্যার স্ট্রাফোর্ড ক্রিপ্স (পরবর্তীকালে ভারতবর্ষে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে এসেছিলেন) লন্ডনে গঠিত ‘কমিশন অফ এনকোয়ারি ইনটু দ্য বার্নিং অফ রাইখস্তাগ এর প্রথম অধিবেশনে প্রধান বক্তা হিসাবে এসেছিলেন। ফিনান্স পুঁজির নগ্ন এবং বর্বর যে শক্তি ফ্যাসিবাদের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়; খেটে খাওয়া মানুষের সকল অধিকার, মর্যাদা এবং গোটা মানবিক অস্তিত্বকেই যে মতবাদ ধ্বংস করে দিয়ে আধুনিক দাস ব্যবস্থা চায়, সেই রাজনীতি যে রেহাই দেয়না উদারপন্থী বুর্জোয়া মূল্যবোধকেও, এই বুনিয়াদি উপলব্ধি দিমিত্রভের পরবর্তী জীবনের রাজনৈতিক অবস্থান নির্মাণ করতে সাহায্য করে। তাঁর সমকালীন কমিন্টার্নের নেতৃত্বের মধ্যে তিনি বাদে শুধুমাত্র আন্তনিও গ্রামশী আর পালমিরো তোগলিয়াত্তির ফ্যাসিবাদ মোকাবিলার ফার্স্টহ্যান্ড অভিজ্ঞতা ছিল। ১৯২৩ এ বুলগেরিয়ায় অ্যাগ্রেরিয়ান পার্টির নির্বাচিত সরকারের যখন বিলোপ ঘটে ফ্যাসিস্ত ক্যু-এর মাধ্যমে, বুলগেরিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি এবং তাঁর নিজের সেই সময়ের রাজনৈতিক ভ্রান্তির কথা দিমিত্রভ নিজেই বারেবারে স্বীকার করেছেন। একজন প্রকৃত মার্কসবাদী-লেনিনবাদীর মতই তিনি সে ভ্রান্তির থেকে শিক্ষা নিয়ে অ্যাগ্রেরিয়ান পার্টির সাথে যুক্তফ্রন্ট গঠন করতে নেতৃত্ব দেন। নাৎসীদের ক্ষমতা দখলের আগেই ১৯২৯ সালে তিনি বার্লিনে অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট কংগ্রেসে যোগ দেন যেখানে ২৪টি দেশের ৩০০ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। নিজের দেশের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে এবং বলকান দেশগুলির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তিনি নাৎসীদের ক্ষমতায় আসার আগেই ফ্যাসিবাদের প্রকৃত স্বরূপ এবং সেই অপশক্তিকে মোকাবিলা করার ঠিক রাজনীতিটাকে খুঁজে নিতে পেরেছিলেন। এই খোঁজ তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়েছিল নিরন্তর অধ্যয়ন, সাংগঠনিক কাজ এবং ক্রমাগত পর্যালোচনার মাধ্যমে। এই অতি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাসিবিরোধী রাজনীতিতে খেটে খাওয়া শ্রেণীর স্বদেশপ্রেম, জাতিসত্ত্বা, সাংস্কৃতিক ইতিহাসকে একেকটি উপাদান হিসাবে প্রয়োজনীয় পরিমার্জন সহ সমন্বয়ের প্রয়োজন তিনি উপলব্ধি করেছিলেন। তদানীন্তন বামপন্থী সঙ্কীর্ণতাবাদের বিরুদ্ধে তাঁর ফ্যাসিবিরোধী রাজনীতিকে লড়াই করে এগোতে হয়েছে। আবারও ফিরে যেতে হয় রাইখস্তাগ মামলায় তাঁর সওয়ালে, যেখানে তিনি ফ্যাসিবিরোধীতার পথকে ব্যখ্যা করেছিলেন ‘Mass front, mass struggle, mass resistance, united front- no adventures… such is the Alpha and Omega of Communist tactics’ বলে। অ-কমিউনিস্ট ইতিহাসবিদ জেন দেগ্রাস দিমিত্রভের এই যুক্তফ্রন্টের লাইনকেই অন্যতম কারণ মনে করেছেন ত্রিশের দশকে একের পর এক দেশে কমিউনিস্ট পার্টির অগ্রগতির পেছনে।
দিমিত্রভের বুঝতে ভুল হয়নি যে ফ্যাসিবিরোধী রাজনীতির ক্ষেত্রে যুক্তফ্রন্ট গঠনের গুরুত্ব। আবার এও তিনি বুঝেছিলেন যে আলাদা আলাদা শ্রেণীর প্রতিনিধিত্বকারী শক্তির মিলমিশে গড়ে ওঠা যুক্তফ্রন্টের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণপন্থী বিচ্যুতি প্রবেশ করতে পারে কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে, যার বিরুদ্ধেও নিরবচ্ছিন্ন লড়াই প্রয়োজন। যুক্তফ্রন্ট রাজনীতির ভিত্তি হতে হবে সুস্পষ্ট ফ্যাসিবিরোধী, স্বৈরতন্ত্রবিরোধী নীতিগত অভিন্ন অবস্থান, আলাদা আলাদা দলের আলাদা আলাদা শ্রেণী অভিমুখ থাকা সত্ত্বেও। এই অবস্থানের প্রশ্নে ভিন্নতা নিয়ে, অনৈক্য নিয়ে যুক্তফ্রন্ট রাজনীতি সম্ভব না। যুক্তফ্রন্ট রাজনীতির প্রয়োজনে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিজের ভূমিকা প্রচ্ছন্ন রাখতেও হতে পারে কিন্তু তার মানে এই নয় যে কমিউনিস্ট পার্টি তার স্বাধীন শক্তির বিকাশে সামান্যতম শৈথিল্যকেও প্রশ্রয় দেবে কিংবা কোনো বুর্জোয়া দলের লেজুড়বৃত্তি করবে।
আজ, ১৮ই জুন, সর্বহারার মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম এক শিক্ষক জর্জি দিমিত্রভের জন্মদিন। যিনি তাঁর অর্জিত শিক্ষাকে হাতে কলমে সাফল্যের সাথে প্রয়োগ করে দেখিয়েছেন বিশ্ব ইতিহাসের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে। আজ যখন নয়া-ফ্যাসিবাদী রাজনীতি মাথাচাড়া দিচ্ছে তখন ভারত এবং গোটা বিশ্বজুড়েই, দিমিত্রভের প্রণীত রাজনৈতিক লাইনের গভীর চর্চা আবারও জরুরি। মনে রাখা জরুরি যে দিমিত্রভের যুক্তফ্রন্টের লাইন তৈরি হয়েছিল মূলতঃ ইউরোপীয় ফ্যাসিবাদের অভিজ্ঞতার উপর। কিন্তু ঐ রাজনীতির সাধারণ সূত্রগুলো আজও বিভিন্ন দেশে তাদের নিজস্ব পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োগ করা চলে কারণ পুঁজিবাদের সঙ্কটের মূল কারণগুলির মৌলিক ভিত্তি পাল্টে যায়নি এবং সে সংকট থেকে জন্ম নেওয়া ফ্যাসিবাদই আজকের দুনিয়ার দস্তুরমতো নয়া-ফ্যাসিবাদ হিসাবে নিজেকে তুলে ধরছে। যদিও গত ৮০ বছরে তার ফর্ম অনেকখানি পালটে গিয়েছে। এ কারণেই দিমিত্রভ ও তাঁর রাজনীতি কালোত্তীর্ণ হতে পেরেছে।