নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এনডিএ সরকারের আট বছর হয়ে গেছে। বিজেপি এই বার্ষিকীটি যথেষ্ট বড় ভাবে পালন করছে, এটিকে এই বছরের শেষের দিকে একাধিক রাজ্যের, তার মধ্যে গুজরাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজ্য, নির্বাচনের জন্য তাদের নির্বাচনী প্রচারের সাথে যুক্ত করেছে।শাসক দল সম্প্রতি জয়পুরে তার সমস্ত জাতীয় ও রাজ্য পদাধিকারীদের একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিল যেখানে মোদি সরকারের বিভিন্ন কৃতিত্বের বর্ণনা দিয়ে একটি দীর্ঘ বিবৃতি জারি করা হয়েছিল।এছাড়াও এই সভায় ৩০মে থেকে ১৫জুন পর্যন্ত বর্ষপূর্তি উপলক্ষে একটি ত্রিবিধ স্লোগান ঘোষণা করা হয়েছিল। স্লোগানটি হল- সেবা, সুশাসন, গরীব কল্যাণ।
এটা নিষ্ঠুর পরিহাস যে ক্ষমতাসীন দল এসব স্লোগান বেছে নিয়েছে। আট বছরে, মোদি সরকার দেশের কর্পোরেট সেক্টরে পরিষেবা প্রদানের জন্য নিরলস এবং উদ্যোগীভাবে নিজেকে উৎসর্গ করেছে, এই সরকার এই সেক্টরকে উপকৃত করার জন্য তাদের কল্যাণ এবং উপযোগী শাসনব্যবস্থা রক্ষা করার জন্য দিনরাত কাজ করেছে।আমরা সবাই জানি, এই সরকার হল শাসক শ্রেণীর জন্য কার্যনির্বাহী কমিটি। কিন্তু দেশি-বিদেশি বড় পুঁজির জন্য এত খোলাখুলি ও নির্লজ্জভাবে কাজ করতে ভারত আগে কখনও দেখেনি।
মোদি সরকার কর্পোরেট সেক্টর, বড় জমির মালিকদের জন্য এবং তাদের তাঁবেদারদের জন্য কাজ করছে এমন কিছু উদাহরণ দেখা যাক।
সুশাসন – ধনীদের অনুকূলে আইন প্রণয়ন
মোদি সরকার বেশ কিছু আইন তৈরি করেছে ধনী ব্যক্তিদের, বিশেষ করে কর্পোরেট সেক্টরকে সুবিধা দেওয়ার জন্য। তার মধ্যে কয়েকটি হল:
• শ্রম কোড: ২৯টি বিদ্যমান শ্রম আইন বাতিল করা হয়েছে এবং ২০১৯ এবং ২০২০ সালে পার্লামেন্ট দ্বারা পাস করা চারটি শ্রম কোডে ‘একত্রীকরণ’ করা হয়েছে।এগুলি হল – মজুরি, শিল্প সম্পর্ক, সামাজিক নিরাপত্তা এবং পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং কাজের শর্তাবলী সংক্রান্ত। একত্রে, এই কোডগুলি শোষণ, কম মজুরি, চাকরি থেকে বরখাস্ত, স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ ইত্যাদির বিরুদ্ধে পূর্ববর্তী শ্রম আইন দ্বারা প্রদত্ত সামান্য যে সুরক্ষা ছিল তা ধ্বংস করে।নতুন কোডগুলি নিয়োগকর্তাদের জন্য ইচ্ছামত নিয়োগ এবং ছাঁটাই অধিকারকে অন্তর্ভুক্ত করে, নির্দিষ্ট মেয়াদী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের উপায় পরিবর্তন করে, কাজের সময় বৃদ্ধির অনুমতি দেয়, শ্রম আইন বাস্তবায়নের ব্যবস্থাগুলিকে প্রায় শেষ করে দেয় এবং সংগঠিত হওয়ার অধিকার কঠিন করে।এগুলি সবই কর্পোরেট সেক্টরের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এবং মোদী সরকার সেগুলি পূরণ করেছে,এই পথে না যাওয়ার জন্য শ্রমিক শ্রেণীর আন্দোলনের দাবিকে উপেক্ষা করেই। এই কোডগুলির অধীনে যে নিয়মগুলি তৈরি করা দরকার তা এখনও প্রস্তুত নয়, কারণ সেগুলি রাজ্য সরকারগুলিকে তৈরি করতে হবে ৷ কিন্তু বেশিরভাগ বিজেপি রাজ্য সরকার কোডগুলো নিয়ে এগিয়ে গেছে এবং তাদের নিজস্ব অধ্যাদেশ বা আইনের মাধ্যমে কোডগুলিকে অক্ষরে অক্ষরে প্রয়োগ করেছে। এর ফলে চাকরির বিশাল নিরাপত্তাহীনতা,মজুরির স্থিতাবস্থা, কাজের অবস্থার অবনতি এবং শ্রমিকদের উপর কাজের চাপ বেড়েছে।অন্যদিকে, গত কয়েক বছরে শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে কারণ তারা অতিমারি চলাকালীন শ্রমিকদের ছাঁটাই করেছিল শুধু তাদের লাভের পরিমান বজায় রাখার জন্য। এসব আইনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে।
• কৃষি আইন: ২০২০ সালে, মারাত্মক অতিমারির মধ্যে, মোদি সরকার কৃষি সংক্রান্ত তিনটি নতুন আইন এবং বিদ্যুৎ আইনে একটি সংশোধনী এনেছে। এগুলোর উদ্দেশ্য ছিল সরকারি ক্রয় ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) প্রক্রিয়াটি বাতিল করা, চুক্তি চাষের অনুমতি দেওয়া, ব্যবসায়ী এবং পাইকারী বিক্রেতাদের খাদ্যশস্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মজুত ও মূল্য নির্ধারণের অনুমতি দেওয়া, এবং কৃষকদের জন্য ভর্তুকিতে বিদ্যুতের সংস্থান প্রত্যাখ্যান করা।এটা ছিল দেশের কৃষি উৎপাদন ও বাণিজ্য ব্যবস্থাকে কর্পোরেট সেক্টরের লোভী গ্রাসের মুখে তুলে দেওয়ার নগ্ন প্রয়াস। এ ক্ষেত্রে অবশ্য কৃষকরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে এবং এক বছরের দীর্ঘ সংগ্রামের পর সরকার আইন বাতিল করতে বাধ্য হয়। তবে বিদ্যমান মান্ডিগুলো ও সরকারি ক্রয় ব্যবস্থায় নাশকতার চেষ্টা গোপনে অব্যাহত রয়েছে।
• গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি): বিদ্যমান কর ব্যবস্থার এই সম্পূর্ণ সংশোধনের মাধ্যমে, কেন্দ্রীয় সরকার কার্যত তার এখতিয়ারের মধ্যে সমস্ত কর নেওয়ার ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে যেখানে আগে রাজ্যগুলির সাথে কেন্দ্রের যৌথ অধিকার ছিল। এছাড়াও, জটিল এবং কঠিন স্ল্যাব সিস্টেম ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগগুলিকে ধ্বংস করেছে, যেখানে বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলি লাভবান হয়েছে।এক ধাক্কায়, ২০১৭ সালে জিএসটি আরোপের মাধ্যমে, মোদী সরকার হাজার হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগকে ধ্বংস করেছে ও বিপুল কর্মশক্তিকে বেকার করে দিয়েছে।
• ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্করাপটসি কোড (IBC): এই আইনের মাধ্যমে, কোম্পানিগুলিকে দ্রুত অর্থশূন্য বা দেউলিয়া ঘোষণা করার একটি ব্যবস্থা আনা হয়েছিল যাতে বড় কর্পোরেট হাউসগুলি কম দামে তাদের কিনতে পারে। ব্যাংক এবং অন্যান্য ঋণদাতারা তাদের ঋণের বিপুল পরিমাণ হারিয়েছে যখন কর্পোরেট সংস্থাগুলো দেউলিয়া সংস্থাগুলোকে অধিগ্রহণ করে।
• প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের নিয়মে পরিবর্তন: বিভিন্ন ক্ষেত্র – কয়লা খনি থেকে মহাকাশ অনুসন্ধান, প্রতিরক্ষা উৎপাদন থেকে ইস্পাত – বিনিয়োগ পরিচালনার নিয়ম পরিবর্তনের মাধ্যমে বিদেশী বিনিয়োগকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে ৷ এরফলে বিপুল পুঁজির মালিক বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এই ক্ষেত্রগুলো দখল করবে এবং আমাদের দেশ থেকে মুনাফা লুটে নেবে।এফডিআই নিয়মের এই পরিবর্তনগুলো সরকারি সম্পদকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়াকেই সহজ করেছে।
মোদি সরকার যেভাবে ভারতের অতি ধনী কর্পোরেট শ্রেণীর পক্ষে সীমাহীন তাঁবেদারি করেছে তার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ এইগুলি। এই প্রচেষ্টার কারণেই অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং কর্পোরেটগোষ্ঠী প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসায় পরিপূর্ণ। কিন্তু এইটাই সব নয়।
কর্পোরেটদের পরিষেবা ও কল্যাণ
মোদি সরকার কর্পোরেট সেক্টরকে প্রচুর অর্থ প্রদানের জন্য তার সম্পূর্ণ কোষাগারীয় এবং আর্থিক ক্ষমতা ব্যবহার করেছে। এখানেই ‘সেবা’ এবং ‘কল্যাণ’-এর অংশটি আসে। এখানে কয়েকটি সুপরিচিত উদাহরণ রয়েছে:
• কর্পোরেট ট্যাক্স ছাড়: ২০১৯ সালে, মোদি সরকার কর্পোরেট ট্যাক্সের হার ৩০% থেকে কমিয়ে ২২% করে কর্পোরেট সেক্টরকে বিশাল উপহার দিয়েছে (সারচার্জ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকলে ৩৫% থেকে ২৬%)। বাস্তবে এর অর্থ হল সরকার কর্পোরেট সেক্টরকে ১.৪৫ লক্ষ কোটি টাকা উপহার দিয়েছে। এই যুক্তিতে যে এরফলে আরো বিনিয়োগ আসবে তাই আরও কর্মসংস্থান হবে,কিন্তু তা অসত্য প্রমাণিত হয়েছে – চাকরির পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হয়ে চলেছে, বিনিয়োগও কমই রয়ে গেছে।
• কর্পোরেটদের অন্যান্য কর ছাড়: ২০১৪-১৫ এবং ২০২০-২১ এর মধ্যে, কেন্দ্রীয় বাজেটের নথি অনুসারে, মোদি সরকার কর্পোরেট করদাতাদের ৬.১৫ লক্ষ কোটি টাকার বিভিন্ন ছাড়, রিবেট এবং মকুব দিয়েছে৷
এগুলি কর্পোরেট বহির্ভূত সংস্থা এবং ব্যক্তিদের দেওয়া ছাড় থেকে আলাদা, এবং এতে শুল্ক ছাড়ের কারণে রাজস্ব ঘাটতি অন্তর্ভুক্ত নয়।
• ঋণ মকুব: মোদি সরকার আট বছর আগে ক্ষমতায় আসার পর থেকে, ব্যাঙ্কগুলি ১০.৭২ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে,এর বেশিরভাগই করেছে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি, যারা সরকারের নির্দেশে কাজ করে৷এই তথ্য ২০২১ সালে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে একটি আরটিআই উত্তরে প্রকাশিত হয়েছিল। এরফলে কে উপকৃত হয়েছে? এই ঋণ মকুবের বেশিরভাগই বড় অঙ্কের টাকা – ১০০ কোটি টাকারও বেশি ঋণ – যার মানে এই ছাড় আবার কর্পোরেট সেক্টরকে উপকৃত করেছে।
• বড় খেলাপিরা: পুনে ভিত্তিক একজন সমাজকর্মী দ্বারা একটি RTI প্রশ্নের উত্তরে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রকাশ করেছে যে ১৯১৩ জন ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি ছিল, যাদের থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ব্যাঙ্কের ১.৪৬ লক্ষ কোটি টাকা পাওনা ছিল। এর মধ্যে মোট ২৬৪ জন এমন ইচ্ছাকৃত খেলাপি আছে যাদের থেকে ১০০ কোটি টাকা বা তার বেশি পাওনা রয়েছে, যাদের ব্যাংকের কাছে মোট ১,০৮,৫২৭ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে।
কর্পোরেটদের মুনাফা বাড়ানোর এইসব ছাড় দিয়ে সন্তুষ্ট না হয়ে, মোদি সরকার কর্পোরেট সেক্টরের পক্ষে দেশের কলকারখানা সহ মূল্যবান ভৌত সম্পদগুলিকে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে অনেক কম দামে বিক্রি করে লুটপাটের সবচেয়ে নির্লজ্জ কাজ শুরু করেছে।
•রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করা: ২০১৪-১৫ এবং ২০২১-২২ এর মধ্যে, সরকার বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থার কাছে ৪.৮৬ লক্ষ কোটি টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করেছে৷ সাম্প্রতিক বিপিসিএল ক্ষেত্রে যেমন দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে মহামারিজনিত ধীরগতির কারণে এবং শ্রমিক ইউনিয়নগুলির প্রতিরোধের কারণে এই উদ্যোগটি সমস্যায় পড়েছে। তবুও সরকার কোটি কোটি পলিসি গ্রহীতাদের স্বার্থকে বিপন্ন করে LIC-এর বিলগ্নীকরণের দিকে এগিয়ে চলেছে।
• সরকারি সম্পদ বিক্রি/লিজ: যেহেতু এই ধরনের বিনিয়োগ কর্পোরেটদের কাঙ্খিত গতিতে এগোচ্ছে না, তাই মোদি সরকার আরও বেশি ‘উজ্জ্বল’ একটা বিক্রির কর্মসূচি নিয়ে এসেছে – এটি ৬ লক্ষ কোটি টাকার ‘লিজ’ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইনের অধীনে, এরমধ্যে রেললাইন ও স্টেশন, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা,বিদ্যৎ পরিবহন লাইন, তেল ও গ্যাস পাইপলাইন, রাস্তা, সেতু, বন্দর ইত্যাদি সম্পদ বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। এই তথাকথিত ‘লিজ’ ৪০ বছর পর্যন্ত চলবে তাই কার্যকরভাবে এটি একটি লিজের ছদ্মবেশে সরাসরি বিক্রি।
দেশের মানুষের কী হবে?
এদিকে জনগণ বেকারত্ব, স্বল্প মজুরি এবং আকাশছোঁয়া দামে পিষ্ট যা পারিবারিক বাজেট নষ্ট করছে। ‘আচ্ছে দিন’ (সুদিন) এবং ‘বার্ষিক ২ কোটি চাকরি’-র প্রতিশ্রুতি এখনও কল্পনাতীত।মোদি সরকার দাবি করেছে যে তারা বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প চালিয়ে দরিদ্র ও অভাবীদের সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু এগুলোর অধিকাংশই ন্যূনতম-তহবিলপ্রাপ্ত এবং সীমিত।উদাহরণস্বরূপ, আনুমানিক ১০ কোটি মানুষ গণবন্টন ব্যবস্থার অংশ নয়। গড়ে প্রায় ১৪% লোক যারা MGNREGA কাজের জন্য আবেদন করে প্রতি বছর তাদের কাজ প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং যে কোনও ক্ষেত্রে, কাজের গড় দিনের সংখ্যা নির্ধারিত ১০০ দিনের মাত্র অর্ধেক। মুদ্রা প্রকল্পের অধীনে প্রদত্ত বিভিন্ন ঋণ এবং এই জাতীয় অন্যান্য দক্ষতা সম্পর্কিত কর্মসূচীগুলি ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব কমাতেও ব্যর্থ হয়েছে।বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সংযোগটিও একটি প্রতারণা হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে কারণ কয়েক বছর আগে গার্হস্থ্য গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তুকি প্রত্যাহার করা হয়েছিল এবং এই পরিবারগুলি ১০০০ টাকা বা তার বেশি দামে গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে অক্ষম৷এই সরকার এতটাই অসংবেদনশীল যে গত আট বছরে পেট্রোল এবং ডিজেলের ওপর আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি অব্যাহত রেখে জনগণের থেকে ১৮ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সংগ্রহ করেছে। সরকার এই দিকটা ভেবেই দেখেনি যে এরফলে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সাধারণ মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়েছে।
বিজেপি যখন “সেবা, সুশাসন, গরীব কল্যাণ” উদযাপন করে, তখন এটি লোকেদের প্রতারণা করা ছাড়া আর কিছুই নয় কারণ এই সরকার কেবল কর্পোরেট এবং ধনী অংশের স্বার্থই পরিচর্যা করেছে, দরিদ্রদের ছেড়ে দিয়েছে তাদের নিজেদের ভরসায়। সম্ভবত এই সরকার মনে করে যে লোকেরা মন্দির এবং মসজিদ, তাজমহল এবং কুতুব মিনারের বিষয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়বে এবং কাশ্মীর ফাইল এবং নাগরিকত্বের মানদণ্ডের পরিবর্তন নিয়ে চিন্তিত হবে। কিন্তু দুঃখ-দুর্দশার ভান্ডার উপচে পড়ছে- জনগণ এই প্রতারণা চাক্ষুষ করছে এবং তারা এই গণবিরোধী সরকারকে প্রত্যাখ্যান করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।